এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  কাব্য

  • বিদিশা সরকার এর "হুক্কা বার"

    Malay Roychoudhury লেখকের গ্রাহক হোন
    কাব্য | ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০০০ বার পঠিত
  • 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13
    বিদিশা সরকার-এর ‘হুক্কা বার’

    মলয় রায়চৌধুরী

    বিদিশা সরকার আমাকে উৎসর্গ করেছেন কবিতার বই ‘হুক্কা বার’। রবীন্দ্রনাথের কবিতার বইয়ের নামগুলো এরকম : সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, গীতাঞ্জলি,বলাকা, পূরবী, মহুয়া, কল্পনা, ক্ষণিকা, পুনশ্চ, পত্রপুট, সেঁজুতি, ভগ্নহৃদয় ইত্যাদি যেগুলোকে এখন বলা হবে উনিশ শতকের কাব্যিক নামকরণ। শক্তি চট্টোপাধ্যায় চল্লিশটির বেশি কাব্যগ্রন্হ প্রকাশ করেছেন ; কয়েকটি কাব্যগ্রন্হের নাম : হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য, ধর্মে আছো জিরাফেও আছো, অনন্ত নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকারে, হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান, ঈশ্বর থাকেন জলে ইত্যাদি, যে নামগুলোকে আধুনিক বাংলা কবিতার গতানুগতিক কাব্যিক চৌহদ্দির বাইরে বলা যাবে না। বিদিশা সরকার কাব্যগ্রন্হের নামকরণে পরিচিত চৌহদ্দির বাইরে বেরিয়ে গিয়ে রাখলেন ‘হুক্কা বার’।



    অনন্য শিরোনাম ভিতরে যা আছে তার ইশারা না দিয়ে বর্তমান ভাষা–সমাজের সঙ্গে কবির সম্পর্ক প্রকাশ করতে চায়। কাব্যগ্রন্হের নামকরণ একটি মিথস্ক্রিয়া। কবিতা-বিশেষের মাধ্যমে যোগাযোগের সময়, অংশগ্রহণকারী পাঠকদের জন্য শুধুমাত্র তথ্য বিনিময়ই নয়, একটি সাধারণ কৌশল পরিকল্পনা করার জন্য একটি "ক্রিয়া বিনিময়" সংগঠিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অন্যদের সাথে মিথস্ক্রিয়া, আমরা সাধারণত পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের কৌশল বেছে নিই। মানুষের মিথস্ক্রিয়া বৈচিত্র্যময়। কাব্যগ্রন্হের জন্য, সেই বইয়ের একটিমাত্র কবিতার শিরোনাম কি পুরো বইয়ের সাথে কথা বলতে পারে?  কবিতার বইতে তা এক টুকরো সম্পর্ক। কবি অবশ্যই চাইবেন যে পাঠকদের কাছে নামটি স্মরণীয় হোক। 



    বইয়ের নাম পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। সুতরাং, এটি একটি কবিতার বইয়ের সাফল্যে কাজ করে। এ কারণেই অনেক কবি কবিতার বইয়ের শিরোনামের ধারণা নিয়ে চিন্তা করতে বেশি সময় ব্যয় করেন। কেউ কেউ একটি কবিতার বইয়ের জন্য এক ডজন নাম ভেবে নিয়ে  সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ও কালখণ্ডটির উপযোগী একটি নাম বাছাই করেন। বিদিশা সরকার সেই কাজটিই করেছেন। তাঁর কবিতা যেমন হাল আমলের গতানুগতিক কাব্যিক চাল আর ভাবনার বাইরে, তেমনই কাব্যগ্রন্হের নামটি।



    বিদিশা সরকার  এমন এক ধরনের কবিতা লেখেন যা   কয়েকটি শৈলীগত এবং বিষয়গত প্ররোচনার দ্বারা কবিতার মস্তিষ্ককে উজাগর করে রাখে। আমার মনে হয়েছে কবিতাগুলো প্রায়শই এমনভাবে লেখা হয়েছে যা আকারে বেশ ভঙ্গুর  এবং বাক্যের অন্তর্গত চেতনাকে চিন্তা বা জৈব কথা বলার প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত করা হয়েছে। বিদিশার কবিতা স্কুলপাঠ্য  কবিতার মতন ঝরঝর করে পড়া এবং বোঝা কঠিন হতে পারে এবং  বর্তমান কালখণ্ডের অভিজ্ঞ পাঠকের জন্য কবিতা-বিশেষকে  উদ্দেশ্যমূলকভাবে উপস্হাপন করা হয়েছে। বিদিশা সরকারের ব্যক্তিগত জীবনের গোপন রহস্য  কবিতাগুলোকে  প্রায়ই জটিল বাস্তবতার  থিম হিসাবে কাজ করে এবং প্রায়শই  অস্তিত্বগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করে। বিদিশা সরকার তাঁর মনের অস্হিরতা উপস্হাপনের জন্য শব্দক্রম এবং পছন্দকে যে স্বকীয়তা দিতে চেয়েছেন তা কোনওকোনও পাঠকের মনে হতে পারে জটিল বা বোঝা কঠিন কেননা  এই ধরনের কবিতার আখ্যান চেতনা শৈলীর বারবার ব্যাহত স্রোতে লেখা যা তাঁকে পরাবাস্তববাদীদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি নিজের মস্তিষ্কের বক্তার চিন্তা বা শব্দ অনুসরণ করেছেন।অনেক কবিতায় তা ইচ্ছাকৃত আবার অনেক কবিতায় স্বতঃসারিত।



    "হুক্কা বার" শব্দটি কিছু পাঠকের জন্য  বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে, যদিও তাঁর কবিতাগুলির অন্তর্গত ধারণাগুলি বোঝা মোটামুটি সহজ। "বিদিশা সরকারের কবিতা"  একটি শৈলী নির্দেশ করে যা এখন পর্যন্ত প্রচলিত বাংলা কবিতার গতানুগতিকতাকেঅনুসরণ করেছিল, কবিতার “মানে” দাবি করেছিল, অংশবিশেষের ব্যাখ্যা দাবি করেছিল। বহু পাঠক খেয়াল করেন না যে বাঙালির সমাজের মতন কবিতার ক্ষেত্রেও কাউন্টার কালচারাল চিন্তাভাবনার  ফলে নতুন ধরনের শৈল্পিক অভিব্যক্তি জরুরি হয়ে উঠেছে। “হুক্কা বার” বইয়ের  কবিতাগুলো স্বাভাবিকভাবেই অস্থিরতার বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করেছে। লাইন বিরতি এবং কাঠামো বিশৃঙ্খলা  আপাতদৃষ্টিতে দ্বৈত-অর্থময় হতে পারে, যদিও সাধারণত অস্বাভাবিক বিরতির   উদ্দেশ্য আছে। যদি ধারণাগুলো  লাইন এবং বিরাম চিহ্নের বিভাজনের মাধ্যমে কবিতার গতানুগতিক আঙ্গিকে প্রকাশ করা হত, তাহলে বর্তমান পশ্চিমবাংলার  বিশৃঙ্খল আকারহীনতা নির্দেশ করতে পারতো না।  কবিতাগুলোর রূপ এই ধারণাকে শক্তিশালী করে যে আঁটোসাঁটো কাঠামো আদপে অর্থহীন এবং ভেতরে-ভেতরে কুরে খেয়ে ফেলা ব্যবস্হার জন্য তাঁর তৈরি কাঠামো প্রকৃত বার্তা দিতে পারছে। তাঁর থিমগুলো পাঠককে তার স্বাচ্ছন্দ্য অঞ্চলের বাইরে ঠেলে দেওয়ার এবং বিশ্বকে নতুন উপায়ে বিবেচনা করার প্রয়াসে ব্যবহৃত হয়েছে।



    আগে মনে করা হতো একটি গভীর খাদ মানুষের জ্ঞান এবং মানব প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ভাগ করে দেয়। এই বিভাগের যুক্তি অনুসারে, ‘ঘটনা’ হল পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের এলাকা, যখন কিনা ‘মূল্যবোধ’ হল ধর্ম ও শিল্পের এলাকা; শরীর এবং মস্তিষ্ক হল বিজ্ঞানীদের দ্বারা অধ্যয়ন করবার মালপত্র, আর মন ব্যাপারটা এমন এক আধা-রহস্যময় বাস্তবতা যা সরাসরি বিষয়গত অভিজ্ঞতা দ্বারা বোঝা যায়। বর্তমান কালখণ্ডে জ্ঞান সংগঠিত করার জন্য এইগুলো আর কবি-চিন্তকদের ব্যবহার্য উপায় নয়।বাংলা কবিতার আলোচনায়, বিভাজটির যুক্তির পরিসরে, চিন্তার একটি প্রক্রিয়াকে অর্থ উৎপাদন করার জন্য আরও সক্ষম হিসাবে দেখা হয়: তা হলো বৈজ্ঞানিক মন। কিন্তু আক্ষরিক, যৌক্তিক, বৈজ্ঞানিক মন হল বাহ্যিক –- তা একটি অদ্ভুত, ব্যতিক্রমী জ্ঞানের প্রণালী।অতএব যা প্রয়োজন তা হল একটি তৃতীয় পথ: খাদটিতে  নিজেই নেমে পড়া, অথবা একটি লুকিয়ে-থাকা মহাকাব্যিক জ্ঞানের গভীরে নামা, এবং বুঝতে পারার একটি সম্পূর্ণ নতুন উপায় বিকাশ করা যা মনের প্রকৃত গতিবেগকে মান্যতা দেয় অর্থাৎ - কল্পনার দৌড়ঝাঁপ। ব্যাপারটা কিন্তু অদ্ভুত, কেননা কল্পনা হল জীবের পরিবর্তিত পরিবেশে সর্বাধিক আঁকড়ে ধরার জন্য তার বাস্তববাদী প্রচেষ্টা।



    এতাবৎ কবিতার আলোচনায় মানুষের ইন্দ্রিয় রসায়নের ক্রিয়াকলাপের প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত হিসাবে ব্যবহৃত হয় এই মানদণ্ড আর এটা  নিজেই জ্ঞানের উদাহরণ হিসাবে রয়ে গেছে, সেই সঙ্গে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কবিতা ব্যাখ্যায় গৌরব খুঁজে পেয়েছে। বিদিশা সরকার তাঁর ‘হুক্কা বার’ বইয়ের কবিতাগুলোয় এই মানদণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এমনকি, ২০১৯ বইমেলায় প্রকাশিত তাঁর ‘কাসেমের ঘরবাড়ি’ কাব্যগ্রন্হেও এই চ্যালেঞ্জ কিঞ্চিদধিক দেখা যায়। মনোবিজ্ঞান মনের নিমজ্জিত অযৌক্তিক দিকগুলিকে স্বীকার করেছে এবং অন্বেষণ করেছে। কিন্তু কবিতার ব্যাখ্যায় এর তেমন প্রভাব পড়েনি। কবিতায় যুক্তিভাঙন বা লজিকাল ক্র্যাকের গুরুত্বকে বহুদিন আগে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন সমীর রায়চৌধুরী।



    কিন্তু কল্পনা কি? কল্পনা রসায়ন যেমন নিজেই কল্পনা করে। আমরা যদি কল্পনাকে নিছক মনের একটি অনুষঙ্গ হিসাবে বিবেচনা করি, তবে আমরা এর গতিশীল সতত ক্রিয়ান্বয়ী দিকটি দেখতে পাবো না : এই রসায়ন তার পরিবর্তিত পরিবেশে সর্বাধিক আঁকড়ে ধরার জন্য জীবের বাস্তববাদী প্রচেষ্টার অংশ। অনেকগুলি মস্তিষ্ক-প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র আছে, যেমন উপলব্ধি, আবেগ, অনুপ্রেরণামূলক তথা জ্ঞানমূলক ক্ষেত্র, স্মৃতি, চিত্র উপস্থাপনা, নির্বাহী পরিকল্পনা এবং আরও অনেক কিছু থেকে এটি যেভাবে নিজেকে জড়িয়ে নেয় তা থেকে কবিতা পাঠকের  ভুল বোঝারও সম্ভাবনা রয়েছে। কল্পনাশক্তিকে ছড়িয়ে দেন বিদিশা সরকার। তবে কল্পনাকে শুধুমাত্র মনের একটি অনুষঙ্গ হিসাবে দেখলে ভুল হবে,  এটি প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতা এবং প্রয়োগের একটি মস্তিষ্ক-ভিত্তিক প্রণালী। এটির একটি অনৈচ্ছিক এলাকা আছে ( যেমন মনের উড়ুউড়ু ভাব এবং স্বপ্নদুঃস্বপ্ন দেখা) এবং একটি স্বেচ্ছাক্রিয় এলাকা আছে (সচেতন লক্ষ্য-নির্দেশ দ্বারা পরিচালিত)। 



    জন্ম থেকেই, আমাদের মন শুনতে থাকা গল্প, চোখে দেখা ঘটনা এবং ছবিগুলো দিয়ে আচ্ছন্ন হয়ে যায়, তবে আমরা 'বাস্তব জীবন'কেও দেখি মূলত কল্পনাপ্রসূত নির্মাণের মাধ্যমে যা খুব কমই স্বীকার করা হয়। কল্পনাপ্রসূত জ্ঞানগুলো বাস্তব-সময় উপলব্ধির সাথে সমান্তরালভাবে ঘটতে পারে কিংবা তারা বর্তমান সময়ে উপলব্ধির আগে এবং পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে কবিকে ঘাঁটাতে পারে। এর মানে হল যে মানুষ একই সাথে একটি বাস্তব 'এখন' এবং একটি কাল্পনিক 'দ্বিতীয় মননবিশ্ব' অনুভব করে।  কল্পনা ব্যাপারটা, বিদিশা সরকারের ‘হুক্কা বার’ পাঠের সময়ে, প্রণালীর ভেতরে প্রণালী  হিসাবে বোঝা যেতে পারে :  মানুষের পক্ষপাত ( হয়তো স্বামীর, স্বামীর প্রেমিকার), কবির নিজের চোখেদেখা বা জানতে পারার ব্যাকরণ (এছাড়াও সঙ্গীত, নৃত্য, ইত্যাদি), আমাদের রাজনৈতিক দলাদলি, সাহিত্যিক গোষ্ঠীবাজি, জীবনের মানের খোঁজ এবং সামাজিক জীবনের জন্য আমাদের ভার্চুয়াল রিহার্সাল স্পেস তৈরি করে।





    পর্যটকের জীবনে সরাইখানা
    আর
    মাধুকরীর উপার্জনে অচিন পাখি
    দিগন্তকে আক্ষেপ বলেনি –
    তুমি পরিপূর্ণ হলে
    আমি জানলায় বসে রামধনু আঁকব —



    বাস্তু ঘুঘু’র জন্য ছড়ানো দানায় যে বিকেলের ব্যস্ততা
    তার জন্য অবসরের জানলা খোলা থাকে —
    আমি নিকনো উঠোনে আলপনা ভাবি।



    সাইকেল রিক্সার পথগুলোতেই যে সব হাঁটে
    অবলম্বনের জন্য একটা লাঠি
    দীর্ঘায়ু
    সংবিধান সংশোধনে যাদের কিছুই আসে যায় না —



    প্রতিবাদের রক্তে সমবেদনা দেখিনি –
    রঙ সম্পর্কে কিছু অর্থহীন বাতিক
    দুটো চেয়ার বাদ দিয়ে বসলে
    আমি দু’পক্ষে সুবিধাবাদী হতে পারিনি —
    মুঘলসরাই স্টেশনে তুমি জল খেতে নেমেছিলে,
    আমি জল কিনেছিলাম গয়ায়,আর
    পাণ্ডাদের জেরক্স কপি!
    প্রেতশিলায় দাঁড়িয়ে পাপজন্মের অভিসম্পাতকে
    বাস্তবিক ভেবে মনে মনে বলেছিলাম— আরও ঘুমের বড়ি?
    তুই সত্যি সত্যি মরেছিস তো?



    বিয়ের ওড়না দিয়েই ঝুলেছিল উমা দি —
    ভিড় ঠেলে একদিনই অমিয় পুরুষ হয়েছিল
    বনসাইয়ের জীবনে
    তারপর অমিয় ওয়েড’স শ্রীলেখা —
    নকল প্রজাপতি
    ঠিক দুর্বোধ্য কবিতার মতো
    জন্মের ঠিক ঠিকানাহীন টুনির জোনাকি!
     
    পতন

    সেই ক্ষীণ তটিনীটি আদ্যক্ষরেই শত বিভাজিকা। জলসেচের প্রয়োজন বুঝে ক্ষেত খামারের ক্ষরার গল্প জনে জনে বাটোয়ারা শেষে ফিরে এলে মরশুমি আদিম সভ্যতায়। তখনও ঘুম জড়ানো, আলস্যের গিঁট খুলে মহামায়াতলায় বসে থাকা – ভনিতা আর পূর্বরাগের ছটায় যখন কোনও নদীই বোধগম্য নয়, তখন প্রসাদী ফুলে বীতরাগ অহেতুক নয়। গঞ্জনার পাশে বসে থাকে অঞ্জনা। তুমি তাদের কাউকেই চেন না। সাধ মিটলে যে আর আসবে না।

    এক ডুবে স্নান সেরে এসে দেখি সারা গায়ে শাপলা জড়ানো। চুল চুইয়ে চুইয়ে মেয়াদি জল, না জ্বর! অজুহাতের কাছে ধরা পড়ে গেলে ভৈরবীতলায় ধর্না। মনস্কামনারা জামিনে খালাস। তোমার হাসির সঙ্গে পূরবের হাসির কত মিল, অথবা তোমার পাল তোলা আসমান- জমিন! নিষিদ্ধ জীবন থেকে ফিরে যাচ্ছ ভিটের রাখাল। শুধু বললে না, পূরবের বাপটা কে!!

    শেষে ‘হুক্কা বার’ ব্যাপারটা আলোচনা করা যেতে পারে। হুঁকো নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দের শৈশবের এক গল্প আছে। স্বামীজীর বাবার কাছে নিত্যই যাতায়াত ছিল নানা সম্প্রদায়ভুক্ত ও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মক্কেলের। জাতি-ধর্মের বিচারে এদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা হুঁকোর ব্যবস্থা ছিল। বালক নরেন্দ্রনাথ একদিন প্রত্যেকটা হুঁকোয় টান মেরে পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলেন, অন্য জাতের মানুষের হুঁকো ব্যবহার করলে জাত খোওয়া যায় কি না। ভারতে জাঠরা তাদের খাপ পঞ্চায়েতে সবাই মিলে একটা হুঁকো থেকেই টান দেয়। হুক্কা বার খোলা হয়েছে বিভিন্ন শহরে, যেগুলোকে আরবরা বলে শিশা। আমি দুবাইতে গিয়ে একটা হুক্কা বারে সুগন্ধিত অম্বুরি তামাক ফুঁকেছি। ভারতে হঠাৎ হুক্কা বার বন্ধ করার চাপ দিতে আরম্ভ করেছে রাজনীতিকরা, যারা বিড়ি পাতার ব্যাবসাদার কিংবা সিগারেট কোম্পানিতে যাদের শেয়ার আছে। 


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13
  • কাব্য | ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিদিশা সরকার | 2405:201:8002:8a89:cc00:adeb:9566:***:*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩৭514444
  • মলয় রায়চৌধুরী (; দাদা 'র ) আলোচনায় আমি আপ্লুত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন