এই লোকসভা নির্বাচন কি শেষ নির্বাচন? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৩ মে ২০১৯ | ১৭১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
ভারতের নির্বাচন চলছে। ৩ দফা হয়ে গেছে আরও ৪ দফা বাকি আছে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না ভারতের নির্বাচন কি পদ্ধতিতে হয়। ভারতের নির্বাচন হয় এফপিটিপি বা ফার্স্ট পাস্ট দা পোস্ট পদ্ধতিতে। অনেকেই ভাবছেন এটা আবার কি বিষয়? সহজ করে বললে এই শব্দটার মানে দাঁড়ায় এই পদ্ধতিতে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশী ভোট পাবেন তাঁকেই জয়ী হিসেবে মান্য করতে হবে ভোটারদের। সে যদি কোনও ভোটার তাঁকে ভোট নাও দেন তাও। এই পদ্ধতিতে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ভোট হয়। দেখা গেছে যে যে সব দেশ বিভিন্ন সময়ে ইংরেজদের কলোনি ছিল যেমন কানাডা, সুদান, কেনিয়া , ভারত এবং অন্যান্যরা এখনো এই পদ্ধতিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই পদ্ধতিতে অসুবিধা কোথায় এবং এর সঙ্গে ইভিএমের কি সম্পর্ক?
প্রশান্ত কিশোর- বাংলার নির্বাচন এবং তারপর : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১০ জুন ২০২১ | ৩৪৫২ বার পঠিত
আজকের সময়টা তথ্যের সময়, যাঁর কাছে যত তথ্য, তিনি তত বেশি শক্তিশালী। যেভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই ‘দিদিকে বলো’ প্রকল্প। তারপর সেই তথ্য সংশ্লেষণ করে, অঞ্চলভিত্তিক ভাগ করে, সমস্যা চিহ্নিত করে, আবার সেই মানুষটির কাছে পৌঁছনোর প্রক্রিয়াটিই এই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা করেছেন এই নির্বাচনের শেষ অবধি। এর পাশাপাশি, নির্বাচনী প্রচারে, কোন নেতা কীভাবে কোন জায়গায় কতটুকু বলবেন, কোন সাংবাদিক সম্মেলনে কোন কথা বলা হবে সেই সমস্ত কিছু আগে থেকে ঠিক করা ছিল, সৌজন্য আইপ্যাক। কোন জায়গায় কে প্রার্থী হবেন থেকে শুরু করে কাকে দলে রাখা উচিত হবে না, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাকে দলে কতটুকু স্থান দেওয়া হবে, সমস্ত কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেছে এই সংস্থা। আরো অনেক বিষয় হয়তো কাজ করেছে। ‘বিজেপিকে ভোট নয়’ যাঁরা প্রচার করেছিলেন তাঁদের হয়তো অবদান আছে কিন্তু দিনের শেষে আইপ্যাকের ভূমিকা বড় নির্ধারক হয়ে দাঁড়াল।
‘এক দেশ এক রেশন’ শুধু বাদ দেওয়া নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়ারও চক্রান্ত : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৮ জুন ২০২১ | ৪১২০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ উগান্ডার উদাহরণ দিয়ে লেখা শুরু করা যাক। কোটি কোটি উগান্ডাবাসী সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ তাঁদের অনেকেরই ডিজিটাল পরিচয়পত্র নেই। উগান্ডা সরকারের আইন অনুযায়ী এই ডিজিটাল পরিচয়পত্র জাতীয় সুরক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, কিন্তু সেই ব্যবস্থাকে যখন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে তা থেকে বহু মানুষ বাদ পড়ছেন।
আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ নজরবন্দি : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২২ জুলাই ২০২১ | ৪৩৯৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
এখানেই একটা মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন এসে যায়। গোপনীয়তা মানে কোনও কিছু লুকোনো নয়, উল্টে প্রতিটি নাগরিকের একটি নিজস্ব জায়গা থাকাটাই গোপনীয়তা, যা কোনওভাবেই অন্য কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। যাঁরা ভাবছেন যে তাঁর ব্যক্তিগত ফোনে তো এই স্পাইওয়ার সরকার ঢোকায় নি, তাহলে তাঁর এই বিষয়ে না ভাবলেও চলবে, তাঁরা সম্পুর্ণ মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। যেহেতু কোনও একটি ব্যক্তির সমস্ত কিছুর নাগাল পাওয়া সম্ভব এই স্পাইওয়ারের দৌলতে, সুতরাং তাঁর কন্টাক্ট তালিকারও নাগাল পাওয়া এমন কিছু কঠিন নয়, সেই সুত্র ধরে তাঁদের অর্থনৈতিক লেনদেনও যে সরকার দেখছে না, তা কি নিশ্চিত করে বলা যায়?
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন: কেন, কী উদ্দেশ্যে? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২৫১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
১৪ কোটি রেশনের ব্যাগে তাঁর ছবি ছাপা হচ্ছে, ৫ কোটি পোস্টকার্ডে লেখা হচ্ছে ‘ধন্যবাদ’। তারপর দেশের নানান প্রান্তের বিভিন্ন বুথের অন্তর্গত পোস্ট অফিস থেকে সেই পোস্টকার্ড ঠিক সময়মত যাতে তাঁর কাছে পৌঁছয়, তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তাঁর দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের ৭১টি গঙ্গা-সংলগ্ন ঘাট পরিষ্কারের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ৭১ বছরে পদার্পণ করবেন। তিনি যে সে মানুষ নন, তিনি আমাদের প্রধান সেবক নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি।
বামেদের প্রাসঙ্গিক হতে গেলে অন্যরকম অনুশীলন দরকার : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ০৪ এপ্রিল ২০২২ | ৩৩৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
গতকাল যখন পার্ক সার্কাসের একটি খাবারের দোকানের সামনে জমায়েত হচ্ছিলেন বেশ কিছু এনআরসি বিরোধী কর্মীরা, তখন পুলিশ এসে বলে ওই স্থানে জমায়েত করা যাবে না। কারণ, ওই জমায়েতের নাকি কোনও অনুমতি নেই। অথচ নির্বাচন কমিশনের থেকে প্রাপ্ত অনুমতিপত্র দেখানো হলেও তাঁরা বলেন, অনুমতিতে বলা নেই যে ঐ স্থানে জমায়েত হয়ে মিছিল শুরু করা যাবে। আর কথা বাড়ালে গ্রেপ্তার করা হবে। কোনও কথা বাড়ানোর সুযোগই দেওয়া হল না, সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হলো প্রসেনজিত বসু, মনজর জমিল, ইমতিয়াজ আলি মোল্লা, অমিতাভ চক্রবর্তী-সহ দশজনকে। ঘটনাচক্রে আমরা কয়েকজন তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে। পুলিশ এসে আমাদের বলল, এইখানে জমায়েত করা যাবে না। আমরা উল্টে বললাম, দু’জন মানুষ কলকাতার বুকে দাঁড়িয়ে কথা বলাও অপরাধ নাকি? এটা কি উত্তরপ্রদেশ? ...
আমরা কি রোজ চক্রাকারে ঘুরতেই থাকবো, কৃত্রিম সমস্যার মধ্যে? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১১ মে ২০২২ | ২০৫৩ বার পঠিত
যাঁদের সংবিধান রক্ষা করার দায়িত্ব, তাঁরা যদি তাঁদের নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বা বলেন মেয়েরা হিজাব পরে আসতে পারবে না, তখন যাঁরা ঘৃণার রাজনীতির ফেরি করে চলেছেন তাঁদের সুবিধাই হয়। কোনও মানুষ কী খাচ্ছেন, বা কী পরছেন, তা দেখার বদলে রাজনৈতিক নেতারা যদি একটু হলেও কত মানুষ খেতে পাচ্ছেন না, বা কত মানুষের পরিধানের জন্য একটির বেশি দুটি জামা নেই, তা নিয়ে চিন্তিত হতেন, তা হলে কি ভালো হতো না?
সত্যিই কি কাকতালীয়? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : শিক্ষা | ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৭৫৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
পদ্ম আমাদের জাতীয় ফুল, সেটা আমরা অনেকেই জানি, কিন্তু পদ্ম যে একটি রাজনৈতিক দলেরও নির্বাচনী প্রতীক, সেটা হয়তো অনেক বেশি মানুষ জানেন। ছোটদের ঐ পত্রিকায় পদ্ম ছাড়া অন্য যে ফুলের ছবি বাচ্চারা এঁকেছে, সেই ফুলের সঙ্গে আবার অন্য আরো একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীকের সঙ্গে অদ্ভুত সাদৃশ্য। বিষয়টি শুধু ছবি হলে একরকম ছিল, কিন্তু যেহেতু বাচ্চারা এঁকেছে, তাই এই সম্পর্কে কথা বলা জরুরী। বাচ্চারা এমনিতে যা দেখে, তাই তাঁদের মনে গেঁথে যায়। শিক্ষিকারা হয়তো বাচ্চাদের ফুলের ছবি আঁকতে বলেছেন, কিন্তু বাচ্চারা ঐ ছবিই এঁকেছে, যা তারা বিভিন্ন রাস্তাঘাটে, বিভিন্ন ফ্লেক্স, ব্যানার, দেওয়ালে দেখছে এবং প্রতিনিয়ত দেখে চলেছে। যাঁরা মনস্তত্ব নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা ভালো বলবেন হয়তো এই বিষয়ে, কিন্তু বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রযুক্তি নির্ভর নির্বাচন আসলে গণতন্ত্র হরণ নয় তো? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৪০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
ভারতের নাগরিকেরা কি তবে আর ভারতীয় গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসব, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইছেন না? অন্তত নির্বাচন কমিশনের তথ্য তো তাই বলছে। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং তারপরে যে কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভোটদানের হার ক্রমশ কমছে। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মৌ চুক্তি অবধি করেছিল, যাতে সেই সব সংস্থাতে কর্মরত মানুষেরা ভোট দিতে অনীহা প্রকাশ না করেন। যে সমস্ত কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তাঁদের নামের একটি তালিকা অবধি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। বিরোধীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই বন্দোবস্ত তো ‘বাধ্যতামূলক’ ভোটদানের প্রক্রিয়া, কোনও গণতন্ত্রে একজন মানুষ, নানান কারণে ভোট নাও দিতে চাইতে পারেন, তা’বলে কি একজন মানুষকে ভোটদানে অংশ নিতে বাধ্য করা যায়?
বিজেপির দুর্নীতি- কিছু তথ্য, কিছু কথা : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬৬৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী তখনও ক্ষমতায় আসেননি, সারা দেশে তখন একটাই শ্লোগান ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, নিজেও চুরি করবো না, অন্যকেও চুরি করতে দেবো না। সারা দেশের সমস্ত মানুষ তখন একযোগে একটাই কথা বলছেন, একমাত্র নরেন্দ্র মোদীই পারবেন, দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে। মানুষের মনে তখন অনেক আশা, গত সত্তর বছর ধরে, কংগ্রেস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলো যেভাবে চুরি করে, দেশটাকে ফোঁপড়া করে দিয়েছে, তাতে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীই এখন একমাত্র পারেন দেশকে রক্ষা করতে। তাই শ্লোগান উঠেছিল, ‘আব কি বার, মোদী সরকার’, অর্থাৎ এবার চাই মোদী সরকার। কিন্তু আজকে যখন আমরা ২০২৪ সালের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি, তখন কি মনে হচ্ছে, দুর্নীতি কমেছে?
সংসদে কিছু যুবকের ঢুকে পড়া: মূল যে কথাটা উঠছে না : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৩৮৪ বার পঠিত
কেন ঐ যুবকেরা সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ে, ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ শ্লোগান তুলেছিলেন সেই প্রশ্নও সামনে চলে আসতে পারে। একদিকে বিজেপির ছোট বড় নেতারা, বিষয়টিকে বলছেন, শুধুমাত্র নিরাপত্তাজনিত খামতির ফলে এই ঘটনা ঘটেছে, অন্যদিকে যে যুবকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের ইউএপিএ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। যদি ধৃত যুবক-যুবতীদের মধ্যে কোনও একটি নামও সংখ্যালঘু মুসলমান হতো, তাহলে কি শাসকদল এবং তাঁদের পোষা গণমাধ্যম এই রকম চুপচাপ থাকতো? তখন কি এই আক্রমণকে সামনে রেখে, তাঁরা হিন্দু মুসলমানের মেরুকরণের রাজনীতি করতেন না?
আজকের গণশত্রু কারা? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৩৬৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
আজকে হয়তো ঐ ছবির মতো কোনও ডঃ গুপ্তা নেই, কিন্তু যাঁরাই আজকে কুম্ভের জলকে স্নানের এবং পান করার অনুপযুক্ত বলছেন তাঁদের দিকেই যোগী আদিত্যনাথ আঙুল তুলছেন। সঙ্গীত পরিচালক বিশাল দাদলানি যোগী আদিত্যনাথকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন যদি ঐ জলের কোনও সমস্যা না থাকে, তাহলে তিনি এবং তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্যরা যেন ঐ জল পান করে দেখান। চিকিৎসক এবং বৈজ্ঞানিকরা যে জলকে মুখে তোলার অযোগ্য বলছেন, সেই জল পান করলে কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
ভারতীয় সাংবাদিকতার জন্য আসুন এক মিনিট অন্তত নীরবতা পালন করি : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৪ মার্চ ২০২৫ | ৭৮৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
অনেকে হয়তো ভাবছেন, ভারতের স্থান কত? ২০২৩ সালে ভারতের স্থান ছিল ১৬২ আর ২০২৪ সালে ভারত ১৫৯তম স্থান পেয়েছে ১৮০টি দেশের মধ্যে। আসলে কোনও দেশের সরকারই গণতান্ত্রিক নয়। ভারতে যদি হিন্দুত্ববাদী শক্তির উত্থান হয়ে থাকে, তুরস্কে তেমনি মুসলমান মৌলবাদী শক্তি ক্ষমতায় আছে, এই সূচকে যাঁদের স্থান ভারতের একটু আগে- ১৫৮। এ যেন কে কত খারাপ হতে পারে তার প্রতিযোগিতা চলছে। বিশ্বের বেশীরভাগ সরকার সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেটের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে, সেই ইন্টারনেট কারা ব্যবহার করবেন তার সীমা নির্ধারণ করেছে, অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে এবং সংবাদ ও তথ্য বহনকারী বার্তাগুলিকে দমন করেছে। ভিয়েতনামের সাংবাদিকদের বক্তব্য যা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে তাকে পদ্ধতিগতভাবে বন্ধ করা হয়েছে৷ চীনে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি সাংবাদিককে আটক করার পাশাপাশি, সরকার বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা চ্যানেলের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ করেছে। অনলাইন বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণের জন্য সেন্সরশিপ এবং নজরদারি নীতি প্রয়োগ করে এবং সংবেদনশীল বা দলীয় লাইনের বিপরীত বলে বিবেচিত তথ্যের বিস্তার সীমিত করেছে। কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী সাংবাদিকদের অপমান, অসম্মান এবং হুমকি দিয়ে তাদের প্রতি ঘৃণা ও অবিশ্বাসকে উস্কে দেওয়ার কাজটাও করে চলেছে। অন্যরা মিডিয়া ইকোসিস্টেম দখলের আয়োজন করছে, তা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মিডিয়ার মাধ্যমে হোক, বা বেসরকারি মালিকানাধীন মিডিয়া বন্ধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা অধিগ্রহণের মাধ্যমে হোক। জর্জিয়া মেলোনির ইতালি (৪৬ তম) - যেখানে ক্ষমতাসীন সংসদীয় জোটের একজন সদস্য দ্বিতীয় বৃহত্তম সংবাদ সংস্থা (এজিআই) অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করছেন – তার ফলে ঐ সূচকে এই বছর পাঁচটি স্থান নেমে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রায়শই প্রচারের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে চলেছে, এমনকি বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার উসকানিও দিচ্ছে। সূচকে মূল্যায়ন করা দেশগুলির তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি (১৩৮টি দেশ) বেশিরভাগই রিপোর্ট করেছেন যে তাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা প্রায়শই প্রচার বা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার সাথে জড়িত ছিল। এই সম্পৃক্ততাকে ৩১টি দেশে "পদ্ধতিগত বিষয়" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ড সংযোগ করলে কি ভুয়ো ভোটার কার্ডের সমস্যা মিটবে? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৫ মার্চ ২০২৫ | ৪৮৩ বার পঠিত
ভুয়ো এপিক নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, নির্বাচন কমিশন তখন তাঁদের গাফিলতি ঢাকার উদ্দেশ্যে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ডেকে মিটিং করে ঘোষণা করলো, তাঁরা আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযোগ করিয়ে এই ভুয়ো ভোটার কার্ড সমস্যার সমাধান করতে চায়। প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সমাজ মাধ্যমে এই বিষয়টিকে স্বাগত জানানো হলো। সংসদের বিরোধী দলনেতা নিজে টুইট করে লিখলেন, অবশেষে নির্বাচন কমিশন তাঁদের অভিযোগকে মান্যতা দিল এবং আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযোগ ঘটানোর মধ্যে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয়। সঙ্গে অবশ্য তিনি আরও একটা কথা যুক্ত করলেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে কোনও ভোটার যেন বাদ না পড়েন, তা দেখতে হবে এবং সাধারণ মানুষের এই সংযোগ প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হন, সেদিকে নজর দিতে হবে।
মন্দির প্রতিযোগিতা - লাভ ক্ষতির খতিয়ান : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০৩ মে ২০২৫ | ১৩৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
আসল কথাটা হলো দৃশ্যগতভাবে রাজনৈতিক ভাবে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী দু’টি দল ঠিক এক ভঙ্গিতে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা লঙ্ঘন করে মেতে উঠল সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মের মন্দির নির্মাণে। অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী, আর দীঘায় মুখ্যমন্ত্রী— কেউ নিজের হাতে পুজো করে, আর কেউ যজ্ঞে আহুতি দিয়ে শঙ্খ বাজিয়ে— নিজের হিন্দুত্বের প্রমাণ পেশ করলেন। কে কত বড় হিন্দু এ যেন তার প্রমাণ দেওয়ার প্রতিযোগিতা। ভারতের সংবিধান যে রাষ্ট্রকে এইরকম কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয় না, দেখা গেল যে, সে কথাটি মনে রাখার দায় কোনও তরফেরই নেই। কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মাচারণ করতেই পারেন, কিন্তু সেটা কী প্রকাশ্যে করতে পারেন? অবশ্য এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলতেই পারেন, তিনি শুধু অনুকরণ করেছেন মাত্র। দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি যদি করতে পারেন, একই ধরনের কাজ, তিনি তো চুনোপুঁটি মাত্র। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সমস্ত ধর্ম-বর্ণের মানুষ যোগ দিয়েছেন জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে। যদি সেটাও সত্যি হয়, তাহলেও কিছু বদল হয় কি? অনুষ্ঠানটির ধর্মীয় চরিত্র তাতে পাল্টায় কি? হিন্দু ধর্মের মন্দির কোনও মন্ত্রবলে ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে না। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন পহেলগাঁও তে ধর্ম দেখে দেখে সন্ত্রাসবাদীরা মানুষকে মেরেছে, যখন তার পরবর্তীতে পুরো দেশ জুড়েই নতুন করে সংখ্যালঘু-বিদ্বেষ তীব্র হয়ে উঠছে, যখন ওয়াকফ আইন নিয়ে বিরোধিতা এবং তারপরে মুর্শিদাবাদে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে মুসলমানরা অতি বিপন্ন বোধ করছেন, ঠিক সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মন্দির উদ্বোধন করে কী বার্তা প্রেরণ করলেন, তা বোঝার মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তাঁর নিশ্চিত ভাবেই আছে। যে মুসলমানরা এতদিন তাঁকে উজাড় করে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের কী মনে হয়েছে, তা একবারও তিনি কি ভেবেছেন?
ইউটিউব স্ট্রাইক- ছোট ছোট বিকল্প সংবাদমাধ্যম বন্ধ করাই কি উদ্দেশ্য? : সুমন সেনগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ৩০ মে ২০২৫ | ৭৪৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
ঐ নির্বাচনে প্রচলিত গণমাধ্যম, যাঁদেরকে পরিভাষায় আমরা গোদী মিডিয়া বলে থাকি, তাঁরা এই সত্যিটা বুঝতে পারছে, যে তাঁদের প্রোপাগান্ডা আর মানুষকে আকৃষ্ট করছে না এবং এই ধরনের ইউটিউব চ্যানেলগুলো বন্ধ করার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে বেশী বেশী দর্শক যে আঞ্চলিক এবং হিন্দি ভাষার ইউটিউব চ্যানেলগুলো দেখছেন, তা যেনতেন প্রকারে বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র সরকারি আইন দিয়ে যদি বন্ধ না করা যায়, তাহলে বিকল্প পদ্ধতি নিতে হবে। প্রয়োজনে ঐ ইউটিউবারদের চ্যানেলগুলোকেই উড়িয়ে দিতে হবে, এবং তার জন্য যদি ইউটিউবকেও কাজে লাগাতে হয়, বা অন্য যেকোনো পদ্ধতি নিতে হয়, নিতে হবে। এক্ষেত্রে এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বা এএনআই এবং প্রেস ট্রাষ্ট অফ ইন্ডিয়া বা পিটিআই মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। এই দুটি সংবাদ সংস্থাই মূলত সরকারের সবরকম খবর করে থাকে, তাঁদের থেকেই অন্যান্য সংবাদমাধ্যম খবর সংগ্রহ করে থাকে। যাঁরাই ঐ খবর সংগ্রহ করেন, তাঁরা স্বত্ব বাবদ বেশ কিছু টাকা দিয়ে থাকেন এএনআই এবং পিটিআইকে। এটাই নিয়ম।
অনেক ইউটিউবার যারা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিষয়বস্তু তৈরি করেন তারা অভিযোগ করেছেন যে এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) অনুমতি ছাড়াই পরবর্তী ক্লিপগুলি ব্যবহার করার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা যুক্তি এবং কপিরাইট আইনের উভয় দিকই দেখা প্রয়োজন।