স্ট্যাটাস নাই তো কিছুই নাই : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | বাকিসব : নেট-ঠেক-কড়চা | ১২ আগস্ট ২০১৩ | ১৩৮০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৬
সাধারণভাবে আমরা জানি পদার্থের স্ট্যাটাস বা অবস্থা তিন প্রকার। কঠিন তরল এবং বায়বীয়। কিন্তু মানুষের স্ট্যাটাসের সংখ্যা অসংখ্য। এই বিচিত্র দুনিয়ায় বিচিত্র স্ট্যাটাসের উৎপত্তি হচ্ছে প্রতিদিন। ফেসবুকের কল্যাণে সেই স্ট্যটাসগুলো মনের কৃষ্ণগহবর থেকে বেরিয়েআসছে নির্দ্বিধায়। এই ফেসবুক স্ট্যটাস নিয়ে একটি গবেষণা করা যাক। কথায় আছে যার স্ট্যাটাস নাই তার কিছুই নাই। আবার বাংলা ছবির ডায়লগের মত ডায়লগ আছে, চৌধুরী সাহেব আমার ঘর নাই,বাড়ি নাই, কিন্তু স্ট্যাটাস আছে। এখন আপনার মেয়ে বিয়ে দিবেন কি না বলেন?
আমাদের অপ্রকাশিত গল্প : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৫ এপ্রিল ২০১৯ | ১৯২৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
এই কথাটি বলেছিলেন আমাদের সবচেয়ে প্রাচীন গুরু। যিনি তার ধ্যানে পেয়েছিলেন কিছু জিনিস, যা তার মতে সত্যের কাছাকাছি। ওঃ ঈশ্বর! এসব কথা বাইরে প্রকাশ করার রীতি নেই। কিন্তু আমাদের ভেতরটাকে টুকরে খাচ্ছে অন্ধকারের বিষপোকা। যদিও বাইরে থেকে হয়ত বুঝা যাচ্ছে না তথাপি আমাদের ভেতর ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে, আমাদের অন্তর নিরন্তর অনুভব করছে এক ধরনের ভয়াবহ অস্বস্থি। তাই আমরা বলে ফেলছি যে, আমাদের সেই গুরু হঠাৎ একদিন তার ধ্যানে পেয়েছিলেন মানুষের আত্মার কোটা শেষ হয়ে গেছে। এখন আত্মাহীন মানুষেরা জন্ম নিবে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা তার কথা শুনেছিলেন এবং তারা স্বভাবতই বিশ্বাস করেন নি। এমন উদ্ভট কথা কখনো কী হয় আর? তারা একে হেসে উড়িয়ে দেন, অতঃপর তারা রাগে ফেটে পড়েন এবং সেই মহান গুরুকে সবাই মিলে ধরে নিয়ে ফেলে দেন এক অন্ধকার কুয়ায়। আমাদের ধারনা তিনি সেই অন্ধকারে এখনো বসে আছেন, ধ্যানে আছেন।
বাতাসের সাথে আমি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০৬ জুন ২০১৯ | ১৭০৯ বার পঠিত
আমার কথা শেষ করতে পারলাম না। ওপাশ থেকে ঝাঁঝালো কণ্ঠ আমাকে বলতে লাগল, তোমার মত এত সেলফিশ আত্মকেন্দ্রিক লোক আমি দেখি নি। সারাদিনে একটা ফোন দেবার সময় তোমার হয় না। স্বাভাবিক কোন কিছুই তোমার মধ্যে নাই। স্বাভাবিক আবেগ, স্বাভাবিক মানুষের অনুভূতি। মিনিমাম দায়িত্বজ্ঞান বলতে যে জিনিস মানুষের থাকে, সেটাও তোমার নাই। আমি এতদিন, এতোটা দিন ধরে তোমাকে সহ্য করে গেছি। তোমার অন্যায়, তোমার এইসব পেইন দেয়া আমি সহ্য করে গেছি। কিন্তু আর নয়। এরকম কোন সম্পর্ক চলতে পারে না। এরকম কোন সম্পর্ক আসলে হয়ই না। তোমার সাথে হয়ত আমার কোন সম্পর্কই ছিল না। এবং থাকলে আজ থেকে, এই মুহুর্ত থেকে আর থাকবে না। একটা সেলফিশ, আত্মকেন্দ্রিক ইডিয়টের সাথে আমি কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না, আজ সারাদিন ভেবে এটাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুতরাং, তোমার সাথে আমার সব কিছু আজ, এই মুহুর্তে, এখানেই শেষ।
ওপাশ থেকে ফোন রেখে দিল নারী কণ্ঠ।
সহযাত্রী : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ২২৭৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
এরপর আমার কেন জানি মনে হল তাকেও জিজ্ঞেস করা দরকার কোথায় যাচ্ছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?ভদ্রলোক বললেন, রশিদপুর। এখানে এই জগন্নাথপুরে আসছিলাম এক কাজে কিন্তু কাজটা হয় নাই। বাবা, আপনার বাড়ি কি এই জায়গায়?জ্বি। আপনার বাড়ি?আমার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। গাড়ি চলতে শুরু করল। ভদ্রলোক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা শুরু করলেন। কী করি, দেশের বাইরে যাচ্ছি কি না, ইত্যাদি। দেশের বাইরে যাবার প্রশ্নটা তিনি করলেন কারণ ভদ্রলোক জানেন জগন্নাথপুর একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। তার প্রশ্নের কারণে আমাকেও প্রশ্ন করতে হল, আপনি এখানে এসেছিলেন কোথায়?ভদ্রলোক বললেন, সে এক লম্বা কাহিনী। একটা গল্প বলি?বললাম, বলেন।
বংশগতি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২৩০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
স্যার, এইবার আমি আমার পিতার কথা বলব, আমার মনে হচ্ছে যে মানুষের জীবনের সাথে তার পিতার জীবন জড়িত, ফলে আমার বিষয়ে বলতে গেলে আমার পিতার কথা আসবে, আমার বিষয়ে বুঝতে আমার পিতার বিষয়ে বুঝতে হবে। আপনি কি মনে করেন এই ব্যাপারে? বলব কি স্যার?
হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলুন।
আমার পিতার নাম ছিল আরশাদ মিয়া। তবে লোকে তাকে ডাকত কাবিল কবিরাজ নামে। তিন গ্রাম গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়াইতেন আর অনেক অনেক লতাপাতা সংগ্রহ করতেন। আর আমাদের বাড়ির পাশে ছিল সামান্য ধান্য ক্ষেত। সেখানে চাষবাসও করতেন অল্প অল্প। আচ্ছা এই মুহুর্তে, এই ধান্য জমির কথা স্মরণে আসায় আমার দাদাজির কথা মনে হলো আমার। তিনি আমার পিতার পিতা। ফলে তিনিও আমার সাথে সংযুক্ত, তাই ধান্য জমি সংশ্লিষ্ট অদ্ভুত ঘটনাটি আমার বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, বলব কি স্যার?
ওকে বলুন।
ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ক আরেকটি গবেষণা : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২১ মে ২০১৫ | ১৫৪০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন চলে গেল। একজন রবীন্দ্র গবেষক হিসেবে কিছু একটা লেখা দরকার। আমার রবীন্দ্রগবেষণার শুরু ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি নিয়ে এক ধ্রুপদি গবেষণার মাধ্যমে যা ২০১১ সালের মে মাসে এখানেই প্রকাশিত হয়েছিল। ধ্রুপদী শব্দের অর্থ বিজ্ঞ পাঠকেরা নিশ্চয়ই জানেন কিন্তু যদি কেউ থেকে থাকেন যিনি জানেন না তার জন্য বলছি ধ্রুপদী শব্দের অর্থ হল গুরুগম্ভীর, চিরায়ত, ক্লাসিকাল ইত্যাদি। উল্লেখ্য, শব্দের অর্থ আমি এইমাত্র অনলাইন অভিধানের সাহায্য নিয়ে জানলাম। এর আগে শব্দটির সাথে পরিচয় ছিল কবি হেলাল হাফিজের কবিতার খাতিরে,
হয়তো তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি
নয় তো গিয়েছি হেরে
থাক না ধ্রুপদী অস্পষ্টতা
কে কাকে গেলাম ছেড়ে।
সাত্তার সাহেব এবং একটি সবুজ ঝাঁকড়া আম গাছের নির্দিষ্ট কিছু দুঃখ : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৪ অক্টোবর ২০১৫ | ২৪৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
সাত্তার সাহেব সামান্য শব্দহীন হাসি হাসলেন। আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘পায়রা সম্পর্কিত তোমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা কি?”আমরা হঠাৎ এই প্রশ্নে বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম। আমরা কোন উত্তর দিতে পারলাম না। এবং এক পর্যায়ে বললাম,” ক্ষমা করবেন। আমাদের পায়রা সম্পর্কিত নিজস্ব কোন চিন্তাভাবনা নেই।” সাত্তার সাহেব তার সিগারেটে শেষ টান দিয়ে তা ফেলে দিলেন এবং ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “পায়রা হচ্ছে পৃথিবীর আত্মার প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি পায়রা আসলে পৃথিবীর আত্মার এক একটি অংশ। মানুষের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে পায়রাদের জীবন। প্রতিটি মানুষের আত্মা আসলে এক একটি পায়রা অথবা কোন এক পায়রার প্রতিচ্ছবি যা পৃথিবীতে বসবাসরত এবং আকাশে উড্ডয়নরত অনেক অনেক পায়রার প্রভাবে প্রভাবান্বিত। এইসব পায়রাযুক্ত জীবন হয়ত যাপনকারী ব্যক্তি অনুভব করতে পারে না কিন্তু কারো অনুভব করা কিংবা না করার উপরে পৃথিবীর অমোঘ সত্যগুলোর কিছু আসে যায় না।”
হামিদুর রহমানের নোটবুক থেকে : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৫ মে ২০২০ | ৩২৭২ বার পঠিত
জীবনে এতো রহস্য কেন এটা নিয়ে আমি ভেবেছি। আমার এই লেখাগুলি হয়ত সেইসব রহস্য কিনারা করার এক চেষ্টা। আমি একসময় খুবই যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতাম। সেইসময়ে, বা তার কিছু পরে রফিকুন্নবীর সাথে আমার দেখা। এরপর থেকে রহস্য নিয়ে আমার ভাবনা চিন্তার অনেক বদল হয়েছে।
রফিকুন্নবী বলেন, কী মিয়া এইসব কী কও! মিস্ট্রি থাকব না? তাইলে থাকলো কী! মিস্ট্রি ইজ দি ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট, ইন্ট্রিগ্রাল বুঝো তো, মানেই হইল ধরো মূল একটা জিনিস, অব লাইফ। তাই মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না।
আমি বললাম, সলভ হয় তো। অনেক হয়। শার্লক হোমসীয় কার্যকলাপ হয় তো।
রফিকুন্নবী তখন বিরক্তির সাথে আমার কথা উড়িয়ে দেন। বলেন, ধুর মিয়া! মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না, একটা গেলে ঐ জায়গায় আরেকটা আসে। সলভ দিয়া মিস্ট্রি বিষয়ে ভাবা হইল একটা ফান্ডামেন্টাল মিসটেক। ভাববা রিপ্লেসমেন্ট দিয়া। মানে ঐ রহস্য সইরা কোনটা আসলো।
একবার দাঁড়াও বন্ধু এবং : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১৪ অক্টোবর ২০২০ | ৫২৫২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
টেবিলে আমার স্ত্রী সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা স্বরে জিজ্ঞেস করল, “শ্রাবন্তী কে?”
আমি অবাক হয়ে গেলাম এই প্রশ্নে। আমিও জিজ্ঞেস করলাম, “শ্রাবন্তী কে?”
