(১)
শৈশবপ্রস্তর ভিন্ন অন্যথা বিস্ময় নাই। মেহেন্দির ঘ্রাণ ও বর্ণ উভয়ত পুলকপ্রদ। বৃষ্টিবৎ ছুটিয়া যায় উৎসাহী হেলার দল। যেথা অন্ড ছিল, তা হইতে জায়মান কুতকুতে অর্বুদ চক্ষু। আয়ু, তোমাকে জন্মাবধি এমন দৃশ্য আরো দিতেছে নির্ভার রৌদ্র।
(২)
ওইখানে লিপ্ত থাকো হে মহান কামারশালা। প্রান্তরে শুকায় কাচা কাঁথা, খুঁটিবদ্ধ একটি গবাদি রজু গলে লয়ে বৃত্তের ধারণা দিবে। সকল পাতার মধ্যে একাকী দন্ডায়ে কচু, তার পরে এক বিন্দু টলটলে জল, বুঝি স্থিরাবহমান। এ-সময়ে স্মৃত হয় অমনোনীত গ্রন্থ, ইংরাজি, অবুঝ। মশাল হস্তে কে মুখবাঁধা মৌমাছি তাড়ায়? শৈশব?
(৩)
মোমপতনের সঙ্গে অশ্রুর কি বা মিল? চুম্বন প্ৰকৃত মানবিক, যৌথইচ্ছুক ও ভাগশেষহীন। এমনকী বায়ুর মন্ত্রণা মিশে জলমধ্যে দিতে পারে বেগবান উজ্জ্বল স্ফটিক। হে অপরিসীম, তোমা বুদ্বুদে ভাঙে এমন বর্ণিল আলো, সাতটি ঘোড়ার বাঁকা শিহরণ দ্যাখো তবে বিরল আকাশে। একদা বৃষ্টির সঙ্গে কুড়ায়েছ যথেচ্ছ পতন, শিলা। এ সেই জলের ধ্বনি, বহুশ্রুত, দিগন্ত ব্যাপিয়া আনে সম্মত পৃথিবী জুড়ে। পাতো হে শ্রবণ।
(৪)
বারেক তাকাও হে কৃতকল্প মেষপালক। কোথা হইতে আমাদিগ ক্রীড়ামাঠে তুমি আসিয়া পড়িলে, সাবেক পশমভেড়া লয়ে? এত দ্রুত আসে, জলতোড়ে, দ্রুত উধাও হয় উগ্রঘ্রাণ অস্থির পশুর দল। তারপরে আশ্বস্ত সন্ধ্যা। একটি নিয়মিত তুলসীর গাছ তথাস্তু উঠানে। সেই তরে বেদীপরে গোময়প্ৰলেপ। খামারের প্রান্তে কালো সারিবদ্ধ টিনে সিদ্ধ ধান, সেই ঘ্রাণ জানে যারা অঘ্রাণের প্ৰমথ কৃষক।
(৫)
মনস্থ হইও দৃশ্য, স্বপ্ন হইও, তবে না অচেতন হাসিব! এই অপাবৃত মায়াপুকুরের তলে বাঁকা তালগাছ, উহা জলছায়া। কচুরীপানার শিকড়, উহার মাটির নাম―জল। তথায় কর্দমে মিশে সাঁজোয়াগাড়ির ন্যায় কাঁকড়ার চলাচল। তথায় যে সরীসৃপ কিনারায় বাস্তু গড়ে উহার জলের নাম মাটি। এই জল কম্পমান, স্বল্প ঢেউ, সতত সুস্থির, যার পরিখায় দৃঢ় মাটি ও সংকল্প সবুজ।
(৬)
আজিকেও পাখিরা নাছোড়। সকাল হইল অনুরূপ। গাছেদেরও ঘুম ভাঙে কিনা ভাবিয়া দেখিছ? হে আকাশ, তোমাতে প্রথম আলো, তুমি অতএব প্রতিভাত। দৃশ্য, তুমি অনুপুঙ্খ আসিও অযথা।
প্রথমে ঝলক, ক্ষণিকের বিরতি, সেইতরে মেঘ ডাকিল। দৃশ্য, প্রতীত, অনুরূপ।
বাঃ। চেনা ছবিতে আষাঢ়!
অসাধারণ ! দৃশ্যময়তা, ক্রিয়াপদের কুতূহলী ব্যবহার, সার্বিক লগ্নতা, কী ছেড়ে কী নিয়ে বলি !
সুন্দর হে !
মুগ্ধতা!
বাহ্ দারুন...
বর্ষার ছবি এভাবে আগে পড়িনি, তাই ভালো লাগলো!
সুন্দর