এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ইয়ে, মানে, সন্ত্রাসের ধর্ম...?

    প্যালারাম লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ৩২৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • নরপশু শব্দটা ভুল। এই শতকে এ তথ্য আর কিছু নৃতত্ত্ববিদের কুক্ষিগত নয়, যে, মানুষই সবচেয়ে হিংস্র, সর্বশ্রেষ্ঠ খুনে। জেনোসাইডের সময় সে অন্য প্রজাতি তো ছার, নিজের বেরাদরদেরই ছাড় দেয় না। নিজের অধম প্রবৃত্তিগুলিকে সে এই সুপারপাওয়ারে পরিণত করেছে শুধুই নাকি তার গালগল্পে বিশ্বাস করার অসীম ক্ষমতাবলে। তা, এ ব্যাখ্যা ভুল মনে হয় না।

    আজ থেকে বছর পনেরো আগের বাংলাদেশে একদল বিভিন্ন বয়সের মানুষ সোৎসাহে, নিজেদের ধর্মে অবিশ্বাস, আরেকটু এগিয়ে ঈশ্বরে অবিশ্বাস, যুক্তিতর্কে নিষ্ঠা, আর ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা অনলাইনে প্রকাশ করতে শুরু করেছিল। অধিকাংশই ভেবেচিন্তে, লেখাপড়া করে নাস্তিক/অজ্ঞেয়বাদী বলে নিজেদের চিহ্নিত করেছিল। ধর্মের নিরঙ্কুশ 'বিশেষ অধিকার' তাদের যতটা বিরক্ত করতো, ধর্মের অছিলায় রক্তপিপাসা চরিতার্থ করা ততটাই রাগাতো। সে রাগ বেরতো বিদ্রূপের চেহারা নিয়ে। নিজেদের নিয়ে তারা মশকরা করতো 'জঙ্গি নাস্তিক' বলে। এতই ক্ষুরধার সেই 'জঙ্গ', যে, অস্ত্র বলতে পানীয়ের পেয়ালা আর পেন/কি-বোর্ড। এদের আমি চিনতাম। এদের সঙ্গে ইথার-জগতে আমার সামান্য ওঠাবসা ছিল।

    বিশ্বপ্রেম দিয়ে কেউ জীবন শুরু করে না, করে পাশের বাড়ির সমবয়সীকে প্রেম নিবেদন করে। তেমনই, অন্যায়ের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, বিদ্রূপ – ঘরের দত্যির উদ্দেশেই ছোটে। দুনিয়ার সব দানোর দিকে যায় না। স্বভাবতই, এদের চাবুক-লেখনীর, তীক্ষ্ণ সমালোচনার ডগায়  থাকতো এদেরই ঘরের দাঁত-নখ বাগানো ধর্মটি, যার 'শান্তির ধর্ম' মুখোশের আড়ালে মধ্যযুগের পচন-ধরা বলিরেখা। দিনে বার দুই-তিন 'ধর্মকারী' (বুৎপত্তি : ধর্ম+mockery) সাইটে ঘুরে আসার কারণে ইসলাম নিয়ে উৎসাহ বাড়লো, লেখাপড়া বাড়লো। এরই কাছাকাছি সময়ে পশ্চিম গোলার্ধে শুরু হওয়া নব্য-নাস্তিকতার হাওয়ায় অন্য বৃহৎ আব্রাহামিক ধর্মটির সম্পর্কেও ধারণা পরিষ্কার হতে শুরু করে। ধর্ম নিয়ে ভাবগম্ভীর কথা শুনলে আজও যে মুখ টিপে খ্যাক খ্যাক করা হাসি থামাতে হয়, এ-ই তার কারণ।

    এই আড্ডায় আমি পাশের পাড়ার ছেলে। যতই পাশে বসি না কেন, আমার দেশের প্রধান ধর্মটির অগণন কুসংস্কার, নির্বুদ্ধিতা, বিজ্ঞান-অ্যালার্জি নিয়ে যে আস্ত কমেডি শো করে ফেলা যায় – এ কথা বুঝিয়েও তাদের বিশেষ উৎসাহ দিতে পারিনি। কী করি? ধর্মকারীতে টিমটিম করে শুরু হল নতুন কলাম, 'গরুপূজারী গাধাগুলো'।

    বানরের হুপহাপ, ছাগুদের এক ঘা। এইসব নাস্তিকের কলম-তোপের মুখে যে সব অর্বাচীন ধর্মান্ধ ফৌত হত, তাদের আদরের ডাকনাম 'ছাগু'। ছাগল থেকে ছাগু। তাদের গল্পে গল্পে, তর্কে জেতানোর আশা দেখিয়ে টেনে এনে তারপর নাস্তানাবুদ করা হত। সে ছিল ছাগুদের কাঁঠালপাতা খাওয়ানো। সে ধর্মের বক্তিমেবাজরা তখনও মাইকের সামনে একদিকে শান্তির ধর্ম, একটি পূর্ণ জীবনশৈলী – এইসব আওড়াচ্ছেন, অন্যদিকে জেনানাকে শান্ত রাখতে কীভাবে 'সহিহ্‌' তরিকায় প্রহার করা উচিত, তার বিধান দিচ্ছেন। গোটা বিশ্বজুড়ে সেই একই ধর্মকে ঢাল করে তখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে একদিকে আইসিস, অন্যদিকে তালিবানদের সঙ্গে প্রবল যুদ্ধ করছে ট্রিগার-হ্যাপি আম্রিগা। মহান নবীর কার্টুন ছেপে একদিকে মরছে ফ্রেঞ্চ কার্টুনিস্ট, অন্যদিকে তেনার প্রচারিত ধর্মকে আওয়াজ দেওয়ার কারণে বিল মার-এর ওপর তুমুল খচে যাচ্ছেন ইস্লামোফোবিয়া-বিরোধী ডেয়ারডেভিল বেন অ্যাফ্লেক। 

    সব শুনেও, আমি মন দিয়েছিলাম 'ইন্ডিয়া আনটাচড'-ডকুমেন্টারির সেই বেনারসি, কালো চশমা সাধুর দিকে (সত্যি বলছি, তেনার নাম: বটুপ্রসাদ শর্মা শাস্ত্রী – যেন বাস্তব নয়, রাজশেখর বসুর গল্পের চরিত্র!) , যার বক্তব্য ছিল, "শোনো, সেই দিব্যপুরুষের মুখ থেকে ব্রাহ্মণের জন্ম, বাহু থেকে রাজপুরুষদের আর উরু থেকে বণিক সম্প্রদায়ের। শূদ্র? পা থেকে। ইয়ে ম্যায় নহি কহতা, বেদমে লিখখা হ্যায়। শাস্ত্র বলেছে, হুঁহুঁ বাবা। আমি বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ, জাতপাত, ছোঁয়াছুঁয়ি অতএব গভীরভাবে মানি।" নিজের ঘরে এই পরিমাণ ট্র‍্যাজিক খিল্লি জমে থাকতে কী দরকার পাশের বাড়ি যাওয়ার?

    সেই আগুনখেকোরা সব গেল কোথায়? একদল মরেছে ছাগুস্য ছাগুদের চাপাতির ঘায়ে, একদল গেছে বিদেশে পালিয়ে (কী করবে? নিজের ঘরে বসে মরবে? আপনি পারবেন পঙ্গপালের উৎপাতের মধ্যে রজনীকান্ত সেজে হেঁটে বেড়াতে?), আর বাদবাকি – এই ক্রমশ পাগল হতে থাকা পৃথিবীতে সেয়ানা হয়েছে। এখন শুধুই বেছে বেছে রসিকতা করে। পেটে হাসির গোলা পাকালেও, মুখে, 'ঠিকই বলেছেন, জয় জগন্নাথই বটে' বলে খাজায় কামড় বসায়। জগন্নাথ ঠুঁটো হতে পারেন, খাজাটা তো দিব্যি খেতে!

    বেন অ্যাফ্লেকরা চিরকালই ছিল। অ্যাপলজিস্ট বলে তাদের। কিছু করার নেই। সৌজন্য থেকে আসে সেসব। বন্ধুর খুব অবাধ্য সন্তানটি গোটা বাড়ি তছনছ করলেও আপনি কান এঁটো করে 'আরে কিছু হয়নি তেমন' যেভাবে বলেন, আর নিজেরটি তার অর্ধেক করলেও কেমন তার কানটি মুলে লাল করতেন — সেই দিবাস্বপ্ন দেখেন – এ তারই সম্প্রদায়গত অনুশীলন মাত্র। তার থেকেও বড় কথা, আগে যেমন বললাম – চ্যারিটি, প্রেম, বিদ্রোহের মতো, বিদ্রূপও নিজের ঘর থেকেই শুরু হয়। তাই বাংলাদেশের নাস্তিকের ইসলাম-তুলোধোনা আর বর্ডারের এপারে যুক্তির রোদে চাড্ডি শুকোতে দেওয়া – নিতান্ত স্বাভাবিক।

    গোলমাল একটাই, পাবলিক বড়ো জল ঘোলা করে। হাফসেদ্ধ 'সেক্যুলার' তার পোস্টে লেখে — "আজ আমায় কেউ সেক্যুলার বোলো না পিলিজ! আজ আমি খুব দেশপ্রেমী, দেশের দুঃখে আমার পরাণ ফাটিয়া যায়!" যার কাছার গেরুয়া রঙটা আগে থেকেই হালকা বোঝা যেত, সে ফুঁপিয়ে ওঠে, "পারবো না আমি অত সূক্ষ্মতায় যেতে, যাও! এখুনি আমায় অস্ত্র দাও।"
    আর এ সবের মধ্যে, একদল, সান্তা ক্লজের সারল্যে জিকির দেয়, "সন্ত্রাসের কোনো ধর্ম হয় না।"

    লে হালুয়া! সন্ত্রাসের আদর্শ থাকতে পারে (মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত স্মর্তব্য), ভৌগোলিকতা হতে পারে ("ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই সন্ত্রাস মানছি না, মানবো না"), রাজনীতি থাকতে পারে ("ভোটের আগের তৃণমূলের এই সন্ত্রাস নিয়ে ঘণ্টাখানেক, সঙ্গে সুমন"), আর ধর্ম পারে না? 

    অ্যাপোলজিস্টবাবু, আপনাকে মেনে নিতেই হবে, এটা ইসলামী সন্ত্রাস। আমি-আপনিও এই সেদিনের ছোকরা না, এই সন্ত্রাসও আজকে নতুন না। লোকগুলি নানা কারণে নরাধম, কিন্তু সন্ত্রাসটি নির্ঘাত ইসলামী। ক'দিন আগেই একটা পুরোনো লেখা শেয়ার করেছিলাম, ফেবু-মেমোরিতে ভেসে ওঠায়। তাতে এইরকম একখান লাইন ছিল, যে, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় ২১ বছরের বিলকিস বানোর পরিবারের ১৪ জনকে তাঁর চোখের সামনে খুন করে, তারপর তাঁকে দলধর্ষণ করে হিন্দু ইতরেরা। তাতে এক চালিয়াত হিন্দুবীর কমেন্ট করেছিলেন, "উল্টোদিকে যখন কাশ্মীরে ইমিগ্র্যান্ট লেবার দের খুন করা হয় বা পাশেই বাংলাদেশে মাইনরিটিদের ওপর মেজরিটি দাঙ্গাবাজদের হামলা হয় -তখন ব্যালান্স রেখে তাদেরকেও একই  ভাষায় 'মুসলিম ইতর' বলা হয়  কি? নাকি তখন আবার দাবি ওঠে 'সন্ত্রাসবাদীদের কোনো ধর্ম হয় না'?"

    বুঝছেন তো, জলটা কী করে ঘোলা হয়েছে? এই হিন্দু বীরকে না হয় আমি থামালাম, "যদি ইতরামোর অজুহাতে সে তার আইডেনটিটি ব্যবহার করে, তবে তাকে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার করবো। যেমন, ক্লাসের লম্বা ছেলে, বেঁটের ওপর বুলিয়িং চালালে, তাকে 'লম্বা ইতর', নূপুর শর্মার পোস্ট শেয়ার করায় উদয়পুরের ব্যবসায়ীকে যারা মেরেছিল, তারা মুসলিম ইতর, অভিজিৎ রায়কে যারা কোপায় তারা ধার্মিক ইতর — এইরকম..." বলে, কিন্তু এরপর পান থেকে চুন খসলে হোয়াট-অ্যাবাউটারির বন্যা লাগাবে না হনু-চরেরা? বাঁধ দেবেন কোদ্দিয়ে?

    সেইজন্যেই, অ্যাপোলজিস্ট সায়েব, মেনে নিন — এটা ইসলামী সন্ত্রাস। তাতে হনুর দাপাদাপি কমবে না। ওর ভগোয়া লেজে আইটি সেলের স্প্রিং লাগানো আছে। কিন্তু আপনি কগনিটিভ ডিসোন্যান্সের শিকার হয়ে মাঝরাতে "সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই" হাঁকড়ে জেগে অন্তত উঠবেন না। সেই বা কম কী?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুতীর্থ | 23.106.***.*** | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৩৮542578
  • সন্ত্রাসের ধর্ম হয় না কেননা সন্ত্রাস জিওপলিটিক্সের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশী ব্লগারদের হত্যাকান্ড অতি নির্মম ঘটনা। কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে ওনাদের মূল দূর্বলতা সন্ত্রাসের কর্পোরেটাইজেশনকে এড্রেস করতে না পারা। কর্পোরেট স্টেটের কাছে সন্ত্রাসের মত ব্যবসাসফল উপহার আর দুটি নেই। লিটেরালি প্রতিটি টেরোরিজমের ঘটনাকে স্টেটের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়। নয়-এগারো থেকে পুলওয়ামা উদাহরনের কমতি হবে না। স্মৃতিশক্তি দুর্বল না হলে পেগাসাস কান্ড বা নব্য খালিস্তানি অভিযান ভুলে যাওয়া সম্ভব না। এসবই স্টেটের পাঁচপা দেখা। জঙ্গিসংগঠন গুলোও মনে রাখবেন পাক্কা কর্পোরেট। ফলে যেকোন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলে স্টেটের ওপর চাপ দিন, বিচারের দাবিতে মিছিল করুন বা নিদেনপক্ষে জন লে ক্যারে পড়ুন। কিন্তু লেফট লিবারেলদের গাল দিয়ে গাল ফুলিয়ে 'সন্ত্রাসের ধর্ম হয় -- উহা ইসলাম' থেকে শুরু করবেন না। ওটা লিটেরালি গরুর রচনা হয়ে গেছে।
  • π | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫১542580
  • এদিকে পড়লাম, '  এই রিপোর্টে আহতরা বলছে আড়াল থেকে চার পাঁচজন র‍্যান্ডাম গুলি ছুড়েছে, কয়েক হাজার লোক ছিল ওখানে। zee র রিপোর্টার অনেক বার, নাম জিজ্ঞেস করে , ধর্ম জিজ্ঞেস করে মেরেছে কিনা জিজ্ঞেস করছিল। সবাই বলছে অনর্গল ফায়ার হচ্ছিল ২০-৩০ মিনিট। পালিয়ে বেঁচেছি। ধাক্কাধাক্কি হচ্ছিল প্রাণ বাঁচাতে। ওখানে কোন আর্মি ছিলনা।' https://fb.watch/z7QlbHB6JL/?mibextid=wwXIfr
  • π | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫৭542581
  • এও পড়লাম,  ৮টা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী সেখানে হিন্দুর সাথে মুসলমানও খুন হয়েছে। 
    তালিকা দেখলামও। আপনারাও পেয়ে যাবেন।  
     
    অথচ মিডিয়া,  সোসাল মিডিয়া ভর্তি, বেছে বেছে ধর্ম দেখে দেখে খুন করা হয়েছে।
     
     
  • প্যালারাম | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৩০542587
  • @পাইদি, আর জি কর-এর পরে, মিডিয়া যে পুরো ঘটনাও বানিয়ে দিতে পারে — এতে আমার বিশ্বাস জন্মে গেছে। কিন্তু সারাদিন ধরে যা পড়লাম, তার পুরোটা ভুল ধরে নিতে এখনো অস্বস্তি হচ্ছে। যদি দেখা যায় এগুলোও গালগল্প, তাহলে অবশ্যই তার প্রতিক্রিয়া—মানে এই লেখাও—তুলে নিতে হবে। তবে কিনা, শেয়ার করা ছবিতে একজন মুসলিমের যে গোল পাকানো নাম দেখলাম, তাতে মনে হল ওটা কোল্যাটারাল ড্যামেজ।
    এ যদি মিডিয়াপ্রসূত খবর হয়, তবে অনেক বেশি ড্যামেজ ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে।
     
     
  • প্যালারাম | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৩542589
  • @সুতীর্থ, 
     ঠিকই। রাষ্ট্র ও পুঁজি যে নিজের উৎসাহ ও ধান্দা চরিতার্থ করতে সন্ত্রাসে মদত দেয় ও তা নিয়ন্ত্রণ করে, সেটা সত্যিই এই কোভিড-পরবর্তী পৃথিবীতে পরিষ্কার। প্রতিটি সেরকম ঘটনার পরে স্টেটকে চাপ দিতে হবে, ইহাও সত্যি (যদিও, মিছিলে কী উদ্ধার হয়, আমার জানা নেই)।
     
    যা সত্যি নয়:
    ১) 'সন্ত্রাসের ধর্ম হয় — উহা ইসলাম' আমি বলিনি। বলেছি, (এই ঘটনা যদি সত্যি হয়; মিডিয়ার মিথ্যে হলে—পাইদিকেও যেমন বললাম—খুশি হয়ে প্রতিক্রিয়া সরিয়ে নেবো)
    'এই সন্ত্রাসটি ইসলামী সন্ত্রাস', আর তাকে ইসলামী দাগাতে ভয় পাবেন না। লিবারালদের উদ্দেশেই বলেছি, তবে তাঁরা লেফট কিনা – তা অন্য ক্ষেত্র থেকে বিচার্য। লিবারাল হওয়ার সঙ্গে বিধর্মী হওয়ার কোনো বিরোধ নেই বলেই বলেছি।
    ২) এবারে, সন্ত্রাসের ওপর এই ধর্মের ট্যাগটা লাগাতে আপনার খুব অস্বস্তি হতেই পারে। আমি সহমর্মী। প্যালেস্তাইনে জেনোসাইডের দায় ইজ্রায়েলের, ইহুদি ধর্মের নয় — এ কথা বললে আপনি ঠিক, কিন্তু মুশকিল হল, ইজ্রায়েল সেটা করে জায়নবাদের নামে। আইসিসের কার্যকলাপে নানা স্টেটের মদত থাকলেও (কারণ ধান্দা অ্যালাইনড), তাদের প্রতিটি সৈনিক যে মনেপ্রাণে কোরান-হাদিশের হিংসার বাণীগুলি বিশ্বাস করেই ওই নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা জানতে জিও-পলিটিক্স গুলে খাওয়ার দরকার হয় না, তাদের তৈরি ভিডিও দেখলেই হয়। কাস্ট সিস্টেম আর তার প্রতিকারের কায়দা নিয়ে রাজনীতি হলেও, তার জন্যে যে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম দায়ী — এ দাবি ভুল নয়। যাহা সনাতন, তাহা হিন্দু নহে আর যা ধম্মো, তা রিলিজিয়ন নহে — এ গল্প আপনি জানলেও, স্বাধীনতা-উত্তর ভারতবাসী জানে না। তাই রামনবমী তে উত্তর ভারতের সন্ত্রাস, হিন্দু সন্ত্রাস। বাংলাদেশের দুর্গাপুজোয় হওয়া সন্ত্রাস, ইসলামী সন্ত্রাস। সব কটিকে একত্রে ধর্মীয় সন্ত্রাস বলে দাগাতেই পারি, আসলে তা চাইও। কিন্তু তাহলে বক্তব্য লঘু হয়ে যাবে। তাই ইসলামের নামে হওয়া সন্ত্রাসকে ইসলামী সন্ত্রাসই বলবো, আর এদেশের বলীবর্দদের হিন্দুবীর। আপনার সেন্সিটিভিটিতে এই গরু রচনা আঘাত হানলেও।
    ৩) সন্ত্রাসকে ইসলামী বলবো না, কারণ জঙ্গিরা কর্পোরেট? তাহলে বাইবেল বেল্টকেও আর একই যুক্তিতে আর বাইবেল বেল্ট বলা যাবে না। আরএসএসও কর্পোরেট, তাদের 'হিন্দুত্ববাদী' বলা যাবে না? এই যে হিন্দু-হিন্দুত্বের বিভাজন (একটি পালনীয়, অন্যটি বিশ্ববীক্ষা), ইহা ইসলামে নাই। ওটি একাধারে ধর্ম এবং রাজনৈতিক গাইড। তাই যে যা, তাকে/তাদের সেই বলেই ডাকা ভালো। তা সে কর্পোরেটই হোক, বা কুটিরশিল্প। 
  • স্বাতী রায় | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪২542590
  • মানুষ দুই প্রকার হয়। সুস্থ আর অসুস্থ। যারা সন্ত্রাসবাদী তারা মানসিকভাবে অসুস্থ। সন্ত্রাসবাদীর ধর্ম হয়,  অবশ্যই তাকে কোন না কোন ফ্যানাটিজম এর বুলি আওড়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়,  চাঙ্গা করা হয়, কিন্তু সন্ত্রাসবাদের ধর্ম হয় না। 
    আসলে আক্রমণকারীর আইডেন্টিটি দিয়ে সন্ত্রাসবাদ কে চিহ্নিত করতে চাইলে মুশকিল এই যে অগণিত শান্তিকামী মানুষকেও সেই একই সঙ্গে দাগিয়ে দিতে হয়। যত বার এই ইসলামী সন্ত্রাস কথাটা ব্যবহার হবে, ততবার ঘটনাস্থল থেকে বহুদূরে বসে পাশের বাড়ির মুসলমানটিকে বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে শোনানো হবে যে ইসলাম মানেই সন্ত্রাসবাদ। কাল থেকে এই ঘটনাই স্রেফ চলছে। সেই সঙ্গে দাঙ্গা  আর সন্ত্রাসবাদ দুটো ভিন্ন গোত্রের হলেও দুটোকে এক করে দেওয়া হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। যে মানুষজন মুর্শিদাবাদ দাঙ্গার জন্য এমনিতেই মানসিক চাপে ছিলেন, তাকে আরও চাপে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই জিনিসটা আরও সর্বনাশের ইন্ধন মাত্র। 
  • সুতীর্থ | 23.106.***.*** | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৫২542594
  • এই ঘটনা সত্যি না হলে লেখা সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা বুঝিনি। এরা ধর্ম জেনে খুন করেছে না করেনি তাতে কি এসে যায়? ইসলামী সন্ত্রাসবাদী যখন, নিশ্চয় অমুসলিম লোকদেরই টার্গেট করেছিল। মুসলিম মারা গেলে সেটা কল্যাটারাল ধরলেই হল।

    ইসলামিক সন্ত্রাস বা ইসলামিক সন্ত্রাসী খুবই কমন এবং পশ্চিমি লিবারাল মিডিয়া স্বীকৃত শব্দবন্ধ। তুলনায় ক্রিশ্চান সন্ত্রাস বা হিন্দু সন্ত্রাস বা ইহুদি সন্ত্রাস সংবাদপত্রে খুব একটা দেখিনি। অর্থাৎ এই লেখার প্রেমিসটা নড়বড়ে। যাদের উদ্দেশ্যে লেখা সেই লিবারালদের একাংশও নিশ্চিতভাবে এখন রাষ্ট্রের সুরে সুর মেলাবে। যেমন ধরুন বরখা দত্ত বা ধ্রুব রাঠী এই ইসলামিক সন্ত্রাসের নিন্দে করে ভিডিও না বানালে অবাক হব। তো অংকের হিসেবে যা বুঝছি ইসলামিক সন্ত্রাসকে বুক ঠুকে ইসলামিক সন্ত্রাস বলার লোক প্রচুর। এর বাইরে যে ক্ষীণ লেফট ভয়েসটা পড়ে থাকে তাকে টার্গেট করার বিশেষ মানে নাই।
     
    সেকন্দ পয়েন্টে দেখুন ধর্মের ট্যাগ লাগানো আদৌ অস্বস্তির নয়। ট্যাগ লাগালে সেটা সন্ত্রাসের বহুমুখী জটিলতাকে ঢেকে দেয় এবং ইস্যুটার সরলীকরণ করে রাষ্ট্রের সুবিধে করে দেয়। ইন ফ্যাক্ট, এইটে পশ্চিমি মিডিয়ার তৈরী করা ট্রোপ। এবং লেফট বুদ্ধিজীবীদের কোনঠাসা করার চেষ্টা। ইজরায়েলের কথা তুললেন। আপনি বলুননা কোনো লেফট ইন্টেলেকচুয়াল সমালোচনা করতে গিয়ে ইজরায়েলের কর্মকান্ডকে ইহুদি সন্ত্রাস বলে কি? ইজরায়েল স্টেট্ নিজে কিন্তু বারবার নিজেদের ইহুদি জনগণের প্রতিনিধি বলে দাবি করে আসছে। কারণ ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন ইহুদি বনাম মুসলিম ক্রুসেড প্রচার করতে পারলে ইজরায়েলের লাভ সবচে বেশি। তো একইকথা ইসলামিক সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে বললে তক্ষুনি বলবেন ইসলামকে ডিফেন্ড করা হচ্ছে। কেসটা তা নয়। হিন্দু ধর্মে জাতপাত খারাপ, মুসলমানদের পর্দাপ্রথা খারাপ এগুলি বুঝি। কিন্তু সন্ত্রাস ব্যাপারটা অনেক বেশি অর্গানাইজড এবং মোটেই ইম্পালসিভ নয়। 
     
    হিন্দু আর হিন্দুত্ব এক নয় কনফিডেন্টলি বলে দিলেন। মোহন ভাগবত কিন্তু অন্য কথা বলে। কোনটা ধরব? ব্যাপারটা বুঝুন জঙ্গি ভিডিওতে কোরান আওড়ালেই সেইটে কারণ হয়ে যায়না। তেমনি  শশী থারুর যতই হিন্দুধর্মের বিশ্ববীক্ষা নিয়ে বই লিখুন, হিন্দুত্বের তাতে কিছুই এসে যায় না। কারণ হিন্দুত্ব একটা প্রজেক্ট যার পিছনে ইসরায়েলি ইন্টেলিজেন্স থেকে অনেককিছুই হাওয়া দিচ্ছে। তাই জিনিসটা বাড়ছে। ঠিক সেরকমই মুসলিম জঙ্গিদের পিছনে অস্ত্রব্যবসায়ী থেকে বহু ঘুঘু লাইন দিয়েছে। কোরান ফোরান দিয়ে হয়না। জিওপলিটিক্স দিয়েই হয়। পুতুল নাচের ইতিকথা।

    সন্ত্রাস জিনিসটায় অনেকের অনেকরকম স্বার্থ জড়িয়ে থাকে এইটা বলতে চাইছি। তাই টেরোরিজমের এগেনস্টে লড়তে গেলে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত জিনিসটাকে আইনের আওতায় আনা। অন্ধকার থেকে আলোয় আনা। এইখানে রাষ্ট্র যেটা করে কাউন্টার টেরোরিজমের নাম ইস্যুটাকে ব্যবহার করে। আমি শিওর এবারেও সেটা হবে। এতে করে টেরোরিস্ট সংগঠন ও রাষ্ট্র উভয়েই লাভবান হয়। লাদেনকে মারার জন্য আমেরিকা কটা ইন্টারন্যাশনাল ল ভেঙেছিল মনে রাখুন। লাদেন কোরান পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল কিনা সেটা পরের কথা। আগে দরকার ফেয়ার ট্রায়াল যাতে করে সন্ত্রাস জিনিসটা আইনের আওতায় আসে। এবং এইটা নেশন স্টেট্ গুলোকেই করতে হবে। নাগরিকদের চাপেই করতে হবে। ধর্ম সংক্রান্ত ডিবেটটা এক্ষেত্রে একটা বড়সড় ডাইভারশন ট্যাকটিক।
  • MP | 115.187.***.*** | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৫542596
  • @সুতীর্থ , ঠিকই বলেছেন | আমি আসলে এই জিয়োপলিটিক্স ব্যাপারেই জানতে চাইছি | কোন ধরণের জিয়োপলিটিক্সের জন্যে এধরণের ব্যাপার ঘটে ? বালুচিস্তানে গত মাসেই খুব বড় একটা টেররিস্ট হামলা হয়েছিলো | তখন গোদি মিডিয়া এই নিয়ে খুব লাফাচ্ছিলো | কালকের ব্যাপারটার সঙ্গে কি বালুচিস্তানের সন্ত্রাসী হামলার কোনো সম্বন্ধ আছে ? তাছাড়া মিডিয়াতে দেখছি IB এর একজন অফিসার নিহত হয়েছেন এই সন্ত্রাসী হামলাতে | সেজন্যই মনে হচ্ছে বালুচিস্তানের সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে এব্যাপারে কোনো সম্পর্ক আছে |
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন