উৎপল দত্ত কেন বোম্বে গিয়ে ভাঁড়ামি করতেন? রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর একটা লেখা, এই প্রশ্নটা উস্কে দিয়েছে। প্রশ্নটা আসলে স্রেফ উৎপলকে নিয়ে না, অনেক বড়। বাংলা থেকে সিনেমা-শিল্পীদের একটা মহানিষ্ক্রমণ ঘটে ১৯৫০ এ। তারপরও সেটা চলতেই থাকে। কেন? কারণটা সব্বাই জানেন, কিন্তু কেউ বলেন না। কারণটা হল দেশভাগ। ৪৭ এর আগে, ভারতের দুটো বড়ো সিনেমা কেন্দ্র ছিল কলকাতা আর বোম্বে। বাইরের লোকেরা কলকাতায় আসতেন, যেমন সাইগল, বড়ো-বড়ো শিল্পীরা বোম্বে যাবার অফার তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতেন। প্রমথেশ বড়ুয়া বোম্বে প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ওই বাজারে কে যাবে। কেউ কেউ আবার কলকাতা থেকে যেতেনও, যেমন অশোককুমার। সব মিলিয়ে একটা যাতায়াত ছিল। নিউ থিয়েটার্স ছিল কলকাতার বিগ বস। তাদের সিনেমা হত দ্বিভাষিক। বাজার বাংলা ছাড়িয়ে চলে যেত লাহোর অবধি। ছিল ভারতলক্ষ্মী। ইস্টার্ন মোশন পিকচার্স। সবাই বড় বড় স্টুডিও। ... ...
আগেই লিখেছি, কোনো কিছুই মহাশূন্যে আলোর বেগের চেয়ে বেশি জোরে যেতে পারে না। কিন্তু জলের মধ্যে তো আর সে বাধা নেই, সেখানে আলোর যা বেগ, তার চেয়ে বেশি বেগেও যাওয়া সম্ভব। আপনি আমি পারব না, কিন্তু ইলেকট্রন যেতেই পারে, যদি তার যথেষ্ট শক্তি থাকে। এই সব সময়ে একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে। কনকর্ড বলে একটা প্লেন এক সময়ে উড়ত, তার বেগ ছিল শব্দের চেয়ে বেশি। এর চলার পথে শক ওয়েভ বা বুম তৈরি হত। প্লেন চলার সময়ে যে শব্দ হয়, প্লেন তাকে ফেলে এগিয়ে যেত, শব্দ তার পিছু ধাওয়া করত। জলের মধ্যে ইলেকট্রন বা ওই জাতীয় কণা যদি আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলে, তাহলে এরকম আলোর শক ওয়েভ তৈরি হয়। চলার পথ ঘিরে শঙ্কুর আকারে সেই আলো ছড়িয়ে পড়ে। একে বলে চেরেনকভ বিকিরণ ... ...
কেন্দ্রাতিগ বলেরও (centrifugal force) অন্তত একটি উদাহরণ তিনি আবিষ্কার করেছিলেন: দড়ির মাথায় বেঁধে জলভরা পেয়ালা ঘোরালে, জল বাইরে বেরিয়ে আসে না। উদ্ভিদের যৌনজনন সম্পর্কে তিনি জানতেন আর বিবর্তন ও যোগ্যতমের উদ্বর্তন নিয়ে তাঁর নিজস্ব তত্ত্ব ছিল (যদিও বেশ আজগুবি, মানতেই হবে)। মূল কথাটি: “সে এক বিস্ময়কর দৃশ্য—অগুণতি, সমস্ত সম্ভাব্য আকার-আকৃতির নশ্বর গোষ্ঠীর জীব ছড়িয়ে ছিল সর্বত্র।”... জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রসঙ্গে: চাঁদ যে প্রতিফলিত আলো ছড়ায়, তা তিনি জানতেন, তবে সূর্য সম্পর্কেও তাঁর একই ধারণা ছিল; তিনি বলেছিলেন, যে আলো এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে সময় নেয়, কিন্তু তা এতই কম, যে আমাদের ঠাহর হয় না; তিনি এও জানতেন, যে, পৃথিবী আর সূর্যের মাঝে চাঁদ এসে পড়ে বলে সূর্যগ্রহণ হয়—মনে হয় এ তথ্য তিনি জেনেছিলেন আনাক্সাগোরাসের থেকে। ... ...
একজন বিজ্ঞানী অজ্ঞতা, সন্দেহ আর অনিশ্চয়তা নিয়ে প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন; আমার মতে এই অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যতক্ষণ একজন বিজ্ঞানীর কাছে কোনো সমস্যার উত্তর নেই – তিনি অজ্ঞ। তিনি যখন কোনো সম্ভাব্য উত্তর অনুমান করেন, তিনি তখন অনিশ্চিত এবং যখন তিনি নিশ্চিত, যে, তার অনুমানটি আলবত ঠিক, তখনও তাঁর মনে কিছুটা সন্দেহ থেকে যায়। আমরা বুঝেছি, প্রগতির পথে এগোতে হলে অজ্ঞতাকে স্বীকার করা আর সন্দেহের জন্যে অবকাশ রাখার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নেই। বিজ্ঞানের জ্ঞানভাণ্ডার আসলে এমন কিছু বিবৃতির সমষ্টি, যা নিয়ে আমরা বিভিন্ন মাত্রায় নিশ্চিত—কিছু খুব অনিশ্চিত, কিছু প্রায় নিশ্চিত—তবে কোনো কিছুই সম্পূর্ণ নিশ্চিত নয়। ... ...
আরজিকরের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি জানি, এই "শোনা যাচ্ছে"র উৎসগুলো কী। আগস্টের ৯ তারিখ ঘটে ঘটনাটা। পুলিশ এবং প্রশাসন ব্যাপারটা কোনোমতে শেষ করে, চাপাচুপি দিয়ে দিতে পারলে বাঁচত। আদালতে সেই নিয়ে, ধমকানিও খেয়েছে তারা। সন্দেহের একটা উৎস সেটা। কিন্তু স্রেফ সন্দেহ থেকেই তো "শোনা যাচ্ছে"র উৎপত্তি হয়না। তার জন্য সুনির্দিষ্ট করে কাউকে কিছু বলতে হয়। বা কিছু মালমশলা তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে গোটা চারেক এরকম উৎস তো পাওয়া যায়ই। ১। উৎস এক। চিকিৎসক। ঘটনাটা ঘটে ৯ তারিখ। ময়নাতদন্ত হয়ে যাবার পর, তার রিপোর্ট দেখে ডাক্তার সুবর্ণ গোস্বামী আগস্টের ১২ তারিখ আনন্দবাজার অনলাইনে বলেনঃ "পোস্টমর্টেম রিপোর্টে যা লিখেছে, তাতে একটা হিউজ পরিমান, প্রায় দেড়শো গ্রামের বেশি লিকুইড স্যাম্পল তারা পেয়েছে, সেটা হয়তো কিছুটা রক্তমাখা সিমেন হতে পারে, কিন্তু এতটা ভারি স্যাম্পল, আমাদের যা মনে হয়, এটা একজনের বীর্য হতে পারেনা।" এর ভিডিও অনলাইনে ছিল এবং আছে। সংবাদের শিরোনাম ছিল "‘এক জনের পক্ষে সম্ভব নয়’, দাবি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের"। ... ...
ইনফোসিস কার্যত ঘাড়-ধাক্কা দিয়ে কর্মচারিদের বার করে দিল এই কদিন আগে। ট্রাম্পের সরকার এসেই কিছু লাখ সরকারি কর্মচারিকে পদত্যাগ করতে বলেছিল। কদিন আগে আবাপ কয়েকশো কর্মীকে চুপচাপ ছাঁটাই করে দিল। এইগুলো এখন চলবে। এবং আমরা কেউই এর আওতার বাইরে না। নব্বইয়ের দশকের উদারীকরণ যে নতুন কর্মসংস্থান, নতুন দিগন্তের আশা দেখিয়েছিল, সেসব এখন মৃত, উদারীকরণের কঙ্কাল বেরিয়ে গেছে। এইটা একটা নতুন ব্যাপার। আজ পর্যন্ত, নতুন প্রযুক্তি পৃথিবীতে আসেনি তা নয়, চাকা আবিষ্কার থেকে তথ্যপ্রযুক্তি পর্যন্ত, এসেই চলেছে। প্রতিটাতেই প্রচুর লোকের কাজ গেছে। চাকা আবিষ্কারের সময়ও আন্দাজ করতে পারি, ঘাড়ে করে মোট বইতেন যাঁরা, তাঁদের কাজ গিয়েছিল, আর তথ্যপ্রযুক্তির অটোমেশনে, ধরুন গাড়ি-কোম্পানির লোকেদের কাজ গিয়েছিল। কিন্তু এর প্রতিটাতেই নতুন কাজের দিগন্তও খুলে গিয়েছিল। চাকা আবিষ্কারের পর প্রয়োজন হয়েছিল প্রচুর গাড়োয়ান, প্রচুর পশুপালকের। তথ্যপ্রযুক্তিতে অজস্র মানুষ কাজ পেয়েছেন। চাকা পুঁজিবাদের বহু আগে আবিষ্কার হয়েছে, কিন্তু আধুনিক পুঁজিবাদে এই জিনিসটা অভাবনীয় গতি পেয়েছিল। বস্তুত বলাই হত, পুঁজিবাদ টিকে আছে উদ্ভাবনের উপর। একটা করে সংকট আসবে, আর নতুন উদ্ভাবন খুলে দেবে সংকটমুক্তির উপায়। কিন্তু পুঁজিবাদের জন্যও আজকের দিনটা নতুন। এমন একটা প্রযুক্তি আসতে চলেছে, খানিকটা এসেও গেছে, হ্যাঁ, আমি এআই এর কথাই বলছি, যে উদ্ভাবন নতুন কর্মসংস্থানের রাস্তা দেখাবে বলে কেউই বলতে পারছেননা, কর্মসংকোচনটা তো চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে, প্রিন্ট মিডিয়া ধীরে-সুস্থে উঠে যেতে চলেছে, টিভি হয়তো আরও কিছুদিন টিকবে, সিনেমার কী হাল হবে কেউ জানেনা। ওটিটি প্লাটফর্মগুলো সংখ্যায় মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেছে। সরকারি চাকরি যাঁরা করেন, একেবারেই নিরাপদ থাকবেন না। সরকারের আয় কমলে বাজে খরচ কমানোর দিকে মন দিতেই হবে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের লোকেদের আপাতত তেমন বিপদ নেই, এমনিতেই তাঁরা বেশ খারাপ অবস্থায় আছেন, কিন্তু খদ্দেরদের কাজ না থাকলে তাঁরাই বা বেচবেন কাদের। ... ...
এবছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার মহিলা সাহিত্যিক হান কাং। তার ‘হিউমান অ্যাক্ট’ নামে উপন্যাসে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার গাংজু (Gwangju) প্রদেশে ১৯৮০ সালের মে মাসে চলা গণবিক্ষোভ এবং ছাত্রবিক্ষোভ দমনে সামরিক শাসকদের দ্বারা ঘটানো ছাত্রদের ওপর গণহত্যা চিত্রিত করেছেন। ... ...
ভাষা যদি নেহাত অর্থহীন না হয়, তবে শব্দের কিছু মানে থাকা আবশ্যিক, আর একটি শব্দ সাধারণভাবে যে কেবল অন্য কতগুলি শব্দকে বোঝায়, তা নয় – শব্দ এমন কিছুকে নির্দেশ করে, যার অস্তিত্ব আছে—সে আমরা তা নিয়ে কথা বলি বা না বলি। ধরো, তুমি জর্জ ওয়াশিংটনকে নিয়ে কথা বলছো। যদি ওই নামে কোনো ঐতিহাসিক চরিত্র না থেকে থাকে, তবে নামটি (আপাতদৃষ্টিতে) অর্থহীন আর ওই নাম ব্যবহার করা বাক্যগুলি অবান্তর। পার্মেনিদিস জোর দিয়ে বলছেন – শুধু যে জর্জ ওয়াশিংটন অতীতে ছিলেন তা-ই নয়, কোনো না কোনোভাবে তিনি এখনো নিশ্চয়ই আছেন, নইলে তাঁর নাম এখনো বহুল ব্যবহৃত থাকতো না। এ যুক্তি স্পষ্টতই ভুল, কিন্তু একে এড়িয়ে যাবো কী করে? ... ...
বাংলা ভাষা এখন ভেসে চলেছে বেনো জলে – তাকে ফিরিয়ে আনবে ভবিষ্যতের কোন বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম-শরৎ-রবিঠাকুর – কে জানে? ... ...
১। আগ্রাসী হিন্দুত্বের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চলছে। ২। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বড়ো পুঁজির হাতে সম্পদ তুলে দেবার সুবন্দোবস্তো চলছে। ৩। গণতন্ত্রের উপর আঘাত চলছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ইউএপিএ, পিএমএলএ এইসব আইন ব্যবহার বিরোধী নেতাদের জেলে পোরা হচ্ছে। সাংবাদিক, স্বাধীন মিডিয়ার উপরও আক্রমণ চলছে। ৪। রাজ্যের অধিকারের উপর আঘাত চলছে। বিরোধী-শাসিত রাজ্যদের প্রাপ্য দেওয়া হচ্ছেনা। রাজ্যপালকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ৫। অর্থনীতির অবস্থা খুব খারাপ। কর্পোরেট লুট চলছে। অসাম্য ক্রমবর্ধমান। কৃষিক্ষেত্রের অবস্থা খুব খারাপ। শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, বেকারি, ক্রমবর্ধমান। হিন্দুত্বকে পদ্ধতিগতভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। স্বৈরতন্ত্র জোরদার হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে খর্ব করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শিক্ষার সুযোগ ছোটো হয়ে আসছে। স্বাস্থ্যকে ক্রমশ বেসরকারি দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভারতীয় (মিশ্র) সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা হচ্ছে। মিডিয়াগুলোকে দখল করে নেওয়া হচ্ছে। মহিলা, যুব, দলিত, আদিবাসীদের উপর আঘাত নামিয়ে আনা হচ্ছে। পরিবেশগত বিপর্যয় আসন্ন। ... ...
ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণ মানে সে তো আমার আপনারই টাকা ! এখনো কতদিন নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন ! ... ...
নতুন চীনা জিপিটি ডিপসিকের আবির্ভাবে আমেরিকার টেক মার্কেট কিভাবে টলোমলো হয়ে গেছে । জিপিটির পেছনে এত খরচা কি যুক্তিযুক্ত ? ... ...
ভারতে ধনী দরিদ্রদের ফারাক ক্রমশ বাড়ছে। ... ...
দুইজন সাদা পোশাকের পুলিশ আমাকে আর জি কর হাসপাতালের একটি হলে নিয়ে যান। সেখানে একজন আইপিএস অফিসার ছিলেন এবং আজ আদালতে প্রদর্শিত সিসিটিভি ফুটেজ (Mat Exbt. LVII) আমাকে দেখানো হয়। আমি ওই ফুটেজে নিজেকে শনাক্ত করি। এরপর আমাকে সেই কক্ষে বসতে বলা হয় এবং পরে দুই সাদা পোশাকের পুলিশ আমাকে নিয়ে যান। বাইরে এসে দেখি একটি প্রিজন ভ্যান এবং অনেক মিডিয়া ও লোকজন জড়ো হয়েছেন। এটি ০৯.০৮.২০২৪ তারিখের রাত। আর জি কর থেকে আমাকে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় আমার ফোন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা গ্রহণ করেননি। ... ...