এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অন্য যৌনতা

  • আমার যৌনতা, আমার অভিজ্ঞতা

    বেনামী লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্য যৌনতা | ২৬ জুন ২০১২ | ৩০৮৫ বার পঠিত
  • লেখিকার ইচ্ছানুসারে তাঁর আসল নাম প্রকাশ করা হলনা।


    দিল্লী হাই কোর্ট আর্টিকল ৩৭৭ বাতিল করবার পর চারিদিকে হারে-রে-রে চিৎকার। গেলো, গেলো, ভারতের সব সভ্যতা সংস্কৃতির চব্বিশটা বাজলো। সব আমেরিকার চক্রান্ত, সব পশ্চিমীদের ষড়যন্ত্র। তাদের কোন কালচার নেই, তারা আমাদের হিংসা করে, তাই তারা এজেন্ট পাঠিয়ে সরকারকে টাকা খাইয়ে ভারতে সমকামিতার মতন একটি পশ্চিমী রোগের এটম বোম মেরেছে। ভারত ধ্বংস হল। যেন ভারতের সকল গৌরব, সংস্কৃতি, ইতিহাস শুধু মাত্র যৌনতাকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। হিন্দু-মুসলমান-শিখ-খ্রিস্টান সবাই এক সাথে হাত ধরে নেমে পড়েছে সমকামীদের বিরুদ্ধে। সরকারের কিন্তু সমকামীদের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ টাইপের কিছু একটা অনার-টনার দেওয়া উচিত। স্বাধীন ভারত ছয় দশক পার করে দেওয়ার পরও যে কাজ, মানে সব ধর্মের লোকদের এক ছাতার তলায় আনা, কেউ করতে পারেনি, সমকামীরা তা এক নিমেষেই করেছে। ক্রেডিট তো অবশ্যই দেওয়া চাই...।

    সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে দীর্ঘ দিন ধরে এই অত্যন্ত ক্ষতিকারক রোগ নিয়ে বিভিন্ন লোকের আলোচনা পড়ে পড়ে মাঝে মধ্যে সাংঘাতিক ভাবে দেওয়ালে কপাল ঠুকতে ইচ্ছা করে।
     বিপক্ষ - সমকামিতা রোগ, মানসিক ব্যাধি।
    পক্ষ - মেডিক্যাল সাইন্স তা বলে না। অত্যন্ত স্বাভাবিক সমকামিতা। একটি বিশেষ কিন্তু সংখ্যা লঘিষ্ঠ যৌনতা, যেমন বা-হাতিরা সংখ্যায় কম। World Health Organization সমকামিতাকে রোগ হিসাবে বাতিল করেছে।
              বিপক্ষ – এই সব পশ্চিমীদের কারবার। ওরা টাকা দিয়ে ভুল-ভাল রিপোর্ট বার করেছে। ওরা যে চাঁদে গেছে তার কি প্রমাণ? শুধু মাত্র ফটোশপ করা ফটো আর কোন কোনা থেকে তুলে আনা মাটি দেখালেই হয়ে গেল! তাই শুধু মাত্র ঐ সব সাদাদের লেখা লেখি দেখলেই কি চোখ বন্ধ করে সব অনাচার মেনে নিতে হবে?
     বিপক্ষ – সমকামিতা পশ্চিমী স্টাইল। পশ্চিমী কালচার। ভারতে এই সব কিচ্ছু ছিল না।
    পক্ষ – ভারতে সমকামিতার বহু উদাহরণ আছে। হিন্দু ধর্মে কথাও সমকামিতাকে পাপ হিসাবে দেখানো হয় নি। মহাভারত, রামায়ণ এবং বিভিন্ন পুরাণে সমকামিতার বহু উদাহরণ পাওয়া যায়।
            বিপক্ষ – ফাজলামি মেরোনা। ওগুলি দেবতাদের লীলা। দেবতারা যা ইচ্ছা তা করতে পারেন। তুমি মানুষ, নিজেকে দেবতার আসনে বসিয়ে আর পাপ করো না। তাছাড়া ধর্মে তো সতীদাহ, বহু বিবাহ, বাল্য বিবাহও আছে। সে গুলোও কি চালু হবে!!
     বিপক্ষ – সমকামী অপ্রাকৃতিক। সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। উল্টো-পাল্টা পশ্চিমী পর্ণ দেখে এই সব কাজ কর্ম। এটি একটি ইচ্ছাকৃত সখ।
    পক্ষ – শতাধিক প্রাণীর ভিতর সমকামিতা লক্ষ্য করা গেছে। তারাও কি পর্ণ দেখেছে?
            বিপক্ষ – প্রাণীরা উলঙ্গ হয়ে ঘোরে, তুমিও ঘোরো, কাঁচা মাংস খাও, বনে জঙ্গলে থাকো। প্রাণীর সাথে মানুষের কি তুলনা...।
     বিপক্ষ – সমকামী সম্পর্ক কাউকে জন্ম দিতে পারে না। তাই এই যৌন সম্পর্ক প্রাকৃতিক নিয়ম বহির্ভূত।
    পক্ষ – হাজার হাজার বিসমকামী সম্পর্ক আছে, যারা কোন কারণে কাউকে জন্ম দিতে সক্ষম নন। তারাও কি অপ্রাকৃতিক! তাছাড়া, শারীরিক চাহিদা বা ভালোবাসা কি শুধুই জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে? বিসমকামী দম্পতিদের যে মুহূর্তে কোন সন্তান জন্মালো, ওমনি তাদের শারীরিক চাহিদাও মিটে গেল, ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলো? স্বামী-স্ত্রী দশ ফুট দূরে থাকতে শুরু করে দিল?
             বিপক্ষ – যারা সন্তান জন্ম দিতে পারে না, সেটা তাদের ভাগ্যের দোষ। হয়তো তারা আগের জন্মে কোন পাপ-টাপ করেছিল তাই ভগবান তাদের এ জন্মে শাস্তি দিয়েছেন। আমরা ভারতীয়, এই সব শারীরিক চাহিদা-টাহিদা কিসের!! যৌনতা, শরীর নিয়ে কথা বার বার বলোনা। শুনতে অত্যন্ত অশ্লীল ও অভদ্র। আমাদের ছোট ছোট বাচ্চারা কি শিখছে? যতসব পশ্চিমী ঢং। পশ্চিমীদের মতন কি সবাইকে এবার শরীর দেখিয়ে চলতে হবে।

        হাজার হাজার ভয়ঙ্কর কমেন্ট পাওয়া যায়, পড়ে ও বলে শেষ করা যাবে না। এক প্রশ্ন বারবার, এক কথা বহু বার। তাল থেকে তিল হলেও হতে পারে, হয়ে থাকেও। তবে তাল থেকে চাল, ডাল, আলুভাজা, চচ্চড়ি, শুক্তো এমনকি মোগলাই, চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল কি ভাবে তৈরি হয়, তা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং’এ পাবলিকদের কমেন্ট গুলো না পড়লে বোঝা যাবে না। অনেক সময় তথাকথিত ধার্মিক ও সংস্কৃতির রক্ষা কর্তারা সমকামী ও সমকামীদের অধিকার সমর্থনকারীদের মা-বাবা-ভাই-বোন তুলে এমন ভাবে আক্রমণ করে থাকে, মনে হয় হাতে একটা স্টেনগান তুলে নিই। অন্যদের কমেন্টের স্মৃতিচারণ করতে করতে এক জনের কথা মনে পড়ে গেলো। তখন ফেসবুকে আমি নতুন এসেছি। এর ওর প্রোফাইল স্টাল্ক করছি। এক বছর পূর্ণ হল, দিল্লী হাই কোর্ট সমকামিতাকে ক্রাইমের তালিকা থেকে বাতিল করেছে, সবাই এই নিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছে, বেশ ভালো কমেন্ট পড়ছে, ইতিবাচক নেতিবাচক। তো এক ব্যক্তি সমকামিতা সম্পর্কে উনার বক্তব্য শুনালেন। শুনে, হাসি-কান্না-কৌতুক-ভয়-দুঃখ-আনন্দ এই সব অনুভূতি গুলি একসাথে মেশালে যে অনুভূতির মিক্সচার পাওয়া যাবে, সেই মিক্সচারটি সাময়িক সময়ের জন্য আমার ভিতর এসেছিল। উনি বলেছিলেন, ‘সমকামিতা লিগাল করা উচিত, কিন্তু শুধু মাত্র গে’দের (পুরুষদের)। মেয়েদের বা লেসবিয়ানিজম কঠোর ভাবে দমন করা উচিত। কারণ, ছেলে সমকামীরা হয় কোমল প্রকৃতির। তারা মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসা করে না। সামাজিক হিংসাতেও অংশ নেয় না। ভারতে ছেলে-মেয়ের অনুপাত সমান নয়, কয়েক জন ছেলে গে হলে ভারসাম্য বজায় থাকবে। কিন্তু মেয়েরা লেসবিয়ান হলে  ভারসাম্যের চরম ক্ষতি হবে। এর থেকে নিস্তার পাবার জন্য সরকারের উচিত শুধু মাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রে ১০/১২ বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া। যাতে ভালোবাসা, শারীরিক চাহিদা প্রকাশ পাবার আগেই তা দমন করা যায়...’। হাজার ভেবেও আমার মগজে উনার কমেন্টের কোন সদুত্তর আজ অবধি আসেনি...।

      একজন বলেছিলেন, সামাজিক কারণে সমকামীদের উচিত নিজেদের ইচ্ছা, চাহিদা দমন করে সমাজের অনুকূল স্রোতে বয়ে চলা, সংখ্যা গরিষ্ঠ লোকে যা বলছে, তা মেনে চলা, সংখ্যা গরিষ্ঠ লোকের সাথে থাকা। সত্যিইতো, কে বলেছিল ব্রুনোকে টাওটারি মারতে। সমাজের বিপরীতে গেলো, মরলতো জ্যান্ত পুড়ে। ব্রুনোকে দেখে শিক্ষা হল না, চলে আসল কোপারনিকাস-গ্যালিলিও। আরেক পোংটা রামমোহন, কে বলেছিল হিন্দু ধর্মের বারোটা বাজিয়ে সতীদাহ তুলতে। আর এক টাওটার বিদ্যাসাগর, বর্ণপরিচয় লিখে ক্ষান্ত থাকল না, মেয়েদের মানুষ মনে করে পড়াশোনা শেখানো তার উপর আবার বিধবা বিবাহ চালু করে সংখ্যা গরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মাথায় বাড়ি মারল...। সমাজটা কি? কাদের নিয়ে? আমি কি সমাজের অঙ্গ না কি পাশের বাড়ির কাজের মাসিদের পিএনপিসি’টাই কেবল মাত্র সমজের মেরুদণ্ড!!

       জানিয়ে রাখি, আমি সমকামী, আমার সংজ্ঞা লেসবিয়ান। যদিও লেসবিয়ান নামটা আমার একদম ভালো লাগে না। স্টাইল মারার জন্য সমকামী হইনি। কোন সমকামী সংগঠনের সাথে আমি যুক্ত নই, না কোন সমকামীর সাথে ব্যক্তিগত ভাবে মিশেছি যে কারু থেকে এই ছোঁয়াচে রোগ আমার মধ্যে এসেছে। পর্ণর প্রতিও আমার কোন টান নেই। জানি না, কি করে আমার ভিতর এই রোগ এসেছে। সারানোর চেষ্টা করেছি বহুবার, কিন্তু পারিনি। আর সারানোর চেষ্টা করিনা, দরকার পড়েনা। আমার এই সমকামী রোগ আমাকে কষ্ট দেয় না, না আমাকে শারীরিক ভাবে দুর্বল করে, না স্মৃতি শক্তি দুর্বল করে, না জ্বর আনে, না আমার চোখ লাল করে, না ঘন ঘন পেট ব্যথা, চুলকানি, আমাশা আনে, না আমাকে পঙ্গু করে বিছানায় ফেলে রাখে। আপাতত, এই সমকামী রোগের জন্য এখনও অবধি এই ধরনের কোন লক্ষণ আমি নিজের মধ্যে পাইনি। যেটা পেয়েছি সেটা হল, হ্যান্ডসাম ছেলেদের থেকে সুন্দরী মেয়ে দেখলে আমার পেটে প্রজাপতি ওড়ে।
    আমি আমার রোগের ব্যাপারে কাউকে জানাইনি। কি জানি, রোগ হল আমার কিন্তু রোগের কথা শুনে চুলকানি আমাশা যদি অন্য কারু শুরু হয়, আর অন্যকে চুলকানি আমাশা থেকে মুক্ত করবার জন্য ঘন ঘন তেতো ওষুধ আমাকে গিলতে হয়...। আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব কেউ জানে না। এই লেখাটি লিখছি ছদ্ম নামে।

      যাই হোক, আসল কথায় আসা যাক। দীর্ঘ দিন ধরে আমার ভিতর একটা ক্ষোভ জমে আছে। সুযোগ মত বার করতে পারছি না, বার করবার সুযোগও পাচ্ছি না। মাঝে মধ্যে নিজের উপর একটু ঘেন্না ধরে। গুরুতে সুযোগ পেলাম, নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লেখার। আমি এখনও নিজেকে সমকামী হিসাবে পরিচয় দিনই, তাই অন্যদের মতন বাড়ির চাপ, অত্যাচার, টিটকারি বা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল এখনও আমার সাথে হয়নি। তবে একজন তথাকথিত সমকামীদের অধিকার সমর্থনকারীর কাছে নিজের চরিত্রের বিবরণ পেয়েছিলাম। আমি সমকামী, আমি শারীরিক মানসিক দিক দিয়ে মেয়ে, এবং শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে মেয়েদেরই পছন্দ করি। আমি মেয়েদের পছন্দ করি তার মানে এই নয় আমি পুরুষদের ঘৃণা করি, আমি কট্টর ফেমিনিষ্ট । আমি সমকামী, তার মানে এই নয়, আমি অত্যাধুনিক। সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। কিছুটা পরিবারপন্থী। আমাদের জয়েন্ট ফ্যামিলি ছিল কিন্তু পরবর্তী কালে বিভিন্ন কারণে তা ভেঙ্গে যায়। বাড়ি এক, হাঁড়ি, মিটার বক্স আলাদা। এক সাথে আড্ডা মারা, ঘুরতে যাওয়া, একে অপরের সাহায্যে আসা, ডিনার টেবিলে একসাথে বসা… আমার বেশ ভালো লাগে। আমার জ্ঞান হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় আমাদের পরিবার আলাদা হয়। আশেপাশে অনেক পরিবারও ভাঙতে দেখেছি। মেনে নিয়েছি, বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যে সম্পর্ক, সেটি আমাকে বিশেষ ভাবে টানে। একজনই সঙ্গী বা সঙ্গিনী, দুজন একে অপরের দায়িত্ব দেওয়া নেওয়া, বিশ্বস্ত থাকা, সাধারণ দাম্পত্য সম্পর্ক বলতে যা বোঝায় তাই। সমকামী সম্পর্কও আমি বরাবর এই ভাবে দেখে এসেছি, না হোক তথাকথিত আনুষ্ঠানিক ‘বিয়ে’, কিন্তু একসাথে ,একজনের সাথেই থাকা।
       ফেসবুকে আসলাম, অনেকের সাথে আলাপ হল, কেউ কেউ ভালো, কেউ কেউ মন্দ। অনেক সমকামী সংগঠনের খোঁজ পেলাম, গ্রুপে যোগ হলাম (জানিয়ে রাখি, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং’এ আমি প্রেম করতে আসিনি, মেয়ে দেখতে, মেয়ে পটাতে আসিনি। বিভিন্ন লোকদের সাথে মিশতে, আড্ডা মারতে এসেছি) বেশ ভালো লাগলো, আমি একাই কোলকাতাতে ভৌতিক প্রাণী নোই, আমার মতন অনেকে আছে। তাদের আপডেট, কমেন্ট, অসুবিধা, ভয়, অনিশ্চয়তা সম্পর্কে জানলাম। কোন কোন মেয়েকে হিংসা হল, বয়েসে আমার থেকে অনেক ছোট, কি সাংঘাতিক সাহসী, বাড়িতে সবাইকে জানিয়েছে, প্রাইড প্যারেডে হাঁটে, নিজেকে সমকামী বলে ওপেন ডিবেট করে, নিজের প্রেমিকাদের ছবি আপলোড করে... কিন্তু আমার ভিতর এই সাহস নেই....।

      ফেসবুকে এক জনের সাক্ষাৎ পেলাম। তার পরিচয়টি প্রকাশ করতে পারব না, উনি লেখা-লেখির জগতের মানুষ, সামাজিক কাজ করে থাকেন, সমাজে মোটামুটি পরিচিত। আমি উনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই, উনি একসেপ্টও করেন। কিছুদিন পর উনি আমাকে মেসেজ করলেন, আমি ফেসবুকে যে সব LGBT গ্রুপের সদস্যা সেখানে উনিও আছেন, আমার কিছু ফেসবুকে সমকামী বন্ধুরা উনারও বন্ধু, এই সব দেখে উনি মোটামুটি ধারণা করে নিয়েছিলেন যে আমি সমকামী, এবং  উনি সমকামীদের অধিকার সাপোর্ট করেন। (উল্লেখ করি আমি নিজেকে সমকামী হিসাবে ফেসবুকে পরিচয় দিইনি, আমি আরও অনেক গ্রুপে আছি যেখানে কবিতা, গল্প, সাহিত্য, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়, এই সব গ্রুপে উনিও আছেন। উনার সাথে আমার প্রায় ৩০ জন মিউচুয়াল ফ্রেন্ড যারা কবিতা, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন, আর ৫,৬জন সমকামী মিউচুয়াল ফ্রেন্ড। তা সত্ত্বেও উনি আমাকে ঝট করে চিনে গেলেন। একেই বলে স্পট লাইট।)। যারা অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার গ্রুপের সদস্য তাদেরকে উনি কুকুর-ঘোড়া না বললেই রক্ষে। যাই হোক, আমি এগুলো আগে কিছু দেখিনি, উনার মোটামুটি নাম শুনেছিলাম, বাঙালি হিসাবে লেখা-লেখির প্রতি আমার একটু ঝোঁক আছে, এই ছিল আমার হেতু উনার সাথে বন্ধুত্ব করার। কিছুদিন মেসেজে কথা হয়, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উনি আমাকে সমকামিতা নিয়ে প্রশ্ন করে যান – আমি কি করি? প্রেম করি কি না? আমি আদর করতে পছন্দ করি না কি আদর খেতে (এটার মানে আগে বুঝিনি, পরে বুঝলাম উনি জানতে চাইছিলেন আমি বুচ মানে পুরুষালি নাকি ফেমিনিন। উপরে না কি নীচে থাকতে পছন্দ করি?) আমার কেমন মেয়ে পছন্দ... আরও কিছু। ব্যক্তিগত জীবনে আমি কখনো অন্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা পছন্দ করিনা, আর নিজেরও ব্যক্তিগত ব্যাপারে অন্যের নাক গলানো ঠিক মানতে পারি না। সযত্নে আর কিছুটা বলদামি মেরে এড়িয়ে গেলাম। হঠাৎ একদিন উনি আমাকে কিছু মেয়েদের নাম দিয়ে কয়েকটা ফোন নাম্বার মেসেজ করলেন। কিছু ফ্রেন্ড সাজেশনও পাঠালেন। কাউকে ফোন-টোন করিনি অবশ্য, তবে একজনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল, উনার স্বামী খুব অত্যাচার করেছে, উনার একটা ছোট্ট সন্তান আছে, উনি সাংঘাতিক ভাবে মানসিক দিক থেকে ভেঙ্গে পড়েছেন, বন্ধু চাই...এই। উফ, কি গাড়লটাই না ছিলাম আমি। ঐ মহিলা যে কিভাবে আমাকে জ্বালিয়েছে, বলে বোঝাতে পারব না। তবে সব রাগ ছিল ঐ মহিলাটার উপর।
       কিছুদিন পর ঐ ভদ্রলোক(!!) আবার আমাকে মেসেজ করলেন। উনি উনার ফোন নাম্বার দিয়ে আমার নাম্বার চাইলেন। আমার সাথে কথা বলতে চান, বই মেলায় উনার নিজস্ব প্রকাশনীর স্টলে আসতে, আড্ডা দেওয়া হবে। একজন বিশিষ্ট লোক আমার মতন চুনোপুঁটির সাথে আড্ডা মারতে চান- কে না আহ্লাদে আটখানা হবে! অত্যন্ত আনন্দের সাথে নাম্বার দিলাম। ফোন করলেন, ঘণ্টা খানিক উনার সাথে কথা হয়, একবারই কথা হয়, তার পর কথা বলার আর ইচ্ছা আমার হয় নি। যা কথা হল তা নিম্নরূপ, কথা গুলো ঠিক প্রকাশ্যে লেখার মতন নয়, তাই যতটা সম্ভব কাটাকাটি করে বলার চেষ্টা করলাম। ধরা যাক, উনার নাম মিস্টার এক্স।
    উনি ফোন করলেন-
    এক্স – তুমি জানলে কি করে তুমি সমকামী?
    আমি – যে ভাবে বিসমকামীরা বোঝে যে তারা বিসমকামী। আমি কখনো ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হইনি।
    এক্স – না, মানে আকর্ষণ তো আলাদা। কারু সাথে শুয়েছো, চুমু-টুমু খেয়েছ?
    আমি – না।
    এক্স – তুমি তো সমকামী। মাস্টারবেট তো করো, কতক্ষণ করো?
    আমি – (আমি প্রচণ্ড অবাক। এ কি কথা বলে!! কি বলবো বুঝে পাচ্ছি না)। না, মানে তেমন কিছু না।
    এক্স – পানুতো দেখো, সেই সময় মাস্টারবেট করতে করতে কার কথা ভাবো?
    এক্স – আমার অনেক লেসবিয়ান বন্ধুরা আছে। ওরা আমার বাড়ি আসে, আড্ডা মারে, আমার কাছে পানু চায়। ওরা মনে করে আমার কাছে অনেক ভালো ভালো কালেকশন আছে। হা হা... গালি মেরে তাড়াতে হয়।
    আমি – হুম...।
    এক্স – শোনো, লেসবিয়ান হয়েছ বলে কিছু দুঃখ করো না, লেসবিয়ানরা ভালো হয়, তাদের কিছু অভাব নেই। যারা গে (পুরুষ) হয়, তারা পিছন মারা ছাড়া কিছু জানে না, আর বাই-সেক্সুয়ালরা গ্রুপ সেক্স করে যায়। কিন্তু লেসবিয়ানরা ভালো। ঘষা লাগিয়ে শুয়ে থাকতে বেশ মজা লাগে।
    আমি – (কিছু বলার ছিলোনা, চুপ চাপ শুনছিলাম)।
    এক্স – তোমার কেমন মেয়ে পছন্দ? বুচ না ফেমিনি? আমার কাছে অনেক লেসবিয়ানরা এসে আড্ডা মারে। তুমিও আসো। অনেকের সাথে পরিচয় হবে। অনেকে আছে যারা কোন সম্পর্কে না গিয়ে ইয়ে করতে রাজি আছে, তাই তোমার টেনশন নেবার দরকার নেই। তুমি কি বিবাহিতাদের পছন্দ করো? তারা এক্সপেরিয়েন্সড আর তাদের বেশ ডেভেলপড...... ফিগারের সাইজ প্রায়......।
    আমি – (উনার কথা ঘোরানর জন্য বললাম), আমি একজনকে ভালোবাসি।
    এক্স – আহা, ভালোবাসা আলাদা জিনিস। ভালোতো, যে ভালোবাসো। প্রেমিকাকে নিয়েই আসো। লেসবিয়ানদের কিন্তু খুব সুবিধা। এডস হবার ভয় কম, গে’দের হয়। প্রেগনন্সির ভয় নেই, জানা জানি হবার ভয় নেই...।
    আরও অনেক কথা হয়, ইচ্ছা নেই বলার। মোদ্দা কথা হল, উনার মতে সমকামী মেয়েদের চাহিদা হল দুটি স্তন ও একটি যোনি, ব্যাস। আমার নাম্বারটি পরবর্তীকালে আমার অজান্তে অনেক মেয়েদের কাছে চলে গেছিলো। শেষে পরিস্থিতি এমন হয় কিছু মেয়েদের রীতি মতন বাপ-মা তুলে কাঁচা খিস্তি মারতে হয়েছে।
      উনি LGBT সাপোর্টের। অর্থাৎ লেসবিয়ান, গে, বাই-সেক্সুয়াল, ট্রান্সজেনডার সাপোর্টার। লেসবিয়ান ভালো। কিন্তু গে পিছন মেরে বেড়ায়, বাই’রা গ্রুপ সেক্স করে, ট্রান্স’দের ব্যাপারে কোন কথা উনার মুখে শুনিনি। আমি লেসবিয়ান, আমি উনার কাছে ভালো। আমি কেন ভালো কারণ, আমার এডস হবার চান্স কম, প্রেগন্যান্ট হবো না, আমি শুধু ঘষা-টেপা-চাটতে পারি। এতে ব্যথা নেই। দেখতেও বেশ ভালো। আর কিছু না, আর কিছুর দরকার নেই। অনুভূতি, আবেগ, কেয়ার, ভালোবাসা... এ সব ফালতু জিনিস। শারীরিক চাহিদাই সর্বসত্য, মানসিক চাহিদা উনার অভিধানে নেই।
      উনি বললেন, উনি সমকামী-বিসমকামীদের ভিতর পার্থক্য করেন না। একবার দুজন সমকামী প্রেমিকা উনার কাছে এসেছিল। দুজনেই বুচ, লিভ ইন রিলেশন তাদের। কিন্তু তাদের মুস্কিল, কে উপরে থাকবে, কে নীচে। এই নিয়ে প্রবলেম। উনি একটি তৃতীয় ফেমিনিন মেয়ের পরিচয় দিয়ে তিন জনকে এক সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হবার পরামর্শ দেন (উনি নিজেই আমাকে জানিয়েছিলেন), সেই বুচ লেসবিয়ান কাপল যদিও এই কাজে যায়নি।
      যদি কোন বিসমকামী কাপল একই প্রবলেম নিয়ে উনার কাছে যেতো, তালে কি উনি এই একই পরামর্শ দিতেন!

      আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন লেসবিয়ানদের সাথে মিশিনি, আমি নিজে লেসবিয়ান,  কিন্তু কেউ যদি আমাকে লেসবিয়ানদের চরিত্র নিয়ে সংজ্ঞা লিখতে বলে, আমি পারব না। আমি কি, তা আমি জানি। আমি মোটেও মানিনা, সবার চরিত্র, চাহিদা সমান হয়। তাই দুম করে কাউকে ট্যাগ করে দেওয়া থেকে যতটা পারি বিরত থাকি। হোমোফোবিকদের কাছ থেকে বহু আক্রমণ আসে। শুনতে শুনতে সয়ে গেছে। তাদের কাছ থেকে আসা আক্রমণ আর খারাপ লাগে না। তারা আক্রমণ করবেই, টিটকিরি মারবেই জানা কথা। তারা সমকামিতা জানে না, বা জানলেও মানতে চায় না। এই সব আক্রমণ শুনে কোন সময় নিজের প্রতি এক মুহূর্তের জন্য দুঃখ, খারাপ, ঘেন্না কিছু লাগে নি। তবে তথাকথিত LGBT সাপোর্টরের সাথে যে কথোপকথন হয়, সাংঘাতিক ভাবে খারাপ লাগে। উনার মত অনুসারে সমকামিতার সংজ্ঞা যদি এই হয়, অর্থাৎ লেসবিয়ানরা ঘষে, গে’রা পিছন মারে আর বাই’রা গ্রুপ সেক্স করে... তালে হ্যাঁ, আমি অত্যন্ত লজ্জিত যে আমি সমকামী। আমি নিজেকে ঘেন্না করি। আমি পৃথিবীর সব থেকে নোংরা কীট। সভ্য সমাজ আমার জন্য নয়।

    শারীরিক চাহিদাটা অবশ্যই একটা বড় ভূমিকা পালন করে। তবে এই চাহিদা শুধুমাত্র বংশ বৃদ্ধি বা সন্তান জন্ম দেওয়ার উপর নির্ভর করে প্রকাশ পায় না। স্বামী স্ত্রী বা সমাজের দৃষ্টিতে সুখী দাম্পত্য জীবনের সংজ্ঞা কি কেবলই অন্তর্বাসের ভিতর লুকানো, অপ্রকাশ্য বিষম লিঙ্গ এবং প্রকাশ্যে খেলে বেড়ানো একটা ছোট্ট সন্তান!!
     
      সমকামিতা বা সমকামী সম্পর্ক সম্বন্ধে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যবিত্ত সমাজের ধারণা খুবই অস্পষ্ট। কোন ইতিবাচক আলোচনা হয় না, সমকামিতা তো দূর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সেক্স এডুকেশন নিয়েও বিতর্ক চলে। ‘যৌনতা’ শব্দটি আজও ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত অশ্লীল বিষয় হিসাবে প্রকাশ পায়।  যদি ধর্মের কথা তুলি, তাহলে হিন্দু ধর্মে যৌনতাকে বিশেষ ভাবে স্থান দেওয়া হয়েছে। ধর্ম-অর্থ-কাম এবং মোক্ষ এই চতুর্বর্ণের সাধনাকেই প্রধান সাধনা হিসাবে বিবরণ দেওয়া হয়েছে। ভারতের কাম দেব বা বাৎস্যায়নের কামসূত্র ভারতীয়রা মুখে তুলতে লজ্জা পায়। ভারতীয় মায়েরা নিজেদের মেয়েদের শিবলিঙ্গ পুজো করতে বলেন, যাতে শিবের মতন বর পাওয়া যায়। কয়জন মা নিজের মেয়েদের শিবলিঙ্গ আসলে কিসের প্রতীক, তার বিবরণ দিয়েছেন!! যৌনতা বা সেক্স পশ্চিমী কালচার। ভারতে এসব অনাচার। দ্বিতীয় বৃহত্তর জনসংখ্যার দেশ ভারতে এতো জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কারণ আমরা সবাই আকাশ থেকে টপকে পড়েছি।  তাই এই সব যৌনতা নিয়ে আলোচনা বা শিক্ষার দরকার নেই। শিবলিঙ্গ, কামদেব, বাৎস্যায়ন, খাজুরাহোকে এখনও অবধি পশ্চিমী দেশের আমদানি বলা হয়নি, এই রক্ষে। এই দ্বিচারি সমাজ ব্যবস্থায় সমকামিতা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক ভাবেই কঠিন। সমকামী নিয়ে  কোন ইতিবাচক সিনেমা তৈরি করলে সমাজের মুকুটহীন মোড়লরা রে-রে করে তেড়ে এসে সিনেমা হল ভাঙচুর শুরু করে। কিন্তু সমকামিতা নিয়ে নেতিবাচক সিনেমা বা ব্যঙ্গ তামাশার সাদর আমন্ত্রণ সভ্য সমাজে বর্তমান। দীর্ঘকাল ভারতীয় সিনেমায় বা টিভি সিরিয়ালে সমকামী চরিত্র বা গে’রা হাসির পাত্র হিসাবে প্রকাশ পেয়ে এসেছে। কোন কমেডি সিনের প্রয়োজন- ববি ডার্লিং আছে তো। সমকামিতা নিয়ে জোকস খুব ফেমাস। কেউ কেউ খুব মজা পান, কেউ বা প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদ করলে কিছু মুক্তমনা ব্যক্তি বিশেষ বিশেষ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিবাদীদের প্রতিবাদ করেন। পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট জোক ভাবুন; লাইটলি নিন; এতে এতো প্রতিবাদের কি দরকার ,সব কিছু নিয়েই জোক হয়; বিসমকামীতা নিয়েও জোক হয়, কই তারা তো এত হাইপ দেখায় না; জোকটিতো সমকামীদের বিরুদ্ধে কোন হিংসা আনেনি, সাধারণ হাসি ঠাট্টা শুধু; ইত্যাদি। 
           আমি অতো হিসাব নিকাশ বুঝিনা। সমকামীরা সংখ্যায় কম, সংখ্যালঘুদের নিয়ে মজা করা এবং সংখ্যা গুরুদের নিয়ে ঠাট্টা করবার ভিতর আশা করি কিছুটা পার্থক্য আছে। ভারত সংখ্যাগুরু হিন্দু রাষ্ট্র, যদি মুসলমানদের নিয়ে তামাশা চর্চা হয়, বা সংখ্যা গুরু মুসলমান রাষ্ট্রে যদি হিন্দুদের নিয়ে পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট  জোক মনোরঞ্জন হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে সেটা কতোখানি লাইটলি নেওয়া যায়! একটি শ্রেণী তো বিনা কাউকে আঘাত করে নিজেরা নিঃশব্দে আঘাত পায়। বেশী আঘাত পেলে দাঙ্গা হয়। সমকামীদের দাঙ্গা করবার ক্ষমতা নেই। আমি তিলকে তাল করতে চাই না, শুধু বলতে চাই, সমকামীরা সংখ্যায় কম, তার উপর আমার মতন বহু ভীতু লুকানো সমকামী প্রাণী বর্তমান, যারা আজ অবধি নিজের আসল অস্তিত্ব জনসমক্ষে প্রকাশ করবার সাহস জোগাড় করতে পারেনি। দীর্ঘকাল ধরে সমকামীরা হাসির পাত্র হিসাবে প্রকাশ পেয়ে আসছে। আর এই হাসিতে সিংহভাগ ইন্ধন যোগায় সিনেমা বা ওপেন পাবলিক ফোরামে সমকামী জোক। হয়তো এই কারণেই সমকামী চরিত্র বা আলোচনাকে বেশীর ভাগ মানুষ সিরিয়াসলি নিতে পারেন না।  বিভিন্ন কারণে সমাজে সকল শ্রেণীর ভিতর সমকামিতার পরিচয় প্রকাশ পায়নি। বেশীর ভাগ মানুষ মনে করেন সমকামিতা পশ্চিমী স্টাইল, না হলে মানসিক রোগ, মৌলবাদীদের মতে সমকামীরা শয়তানের চ্যালা, তাদের ধরে ধরে জ্বালিয়ে দাও-ফাঁসিতে ঝোলাও, আর আরেক শ্রেণী তো সমকামীদের অস্তিত্বই অস্বীকার করে থাকেন। তারা কোন দিনও সমকামীদের দেখেননি, তাদের পরিচিত কেউ সমকামী নন, তাই সমকামী ভারতীয় সমাজে নেই। নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজে  যারা সমকামীদের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন, মানতে বা বুঝতে চান না তারা যদি তাদের আশেপাশে কোন ছেলেকে মেয়েলী বা কোন মেয়েকে পুরুষালি অথবা শোনেন কোন ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে’র প্রেমের গল্প তাহলে ঝট করে ট্যাগ করে দেন ‘হিজড়ে’ বলে। ‘হিজড়ে’ শব্দটির প্রকৃত অর্থ হল এক বিশেষ শ্রেণীর মানুষ যারা শারীরিক দিক থেকে না পুরুষ না নারী। ‘পুরুষ’ বা ‘নারী’ শব্দটি যেমন কোন অশ্লীল গালি নয়, ঠিক তেমনি ‘হিজড়ে’ শব্দটিও কোন অংশ দিয়েও গালি নয়। দুর্ভাগ্য সভ্য সমাজে সংখ্যা গরিষ্ঠ পুরুষ লিঙ্গ ও নারী লিঙ্গের মাঝে সংখ্যা লঘু হিজড়ে লিঙ্গটি শুধুমাত্র গালিতে পরিণত হয়নি, সামাজিক সাধারণ অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। আমার এখানে ‘হিজড়ে’ শব্দটি ব্যবহার করবার কারণ, মধ্যবিত্ত সমাজ প্রতিনিয়ত সমকামীদের হিজড়ে বলে  পরিচয় দেওয়ার ফলে সমকামীর আসল বিবরণ সেই তলানিতেই পড়ে আছে। তার উপর আছেন মিস্টার এক্সদের মতন সমর্থনকারীরা, যারা সমাজে সমকামিতার স্বাভাবিক পরিচয় করে দেওয়ার বদলে সমাজ থেকে সমকামীদের আরও দূরে ঠেলে সমকামিতাকে কেবলমাত্র একটা অ্যাডভেঞ্চার হিসাবে প্রকাশ করেন।
       আমি একটি নারী, সম্পূর্ণ ভাবে নারী এবং আমার পছন্দ শুধু মাত্র নারী; আমি সমকামী, হিজড়ে নই।
      আমি সমকামী, আমার অ্যাডভেঞ্চার করবার সাধ নেই।
      জানি, আমার মতন নিকৃষ্ট সমকামী কীটদের কোন কিছুর অধিকার নেই। প্রশ্ন তো দূর, মিস্টার এক্স’দের মতন সমাজে সুখ্যাত ব্যক্তিদের ধারে কাছে আসাও উচিত না। তবে আন্তরিক ভাবে মার্জনা চেয়ে আমি একটু জানতে চাই, এই যে এত আন্দোলন, প্রাইড প্যারেড, ফিলম ফেস্টিভ্যাল, কোর্ট কাছারি, লড়াই... এ গুলো কিসের জন্য? রাস্তা থেকে কাউকে ধরে অন্ধকার ঘরে নিয়ে গিয়ে পিছন মারলে বা ঘষলেই তো হল। চার দেওয়ালের ভিতর অ্যাডভেঞ্চার হলে কিসের ক্ষতি। কেউ জানতে পারবে না। তালে এতো ঝামেলা কেন? পৃথিবীতে তো হাজার হাজার লোকরা আছে যারা বাড়িতে বউ বাচ্চা রেখে অন্ধকার কোনা থেকে কাউকে তুলে দামি-সস্তা হোটেলে রাত কাটায়। তারা তো কোন প্যারেড  করে না। কোর্ট কাছারিও করে না। সমকামীদেরও তো এই করলে হয়...। লেসবিয়ান-গে সেক্সে কেউ প্রেগন্যান্ট হয় না, অন্ধকারে কি হচ্ছে না হচ্ছে কেউ জানতেও পারবে না। তবে কেন এই সব অধিকারের লড়াই...? স্বীকৃতির লড়াই...? পরিচয়ের লড়াই...? এক সাথে বিনা বাধায় পরিবার করবার অধিকার চেয়ে লড়াই...? কেন...?

      সমকামিতাকে অ্যাডভেঞ্চার না ভেবে, সমকামীদের অস্তিত্ব অস্বীকার না করে একবার কোন সমকামীর সাথে সামনা সামনি বসে গল্প করুন। কোন নেতা হোতাদের আদেশ পালন করতে ডাণ্ডা নিয়ে সমকামীদের দিকে তেড়ে না গিয়ে একবার কোন সমকামীর সাথে কথা বলে দেখুন। বাবাজী, মাতাজী বা ধর্মীয় বচন পাঠ করে সমকামীদের ট্যাগ না করে, নিজের উপর বিশ্বাস করে কোন সমকামীর সাথে আলাপ আলোচনা করে নিজের বিচারে ট্যাগ করে দেখুন, সমকামীরা আর পাঁচ দশটা মানুষের মতন, না কি সমকামীরা কি সত্যিই মানসিক রোগী, শয়তানের চ্যালা, স্টাইল মারছে, না শুধু অ্যাডভেঞ্চার করছে...।
     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অন্য যৌনতা | ২৬ জুন ২০১২ | ৩০৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • একক | ***:*** | ১২ জুলাই ২০১২ ১২:২৫90043
  • আরে লক্ষ্য করা গেলে কিছুই প্রমান হয়না :( ইক্স্চ্লুসিভ হোমসেক্সুয়ালিটি আর নন এক্সক্লুসিভ হোমোসেক্সুয়ালিটি পুরো আলাদা . একটা এগেইনস্ট এভলুশন আরেকটা প্র . সমকামিতা নিয়ে আমার কোনো চাপ নেই কিন্তু সেটা কে সমর্থন জানাতে গিয়ে লোকজন সব ঘেঁটে ঘ করে দিয়ে আল্টিমেটলি হোমোফোবিক দের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে . যারা এ নিয়ে লেখালেখি করেন একটু জেনে-বুঝে -গুছিয়ে কলম ধরুন . নইলে উপকার এর চে অপকার বেশি .
  • rezaul karim | ***:*** | ১৬ অক্টোবর ২০১২ ১২:৫২90044
  • good.
  • weird girl | ***:*** | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৩:৩২90045
  • লেখাটা প্রকাশিত হওয়ার অনেক দিন পর মতামত দিচ্ছি।আজ "লেসবিয়ান "---শব্দটি দিয়ে গূগ্লে সার্চ দেয়াতেই এমন মূল্যবান লেখাটি পড়ার সৌভাগ্য হল।
    আমি বাংলাদেশি-----।বুঝতেই পারছেন,ভারতের থেকেও এখানে সমকামিতা নিয়ে লুকোচাপাটা আরও বেশি।
    টিনএজে পা দেয়ার পর থেকেই বুঝতে পারছি,হৃদয়ের আলোড়ন শুরু হয়ে গেছে-----কিন্তু সেটা কারো কাছে বলবার অযোগ্য।সেভাবে কারো প্রেমে না পড়লেও,যখন কবিতা লিখছি----সেটাতে বোধহয় কোনো নারীকেই কল্পনা করছি!শুরুতে অতশত বুঝতাম না,ভাবলাম আমি তো এমনিতেই একটু ইন্টেলেকচুয়াল টাইপ-----।তাই বোধহয় এমন হচ্ছে।
    সে হয় হোক,দারুন সব লেখা তো হচ্ছে।ব্লগে পোস্ট করলে ভাল মন্তব্য পাই।মজার ব্যাপার হলো,কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পায় না---এসব লেখা চৌদ্দ-পনের বছরের কোন "মেয়ে" লিখছে।
    এখন আমার টিনএজ শেষের দিকে,এখন বুঝতে পারছি---আমি বোধহয় সত্যিই সেই দূর্ভাগা সংখ্যালঘুদের দলে,যাদের লেসবিয়ান বলে ত্বাচ্ছিল্য করা হয়।
    সবারই জীবনে স্বপ্ন থাকে বড় কিছু হওয়ার।আর সেটা হলেই সুখ।কিন্তু,আমি এখন বুঝতে পারছি ------আমার ক্ষেত্রে "সুখী জীবন"সত্যিই অধরা।আমি লেখাপড়ায় ভাল।পরিবারের কথা অনুযায়ী ডাক্তার হতে চাইনি।ভর্তি হব স্হাপত্যকলায়।কিন্তু,পরবর্তী জীবনে কোন একটি ছেলেকে কি আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব হবে?আবার, এই রক্ষণশীল সমাজে আমার পক্ষে কখনই কোনো মেয়েকে প্রস্তাব করা সম্ভব নয়।
    আমারও সমকাম শব্দটির প্রতি আপত্তি রয়েছে।আমার নিজের ক্ষেত্রে আমি "সমপ্রেম" শব্দটি ব্যবহার করি।ইন্টারনেটে কত ওয়েবসাইটে যেকোন দেশের "একজন প্রেমময়ী,শোভন,সুরুচিসম্পন্না (নারীসুলভ) প্রেমিকা "-- খোঁজ করেছি,কিন্তু ভাগ্য আমার সহায় হয় নি।অনেকেই হয়তো নক করেছে----কিন্তু সবার কাছেই শারীরিক ব্যাপারটিই মূখ্য।সস্তা রোমান্টিকতা,হৃদয়াবেগ-----এসব মূল্যহীন।
    এসব দেখে মনে হয়েছিল,আমি বোধহয় লেসবিয়ানও নই----- উইয়ার্ড বা সাইকো----
    আপনার লেখাটা তাই খুব আপন মনে হল
  • bd.girl | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৯:৫৬90046
  • Bravo
  • bd.girl | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১০:৪২90047
  • Weird girl,
    আমারও সমকাম শব্দটির প্রতি আপত্তি রয়েছে ।আপনার দেয়া "সমপ্রেম" শব্দটি যথার্থ মনে হয়েছে। আমিও বাংলাদেশি। তাই ভালো করেই জানি সমকামিতা নিয়ে বা সমকামী সম্পর্ক সম্বন্ধে আমাদের সমাজের ধারণা ক্যামন। সমকামীরা পূর্ণাঙ্গ নারী/পুরুষ, তারাও আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতই এটা আমাদের সমাজ মানতে পারেনা। আফসোস ! তবে আশা রাখি পৃথিবী বদলাচ্ছে, কোন একদিন হয়ত আমাদের সমাজও বদলাবে, তখন একজন সমপ্রেমী তার প্রিয় সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে নির্দিধায় স্বাধীন ভাবে প্রকাশে থাকতে পারবে।
  • audity falguni | ***:*** | ২৮ মার্চ ২০১৩ ০৫:১৬90048
  • Read it. Can assume how much liberal is the Indian society that such an article can be published! However, lesbianism and bi-sexuality is not too alien a thing even in comparatively conservative "Bangladeshi" society too! But personally I cannot take homo sexuality or lesbianism as a choice. Biologically am not lesbian. But I vow to protect the rights of sexual minorities. Do I really? Just confused! Gays or lesbians can't give birth to babies. Anyway, even if I can support the gays or lesbians I can not support the bisexuals. They pluck fruits from branches and pick up some fallen ones from the ground too...gacher o khabe, talar o kurabe!

    On the other hand, western feminist scholars categorize "lesbianism" into two categories: "clinical lesbians" (in strict physical terms...sharing sexuality) and lesbian continuum (in terms of psychological sharing or reciprocity of sisterhood; this bondage can be made between sisters/ mothers and daughters/ grand mother and grand daughters/ sister-in-laws/ female colleagues...all the women to make a room or corner of their own to breathe in common happiness and sorrows, to ignore the male power politics at homes and offices, in relationship and marketplace, in press and politics. In terms of second category...psychological sharing/reciprocity of sisterhood...I think me too a "lesbian."
  • sosen | ***:*** | ২৮ মার্চ ২০১৩ ০৫:২৩90049
  • ????????????!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!########$$$$$$$$$$$$$$$$$$$^^^^^^^^^^^^^&&&&&&
  • Default User | ***:*** | ২৮ মার্চ ২০১৩ ০৫:৫৪90050
  • But personally I cannot take homo sexuality or lesbianism as a choice.

