দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১২ জুন ২০২২ | ২২৫৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
মিষ্টির রসে ডুবে থাকা মাছি উঠে আসতে পারে না সেই রসকুণ্ড থেকে। ডানা, পা, শুঁড় রসে ভারি। নিয়তির হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে অন্ধের মতো এদিক ওদিক ঘোরে।আয়ু থাকলে সে বাঁচে আরও কিছুদিন। কিছুদিন আরও স্বাধীনভাবে জীবনকে নেড়েচেড়ে দেখে নেয়।কিন্তু তার দৃষ্টির ঘোরাফেরা একটা নির্দিষ্ট সীমায়, জীবনকালও সেই গণ্ডির ভেতরেই সীমাবদ্ধ। অধিকাংশ মানুষের জীবনই এই। এই অঞ্চলের মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়, বরং নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবাই একরকম। নিশ্চেষ্ট, উদ্যমহীন।খেয়েপরে অর্থ উপার্জন করার আত্মকেন্দ্রিকতার বাইরে হাজার অপমান আর অসম্মানেও তারা বোবা। চেনা ছকের বাইরেও যে জীবনের যে একটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে এমন কথা তারা সম্ভবত চিন্তাতেই আনতে সক্ষম নয়।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৬ জুলাই ২০২২ | ১৫৭৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
এখন পাড়ার ঠানদি বলিলেন, “ও হিদে! তোর খোকা হয়েছে।”
শুনিয়া তাহার মুখ লজ্জায় রাঙা হইল।অথচ তাঁহার একান্ত ইচ্ছা একবার দৌড়িয়া গিয়া পুত্র ও স্ত্রীর মুখদর্শন করিয়া আসেন।রমনীরা তখন হাসিয়া উঠিয়াছে।তাহাতে তাহার লজ্জা অধিক বৃদ্ধি পাইল।সরিয়া যাইতে চাহিলেন।কিন্তু বাদ সাধিলেন তাঁহার মা।তিনি প্রসব পরবর্তী নিয়ম ও কর্মগুলি সমাধা করিতে ব্যস্ত ছিলেন।পুত্রকে ডাকিলেন, “হৃদয়, পরিস্কার হাতে একটা তাজা বাঁশের গা থেকে চোঁচ কেটে নিয়ে আয়।বাচ্ছার নাড়ি কাটতে হবে।”
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৫ জুন ২০২২ | ১৭১৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
বলতে বলতে, কী আশ্চর্য, দাদুর গলায় আক্ষেপ ঝরে পড়ে! আগের কথার রেশ টেনে বলেন – “তবু ভাতেরও অভাব কিছু মানুষের।” কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন দাদু। তারপর আবার বলতে থাকেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে, বিশ্বযুদ্ধের পরে পরে পঞ্চাশের দুর্ভিক্ষের ছায়া বাংলার এই শস্যগোলাকেও গ্রাস করল।তারপর স্বাধীনতা লাভ। এদিকে স্বাধীনতার পঞ্চাশ -ষাট বছরেই অতিরিক্ত রাসায়নিক সার আর কীটনাশক মাটির গুণ অনেকটা নষ্ট করে দিলো। বড় বড় দেশী আর বিদেশি কোম্পানিগুলো মানুষকে কম শোষণ করল? কোটি কোটি ডলার লুঠ করে নিয়ে গেল। বেশি ফসলের আশায় চাষীরা তা দিল! কী করবে তারা? লোভের দেখানো পথের বাইরে আর কোনো বিকল্প তারা নিজেরা ভাবতে পারল না, কেউ ভাবাল না।”
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৩ আগস্ট ২০২২ | ১৪৬৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
একদিন ক্ষুদিরাম মাস্টারমশাইএর পাঠশালায় পড়তে গেলাম। তিনি গাঁয়ের ভেতর শিব মন্দিরের গায়ে একটা চাতালে পড়ান। আমাদের বাড়ির কাছাকাছি সেটা।
তার আগে হাতেখড়ি হল ক্ষুদুবাবুর কাছে। পিসি আর কাকু আমায় নিয়ে গিয়েছিল ওঁর বাড়ি। নিশ্চয়ই সেটা সরস্বতী পুজোর দিন। আমার ঠিক মনে নেই। ঠাকুমা পিসির হাতে সিধে পাঠাল। একটা পাথরের থালায় আতপ চাল, আনাজ আর ষোলো আনা পয়সা। কাকুর হাত ধরে গেছি। আমার বগলে শ্লেট, হাতে পেনসিল।
এরপর ওঁর কাছে একদিন আসন বগলে পড়তে গেলাম গ্রামের ভেতরের শিবতলায়। মাস্টারমশাই যেন স্বয়ং যমদূত! সেই যমদূত যদি ভিক্টিমের জাগ্রত অবস্থায় হাতে ডাঙশের বদলে মার্বেল গুলি আর মণ্ডা-মিঠাই নিয়ে যমপুরীতে নিয়ে যাবার জন্য আসে, তাহলেও ছেলের দল নির্ঘাৎ মাটিতে পায়ের আঙুল পুঁতে দিয়ে শরীরটা শক্ত করে পিছন দিকে ঠেলুনি দিয়ে পরিত্রাহি চিৎকার ছাড়ত “আমি যাব না গো–ওওওও” বলে! ছেলেদের গাধা থেকে ঘোড়া বানাবার জন্য আর শাসনে রাখার জন্য অভিভাবকেরা সেই যমদূতসম “মাস্টামশায়”-এর কাছেই পাঠাতেন।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৭ আগস্ট ২০২২ | ১৩৮৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
দু’দিকে দুটো লোক – সামনে আর পিছনে দুটো হ্যাজাক ধরে আছে। মালকোঁচা মেরে পরা ধুতি বা গামছা, প্রায় আধ-ন্যাংটা কালোকোলো সন্ন্যাসীরা পরস্পরের এক হাত আর তাদের হাতের দণ্ড ধরে অর্ধ গোলাকৃতি একটা বেড় তৈরি করেছে। নাচছে ভূতের মত। মাঝে মাঝে – বল গঙ্গাধরের চরণের সেবা লাগি, বল তারকনাথের চরণের সেবা লাগি মহাদেব – ইত্যাদি শিবের নানান নাম করে টেনে টেনে বলে চলেছে।
যেটা সবচে’ আশ্চর্য লাগে, তা সন্ন্যাসীদের অমন গলা ছেড়ে মহাদেব – ডাকও নয়, ছায়া-ছায়া ভূতুড়ে নাচও নয়। আশ্চর্য হল – সেই বেড়ের মাঝখানে আমাদের ক্ষুদিরাম মাস্টারমশাই যে! এবং তিনি নাচছেন! এগিয়ে – পিছিয়ে। তিনি তাড়াতাড়ি সামনে এগিয়ে পথ শেষ করতে চাইছেন, কিন্তু সেই উপবাসী, আধন্যাংটা সন্ন্যাসীরা – কোথা থেকে এত জোস পেল কে জানে, তারা কিছুতেই এগোতে দিতে চায় না। সামান্য পথ আসতেও তাই দীর্ঘ সময় লাগে।
রাগী, ছাত্র-পেটানো অথচ ছাত্র-দরদী, স্নেহ বৎসল মাস্টারমশাই-এর সব গাম্ভীর্য ওই গাজনের সন্ন্যাসীরা ঘুচিয়ে দিয়েছে। ধুলো হয়ে উড়ছে হ্যাজাকের আলোয় – তাঁরই অটল গম্ভীর মুখোশখানা।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৩৮০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
রাঢ়ের এই অঞ্চলের অতীতের ইতিহাস আমরা মঙ্গলকাব্যগুলোতে পাই। ... তারা কি দুর্যোধনের মত মারাত্মক? ব্যাপক সামাজিক ধ্বংস, হত্যালীলার নায়ক? মাহুদ্যা আর ভাঁড়ুদত্তের মধ্যে প্রথম জন কেমন যেন মাথা গরমের, আর দ্বিতীয় জন লোভী, কুচুটে। যারা ঝিল বোজাতে চায়, তারা ব্যাপকভাবে অন্ধকারের মানুষ এমনটা নয় কিন্তু! চরম ধ্বংসাত্মক মনোভাব এখানকার মানুষের তেমন নেই। উচ্চকিত মন্দ নেই, গড়পরতা ভাল, গড়পরতা মন্দ।” বলতে বলতে আচমকা হেসে ফেললেন তিনি। বললেন, “তোমরা যদি কখনও উপন্যাস লেখ, এই এলাকার পটভূমিতে মহৎ উপন্যাসের সাদা মানুষ কালো মানুষ নিয়ে মুশকিলে পড়বে। আপাদমস্তক “কালো” মানুষ বোধহয় আঁকতে পারবে না, যদি বাস্তব থেকে চরিত্র খোঁজো। আবার সব ভাল মানুষের পো যদি সেই লেখার চরিত্র হয়, তবে পাঠকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না নিশ্চিত। কৃত্রিমতার অভিযোগ উঠতে পারে কিন্তু!
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ০১ অক্টোবর ২০২২ | ১১৩৫ বার পঠিত
অনন্তর কানে কিছুই গেল না, যেন সে বধির, যেন বা অন্ধ। আর এক দিকের দাঁড়ে আজ লোক নেই, তাই আজ এই মহাবিপদের সামনে পড়ে গেল তারা।
“পাঁচু, সামাল” বলতে বলতে সে ততক্ষণে হালে বসে পড়েছে। দু’জনে প্রাণপণ চেষ্টা করে নৌকো সোজা করার। কিন্তু ঘূর্ণিতে পড়ে গেছে নৌকো। মোচার খোলার মতো তারপর জলের কুটিল প্যাঁচাল টানে সেটা একমুখে ছুটে গেল প্রথমে, তারপর ঘুরতে লাগল ঘূর্নির ভেতর।নৌকো ভয়ঙ্করভাবে দুলতে দুলতে হেলে গিয়ে জল ঢুকতে লাগল। দুজনেই তখন অন্ধ।ইষ্টদেবতাকে ডাকতেও ভুলে গেল তারা। স্বর্ণকেশিনী ময়াবিনী নারীর মতো নৌকো সমেত সোনালি পাট তাদের জ্ঞানহারা করে দিলেও সমানে তারা চেষ্টা চালাতে লাগল, তবু নৌকো ছেড়ে লাফ দেবার কথা প্রথমে মাথায় এল না।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৯ অক্টোবর ২০২২ | ১০৭০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
কাকিমা বলছিল, আরে! শুকদেবের হাতেও মোটা কাঠ ছিল, কুড়ুলও ছিল। ঝামেলা শুরু হবার আগে সে কাঠ কাটছিল, চাইলেই সে সেগুলো ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু সে তা না করে মাথা ঠান্ডা রেখে শুধু ঢালের মতো করে মোটা কাঠ দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে গেছে। নাহলে রক্তগঙ্গা দ্বিগুণ হতো, শানু!
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১২ নভেম্বর ২০২২ | ৯০১ বার পঠিত
আমি বনে-বাদাড়ে ফুলফল তুলে বেড়াতাম - কোথায় বেজির গর্ত, কোথায় সাপের খোলস, কোন ঝোপে কোন গাছ, তাদের আলোছায়ার সঙ্গে কেমন অচেনা নতুন দেশে এসে পড়ার বিস্ময়। যা দেখি, সবই অনির্বচনীয়। বেজির গর্ত দেখে মনে হতো পাতালের বামনের দেশ পর্যন্ত চলে গেছে ওই গহীন সুড়ঙ্গ। সেখানে যক্ষের পুরী, নাকি পৃথিবীর অতল তল কে জানে? কিছু প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াই ভালো। কল্পনায় অজস্র সম্ভাবনা মনকেও দূরগামী করে। ঝড়ে পড়া জাহাজের মাস্তুলে উড়ে এসে বসা অ্যালবাট্রস, যে এনে দেয় আশার আনন্দ, এনে দেয় গভীর পর্যটনের স্বাদ আর বয়ে আনে সুগভীর বেদনার মতো বহু দূর অভাবনীয় সমুদ্রের পেটের ভেতরের নতুন গন্ধভরা বাতাস, বিপদগ্রস্ত নাবিকের যে পথপ্রদর্শক। সেসবই ভাষার অতীত। আমার ঘোরাঘুরিতে বিরক্ত মা বকাবকি করত। ভয় পেতো কবে অপঘাতে মরেই যাব।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৬ নভেম্বর ২০২২ | ১২৮০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
শিবিরা এত গরীব, ওদের কীকরে সংসার চলে সেটা একটা ভাবার বিষয়। কেউ জিগ্যেস করলে শিবি তার কাজের ফিরিস্তি দেয়, “বাড়ির মেয়েদের কাচ থে কিচু না কিচু কাজ জুটেই যায়। কেউ বলে, শিবি চাল পাছড়ে দে – শিবি চাল বেছে দে – শিবি উঠোন ঝাঁট দিয়ে দে – গোয়াল পরিষ্কার করে দে, ধান ভেনে দে, চাল কুটে দে—কত কত ফাই ফরমাশ! মিলনীও কাজ করে সমান তালে। তবে ছেলেদের সমান মজুরি ও পায় নে কুনোদিনই। অবশ্য আমিও পাই না।তবু বোনের থে কিচু বেশি মজুরি পাই মেয়েদের মদ্যি বেশি চৌকোস বলে”। অথচ সে পরিশ্রমে, দক্ষতায় পুরুষদের সঙ্গে সমানে তাল মেলাতে পারে। কিন্তু সেকথা মানছেটা কে?
দক্ষিণ দামোদর জনপদ : কৃষ্ণা মালিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১০ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০৫৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
পিসি কাচের চুড়ি পরতে না পারলেও অঘ্রাণমাসের মেলায় কিনে ফেলল। তবে লুকিয়ে রাখল বেলোয়ারি চুড়ি। সুযোগ মতো পরা, যখন কাকু বাড়ি থাকবে না। সেবার শীত শেষের মুখেই হবে হয়তো, অত মনে নেই, বৃষ্টি হল বেশ। হতে পারে আমার কল্পনা প্রবণ মন ছবি বানাচ্ছে, তাই সেই ছবিতে সুন্দর করে মিলে যাবে যে দৃশ্য মন সেটাই দেখছে। দেখলাম, অকাল বৃষ্টির দিন পশ্চিম দুয়ারি ঘরের ধারিগোড়ায় বসে পিসি চুড়ি ঘুরিয়ে হাতখানা দেখছে। আচমকা কাকু হাজির বাইরে থেকে। এক লাথিতে পিসি ছিটকে পড়ল উঠোনে। বৃষ্টির জলের ভেতর পড়ল আছাড় খেয়ে, হাতের চুড়ি ভেঙে খানখান। যেন অপমানিত, অতৃপ্ত চুড়িগুলি চরম অভিমানে শীতের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চোখ ভরা জল নিয়ে তাকিয়ে আছে চরম বিস্ময়ে। ভাঙা চুড়িগুলি ভিজতে লাগল। ভিজছে পিসি। তার চোখ মুখ থেকে জলের ধারা নামছে। সে ধারা বৃষ্টির, না চোখের তা অবশ্য আমি বলতে পারব না। বৃষ্টির দিনে ভাঙা রঙিন চুড়ি খেলি কুঁড়িপিসির সঙ্গে, চুড়ির গায়ে কত কত সুখ দুঃখ লেগে থাকে সঙ্গোপনে।
এই জীবনের তিনকাহন (শুক্লা রায়) : মালিনী সিদ্ধান্ত
বুলবুলভাজা | পড়াবই : বই পছন্দসই | ২১ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩২৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
এই জীবনের তিনকাহন-এর প্রথমপর্ব, ‘বাপের বাড়ি’। লেখিকার জন্ম ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ-এ বাড়ি। ঠাকুরদা, ঠাকুমা, বাবা, জ্যাঠা, কাকা, পিসি সকলে মিলে বিশাল এক যৌথ পরিবার। চন্দননগরে সংস্কৃত টোল পণ্ডিতের বংশগত জীবিকা ছেড়ে শিক্ষা-চাকরির জন্য ঠাকুরদার কলকাতায়ন। তারপরে কলকাতায় বাড়ি বানিয়ে পাকাপাকি ভাবে বসবাস। বাবা-কাকা-জ্যাঠারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা আইনজীবী। বাড়ি ভর্তি ভাই-বোনেরা, আর আছেন গোপালজিউ। সেইজন্য বাড়িতে আমিষ খাবারের প্রচলন নেই। ভাই-বোনেরা মিলে বাড়িটাকে পুরো মাতিয়ে রাখে। কখনও থিয়েটার, কখনও হাতে-লেখা পত্রিকা প্রকাশ, আবার কখনও বা নিখাদ দুষ্টুমি। সঙ্গে বিজয়া, দোল, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার মতো চিরাচরিত উৎসব পালন তো লেগেই আছে। সেখানেও অবশ্য পারিবারিক বৈশিষ্ট্যের বিশেষ কিছু স্বাক্ষর আছে। অন্দরের অন্তর লেখিকার লেখায় এক নিরবচ্ছিন্ন চিত্রপটে ধরা দিয়েছে।