সেলিব্রিটিদের একটা অভ্যাস আছে, (এই বিশেষ অভ্যাস অবশ্য সেলিব্রিটিদের রাখতেই হয় নিজের ইমেজ বজায় রাখার জন্য) তা হলো ধরুন কোনও পার্টিতে প্রথমবার আপনি কোনও এক সেলিব্রিটির সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছেন, আর হয়েই ভদ্রতা বশত একমুখ হাসি নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন, ভালো আছেন? তাঁরা মুহুর্তে বুঝে যাবেন আপনি তাঁর অগণিত ফ্যানদের একজন, আর তাই একদম এক মুখ হাসি যেন কতদিনের চেনা এমন ভাবে বলবেন, আরে বলুন, আপনি ভালো তো? ব্যাস আপনি তখন গলে আইস্ক্রীম। এর পর আর কথা বলার সুযোগ সময় আপনাকে না দিয়ে একমুখ উজ্জ্বল হাসি নিয়ে সেলিব্রিটি এগিয়ে গেছেন আরো ভক্তদের ভিড়ে। আপনি পড়ে আছেন পিছনে। আপনার দায়িত্ব ওঁকে চেনার, ওঁর কিন্তু বিন্দুমাত্র দায়িত্ব নেই আপনি কে কেন কী এসব জানার। আপনার পরিচয় আপনি কয়েক হাজার ফ্যানদের একজন নামহীন মুখহীন।
এ আমার কাছে অত্যন্ত অপমানকর এক পরিস্থিতি। এজন্যই নানা অনুষ্ঠানে সভায়, অনুষ্ঠানে, পার্টিতে, যেখানে সেলিব্রিটিদের সব সময় দেখা যায়, সেসব জায়গায় আমার কাজের খাতিরে যেতেই হয়, গেলেও 'কিন্তু আমি সব সময়ে একদম পিছনে ভীড়ের আড়ালে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এতবছর কাজের অভিজ্ঞতায় এরকম নানা সেলিব্রিটিদের দেখেছি যাঁদের সঙ্গে পূর্বে আলাপ হওয়া সত্ত্বেও পরে দেখা হলে আর চিনতেও পারেন না। চেষ্টাও করেন না। এমনকী ধরুন, এক সেলিব্রিটির অফিসে কাজের জন্য সারা সকাল মিটিং করে প্রেজেন্টেশন দিয়ে বেরিয়ে, সেইদিন সন্ধ্যেতেই অন্য এক প্রদর্শনীতে হঠাৎ তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক সৌজন্য বশে আমি হাসিমুখে তাঁকে greet করবার পর দেখি, তিনি না চেনার ভান করে দূরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেন। আমিও তাই খুব জরুরী না হলে নিজের পরিচয়ও প্রদানই করি না।
এতজনের মধ্যে কেবল একজনকে আমি, যতবারই দেখা হয়েছে, এই মেকি সেলিব্রিটি সুলভ ব্যবহার করতে দেখিনি। সেই ভদ্রজনটি নিজের স্বীয় ক্ষমতার জোরে, অসম্ভব জনপ্রিয় এক সেলিব্রিটি কিন্তু মানুষ হিসেবে অসাধারণ একজন। তিনি প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের সবার প্রিয় 'পিকে'দা'।
ভালো।
চমৎকার স্কেচ - লেখায় এবং আঁকায়, মুগ্ধ।
লেখাটা অসাধারণ আর চিত্রাংকন টা মুগ্ধ করার মত।