গায়ে লাগে বড়। লাগা হয়তো উচিত না মধ্যবয়সে, তবু লাগে। আত্মপরিচয়ের বেশ কিছুটা যে প্রতিষ্ঠানের অংশ, তার দিকে, তার সঙ্গে জড়িত সব টুকরোর দিকে যখন শাসকদল থেকে শুরু করে সাধারণ অফিসযাত্রীর অচিন্তিত কটু শব্দ উড়ো খইয়ের মতো ছুটে আসে, রাজনৈতিক ক্ষমতালোভী দুই পক্ষ নিজেদের মোটা চামড়ায় টোকা দিতে যে সব তিক্ত শব্দ জমিয়ে রাখে—হাঁটুর বয়সী পড়ুয়াদের জন্যেও যখন সেই এক শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে, তখন গায়ে লাগে। একজন কোথাও লিখলেন, "ধুর মশাই, অনেক কলেজ ইউনিভার্সিটি দেখেছি। এইরকম লাগাতার বদমায়েশি কোথাও নেই।"বদমায়েশি কেন? কারণ তাদের অনেকে কল্কেয় গাঁজা খায়। অথচ ইউনিয়নে শাসকদলকে কল্কে দেয় না। সেই শাসক, যাঁরা এক লহমায় "দখল" করার হুমকি ... ...
যে কোনো প্রতিবাদ, আন্দোলন, সাফল্য, সচেতনতা – অর্থাৎ যা কিছু সমাজকে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার, মুখে আয়না ধরার, বা নিজ-সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে, তা গৌরবের।কিন্তু এই চেষ্টায় কোনো লাভের অঙ্ক না থাকলে তাকে ব্যক্তি বা নিরপেক্ষ দলের আয়ত্ত্বে রাখা ভয়ানক কঠিন। কারণ (অপ)ব্যবহার করার, হাইজ্যাক করার, স্পটলাইট ভাগ করে নেওয়ার জন্যে তলে তলে সর্বদা তৈরি হয় একদল ধান্দাবাজ। অনেক আগে ... ...
উত্তরপাড়া সঙ্গীতচক্র থেকে ভোরের দিকে বেরিয়ে আপনার জগিং-উদ্দেশী বন্ধুকে ফোন করে হয়তো বললেন, প্রায় ঘুমন্ত আপনাকেও কেমন কৌশিকীর শেষ ভজনটা জাগিয়ে তুলেছিল। উত্তরে সে ধরুন বললো, "কেমন গাইলো রে? একটু গেয়ে শোনা তো? নিদেন একটু কথা বলে তো বোঝা?"... ব্যোমকে যাবেন না? ... ...
দুশো বছর আগের বিলেত। বি-শা-আ-ল ধনী ও রাজনীতিক হাডসন গার্নি তাঁর পুরোনো বন্ধু থমাস ইয়ংকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন—সম্প্রতি তাঁর মন ভালো নেই, জীবন উদ্দেশ্যহীন মনে হচ্ছে। ব্যাপার অস্বাভাবিক নয়, ভদ্রলোক অর্বুদপতি হলেও, এককালে স্বপ্ন দেখতেন ভালো কবিতা লেখার। বন্ধু ইয়ং-এর বয়স তখন ৪৭। ১৮২০ সালের এক বিষণ্ণ বিকেলে মধ্য লন্ডনের বাড়িতে বসে, ইয়ং তাঁর বন্ধুকে মনের জোর দিতে চিঠি লিখলেন। তাতে তিনি জানালেন—তিনি নিজেও অতীতে এই রোগের কবলে পড়েছেন, আর এর সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হল গুচ্ছ গুচ্ছ কাজ করা (উদ্বেগ বা ক্লান্তিতে ধরাশায়ী না হয়ে)। তারপরে লিখলেন সেই সময় তাঁর নিজের কাজের ফিরিস্তি আর জীবন সম্পর্কে দু-চারটে উপলব্ধির কথা। পড়ে দেখুন, অহং-এর চিকিচ্ছে আর মোটিভেশন–দুইই হবে। ... ...
যে লোক নিজেকে বর্তমানের কবি বলে ঘোষণা করে, উচ্চকিত হুল্লোড়ে জীবন বাঁচে, কোনো দলে না থেকে ঠিক মাঝের সীমানায় দাঁড়িয়ে জীবন কাটাতে চায়, যে সচেতনভাবে নিজের ইমেজ তৈরিতে সময় দেয় না, যার শিল্পের মূল মাধ্যম শব্দ অথচ জীবনের শেষ তিরিশ বছর যার সঙ্গী নৈঃশব্দ্য — তার কথা, লেখা, গান, কবিতা, দর্শন মনে রাখার ক্ষমতা কোনো দরিদ্র, হুজুগে জাতির নেই। তবু, মৃত্যুর প্রায় অর্ধ-শতাব্দী পরে তার গানের সুরারোপ নিয়েই তরজায় নামে বাঙালি। তিনিও 'মিম' হন। ... ...
আপনাকে, খুব সম্ভবত, আমি চিনি না। আপনিও আমায় চেনেন না। এই মুহূর্তে আমরা সামনাসামনিও নেই। এমন অদ্ভুত অবস্থা মোটেই আলাপচারিতার উপযুক্ত না। তবু, আসুন—আলাপ করা যাক। অবস্থা বুঝে, চলুন আমরা আলাপের নিয়ম একটু বদলে নিই। আমি প্রশ্ন তুলবো—আপনি নিজের মনে তার উত্তর দেবেন। আপনার উত্তর আমি তারপর আন্দাজ করার চেষ্টা করবো। বেশ?আচ্ছা, 'বিজ্ঞান' শব্দটা শুনলে কী মনে হয় আপনার ঝটিতি? চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো—কীসের ছবি ভেসে ওঠে? ... ...
হিসেব রাখা—বড় দায়।নিজের হিসেব? ধারণা, বক্তব্য, আর যাপনের গরমিলের হিসেব? আরও কঠিন। যদিও আমাদের, বাঙালিদের সুবিধে একটু বেশি। Hypocrisy-র বাংলা নেই যে! ওসব 'কপটতা'-ফপটতা বাদ দিন, কন্সেপ্টটাই ভিনদিশি। যা ভাবি, তা গুরুজনের বা সমাজের কথা ভেবে গিলে/বদলে ফেলবো না? সে আবার কেমন কথা! অতএব, 'যখন যেমন, তখন তেমন'!এর ওপর যদি আবার নিয়ে আসি সামঞ্জস্য বা ধারাবাহিকতার ব্যাপার, সে তো আরও কঠিন! পরশু মোহনবাগানকে নিয়ে যে জ্ঞানবাক্যি ঝেড়েছিলাম, আজ সেই একই কথা বেপাড়ার ছোকরা পাকিস্তানের ক্রিকেট টিম নিয়ে বললে, মেনে নিতে হবে? সমাজে সম্মান বলে একটা ব্যাপার নেই?তা, এমতাবস্থায়, সোশ্যাল নেটওয়র্কে জ্ঞান বিতরণের ঝক্কি অনেক। সাত বছর আগের নিজের পোস্ট/স্ক্রিনশট তুলে ... ...
'সবার পড়ার মত' বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি কেন হওয়া উচিত—এ প্রশ্নের মনে হয় আন্তর্জালোত্তর পৃথিবীতে আর কোনো প্রয়োজন নেই। সব বিষয় নিয়েই বই লেখা হয়, আর 'পড়তে কতটা ভালো লাগছে / সমঝদারেরা কত ভালো বলছে'—এর ওপর ভিত্তি করে তার চাহিদা তৈরি হয়। বিজ্ঞান বাদ যাবে কেন? বিশেষ করে, তার 'রেড রাইট হ্যান্ড' যখন সর্বস্পর্শী? বিজ্ঞান যে ভাষায় আমরা চর্চা করি, তা আসলে অঙ্কের ভাষা—এইটে একটা ছোট্ট চৌকাঠ হতে পারে, প্রাচীর কখনোই নয়। নইলে বিমূর্ত ছবি, সিনেমা নিয়ে চর্চা হচ্ছে কী করে? উলটে, বিজ্ঞানের ফলাফল, চর্চা, কর্মপদ্ধতি যখন আমাদের জীবন আর প্রযুক্তিতে মিলেজুলে যায়—সেই সন্ধিক্ষণ নিয়ে আলোচনাই তো সবথেকে বেশি 'রিলেটেবল', তাই না? ... ...
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে রাস্তা পার করে যখন ট্যাক্সিতে উঠলাম, তখন সন্ধে ৮টা ১০-১৫ হবে। শহুরে, গৃহমুখী, নিত্যযাত্রীর তুল্য তিক্ত ব্যক্তিত্ব অন্যত্র, অন্য সময় দুর্লভ। গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় সামনেই দুজনের মধ্যে তীব্র তক্কাতক্কি, অল্প ধাক্কাধাক্কি - এসব হয়ে গেল। আজকাল কলকাতায় গাড়ি বুক করাও স্ট্রেসফুল - কেউ ডেস্টিনেশন শুনে 'আসছি' বলে ক্যান্সেল করে, তো কেউ মিষ্টি করে 'কোথায় যাবেন' জিজ্ঞেস করেই বলে 'অফলাইন' করে দেওয়ার কথা। পা খোঁড়া, অতএব গাড়ি বিনে গতিও নেই আপাতত। সব মিলিয়ে, মেজাজের পারা সামান্য গম্ভীরের দিকেই ঢলে ছিল। ফোন এল এক পোস্টডক-রত জুনিয়র বন্ধুর। কথা সেরে কিন্ডল খুলেছি সবে, সামনের সিট থেকে ড্রাইভারের প্রশ্ন, "আপনি কি ... ...
Sunando Patra আঁতেল হতে পারলেননা। তাঁর পড়ার উপযুক্ত বইঃ ঘোমটায় খ্যামটা ... ...