এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  গপ্পো

  • ঘোটকনামা

    upal mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২০০ বার পঠিত
  • ঘোড়া বলতে থাকে, ‘‘আমার গল্প শোনার লোক নেই কিন্তু ছবিতে আমাকে হরদম পাওয়া যায়। হ্যাঁ ছবিতে। তবে ঘটনার পরের যে বাস্তব সেখানে আমি থাকি না। সেখানে শুধু মানুষ আর মানুষ ঘোড়া নয়। সে চাইলেও হবে না ঘোড়া হতে পারবে না মানুষ। কিছুতেই না।”

    Master: Padshahnamah پادشاهنامه (The Book of Emperors) ‎‎
    Item: Prince Awrangzeb facing a maddened elephant named Sudhakar (7 June 1633)



    ঘোড়া কিস্যা ১

    পাদশানামার পাতা জোড়া ছবিতে বরাতিতে শাহাজাদা দারা শিকোহর সঙ্গে সবুজ পাগড়ি পরা শাহাজাদা শাহ সুজা আর কমলা পাগড়ি পরা শাহাজাদা মুরাদ বক্সকে দেখা যাচ্ছে সঙ্গে আসফ খান আর অন্যরা। লিখিত বিবরণীতে ঔরঙ্গজেব আছেন কিন্তু ছবিতে তিনি কোথায় ? তিনি ছবি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন আমাকে নিয়ে। ছবিটা এঁকে ছিলেন মুরার। দারার কোমরের ডান দিকে, মুরারের আঁকা ছবি।
    কথাটা শিল্পীর দস্তখত হিসেবে জ্বল জ্বল করছে, ছবিটায় রং আর আলোর উৎসগুলোও নিখুঁত আঁকা এমনকি পেছনের মাটির চত্ত্বরে কে যেন জল ছিটিয়ে নরম করে ধূলো ওড়া বন্ধ করে, সেই ছবিও যত দেখা যাবে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হতে থাকে। কিন্তু ঔরঙ্গজেব নেই। কোথায় ঔরঙ্গজেব ? কোথাও দেখা যায় না কেন তাঁকে ?

    বরাতির মিছিল ছেড়ে, বৈভব আর আয়েশের দঙ্গল ছেড়ে আমার মুখ ঘুরিয়ে দিয়েছেন শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব। ধীরে ধীরে চলেছেন আমার পিঠে চড়ে, ওনার প্রিয় আমি আর তিনি। এই আমায় কেনা হয়েছিল। যখন কেনা হয় ছিলাম ছোট। একি জাতকের সেই ঘোড়ার মতো যার প্রতিটা পায়ের, ল্যাজের আর মাথার আলাদা দাম দিতে হয় বারাণসীর হাটে? জানা যাচ্ছে না। তবে বোঝা যাচ্ছে একা হয়ে যাওয়া শাহাজাদার একেলাপন কাটাতে আমার কোন জুড়ি নেই। এ শাহাজাদাকে নিয়ে ছুটলে কিছু দেখা যায় না, শুধু কিছু অস্পষ্ট আওয়াজ শোনা গেল। সঙ্গে হয়তো হাওয়ার ঝাপটা। তারপর আমি থামলে ঔরঙ্গজেবকেও দেখা যেতে থাকে। পদ্ম পাতার ওপর দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে চলে গেলেন আর ঘোড়ার পায়ের ক্ষুরটাও ভিজল না। চাপ পড়ল না, পদ্ম পাতা যেমন ছিল তেমনই থেকে যায়। এইভাবে অনেকটা পথ অতিক্রম করে বন, পাহাড়, নদী, ঝর্ণা - তার আদি ও অন্ত সব পার হয়ে কয়েক মাস আগের এক দিনে আবার দেখা যাবে ঔরঙ্গজেব ও আমাকে। ধীরে ধীরে সকলের অজান্তে ছবির মধ্যে ঢুকে পড়ছেন তিনি অনেকটাই নিঃশব্দে। ঠিক যেমন করে শাহাজাদা দারা শিকোহর বরাতির ছবি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন, তেমনটাই নিঃশব্দে। চলে গেছেন সে বছরই সাতই জুনের অসহ্য গরমে আগ্রার কেল্লার পাশে, যমুনা নদীর তীরে সুধাকর আর সুরত সুন্দর দুই মত্ত হাতির লড়াই দেখতে অন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ছবিতে। সেখানে পনেরো বছর না হওয়া কিশোরের মত্ত হাতির দিকে বর্শা উঁচিয়ে ডাঁটো ভাবের ছবি আছে,এক বাহাদুরের। সে ঘোড়াটাতে আস্থা রাখে আর ঘোড়াও আস্থা রাখে তার চালনায় ফলত হঠাৎ খেপে ওঠা যুদ্ধের হাতির সামনে লাগামের নিয়ন্ত্রণে থাকছে সে।

    ধূ ধূ করে আগ্রায় যমুনার চর। একের পর এক মোঘল অভিজাতদের প্রাসাদ। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে আগ্রার কেল্লা। শাজাহান ঝারোখায় শাহাজাদাদের সঙ্গে ওই নদীর চরে হাতির লড়াই দেখছেন। মুহুর্মুহু বৃংহণ, ধুলোর ঝড় উঠছে দুই বিশাল হাতির পায়ের আছড়ানিতে, ঘষটানিতে,এধার-ওধার ঝটকায়। ওরা দুজন হল, সুধাকর আর সুরত সুন্দর, শাহী হাতিশালের দুই প্রকাণ্ড মদ্দা যুদ্ধের হাতি। হাতির লড়াই দেখা মোঘল বাদশাহদের প্রিয় মনোরঞ্জন ছিল। যুদ্ধের সময় মদ্দা হাতিদের প্রচুর মদ খাইয়ে উত্তেজিত করা হত যাতে কামান বন্দুকের শব্দে ভয় না পেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে শত্রুর প্রতিরক্ষা বা আক্রমণের দিশা এলোমেলো করে দিতে পারে, খেলার সময়ও তাই। মাহুতের অংকুশ সেদিন ঠিক্ঠাকই দুই হাতির লড়াই চালাচ্ছিল। লড়তে লড়তে দুটোতে সম্ভবত ঝারোখার তলাতেই চলে এসে বাদশাহের আর শাহাজাদাদের দৃষ্টির অগোচরে চলে যায়। শাজাহান নেমে এলেন সদলবলে। দু রঙা পাইবোল্ড ঘোড়ায় চড়ে দেখতে চললেন হাতির লড়াই,সঙ্গে প্রচুর সেপাই লস্কর, তারাও তৈরি হয়ে রয়েছে বাজি ফাটিয়ে,আগুনের গোলা ছুঁড়ে হাতিদের ভয় দেখাতে, সঙ্গে গুলি বন্দুকও আছে শাহী নিরাপত্তা রক্ষায়। আছেন মির্জা রাজা জয় সিংহের মতো জাহাঁবাজ সেপাইসালাররা। বাদশাহ ঘোড়ায় চড়ে এগোচ্ছেন, শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব সম্ভবত উত্তেজনায় একটু এগিয়েই গিয়েছিলেন সাদা ঘোড়ায় চড়ে। হঠাৎ যেভাবেই হোক দুই হাতি দুইদিকে চলে যায় আর সুধাকর সোজা ছুটে ঔরঙ্গজেবের দিকে এগিয়ে তেড়ে এল। ধুলো উড়িয়ে মত্ত হাতির তাড়া রুখতে মাহুত কী করতে পারে ? সে অংকুশের ইঙ্গিতে সুধাকরের মাথার বিশেষ জায়গার অনুভূতির কেন্দ্রকে অংকুশ মেরে চেষ্টা করছিল, চেয়েছিল হাতির মুখ ঘোরাতে। কিন্তু ভরপেট মদ খেয়ে হাতির আর কিছু বোধভাষ্যি আছে ? মোটা কাঠের গুঁড়ি পায়ে শেকলে বেঁধেও সুধাকরকে আটকানোর চেষ্টা করল হাতিশালের সেরা মাহুত, তাতে কিছুটা গতি কমছে বটে কিন্তু থামানো যাচ্ছে না। সেপাইরাও অনবরত বাজি ফাটিয়ে, বন্দুক ছুঁড়ে সুধাকারের দৌড় থামানোর চেষ্টা করে ফেল মেরে যায়। থামানো যাচ্ছিল না শাহাজাদা ঔরঙ্গজেবকেও ততো দিনে তিনি যুদ্ধের ঘোড়ার মনমর্জি বুঝতে, রেকাবের উপযুক্ত টোকা আর লাগামের কম বেশি টানের সঙ্গে আমাদের নিজস্ব বন্য জগতের ভাষায় কথা বলতেও শিখেছেন। আমি বলছি, “আমার মুখ ঘোরাবেন না হুজুর !”
    ----- তবে কি মরবে ?
    ----- ডান দিকে ঘুরে চলুন হুজুর !
    ----- তবে কি মরবে ?
    ----- ডান দিকে ঘুরছি হুজুর !
    ----- তবে কি মরবে ?
    ----- ডান দিক ঘেঁষে বর্শা মারবেন হুজুর !
    ----- তবে কি মরবে ?
    ----- ওর চোখের দিকে তাকাবেন হুজুর !
    ----- বল বল !
    ----- আমি ওর সামনে হঠাৎ দাঁড়িয়ে উঠব।
    ----- বল বল !
    ----- তারপর আরো কাছে গিয়ে ওর চোখের ভাষা বুঝে নেবো হুজুর !
    ----- ডান হাত দিয়ে বর্শা বিঁধিয়ে দেব শুঁড়ে। গভীরে ঢুকে যাবে বর্শা, বেরোবে রক্ত !
    ----- তারপর ওর ভাষা বুঝে নিয়ে, সেই বুঝে আমি ঠিক করব - উড়ে ওর মাথার ওপর দিয়ে চলে যাব না ডান দিক অথবা বাঁদিকে ঝাঁপ দিয়ে পড়ব !
    ----- সেই রক্তের সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে যাবে যাবতীয় নেশা ! সুধাকর আবার শান্ত হবে !

    তড়িৎ গতিতে সব ঘটে যায় আর ঔরঙ্গজেব দেখেন তিনি গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছেন হাতির শুঁড়ে যার থেকে অঝোরে শুধু রক্তই বেরচ্ছে এরকমই হলেও হাতি আবার আসে আক্রমণে। অথচ ঔরঙ্গজেব ভাবেন অন্য, হাতি যেন আগের থেকে শান্ত, হতচকিত এরকমই কিছু মনে করছেন তিনি। এই বিশ্বাস যে কোন যোদ্ধারই রাখতে হয়, না হলে সে পরবর্তী আঘাত করে কী করে ? ঔরঙ্গজেবও পরবর্তী আঘাত করার জন্য খোলা তলোয়ার হাতে মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখলেন, ভাইজান সুজা ছাড়া তাঁর একদম কাছেই কেউ নেই, সুজাও বর্শা হাতে এগিয়ে গেলেন সুধাকরের দিকে। সেপাইরা হাতিকে ভয় দেখানোর জন্য আগুনের গোলা ছুঁড়ে হাতি আটকাতে গিয়ে সুজার ঘোড়াকেই ঘায়েল করে বসে। ঔরঙ্গজেব আর সুজা মাটিতে, আর রাজা জয় সিংহ তাঁদের দুই ভাইকে আগলানোর চেষ্টা করতে এগুচ্ছেন, অন্য দিকে সুরত সুন্দর আবার সুধাকরের দিকে তেড়ে এলে দুই হাতির প্রার্থিত লড়াইয়ের আমোদ আবার শুরু হয়ে যায়। চতুর্দিকে 'বাহাদুর বাহাদুর' রবের মাঝে শাজাহান ছেলেকে বুকে টেনে নেন। মনে পড়ে গেল এরকমই জোয়ান বয়েসে তিনি এক বাঘের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাবা জাহাঙ্গীরের উপস্থিতিতে। একা খোলা তলোয়ার হাতে প্রথম আক্রমণের পর সেও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। তাতে তাঁর প্রত্যয় জন্মায় দ্বিতীয়বার আক্রমণে শত্রু নিকেশ হবে, হয়েছিলও তাই। দ্বিতীয় আক্রমণের আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা বাঘের ছিল না - সে পালাল। এ ছেলে তাঁর মতোই। শাহাজাদা ঔরঙ্গজেবকে বাহাদুর উপাধি দিলেন তিনি, ইনাম দিলেন।

    দরবারে ধন্নি ধন্নি পড়ে গেল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা শাহাজাদাকে নিয়ে কবিতা লেখা হল, সেই কবিতায় শুধু বীরত্ব, কোন ভয় বা দ্বিধার অলংকার নেই। নেই কোন ভয়ের উপমা। সে জন্য সালতানাতের কোণে কোণে প্রজারা ভিড় করে শোনে কলিমের কবিতা। কবিতায় মত্ত হাতি সুধাকর শাহাজাদার বীরত্বে নত হচ্ছে :

    বীর কখনো পাকড়ায় একটাকে
    ঘুরছে যেথায় মত্ত দুই হাতি।
    বাগিয়ে ধরেও ছেড়েই দিল তাকে
    এমনই বীর সঙ্গে হুঁশিয়ারও
    হয়নি বয়স নিজের দোয়া মাঙ্গার।।


    একটা গোপন কানাকানি তলে তলে বয়ে চলে শাহাজাদা দারা শিকোহ নাকি ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলেন হাতির কাণ্ডকারখানা দেখে তাই ভাইদের পাশে ছুটে আসেন না। দেখা গেল এই গপ্পোটা বানানো হয় আনুমানিক বছর পঞ্চাশ পর। তখন নাকি বেশি সাহস দেখানোর শাজাহানের সস্নেহ তিরস্কারে ঔরঙ্গজেব উত্তর দিচ্ছেন -
    '' ওই লড়াইতে আমি মরে গেলে অগৌরবের হতো না জাহাঁপনা। একদিন বাদশাহেরও মৃত্যু ঘনিয়ে আসে ; তাতে অগৌরব নেই। লজ্জা হয় ভায়ের কিত্তি দেখে। ''

    বানানো গোপন কানাকানির ভরসায় ভায়ে ভায়ে রেষারেষি শুরুর কথা ফেঁদে বসার ভিত্তি নেই। মোঘল শাহাজাদাদের রেষারেষি ক্ষমতার জন্য আর তা ছিল মজ্জায় মজ্জায়, ঘটনাকেন্দ্রিক নয়।
    এর কয়েক মাস পরে শাহাজাদা ঔরঙ্গজেবের পনেরোতম জন্মদিন খুব ধূমধামে হল। বাদশাহ শাহজাদাকে সোনা দিয়ে ওজন করালেন আর পাঁচ হাজার মোহর উপহার দিলেন। সঙ্গে দিলেন সুধাকর হাতিকে আরো দু লাখ টাকা দামের নানা উপহার। শাহাজাদা সুজাকেও ভায়ের পাশে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রশংসা করা হল, দেওয়া হল পুরস্কার। আরো পাঁচ হাজার মোহর গরিবদের মধ্যে বিলোন হয়।

    সুধাকর হাতিটা অধিকার করেছিলেন ঔরঙ্গজেব। তাই শাহী দরবার থেকে সেটা পেয়ে তিনি আরো অধিকার করতে চাইবেন এতো স্বাভাবিক। এই সময় তাঁর মনে পড়ে যায় সেই আমার কথা,যার সঙ্গে তিনি কথোপকথন করছিলেন। আর বলেছিলাম আমি যে উড়ে যাব। শাহাজাদা ছোটবেলা থেকেই গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে যেতেন। এবারো আমার চিন্তায় তিনি মগ্ন হলেন। শাহাজাদা ঔরঙ্গজেব আর আমাকে খুঁজে পেলেন না। কোথায় গেলাম আমি ? আমি কি সত্যিই উড়তে পারি ? উড়ে যাই কোথায় ? তারপর থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে, ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের পিঠে সওয়ার হতে হতে তিনি প্রায়ই আমার উড়ে যাওয়া নিয়ে তাঁর সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন, তাতে কোন ঘোড়াই উত্তর দেয়নি, ব্যাপারটা এড়িয়ে গেছে।

    পাদশানামায় শুধু প্রদর্শন, বাদশাহ শাজাহানের প্রদর্শন, মোঘল বীরত্বের প্রদর্শন। রঙের ঝলকানি, অপূর্ব নীল আকাশের তলায় মত্ত হাতি সুধাকরের মুখোমুখি, চোখাচোখি সজোরে শুঁড়ে বর্শা বেঁধানো অকুতোভয় বীর শাহাজাদা ঔরঙ্গজেবের ল্যান্ডস্কেপের বিখ্যাত ছবি আঁকছেন শিল্পী গোবর্ধন। ছবিতে ধোঁয়ার প্রাবল্য, কিশোর ঔরঙ্গজেবের বীরত্বে শাজাহানের সেক্রেড সভরিনিটির মহিমার প্রাবল্য, সুজার বেরাদারির প্রাবল্য, জয় সিংহের রাজপুত বীরত্বর জান কসম করা প্রাবল্য কিন্তু কোথাও আমি নেই। কী দশা হয়েছিল আমার?

    রাজা বাদশাহদের ইতিহাসে আমার খোঁজ কি কেউ করবে না? এ জানতে বীরগাথার দেশ রাজস্থানে গেলে জানা যাবে ঘোড়া খুঁজে পাওয়ার ইতিহাস। রানা প্রতাপের দ্রুতগতি এগোনো,পেছনোর কারিগর হল চেতক নামের এক ঘোড়া। সেই হলদিঘাটির যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রানা প্রতাপকে নিয়ে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে আবার আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে। পনেরোশো ছিয়াত্তরের হলদিঘাটি যুদ্ধের একশো বছর পর লেখা কাব্য দলপতি বিজয় কৃত খুম্মানা রস বইতেই প্রথম চেতকের উল্লেখ হল। তার আগে কেউ জানতই না রানা প্রতাপের ঘোড়ার নাম।

    তারও তিনশো বছর পর ‘‘জয় চিতোর’’ নামের বলিউডি ছবিতে গীতিকার ভরত ব্যাস লিখলেন আমাদের এক অমর গাথা, তা চেতককে নিয়ে আর সে পবনের বেগে উড়তে পারে। নারীর দৃষ্টিতে বীরগাথার ন্যারেটিভ, যার মূল চালক হচ্ছে সেই উড়তে পারা মারওয়াড়ি প্রিয় ঘোড়া, নীল ঘোড়া চেতক যে অমর আর তাই তার ওপর দায়িত্ব পড়েছে প্রিয়তমকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরিয়ে আনার।

    ‘‘ओ पवन वेग से उड़ने वाले घोड़े
    तुझ पे सवार है जो, मेरा सुहाग है वो
    रखियो रे आज उनकी लाज हो, ओ पवन ...

    १) तेरे कंधों पर आज भार है मेवाड़ का
    करना पड़ेगा तुझको सामना पहाड़ का
    हल्दी घाटी नहीं है काम कोई खिलवाड़ का
    देना जवाब वहाँ शेरों की दहाड़ का
    घड़ियां तूफ़ान की हैं
    तेरे इम्तहान की हैं
    रखियो रे आज उनकी लाज हो, ओ पवन ...

    २) छक्के छुड़ाना देना तू दुश्मनों की चाल के
    उनकी छाती पे चढ़ना पाँव तू उछाल के
    लाना सुहाग मेरा वापस तू सम्भाल के
    तेरे इतिहास में अक्षर होंगे गुलाल के
    चेतक महान है तू
    बिजली की बान है तू
    रखियो रे आज उनकी लाज हो, ओ पवन ...’’

    भरत व्यास Bharat Vyas
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন