৫
আসানসোল। পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় করদাতা অঞ্চল। মুঘল আমলে বর্ধমান রাজার অধীনে চলে এসেছিল। তারপরে নবাবরাও একে বর্ধমানের রাজার অধীনেই রেখেছিল। তখন বিস্তীর্ণ জঙ্গল আর রুক্ষ জমির বিস্তৃত এক অঞ্চল ছিল এটি। মধ্যে মধ্যে কিছু ছোট ছোট গ্রাম। নবাব মীর কাশেম ১৭৬০ সালে মীর জাফরের পরে নবাব হলে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিলেন বর্ধমান, চট্টগ্রাম আর মেদিনীপুর। এই অঞ্চলে নজর পড়ল ব্রিটিশদের। তারা দেখল যে এখানকার কিছু অধিবাসীরা কয়লা ব্যবহার করে। এই কয়লা আসে মাটির নীচ থেকে। হাজার হাজার বছর ধরে এমন করেই এ দেশের প্রথম দিকের বাসিন্দারা কয়লা তুলছে। ব্যবহার করছে লোহা বিশুদ্ধকরণ থেকে গেরস্থালির কাজে। শিল্পবিপ্লবী ব্রিটিশদের কাছে এ বড় খবর। সুতরাং খনির দখল প্রথমে চলে গেল তাদের হাতে। তারপরে এই খনি অঞ্চল একদিন কিনে নিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর। আফিঙ-এর ব্যবসায় লাভ হচ্ছিল অনেক তাঁর। কিন্তু চীনের জল ঘোলা হচ্ছিল তখন। বোঝা যাচ্ছিল যে কোনো সময় একটা যুদ্ধ বাধবেই বাধবে। ১৮৩৫-এ তাই পুঁজিকে সরাতে শুরু করেছিলেন তিনি। যুদ্ধটা বেধেছিল ১৮৩৯-এ। যুদ্ধে কয়লাও লেগেছিল বেশি বেশি কাজে। আসানসোল তৈরি হতে শুরু করেছিল।
আওরঙ্গজেব যখন আসানসোলে নেমেছিল তখন রাত। রেল স্টেশনের ডান দিকের রাস্তার ধারে তার গাড়ি থেমেছিল। কলকাতা থেকে টানা এসেছে গাড়িতে। চন্দন তখনো আসেনি। মোবাইলের ঘড়িতে তিনটে। চায়ের দোকানটা খোলা ছিল। চায়ের অর্ডার দিল সে। ড্রাইভার রমেশও খাবে। রমেশ খিদিরপুরের ছেলে। গাড়ির মালিকও সে নিজে। বার্তা চ্যানেলে তার গাড়ি খাটে। তাকে সন্ধেতে যখন অফিস থেকে অমর ফোন করলো তখনই সে বুঝে গেছিল যে কিছু একটা হয়েছে। সাধারণত অমর ফোন করে না। করে পলাশ। কিন্তু অমর ফোন করছে মানে বিশেষ কাজ। গাড়ি থেকে নেমে সে বনেটটা খুলে এঞ্জিনটা গরম করছিল। আওরঙ্গজেব আড়মোড়া ভাঙে। সারা রাস্তা সে কথা বলেনি। ঢুলেছে গাড়িতে বসে বসে। নইলে আবার ঘুম কখন হবে, আদৌ হবে কিনা কে জানে! এখন তার একটু পায়চারি করার ইচ্ছা জাগল। লাল চা হতে সময় নেবে। সে রাস্তাটা পার হয়ে চলল স্টেশনের দিকে। স্টেশন চত্বরটা একঝলক দেখতে ইচ্ছে হল তার।
ইতিহাসে তার আগ্রহ নেই। থাকলে সে জানত এই স্টেশন আর এই রেল লাইন ভারতের ইতিহাসের এক বিচিত্র খেলার সাক্ষী। ভারতের আর কোনো রেল স্টেশনের বা লাইনের এমন ইতিহাস নেই। প্রিন্স দ্বারকানাথ কয়লা খনির কয়লা পরিবহণ সমস্যা সমাধান নিয়ে ভাবতে ভাবতেই বিলেত গেছিলেন। তদ্দিনে রাজমহল আর রায়গঞ্জের অনেকগুলো খনি কেনা হয়ে গিয়েছে তাঁর। ১৮৪২-এ যখন বিলেতে গিয়ে ট্রেনে চড়লেন তখনি মাথায় খেলে গেল সমাধানের সম্ভাবনা। ১৮৪৩-এ কলকাতা ফিরে বানালেন কার এণ্ড টেগোর কোম্পানি। বিলেতে ম্যাকডোনাল্ড স্টিফেনসন বানিয়ে বসেছে ইস্ট ইণ্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি। দ্বারকানাথ চাইলেন বর্ধমান ও আসানসোলের জন্য লাইন। বর্ধমান কৃষি ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। অশেষ বাণিজ্য সম্ভাবনা রেলের। দ্বারকানাথ এই লাইনের জন্য এক-তৃতীয়াশ মূলধন সংগ্রহের প্রস্তাবও দিলেন স্টিফেনসনকে। প্রত্যাখ্যাত হয়ে বানালেন গ্রেট ওয়েস্টার্ণ বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি। আবার বিলেত গেলেন অনুমতি পেতে কোম্পানির বোর্ডের। ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানির ম্যানেজার স্টিফেনসন আর চেয়ারম্যান লার্পেন্ট বোর্ডে তাদের প্রভাব খাটালো। নেটিভ ম্যানেজমেন্ট-এর হাতে এমন গুরুত্বপূর্ণ লাইন তুলে দেওয়া যায় না এই ছিল তাদের বক্তব্য। দ্বারকানাথের ১৮৪৫-এর এই যাত্রা বিফল হল। দ্বারকানাথের মৃত্যু হল কিছুদিনের মধ্যেই। কার এণ্ড টেগোর উঠল নিলামে। কিছুদিনের মধ্যেই গ্রেট ওয়েস্টার্ণ বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি আর ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি মিশে গেল। গড়ে উঠল ‘ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’ এবং ১৮৫৫ তে হয়েও গেল বর্ধমান-কলকাতা লাইন।
দেশীয় শিল্পপতি ও দেশীয় শিল্পের রাস্তাটা এমনই। দ্বারকানাথ কারের নাম নিজের সঙ্গে জুড়েও সুবিধে করতে পারেননি রেলের ক্ষেত্রে। কিন্তু তার আগে অব্দি ব্যবসাটাকে প্রায় একচেটিয়া বানিয়ে বসেছিলেন। কয়লা তুলছিলেন তাঁরা, সে কয়লা যে স্টীমারে যাচ্ছিল নানা জায়গায় সেই স্টীমার কোম্পানির মালিকও তাঁরাই। ক্যালকাটা স্টীম টাগ অ্যাসোসিয়েশন কিম্বা ইন্ডিয়া জেনারেল স্টীম নেভিগেশন কোম্পানি দুটোরই ম্যানেজমেন্ট ছিল তাঁদের হাতে। বর্ধমান থেকে হাওড়ার নানা ঘাট ছিল তাঁদের দখলে। ছোট ডিঙি থেকে বড় নৌকো সব ছিল তাঁদের। সুতরাং প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিদের জমিছাড়া করতে সব রকমের প্যাঁচ কষতে তাঁরা দ্বিধা করতেন না। রেল লাইনের দখল না পাওয়ার এটা একটা বড় কারণ ছিল। একটা দেশ যারা দখল করেছে তারা মনোপলি রাখবে না তো রাখবে রাণির গুপ্ত প্রেমিক বলে গুজব যার নামে সেই দ্বারকানাথ?
দ্বারকানাথ নীল, কয়লা কি যৌনপল্লী সব থেকেই লাভ করেছেন। কেউ বদনাম দিতে পারবে না সে লাভ করায় তাঁর দেশের লোকদের আলাদা করে কোনো লাভ হয়েছে। বলতে পারবে না চাষাদের বাড়তি সুবিধে দিয়েছেন চাবুক কম চালিয়ে। বলতে পারবে না ব্রিটিশ শাসন চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এক মুহূর্তের জন্যও প্রার্থনা করেছেন। ব্রিটিশদের থেকেও বেশি ব্রিটিশ হয়ে সাম্রাজ্য রক্ষার দায় নিয়েছেন দরকারে। এমনকি একা একা না, দেশীয় কর্মচারি না – ইউরোপীয় পার্টনার, ইউরোপীয় কর্মচারি দিয়েই চালিয়েছেন ব্যবসা। তবু তত প্রিয় হতে পারলেন না। ব্যবসা এমন এক জায়গা এখানে প্রিয় শব্দ সকলের একটিই, আর তা হল মুনাফা। সুতরাং এটাই পরিণতি হওয়াই স্বাভাবিক। কে কত দক্ষ, কে কত অনুগত এ সব একটা পর্যায় অব্দিই কাজ করে। তারপরে যা কাজ করে তা হল পেশিশক্তি। তাকে স্থানীয়ভাবে বলে মাস্তান, আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বলে সামরিক শক্তি। তা এই আওরঙ্গজেব তো মুঘল বাদশাও না। ব্যবসা, সমাজনীতি, অর্থনীতি কি রাজনীতির সঙ্গে সামরিকনীতির সম্পর্কের কথা সে বুঝবে কী করে? যে অঞ্চল থেকে সে এসেছে, আর যে কাজে তাতে অন্য কার লাভ, কার ক্ষতি সে সবে তার দরকার কী? তার লাভ হচ্ছে কিনা তাই সে দেখবে।
চন্দনের আসতে বাকি আর দশ মিনিট। চা-টা শেষ হতে একটা সিগারেট ধরায় সে। গাড়ির পেছনের সিটে হেলান দিয়ে দরজাটা হালকা করে খুলে রেখে একটা সুখ টান দেয়। গলাটাতে জ্বলা ভাবটা এল। মুখটা এক নিমেষে কুঁচকে গেল তার। প্রচন্ড অম্বল হয়েছে। ঘুম নেই ঠিক মতন। তারপরে এত ধকল আর রাতের ঐ তরকা রুটি। ধুস্ শালা! রাজ্যটার যে কী হল কে জানে? সুখে শান্তিতে এখানে বসবাস করার উপায় নেই কোনো। শীত যাচ্ছে। হাওয়াতে এখনো ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব। কিন্তু রাজ্যের হাওয়া ঠাণ্ডা হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের কুঞ্জগ্রাম দিয়ে শুরু হয়েছিল এই গরম ভাবটা। ওখানে ‘হালিম গোষ্ঠী’কে জমি দেওয়া নিয়ে ঝামেলা শুরু হল। আজকে তো ভাঙ্গুরও একই হালে। সেখানে আবার ‘পাটা মোটোর্স’কে নিয়ে। সরকার বলছে লোকের চাকরি হবে শিল্পায়ন হলে। জমির মালিক আর জমির ওপরে নির্ভরশীলরা বলছে ন্যায্য মূল্য চাই। কখনো বলছে চাকরি চাই। আর সব ঐ বুদ্ধিজীবিরা আছে তারা বলছে ‘এস ই জেড’ চাই না। শিল্পপতিকে এক টাকায় জমি থেকে কর ছাড় সমস্ত সুবিধে দেওয়া হবে। শ্রম আইনটাও পর্যন্ত কাজ করবে না নতুন লাটবাহাদুরদের জমিদারিতে আর মানুষ পাবে কাঁচকলা এ সব চলবে না। দেশের মধ্যে একগুচ্ছ বিদেশি জমিদারি বানানো যাবে না। সরকার বলছে কৃষিতে আর কিছু নেই, সব শুধু শিল্পে আছে। শিল্প না হলে রাজ্য এক পা-ও এগোবে না। দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে রাজ্য প্রায়। বিরোধীরা বলছে চাকরির মিথ্যে বন্ধ করুন। যেখানে ভাঙ্গরের জমিতে সরাসরিই শুধু পনেরো হাজার লোক জড়িয়ে, পরোক্ষে আরো বেশি সংখ্যাটা – সেখানে চাকরি হবে কজনের? হাজার জনের হবে বড়জোর। অটোমেটেড কারখানায় তো সে আগের আমলের মতন হাজারে হাজারে চাকরি হয় না। এই তো দুনিয়ার বড় বড় মোটর কোম্পানিতে ধারাদ্ধার লোক ছাঁটাই হচ্ছে। আগে যে কারখানায় লোক লাগতো ধরা যাক বাইশ হাজার, এখন সেখানে এক হাজার হলেই চলে যায়। কেউ কেউ তো আরো এগিয়ে গিয়েছেন। বলছেন ইজরায়েলে তো রোবটে এখন চাষের কাজ করছে। প্যালেস্টাইনের পরিযায়ী শ্রমিকের উপর ভরসা করা যাচ্ছে না বলে সেখানে নাকি এখন রোবটের চাহিদা বাড়ছে।
কী সব কান্ড! দূর দূর। তাই কখনো হয়? সিগারেটটা ফেললো সে। এত এত লক্ষ লক্ষ চাষী আছে তারা কি মুখ দেখবে নাকি? দু এক জায়গায় কারখানা হবে, কিছু লোককে উঠে যেতে হবে, এ তো কতকাল ধরেই হচ্ছে। জমি তো আর আকাশে ফলে না। কেন, যখন শিল্প ছিল না এত বড় বড়, তখন মড়কে গ্রামের পর গ্রাম উজার হত না? কে দিত বাবা ক্ষতিপূরণ? রাজার কাছে চাইলে কেলিয়ে পাট করে দিত না? মাইরি, লোকে ভুলেও যায়। পা-টা সামনের সিটের উপর আরাম করে সবে মেলেছে চন্দনের বাইক এসে থামলো। চন্দন ঝা। যার জন্য সে মেদিনীপুর থেকে কলকাতা হয়ে এখানে এসেছে, যার হাতেই আছে তার সমস্যার সমাধান। অবশ্য তার সমস্যা বললে কিছুটা ভুলই বলা হয়। সমস্যাটা আসলে তরু দত্ত-র। তাকে সশরীরে সমাধানের জন্য আসতে হয়েছে, তরু আসতে পারবে না বলে। সে পা-টা নামিয়ে গাড়ির দরজাটা পুরো ফাঁক করে বেরোতে বেরোতেই চন্দন বাইক থেকে নামলো। হেলান দিয়ে বাইকে দাঁড়ালো। বাইকের এঞ্জিন কিন্তু চালু আছে।
-নোমোস্কার দাদা। আমি চন্দন ঝা।
ছবি দেখেছিল আওরঙ্গজেব। নিত্যপ্রিয় দেখিয়েছিল তাকে।
-আপনি তো আওরঙ্গজেব ভাই?
প্রতিনমস্কার করে ঘাড় নাড়লো সে। চন্দনের চেহারা কিম্বা মুখ কোনোটা দেখলেই বোঝার উপায় নেই যে তার নামে এত এত গল্প আছে। বেশ সরল সাদাসিধে চেহারা তার। কেমন একটা অবিশ্বাস্য লাগে মেলানোটা। সময় নিয়ে ভাবার অবকাশ পেল না আওরঙ্গজেব। তার আগেই চন্দন বললো,
- গাড়িতে না বাইকে যেতে হবে। উঠে পড়ুন।
এটা তো জানা ছিল না তার! অস্বস্তিতে পড়ে আওরঙ্গজেব। চন্দন দ্রুত বুঝে নেয়।
- গাড়িতে একটু অসুবিধে আছে। চিন্তা কোরবেন না। গাড়ি এখানেই থাক।
বলে তার দিকে না তাকিয়েই সোজা গাড়ির ড্রাইভারকে বললো,
-তুম রমেশ?
ড্রাইভার ঘাড় নাড়লো।
- ওকে। গাড়ি ইধরহি রাখখো। আধা ঘন্টা বাদ মেরা লড়কা আয়েগা, নাম শামসের। উস্কে সাথ যাকে নাস্তা-পানি কর লেনা। যব তক্ হাম লোগ না আয়ে তুম উসিকে সাথ রহেনা। হোটেল বাজুমে হ্যায়।
বলে আওরঙ্গজেবের দিকে তাকালো। বললো,
- সব ব্যবস্থা ঠিক আছে। টেনশন করবেন না।
ড্রাইভার এতক্ষণে একটু সামলে বলে উঠলো,
-লেকিন ইঁহা পার্কিং-
শেষ করার আগেই চন্দন বললো,
- ডরো মত্। গাড়ি ইঁহাসে হিলেগি ভি নহী। শামসের আনেকা বিচ আগর কোই আয়ে, মসলন পোলিশ-উয়োলিশ, তো মেরা নাম কহে দেনা।
বলতে বলতেই থেমে গেল সে। এদিক-ওদিক তাকিয়ে আচমকা একটা সিটি মারলো রাস্তার ডান দিকে তাকিয়ে। রিক্সা নিয়ে একজন বসেছিল সেখানে। সে তাকালো। চন্দন হাত নাড়তে সে তাড়াতাড়ি রিক্সা থেকে নেমে এল। কাছে এসে বললো,
- সেলাম ভাই।
- এ দেখ, ইয়ে মেরি গাড়ি হ্যায়। উধম সিং কো কহে দেনা ইয়ে এঁহি রহেগি। শামসের আনে তক ইয়ে বাচ্চেকো জরা দেখকে রাখনা। ঠিক হ্যায়?
সে মাথা নাড়লো দ্রুত।
- আব যা!
সে ঘুরে চলে যেতে যাচ্ছে যখন তখন চন্দন আবার ডাকলো তাকে। বললো,
- ঔর শুন, ভাড়ে মে আব না যাইয়ো। বাদ মে শামসের সে লে লেনা!
রিক্সাওয়ালা মাথা নাড়লো। তার চোখ বেশিক্ষণই মাটির দিকে। চন্দন তাকে যেতে বলার সঙ্গে সঙ্গে সে ঘুরে চলে গেল। বাইকের ইঞ্জিন তখনো জেগে। চন্দন কথা বলতে বলতে এর মধ্যেই চেপে বসেছিল। এক্সিলেটর হাল্কা হাল্কা ঘোরাচ্ছিল। রিক্সাওয়ালা চলে যেতেই আওরঙ্গজেবকে বললো,
- উঠে পড়ুন। আর সময় নেই।
আওরঙ্গজেব গাড়িতে ঝুঁকে তার ব্যাগটা হাতে নিল। ড্রাইভারের দিকে একবার তাকিয়ে উঠে পড়লো বাইকের পেছনের সিটে। সে বাইক চালাতে অভ্যস্ত, কিন্তু পেছনে বসতে তার অস্বস্তিই লাগে। কিন্তু উপায় নেই। সামনের রাস্তাটা রেল স্টেশনের আলো ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে একটা চৌমাথার দিকে। বাইক চলতে শুরু করল।
[ধারাবাহিক]