এবং এরপরেই আমার মনে পড়ল শ্রাবন্তী কে।
এ নিয়ে আমাদের কথা কাটাকাটি হতে লাগল। আমি আমার বউকে বোঝাতে পারছিলাম না যে শ্রাবন্তী আমার লেখার একটা চরিত্র।
লেখার ড্রাফট দেখিয়েও আমি তাকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না।
সে বলল, অনেকবার সে বেইজমেন্টে এসে দেখেছে আমি এই মেয়ের সাথে কথা বলছি।
তার কথা মিথ্যে নয়। আমি এরকম অনেক কথা বলেছি ওই মেয়ের সাথে। এবং সৎ ভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, ওই মেয়ের প্রতি আমার বড়ো রকম দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। কারণ সে ঠিক আমার মনের মতো। এটা কি আমার লেখার চরিত্র সেই জন্যে? কেবল লেখার চরিত্র হলে সে কীভাবে উঠে আসবে? এইভাবে হাসবে, আর আমার পাশে বসে আমারই লেখা নিয়ে এমন সব কথা বলবে যা আমি নিজেও কখনও ভাবিনি? এসব নিয়ে আমি নিজেও দ্বিধায় ছিলাম।
এর মধ্যে শুরু হল বউয়ের সাথে ঝামেলা।
একদা এক রাত্রি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : ইদের কড়চা | ২৮ মে ২০২১ | ৩২০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আমি ঘুরে তাকালাম। টিল্ডা সিগারেট ফুঁকছে। তার গায়ে কোন কাপড় নেই। বিছানার চাদর মেঝেতে গড়াগড়ি খায়। ধোঁয়া তার মুখ ঢেকে দিচ্ছে। আমি কাঁপা কণ্ঠে বললাম, কিন্তু আমি যে স্পষ্ট দেখলাম? টিল্ডা বলল, সে আসে। কারণ এইরকম কিছু তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ছিল। যখন ওইদিনের মত পরিস্থিতি তৈরি হয় এখানে, যেন সময়ের পুনরাবৃত্তি হয়, তখন সে আসে, আবার চলে যায়। আমি দেখতে পাই না। কিন্তু আমার ভাবতে ভাল লাগে যে সে আমার কাছাকাছি আছে। অন্তত এইভাবে হলেও।
বাসায় চুরি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৯ অক্টোবর ২০২১ | ৩০০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
তিনি জানালেন, আমাদের বাসায় যে চুরি হইছে, আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন। আমার বড় ভাই হাসানুর রহমান সাহেবের স্ত্রী যেইভাবে ঘটনাটি বর্ননা করছেন, আপনারা দেখেছেন উনি কিরকম মিথ্যাবাদী। উনি বলতে চাইছেন আমার ছোট ভাই মিজানুর রহমান কোনভাবে এই চুরির সাথে দায়ী। কিন্তু এইটি পুরা মিথ্যা কথা। আমার ভাই মিজানুর রহমান পাঁচ অক্ত নামাযী মানুষ। তিনি বিড়ি সিগারেট কিছুই খান না। আমরা যখন ছোট আছিলাম, তখন ঝড়ের দিনে আমগাছের নিচে আম, জামগাছের নিচে জাম পড়ে থাকত, অনেক পড়ে থাকত। আমার ভাই মিজানুর রহমান মিজান কোনদিনই ঐসব আম জাম হাতে নেন নাই। তিনি কীভাবে চুরি করবেন? তাও নিজের ঘরে তিনি কেনোই বা চুরি করতে যাবেন? আপনারা কস্মিনকালে শুনেছেন কেউ নিজের ঘরে চুরি করে?
মালেক আব্দুর রহমান : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ০১ নভেম্বর ২০২২ | ২৫০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ছবি আঁকতে আমি পার্কে যেতাম প্রায়ই, এবং সবদিনই আমার সাথে মালেক আব্দুর রহমানের দেখা হতো। মালেক আব্দুর রহমান একজন সত্তুর বছর বয়স্ক লোক, এবং বলাবাহুল্য যে, অন্যসব মানুষের ব্যাপারে আমার যেমন কোন আগ্রহ ছিল না তেমনি তার ব্যাপারে আমার কোনরূপ আগ্রহ ছিল না। তিনি রীতিমত আমাকে আমার কাজে বিরক্ত করতেন।
এই বিরক্তি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমি তার গল্পে ঢুকে যাই। সেই গল্পই এক্ষণে প্রকাশ করছি।
ফকির ফয়জুল্লাহ - প্রথম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১০ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪০৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
তালাশ মাহমুদ বললেন, বেশি বুজরুকি দেখালে, আর বেশি বললেই যুক্তি শক্ত হয় না। আপনার ম্যাডামের সব কেচ্ছাকাহিনী শেষ করে দেব সামনের লেখায়। তাই সময় লাগছে। এর মধ্যে এখন আবার আরেক জরুরী কাজে যেতে হচ্ছে। সেখানে ক'দিন থাকতে হবে, পরিস্থিতি কেমন হবে, কীরকম সময় পাব জানি না। যদি সময় পাই তাহলে ওখানে বসেই লেখা শেষ করে আপনাকে পাঠিয়ে দেব। চিন্তার কিছু নেই। একশো ভাগ নিশ্চিত থাকুন, আমি জিতবই। কারণ আমার আগ্রহ সত্যে।
সবুর খান বললেন, তাহলে আগে কিছু বলুন, দুয়েকটা পয়েন্ট।
তালাশ মাহমুদ বিরক্ত স্বরে বললেন, কী আর বলব, এসব রেট্রোফিটিং, কিছু জেনারালাইজড অনুমান করে, তারপর যেটা মিলে ওইটারেই আপনারা সবাই মিলে সামনে আনেন। এসব চালাকি তো নতুন না।
ফকির ফয়জুল্লাহ - তৃতীয় পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১২ এপ্রিল ২০২৪ | ১০১৭ বার পঠিত
আশরাফ আলী অবাক হলেও মেলাতে চেষ্টা করলেন এই মহিলা কীভাবে তার মনের কথা বুঝতে পারল। একে কি তিনি আন্ডার এস্টিমেট করেছেন? একসময়ে কংগ্রেস করেছেন, এখন মুসলিম লীগের নেতা, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন প্রধান শিক্ষা পেয়ে থাকলে সেটা হল, কাউকে কখনো আন্ডারএস্টিমেট করতে নেই। এই ভুল তিনি করতে চান না।
কিন্তু মহিলা বুঝল কীভাবে? এরকম যদি সে সব বুঝে ফেলে, অতিপ্রাকৃতিক কোন ক্ষমতাবলে, তাহলে তো এর সাথে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলে লাভ নেই। প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা বলে ফেলাই যুক্তিসংগত।
ফকির ফয়জুল্লাহ - চতুর্থ পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | ৮২৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
কাজের লোক তালাশ মাহমুদকে এসে বলল আশরাফ আলী খান তার কক্ষে গিয়ে দেখা করতে।
তালাশ মাহমুদ আশরাফ আলী খানের কক্ষের সামনে গিয়ে শুনলেন ভেতরে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। আশরাফ আলীর সাথে মুখে মুখে কথা বলছেন তার স্ত্রী গোলাপজান, আর আশরাফ আলী ধমকাচ্ছেন। এইরকম কিছু ঘটতে তালাশ মাহমুদ আগে দেখেন নি। তিনি অবাক হলেন। তিনি দেখে এসেছেন তার ভাবী কখনো ভাইয়ের সামনে উঁচু স্বরে কথাই বলেন না।
একটু বিব্রত হয়েই দরজায় শব্দ করে তালাশ মাহমুদ বললেন, ভাইজান, আসবো?
গোলাপজান তখন চলে গেলেন।
আশরাফ আলী বললেন, হ্যাঁ তপু আসো।
ফকির ফয়জুল্লাহ - পঞ্চম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০৬০ বার পঠিত
সম্পদ বা ক্ষমতা কোনটাতেই তালাশ মাহমুদের আগ্রহ নেই। পুর্বপুরুষের জমিদারীর কোথায় কী আছে এগুলি জানার ব্যাপারেও কোনোদিন তার আগ্রহ হয় নি। তার আগ্রহ কেবল রহস্যে, এবং রহস্য উদঘাটনে। এর জন্য দেশ দেশান্তরে ছুটে যেতেও তিনি পিছপা হন না।
আশরাফ আলী খানের কথা শুনে তিনি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছেন এখানে তার কোন কাজ নেই। ফলে, একটা সুযোগ বের করেই কেটে পড়তে হবে।
সম্ভবত, আশরাফ আলী খান এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি এমনিতে থাকবেন না, তাই ঐ ম্যাডামকে নিয়ে এসেছেন। যাতে ওই দ্বৈরথকে কেন্দ্র করে তালাশ মাহমুদ রয়ে যান।
হাসনাহেনার উপরে নীল আলোর ব্যাপারটাতে তালাশ মাহমুদ আগ্রহ বোধ করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু একজন মাত্র সাক্ষী ঘটনার, এবং তার নিজেরই অবস্থা এখন ঠিক নেই, ফলে এটাকে বেশী পাত্তা দেবার মত বিষয় মনে হলো না। মোটকথা, তালাশ মাহমুদ চান না আশরাফ আলী খানের রাজনীতির ঘুটি হতে।
ফকির ফয়জুল্লাহ - ষষ্ঠ পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১০২৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
ফকির ফয়জুল্লা বলতে থাকলেন, এই ফকির ফয়জুল্লা সময়ে সময়ে, স্থানে স্থানে ঘুইরা এইখানে আসছে, আর তোরা তারে বাইর কইরা দিবি? কয়দিনের জিন্দেগী তদের? কারে কী কস? সব ক'টারে একবারে খাইয়া ফেলবো!
পুরা জঙ্গল যেন গম গম করছিলো ফকির ফয়জুল্লার স্বরে।
উপস্থিত সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলো।
তালাশ মাহমুদের দিকে তাকিয়ে ফকির ফয়জুল্লাহ বললেন, এদের নিয়া যান। কী বালের তদন্ত করেন আপনে? কোন প্রমাণে এখানে আসছেন দলবল নিয়া? প্রমাণ থাকলে আইসেন, আমি নিজেই ধরা দিব।
তালাশ মাহমুদ বললেন, কিন্তু আপনে কে? এই গ্রামে কী করছেন?
ফকির ফয়জুল্লা বললেন, আমি কে এইটা জানতে কি আসছেন দলবল নিয়া? আমি ফকির ফয়জুল্লা, আমি স্থানে স্থানে ঘুরি, সময় থেকে সময়ে গতান্তরিত হই। আমার কাজ শেষ হওয়ার আগে আমারে কেউ সরাইতে পারব না। এইখান থেকে দূর হন।
ফকির ফয়জুল্লা উত্তরের অপেক্ষা না করে, তাদের তাচ্ছিল্য করেই ভেতরে চলে গেলেন।
ফকির ফয়জুল্লাহ - সপ্তম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১০০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
তালাশ মাহমুদ ভ্রূ কুঁচকে বললেন, আপনে এসবে বিশ্বাস করেন?
দ্বিজদাস বললেন, বিশ্বাস অবিশ্বাস পরের ব্যাপার। কিন্তু ব্যাপারগুলা তো আপনারই কাজের বিষয়। ঠিক কি না?
তালাশ মাহমুদ বললেন, তা ঠিক। কিন্তু আমি যুক্তি দিয়ে বিচার করে সমাধান করতে চেষ্টা করি। সব সময় যে পারি সমাধানে যেতে এমন না।
তালাশ মাহমুদ খেয়াল করলেন দ্বিজদাস একটু ইতস্তত করছেন। পুলিশের একজন বিভাগীয় প্রধান কালু সর্দারের খুনের জন্য এই গ্রামে এসেছেন তালাশ মাহমুদ বিশ্বাস করেন না। তার আসার অন্য কোন কারণ আছে। তালাশ মাহমুদ সেটা বুঝার চেষ্টা করছিলেন।
দ্বিজদাস এই সময়ে বললেন, পৃথিবীতে ভালোর শক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে মাহমুদ সাহেব। সব আপনার যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এই যুদ্ধটা না লাগলেও হতো। তাছাড়া আমাদের দেশের দিকেই দেখেন, কেমন অশান্ত পরিস্থিতি। ঢাকায় বড় ঝামেলা হবে আভাস পেলাম। স্যারের এই সময়ে ঢাকায় থাকা দরকার। স্যারকে অনুরোধ করলাম। কিন্তু তিনি এখানে একটা বড় আয়োজনে আটকা পড়ে গেছেন। আপনি কি উনাকে একবার রিকুয়েস্ট করবেন আমাদের হয়ে?
তালাশ মাহমুদ বললেন, আমার কথা তো উনি শুনবেন না। আর এখানের আয়োজন একাই সামাল দিচ্ছেন। তাও, আমি বলে দেখব। ঢাকায় কী নিয়ে ঝামেলা হবে বলছেন?