    এটা কেন অদিতি ? তারা সন্তানধারণ করতে পারেনা বলে ? ঠিক বুঝিনি।
  • Ekak | ***:*** | ২৮ মার্চ ২০১৩ ১০:২৯90051
  • ম্যাডাম , আপনের মতামত যাই হোক না ক্যান ব্যক্ত করসেন ভালা করসেন , সুদু ইংরাজি ভাষা ডারে সারান দিতে পারতেন :( :( স্ট্রেট -গে -লেসবিআন সব কিসুর উর্ধে হ্যার সেক্সুয়াল স্ট্যাটাস এহন "কন্ফিউসদ " হইয়া গ্যাসে গিয়া :(
  • শাওন, ঢাকা বাংলাদেশ | ***:*** | ১২ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:৫১90052
  • খাজুরাহ মন্দিরের ভাস্কর্য দেখলেই বুঝতে বাকি থাকে না সমকামিতা অনেক াাগেই স্বীকৃত ছিল।আমার সমস্যা ভিন্ন। নারী বা পুরুষ দেখলে নয় কোনো পশুর যোনী দেখলে আমারযৌনতা জাগে। কনডম ছাড়াই আনন্দ বেশি পাই। এইডসের ভয়ে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি সমস্যা নেই। আমার প্রিয় মাদী ছাগল, কুকুর মুরগি,। আবার নারীর যোনী নয় পায়ুপথ মাঝে মাঝে আকর্ষণ করে। ইচ্ছে ঞয় পাই না তখন মান্টারবেড করি। এ পথের কেউ থাকলে দয়া করে উদার মনে বন্ধুত্বের হাত বাড়ান। আসুন আনন্দ করি।
  • pi | ***:*** | ১২ এপ্রিল ২০১৩ ০৬:৫৫90053
  • But personally I cannot take homo sexuality or lesbianism as a choice.

    এটা কেন অদিতি ? তারা সন্তানধারণ করতে পারেনা বলে ? ঠিক বুঝিনি।
  • debu | ***:*** | ১৩ এপ্রিল ২০১৩ ০৭:২৭90054
  • লেখা টা খুব ভালো, বক্ত্যোব্য বেশ পরিস্কার। ,dont expect much from the Asian double standard mined people. eU & USA are much liberal on this issue
  • | ***:*** | ০৪ জুন ২০১৩ ০২:৫১90057
  • পড়লাম।
  • | ***:*** | ০৪ জুন ২০১৩ ০২:৫১90056
  • পড়লাম।
  • | ***:*** | ০৪ জুন ২০১৩ ০২:৫১90055
  • পড়লাম।
  • Biswajit | ***:*** | ৩১ জুলাই ২০১৩ ০৮:১৪90058
  • লেখাটা পড়লাম। সত্যি বলতে কি শুরু করেছিলাম যতটা মন দিয়ে, মাঝামাঝি অবধি পৌঁছে, ততটা মনযোগ আর রইলো না। শেষ করলাম শেষ না করেই।
    বক্তব্য হয়ত সত্য কিন্তু সত্যর প্রকাশ সেরকম উপস্থাপনীয় লাগে নি আমার কাছে। অবশ্য এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।
  • Ranjan Roy | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ০৫:৪৪90060
  • অসাধারণ লেখা। লেখকের বক্তব্য ও দৃষ্টিকোণ স্বচ্ছ।
    আরো লিখুন। সহজে মানুষের সাথে মিশুন, নিশ্চয়ই সময় বদলাবে; বদলাচ্ছে।
  • রনজিত ঘোষ | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৫৬90059
  • অসাধারন লেখা।
    একটি ছেলে। নাম তার ছোটু। তার মা-পিসি তাকে সহ্য করতে পারে না। কারন সে একটু মেয়েলি। অবাক কান্ড।অথচ তার রোজগারের টাকায় তাদের খেতে কোন অসুবিধা নেই।
  • riddhi | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ১০:৫৭90061
  • @রুপন্করবাবু, যদি কাছেপিঠে থাকেন, "সমধর্মী সেজে" লাভটা কি ? কারুর ই ? এটা ক্লিয়ার হল না।

    ছেলে/মেয়ে স্যুটরদের জ্বালাতন এড়াতে? আমার পুরনো কলেজে । দুটো ইটালিয়ান ছেলে ছিল। এত হ্যান্ডু ছেলে আমিও বাপের জন্মে দেখিনি। তো তারা গে। তখন কিছু রিজেক্টেড পাবলিক রটিয়েছিল তারা ভান করছে। সেরকম কিছু?
  • Atoz | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০০90062
  • রিদ্ধি,
    দুটোই হ্যান্ডু? ঃ-)
  • Atoz | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ১১:০৮90063
  • রনজিৎ, রোজগারের টাকায় সে খাওয়ায় কেন? তাকে যারা দেখতে পারে না, সে তাদের রাস্তা দেখিয়ে দিতে পারে না অথবা নিজেই নিজের রাস্তা দেখে চলে যেতে পারে না? মিটে গেল!
  • riddhi | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৩৩90064
  • আররে হ্যাঁ, জোড়া হ্যান্ডু! সত্যি কথা বলতে, প্লাস মাইনাস পাঁচ বছরে যত ইটালিয়ান এসেছে, তারা সবাই উত্তমকুমারের ঠাকুর্দা। ইটালি সালা কি দেশ মাইরি। কিন্তু একটু গরীব টাইপ, তাই মায়া লাগে। হলিউডে ইটালিয়ান এমেরিকান একটারদের ধরুন!
  • riddhi | ***:*** | ১৩ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৩৬90065
  • এমেরিকাতে কি ছিড়ছি ভগবান জানে। আমাদের মত মানুষের জোগ্য জায়গা হল ইটালি। ভেনিসের নৌকোয় বসে অন্ক করব , তবেই না প্রকৃত ঘ্যাম
  • Atoz | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ১২:১৭90066
  • ইটালিয়ানদের দেখতে দারুণ, পুরুষ নারী সবাই চমৎকার।
    কিন্তু আমাদের রাজীব ---হায়--- সে আর কী বলবো---
  • Bhagidaar | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ১২:২১90067
  • এতজ! হাহাহাহ!
  • মোহর | ***:*** | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ০৩:৪৩90068
  • শোভন কে

    "লেখিকা বলেছেন যে তিনি সমকামি, কিন্তু অন্য কোন সমকামির সাথে মেশেন নি। তাহলে লেখিকা একশ শতাংশ সিওর হলেন কিভাবে?"

    আচ্ছা, আপনি নিজে সম/ অসম/ বিষম/ উভ-কামী/ প্রেমী/ ধর্মী ইত্যাদি কি ভাবে বুঝতে পেরেছিলেন?
  • অচেনা মেয়ে | ***:*** | ১২ এপ্রিল ২০১৯ ০৭:৩০90069
  • লেখাটি পরে খুব ভালো লাগলো
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন