১৯৬৭ সালে ইজরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে। ওদিকে এই যুদ্ধের আগে থেকেই গাজার এক-পঞ্চমাংশ ইজরায়েলের দখলে। ২০০৪ সালের পর থেকে গাজাও যেন জেলখানায় পরিণত হয়েছে। ইজরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ইচ্ছেমত প্যালেস্টাইনিদের পশ্চিম তীরের বাসস্থান থেকে হঠিয়ে দিয়েছে। আরবরা যখনই প্রতিবাদ করেছে, তাদের বা আইডিএফের হিংসার শিকার হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে আরবরা বসতি দখল ও নির্যাতন সইছে। ইজরায়েলিরা পশ্চিম তীরের ৫৯ শতাংশ দখল করে নিয়েছে, ইজরায়েলি বসতি বানিয়ে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন পৃথিবীর নজর যখন গাজার উপর, সেই অবকাশে ইজরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরে আরবদের বাড়িতে ঢুকে বাসিন্দাদের মারছে, গাড়ি, ফলের বাগান জ্বালিয়ে দিচ্ছে। বসতিতে ঢুকে এমন সন্ত্রাস করছে যে ভয়ে সবাই বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে। ... ...
২২ জুন, দ্রৌপদী মুর্মুর এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার খবর আসে। তার ঠিক ১০ দিন পরে, মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলা থেকে খবর এলো যে সাহারিয়া উপজাতি সম্প্রদায়ের ৩৮ বছর বয়সি এক মহিলা, রামপ্যারিকে, জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তাঁর পরিবারকে মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে ৬ বিঘা জমি দেয়া হয়েছিল। ওঁর সঙ্গে কাগজপত্রও ছিল। কিন্তু জমি দখল করে বসেছিল আদিবাসী নন এমন সমাজের মানুষেরা। জবরদখল করার পরে তারা আবার সেখানে কৃষিকাজও করছিল। উপরন্তু, রামপ্যারির পরিবারকে হুমকিও দিচ্ছিল ওরা। এই ঘটনার ঠিক এক সপ্তা আগে, রামপ্যারি ও তাঁর স্বামী অর্জুন, পুলিশকে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানায় এবং তাঁদের কাছে সুরক্ষাও চায়। কিন্তু, কিছুই করা হয়নি। রামপ্যারি যখন মাঠে গিয়ে আপত্তি জানান, তখন তারা সেখানেই ওঁর গায়ে ডিজেল ছিটিয়ে ওঁকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার ভিডিও-ও পাওয়া যায়। এইবারে আমি ভাবতে বসলাম, যদি দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি হন তাহলে কি রামপ্যারি ও তাঁর পরিবার ন্যায় বিচার পাবেন? ... ...
উদয়পুরে কানহাইয়া লাল খুনের ঘটনায় হতবাক গোটা দেশ। হওয়ার কথাই। যে-কোনো হত্যাকাণ্ডই ভয়ংকর, কিন্তু এই ঘটনা শুধু একটা হত্যা নয়। যে পরিকল্পিত ও নৃশংস পদ্ধতিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা বর্বরতার নমুনা। শুধু তাই নয়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। এই হত্যাকাণ্ড ছিল নিখাদ গোঁড়ামির ফল। কানহাইয়া লালের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নূপুর শর্মাকে (যিনি নবী মোহাম্মদকে অপমান করেছিলেন) সমর্থন করে কথা বলা হয়েছে বলে রিয়াজ আখতারি এবং গৌস মোহাম্মদের রাগ ছিল। ... ...
স্থায়ী চাকরিতে যে বেতন, ভাতা, পেনশন, গ্র্যাচুইটি এবং প্রশিক্ষণ পাওয়া যায় তার থেকে কি চার বছরের কাঁচা চাকরি ভালো হবে? চার বছর পর নিশ্চিত সরকারি বা বেসরকারি চাকরির সব কথাই ভাঁওতাবাজি। বাস্তবটা হল যে, সরকার ১৫-২০ বছর ধরে চাকরি করা প্রাক্তন সেনাদেরই চাকরি দিয়ে উঠতে পারেনি। মোট ৫,৬৯,৪০৪ প্রাক্তন সেনা চাকরির জন্য নাম নিবন্ধন করেছিলেন, যার মধ্যে মাত্র ১৪,১৫৫ জন প্রাক্তন সেনা (অর্থাৎ মাত্র ২.৫%) সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি খাতে চাকরি পেয়েছেন। ... ...
বর্তমানে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট সংখ্যা (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী মিলিয়ে) ১৪ লাখের কাছাকাছি। এই সংখ্যা বজায় রাখতে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৮০ হাজার স্থায়ী সৈন্যের নিয়োগ প্রয়োজন। অগ্নিপথ প্রকল্পে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে এবং কিন্তু মাত্র ৪ বছরের জন্য। এরপর তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে বারো হাজারকে সেনাবাহিনীতে স্থায়ী চাকরি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী, আজ থেকে ১৫ বছর পরে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লক্ষের মধ্যে নেমে আসবে। প্রতি বছর ৫০ হাজারের পরিবর্তে ১ লাখ অগ্নিবীর নিয়োগ করা হলেও ১৫ বছর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রায় ৭ লাখ লোক অবশিষ্ট থাকবে। ... ...
এখন এই মাৎস্যায়নের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর একটাই আশা। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বজায় রাখতে হলে সুপ্রীম কোর্টকে অবিলম্বে ও স্বতঃপ্রণোদিত বিচারের মাধ্যমে বুলডোজারের যথেচ্ছাচার বন্ধ করতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনো ধ্বংসযজ্ঞ ঘটবে না, এমন নিয়ম করতে হবে। বিধি-বিধানকে একপাশে রেখে বাসস্থান ভাঙা কর্মকর্তা এবং নির্দেশ দেওয়া নেতাদের ব্যক্তিগতভাবে দায়ি করে শাস্তি দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে জাভেদ মোহাম্মদের এই মামলাকে উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করাতে পারে। ... ...
প্রধানমন্ত্রী তখন গুজরাটে। বরাবরের মতোই তিনি দারুন ভাষণ দিচ্ছিলেন। তার আট বছর ধরে করে যাওয়া জাতির সেবাকার্যের প্রশংসা করছিলেন। তিনি বলেন, "আমি আট বছরে ভুল করেও এমন কিছু হতে দিইনি, এমন কিছু করিনি যা আপনাকে বা দেশের কোনো নাগরিকের মাথা নত করাবে"। প্রধানমন্ত্রীর এই মিথ্যেটা আগের সবকটাকে ছাড়িয়ে গেছে। কথাটা শুনে গত আট বছরের আটটি ছবি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। ... ...
কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ব্যথিত বৃদ্ধ ঠিক করেন নোয়াখালির গ্রামে গ্রামে, বিহার-কলকাতা-দিল্লি-পাঞ্জাবের দাঙ্গা-বিদ্ধস্ত বস্তিতে তিনি শেষ চেষ্টা করে দেখবেন। তাঁর সারাজীবনের আদর্শ - অহিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করবেন। সঙ্গী তাঁর অক্ষয় সাহস আর হাতে-গোনা কয়েকজন অনুগামী। বিহারে হিন্দুরা তাঁদের আচরণ পরিবর্তন না করলে তিনি আমরণ অনশনের হুমকি দেন '৪৬-এর নভেম্বর মাসে। আর '৪৭ এর জানুয়ারি মাসে তিনি শুরু করেন তাঁর নোয়াখালি ভ্রমণ। দাঙ্গার শিকার নোয়াখালির সংখ্যালঘু হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের মনোবল জোগানো আর সংখ্যাগুরু মুসলমানদের মন পরিবর্তনের জন্য এই তাঁর যাত্রা-সাত সপ্তাহের এই যাত্রায় ১১৬ মাইল তিনি পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান। জল-কাদার মধ্য দিয়ে, ভাঙা বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে, বিরুদ্ধ-ক্রুদ্ধ মানুষের ঘৃণা পেরিয়ে, সংশয়-অবিশ্বাস পেরিয়ে, মৃত্যুভয় পেরিয়ে খালিপায়ে তাঁর এই হাঁটা - এ হাঁটার তুলনীয় নজির পৃথিবীর মানুষ খুব বেশি একটা দেখে নি। তাঁর পথে ক্রুদ্ধ মুসলমানদের ছড়ানো ময়লা তিনি একবার নিজের হাতে পরিষ্কার করেছিলেন। প্রতিদিন সকালে তাঁর যাত্রা শুরু হত রবীন্দ্রনাথের 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে' গান দিয়ে। সুমিত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন - 'সেটি হয়ে উঠেছিল তাঁর প্রিয় স্তোত্র।' শুরুতে কিছু প্রতিরোধ ছিল - সাংবাদিক শৈলেন চ্যাটার্জি লিখেছেন - মুসলমানরা তাঁকে বিশ্বাস করত না; পরে তারা বুঝতে শুরু করল - এই মানুষটি সাধারণ একজন মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দু নয়, এ অন্য কিছু। লাইন দিয়ে মানুষ তাঁকে দেখতে আসত, তাঁর চলার পথে ভিড় করে জোড়হাতে দাঁড়িয়ে থাকত তারা - তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে পীড়িত মানুষজনকে সান্তনা দিতেন, প্রার্থনা করতেন, সম্প্রীতির কথা বলতেন। ... ...
দানিশ বারবার বলেন, জীবন বিপন্ন করে তিনি ছবি তুলতে চান না। এমনকি আহত হওয়ার বিনিময়েও একটা ভালো ছবি তুলতে চান না। বলেন, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাংবাদিক জানেন কীভাবে কনফ্লিক্ট জোন কভার করতে হয় নিজেকে বাঁচিয়ে। বন্দুক তাক করা উগ্র হিন্দুত্ববাদীর সামনে অনভিজ্ঞ সাংবাদিকরা ভুল করে চলে গেলে তিনি তাদের সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন, অসাধারণ এবং আর এস এস সন্ত্রাসের মুখ হয়ে ওঠা সেই ছবিটি তোলার থেকেও অক্ষত থাকা ও রাখাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি সবসময় নিজেকে ভয় পেতে শেখান, নইলে কখন এমন কিছু করে ফেলবেন যাতে শারীরীক ক্ষতি হবে। বলেছেন, তিনি যে অতিমানব নন, এটা নিজেকে ভুলতে দেননি কোনদিন। তাহলে কি ধরে নেব যে গড়পড়তা স্বার্থপর সংসারী মানুষের থেকে দানিশ সিদ্দিকি আলাদা কেউ নন? কিন্তু তাহলে দানিশের কর্মজীবনের প্রধান অ্যাসাইনমেন্টগুলো হিসেবে আঁটানো যাবেনা, যার মধ্যে মোসুলের যুদ্ধ, রোহিঙ্গা ক্রাইসিস, দিল্লির মব লিঞ্চিং, শ্রীলংকার বিস্ফোরণ এবং আফগানিস্তানের তালিবান আর আফগান সেনা সংঘর্ষ আছে। ... ...
বিজেপি মানেই পার্মানেন্ট অশান্তি। সাম্প্রদায়িকতা রুখতে পারে শ্রেণি চেতনা, মহিলাদের ক্ষমতায়ণ, প্রকৃত ইতিহাসবোধ, বাংলার উদার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে চাই ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের প্রসার, কৃষিনির্ভর গ্রামাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন। জানালেন সিপিআই(এম-এল)-লিবারেশন দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী রাজনীতির পুনর্বিন্যাস আসন্ন। বৃহত্তর বামপন্থী মঞ্চ গঠন সম্ভব। বিধানসভায় না থাকলেও মানুষের সংকটে ও ন্যায্য দাবির সংগ্রামে পাশে থাকতে হবে বামপন্থীদের। বিজেপি-র সাম্প্রদায়িকতার মতাদর্শগত ভাবে বিরোধিতা করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্ধ বিরোধিতা নয়, জরুরি সরকারকে মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে বাধ্য করার আন্দোলন। জানালেন সিপিআই(এম-এল)-লিবারেশন দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
সামাজিক প্রকল্পগুলির জোরেই নিজস্ব ভোট ধরে রেখেছে তৃণমূল। অতিরিক্ত ভোট মিলেছে সুস্পষ্ট বিজেপি-বিরোধী অবস্থানে। সুচিন্তিত ভাবে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের বড়ো অংশ বেছে নিয়েছেন এই দলকেই। বিজেপি-র সর্বভারতীয় বিপদ সম্যক ভাবে বুঝতেই পারছেন না মূলধারার বাম নেতৃত্ব। বিরোধী ভূমিকাপালনের বদলে নিজেদের ভেবেছেন ‘গভর্নমেন্ট ইন ওয়েটিং’। জনবিচ্ছিন্নতা চরমে। বামশূন্য বিধানসভায় বিজেপি-র উত্থান দুশ্চিন্তার। জানালেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
এই রিপোর্ট তৈরি করার পথে অনেক বাধা এসেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা এইসব তথ্য পেয়েছি। তাঁদের নাম আমরা প্রকাশ করতে পারব না, কারণ তা অনৈতিক হবে। কিন্তু এই রিপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে যে ইঙ্গিত আমরা পেয়েছি, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা যা বুঝছি তার সারকথা হল—‘এখানে ধর্মীয় মেরুকরণ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে যে-কোনো সময় আবার দাঙ্গা লাগতে পারে।’ ... ...
যাঁরা মারা গেছেন বিজয় রজকের চোখে তাঁদের অধিকাংশই দাঙ্গাকারী নন। বিশেষত, যদি খতিয়ে দেখা হয়, তাহলে বোঝা যাবে যে নিহতদের কেউই অতীতে কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এখন সবকিছুতেই সাম্প্রদায়িক রং লাগানো হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন জায়গায় দাঙ্গা শুরু হয়েছে যেখানে হিন্দু বসতি শেষ হচ্ছে আর মুসলিম বসতি শুরু হচ্ছে—বর্ডার জাতীয় এলাকায়। ... ...
অবৈধভাবে নদীবক্ষ খননের জন্য কাশ্মীর এখন সংবাদের শিরোনামে। কয়েক মাস আগেই নীলামের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে শতাধিক নদীবক্ষ থেকে মিনেরালস ( বালি, পাথর, নুড়ি) ছেঁকে নেবার ব্যাপারটি। যে কম্পানিগুলি নীলামে জিতেছে তারা পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা না করেই পরদিন থেকেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দিয়েছে। তার কোনো বিহিত না করেই উল্টো চাপ দিয়ে সরকারি হুকুমনামা এসে গেল যে পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্র দেবার ব্যাপারটিই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলতে হবে। আশ্চর্য কী যে একদিনে পঞ্চাশেরও বেশি মিটিং সেরে ফেলা হবে। ... ...
কী হয়েছে না হয়েছে তা সকলেই জানতে পারে। লোকে সাধারণত পার্টি আর মিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করেন, কিন্তু সেসব তথ্যে পক্ষপাতদুষ্টতা থাকে। এরকম একটি সাম্প্রদায়িকভাবে বিভক্ত অঞ্চলে, যেখানে যে-কোনো সময় দাঙ্গার আগুন জ্বলে উঠতে পারে, সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলা যথেষ্ট কঠিন কাজ, বিশেষ করে যারা পরিবারের লোকজনদের হারিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা। মৃত্যুর বিভিন্ন কারণ বাদ দিয়েই আমরা মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা বলব বলে পরিকল্পনা করলাম। ... ...
কিন্তু টিন গুদাম, দর্মা লাইন, এবং ২৪ নং বাড়িতে লুটের প্রেক্ষিত কী ছিল? আমরা জানতে পারি যে এর পিছনে এমন কিছু কারণ রয়েছে, যার শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত, আর রয়েছে ইন্ধন জোগানোর ঘটনা। ভাটপাড়া বিধানসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং তৃণমূলের যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অর্জুন সিংহের ছেলে পবন সিংহের বিরুদ্ধে মদন মিত্রকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়। অর্জুন সিংহ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজয়ী হওয়ার ফলে, তাঁকে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। আর তার ফলেই ভাটপাড়া বিধানসভায় বিধায়কের আসনটি খালি হয়। মদন মিত্রের কাছে এটা ছিল ‘ওয়াটারলুর যুদ্ধ’র সমান। ... ...
আমাদের তথ্যানুসন্ধানের কাজ শুরু হয় ২০১৮-র এমন এক সময়, যখন ভাটপাড়ার অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন আগুন আর ছাইয়ের উপর দাঁড়িয়েছিল। ভাটপাড়া নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন সময়ে কিছু ফিল্ড সার্ভে-ও করেছিলাম। বছরখানেক পেরিয়ে এসে আমরা যখন পুরোনো বিবৃতিগুলির পর্যালোচনায় বসেছি, ঠিক তখনই কিছু নতুন শব্দকে কেন্দ্র করে নতুন করে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রূপ নিতে শুরু করেছে—‘নিজামউদ্দিন-মুসলিম-করোনা’। ইতিমধ্যে তেলিনিপাড়াতেও দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়, এবং ফলস্বরূপ হুগলি নদীর দু-পারেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ... ...
আমাদের তথ্যানুসন্ধানের কাজ শুরু হয় ২০১৮-র এমন এক সময়, যখন ভাটপাড়ার অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন আগুন আর ছাইয়ের উপর দাঁড়িয়েছিল। ভাটপাড়া নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন সময়ে কিছু ফিল্ড সার্ভে-ও করেছিলাম। বছরখানেক পেরিয়ে এসে আমরা যখন পুরোনো বিবৃতিগুলির পর্যালোচনায় বসেছি, ঠিক তখনই কিছু নতুন শব্দকে কেন্দ্র করে নতুন করে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রূপ নিতে শুরু করেছে—‘নিজামউদ্দিন-মুসলিম-করোনা’। ইতিমধ্যে তেলিনিপাড়াতেও দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়, এবং ফলস্বরূপ হুগলি নদীর দু-পারেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ... ...
আমি গিয়ে ভাব করি ইনশাস রাইফেল নিয়ে ব্যাজার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ছত্তিশগড় আর্মড পুলিশের দুই জোয়ানের সঙ্গে। একজন চেয়ে নেয় সাক্ষরতার একটি ম্যাগাজিন। বলে -- আমি উত্তরপ্রদেশের গ্র্যাজুয়েট। বই পড়তে ভালবাসি, এখানে কিছু পাইনে। রোদ্দূর চড়ছে। আমরা দুজন হ্যান্ডপাম্প থেকে জল খেতে একে অন্যের সাহায্য করি, জানতে পারি সকাল থেকে ওর পেটে কিছু পড়েনি। ভোর ছ'টার থেকে ডিউটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই দুপুরে লাঞ্চের সময় কিছু জুটবে। জিগাই-- রাত্তিরে মশারি? জঙ্গলে ওডোমস? -- ওসব সি আর পি'র জোয়ানরা পায়, হাজার হোক কেন্দ্রীয় সরকারের সেপাই। আমাদের কে পোঁছে? ইতিমধ্যে সর্দারজী টাটা সাফারিতে চড়ছেন দেখে সরকারি ছোট আমলাদের মধ্যে টেবিলে সাজানো কাজু-কিসমিস- বিস্কুট-কলা-আঙুর খাবলে নিয়ে পকেটে পোরার অশ্লীল প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। দেখতে দেখতে টেবিল সাফ। আমার পকেটে কিছু বিস্কুট, আর কিসমিস। তার থেকে গুনে ক'টি দেই ওই ছয়ফুটিয়া সেপাইকে, ও হেসে ধন্যবাদ দেয়। সলওয়া জুড়ুম শিবিরের জনতাকে মন দিয়ে দেখেছি। মনে হয় ওদের আজ গাঁয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও ফিরে যাবে না। মানুষ অভ্যাসের দাস। সেই খাঁচার পাখি, বনের পাখি গল্প। -- এই মালী, চৌকিদার, রাঁধুনি, এস পি ও (স্পেশাল পোলিস ফোর্স)। -- আমাদের সাক্ষরতা অভিযানের উদ্দেশ্য সরকারি চাকরি পাইয়ে দেয়ার চেয়েও পেশাগত দক্ষতা হাসিল করে সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টের দিকে যাওয়া। আর শিক্ষিত কে? যে লোকটি এম বি এ করে দিল্লিতে মাল্টিন্যাশনালে চাকরি করে রাত্তিরে মত্ত অবস্থায় বৌকে পেটায় সেই শিক্ষিত? ... ...