কবি বীতশোক ভট্টাচার্যের প্রয়াণ-দিবস আজ। কিছু স্মৃতি ও কিছু কবিতা নিয়ে এই লেখা। ... ...
এই সিরিজটি মুক্ত গদ্য অথবা কবিতা, নিজে নির্ণয়ে অক্ষম। -- একদিন সমুদ্র থেকে জেগেছে পাহাড়। সেইহেতু শৃঙ্গ দেখে ঢেউ ভ্রমে আছি। হে সতত, অনর্গল, গুহার গোমুখ থেকে তুমি কবে পরিত্যক্ত জলমহাল...ক্রমশ স্থবির হয়ে একদিন মিশে গেছ দিগন্তবিস্তৃত মোহনার নুনে। ... ...
যেভাবে লাট্টুটি প্রাচীন ভারসাম্য স্বকীয় ঘূর্ণনে রেখেছে তা পাখির আকাশে সন্তরণের তুল্য নিয়মানুগ। একটি দ্রুত বক্রচাপ, সময়ের একান্ত প্রতিস্থাপক। তেমনই অটুট শঙ্খের প্রাকার, দুরূহ জ্যামিতি, যেখানে জীবন ছিলো একদিন। কী প্রবল বাহিরের ঢেউ, পারাবার শান্ত, অন্তর্লীন! তুমিও প্রবাহে আছো জন্মাবধি, টের পাও নি কখনো? এই সেই বীজের ভেতরে ঘুম-জন্ম, কখনো চুরমার হয়ে মাটির ওপরে দুই হাত মেলে দেবে অনায়াস। ... ...
শৈশবপ্রস্তর ভিন্ন অন্যথা বিস্ময় নাই। মেহেন্দির ঘ্রাণ ও বর্ণ উভয়ত পুলকপ্রদ। বৃষ্টিবৎ ছুটিয়া যায় উৎসাহী হেলার দল। যেথা অন্ড ছিল, তা হইতে জায়মান কুতকুতে অর্বুদ চক্ষু। আয়ু, তোমাকে জন্মাবধি এমন দৃশ্য আরো দিতেছে নির্ভার রৌদ্র। ... ...
যাঁর নাম কৈলাস তিনি যে এমন কেলেঙ্কারি করে ছাড়বেন সে কি রীনাদির মানিকমামা জানত? বাঘামামা, এ যে এক্কেরে ডিটেকটিভ কেস!! অতএব এনকোয়ারি বলছে, কেলে মানেই কেলেঘাই নদী। যেথায় অবলীলায় ঘাই মারে কেলে কেলে কালবোস, মানিকদার বাবার কবিতার ফর্সা বিষ্টু বোস, মাঝারি উজ্জ্বল সন্তু ট্যাংরা ও শ্যামলা পুঁটি রায়। ... ...
বন্ধুরা, রাগ করবেন না, এমন উত্তাল সময়ে ঠাট্টা করছি ভেবে। যথেষ্ট চিন্তার মধ্যেও, টেনশনের মধ্যেও, চিরকাল ঠাট্টা করতে করতেই বড়ো হয়েছি। তাই এই দুঃসময়ে এই পোস্ট দেখে মনে হবে ঠাট্টা। কিন্তু পড়ুন, যদি ধৈর্যে কুলোয়। ব্যাপারটা হলো– অনেকদিন অর্থমন্ত্রকের সংবাদ পাচ্ছি না। নানা বিশিষ্ট জনের লেখা, ট্যুইট ইত্যাদি পড়ে জানতে পারা যাচ্ছে, তিনি, অর্থাৎ এই ভারতীয় অর্থনীতি, এখন নাকি আই সিএইউ তে। ফলে দুশ্চিন্তা ব্যাপারটা বেড়ে গেলো। ফলে কেসটা ঠাট্টা নয়। আমরা এক সময়ে অর্থমন্ত্রক বলতে একটা জটিল ব্যাপার বুঝতাম ... ...
রামলাল রাস্তা পার হইতে যাইবেন, কিছু গেরুয়া ফেট্টি বাঁধা চ্যাংড়া যুবক মোড়ে বসিয়া তাস পিটাইতেছিল— অকস্মাৎ একজন তাহার পানে তাকাইল। রামলাল সতর্ক হইলেন। হাত মুষ্টিবদ্ধ করিলেন, তুলিয়া, ক্ষীণকন্ঠে বলিলেন, 'জ্যায় শ্রীরাম।'
পূর্বে ভুল হইত। অকস্মাৎ কেহ না কেহ পথের এক মোড় হইতে অন্য মোড়ে অব্যর্থ ডাকিত, 'কে যায়?' সম্বিৎ ফিরিয়া রামলাল উচ্চারণ করিতেন, 'জয় শ্রীরাম।' দুর্বল শরীর, প্রখর গ্রীষ্মেও একটি গেরুয়া উত্তরীয় সর্বদা গলায় জড়াইয়া রাখিতেন। উহা একটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কবচ। প্রখর গ্রীষ্মের হাল্কা ... ...
বাঙালি মধ্যবিত্তের মার্জিত ও পরিশীলিত হাবভাব দেখতে বেশ লাগে। অপসংস্কৃতি নিয়ে বাঙালি চিরকাল ওয়াকিবহাল ছিল। আজও আছে। বেশ লাগে। কিন্তু, বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনার প্রবল ক্ষোভ ও অপমানে আপনার কি খুব পরিশীলিত, গঙ্গাজলে ধোওয়া আদ্যন্ত সাত্ত্বিক শব্দ মনে পড়ে? না প্রাণভরে বেশ খারাপ খারাপ কথা উচ্চারণ করতে মন চায়? আপনি কি কিশোর বয়সে, তরুণ বয়সে একটিও খারাপ উচ্চারণ-অযোগ্য অসাংবিধানিক অমার্জিত শব্দ বলেন নি? ঠাট্টাছলেও বলেন নি? বেশ, যদি একদমই না বলে থাকেন তাহলে তো আপনি প্রায় বোধি গাছের তলায় বসে আছেন, চরাচর আপনার ... ...
আরজামাস বলে একটা শহর ছিল। ছোট্ট শহর, অনেক দূরের, অন্য মহাদেশে। অনেক ছোটবেলায় চিনে ফেলেছিলাম। ভৌগোলিক দূরত্ব টের পাইনি।
টের পেতে দেননি আর্কাদি গাইদার নামের এক রুশ লেখক। মেদিনীপুর জেলার আদি ও অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, কিংবদন্তীপ্রতিম দেবেন দাস, আমার দিদিকে ছোটবেলায় একটি বই উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নাম- 'ইশকুল'। লেখকের নাম আর্কাদি গাইদার ... ...
১৯৮৩ র শীতে লয়েডের ওয়েস্টইন্ডিজ ভারতে সফর করতে এলো। সেই সময়কার আমাদের মফস্বলের সেই শীতঋতু, তাজা খেজুর রস ও রকমারি টোপা কুলে আয়োজিত, রঙিন কমলালেবু-সুরভিত, কিছু অন্যরকম ছিলো। এত শীত, এত শীত সেই অধুনাবিস্মৃত কালে, কুয়াশাআচ্ছন্ন পুকুরের লেগে থাকা হিমে মাছ অবধি ঘাই মারতে ভুলে যেত। মাইরি! বললাম বটে লয়েডের ওয়েস্টইন্ডিজ, আসলে সেই শীতের মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলো ম্যালকম মার্শাল নামের এক তরুণ ফাস্ট বোলার। কোণাকুনি দৌড়ে এসে বাঁহাত টা সামনে তুলে দ্রুত ডেলিভারি করতেন। হৃৎকম্পন শুরু হতো আপামর ভারতীয় দর্শক ... ...