পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদালত মানুষের বিবেক বড় ঈদের নামাজ শেষ করে সৈকত বাড়ি ফিরছে। ফেরার পথে রাস্তার পাশের এক জলার মধ্যে সৈকত দেখলো, অনেক শাপলা ফুটে আছে। জাতীয় ফুল শাপলা। পিঙ্ক কালারের শাপলা। সৈকত ভাবলো, আচ্ছা পিঙ্ক কালারটাই তো গোলাপি রঙ? একটা প্রশ্নবোধক মনের মধ্যে নিয়ে সৈকত বাড়ির পথে হাঁটে। রাস্তার দুইপাশে দিগন্তরেখা পর্যন্ত বিস্তৃত আবাদি জমি। আব্বা মারা গেছেন, এক বছর হয়ে গেছে। গত বছর তো সৈকত ঈদের নামাজেও যায়নি। এবার অবশ্য সেই দুঃখবোধটা বেশ হালকা হয়ে গেছে।আব্বা বেঁচে থাকাকালীন সময়ে সৈকতের ঈদ প্রতিবার কেটেছে গ্রামের বাড়িতে। এবারও গ্রামের বাড়িতেই সৈকত ঈদ কাটাচ্ছে। সবাই আছে গ্রামের বাড়িতে। চাচারা, ফুফুরা, দাদী, মা সবাই ... ...
মাথায় হাড় নাই, চাপ দেবেন না প্লিজ ৩ সুলতানাকে স্বপ্নে দেখা একটা ফ্যান্টাসি। এটা রাধারমণকে পীড়া দেয়। প্যারা দেয়। এরকম অবসেশন খুবই খারাপ। ইদানিং হঠাৎ হঠাৎ সুলতানার গা ঘেঁষে বসতে ইচ্ছে করে। এই অবসেশন শুরু হয়েছিল, যেদিন সুলতানার ওয়ার্ড-মিনিং এর নোটবুকে 'Khuwab Hain Tu' লেখাটা দেখেছিল, সেদিন থেকে। একটা হিন্দি ভাষার কথা। ইংরেজি হরফে লেখা। রাধা সুলতানাকে জিজ্ঞেস করেছিল। লেখাটা কে লিখেছে? কাকে লিখেছে? সুলতানা শুধু লাজুক হেসেছিল। উত্তর দেয়নি। রাধারও কেন যেন লজ্জা লেগেছিল! ওয়ার্ড-মিনিং শেখার জন্য নোটবুক রাখার সাজেশনটা রাধাই দিয়েছিল। সব স্টুডেন্টকেই সে এই সাজেশন দেয়। একটা নোটবুকে জানা-অজানা সব শব্দগুলো লিখে রাখার পদ্ধতিটা খুব কাজের একটা অভ্যাস। নোটবুকে টুকে রেখে, প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে একবার চোখ ... ...
রুমির কবিতা: রেসপন্স টু ইওর কুয়েশ্চন নিউজপেপার থেকে লিনা জানতে পারলো, রুশ এক সাংবাদিক নিজের নোবেল পুরষ্কার নিলামে বিক্রি করে দিয়েছেন। নিলাম থেকে অর্জিত টাকা তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষাখাতে খরচ করেছেন। লিনা বুঝতে পারে মানুষের মাঝে এখনও কিছুটা মানবিকতা অবশিষ্ট আছে। মানুষ এখনও মানুষকে ভালোবাসে। গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে কেউই যুদ্ধের পক্ষপাতি নয়। বিশ্বের বহু রাষ্ট্রের মতন রাশিয়ার একটা বিশাল অংশের জনগণও এই যুদ্ধকে নিন্দা জানিয়েছে। প্রটেস্টও করেছে। যুদ্ধ থামাতে করেছে মানববন্ধন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রনায়কেরা এরকম একটা ক্রান্তিকালে মানুষের নিরাপত্তাকে জুয়ায় লাগিয়ে অমানবিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো উন্মাদও তো আসলে পৃথিবীতে যুদ্ধ কামনা করে না; শান্তি চায়। অথচ ফ্যাসিস্ট আর সাম্রাজ্যবাদী ... ...
এই চলতি জীবন ঘটনাবহুল বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে প্রতি বছরই নদী-ভাঙন আর বন্যার কবলে মানুষেরা ভিটেমাটি হারায়। পানির অপর নাম জীবন। ছোট সময়ে প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় আমরা সবাই এই কথা মুখস্থ করি। অথচ পানির অপর নাম যে মরণও হতে পারে তা কখনোই আমাদের বলা হয় না। এমন কি একজন সুস্থ মানুষ যদি খুব অল্প সময়ে মাত্রারিক্ত পানি পান করে, তবে হাইপনেত্রেমিয়া হয়ে সে মারা যেতে পারে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ঘণ্টায় সর্বচ্চো আড়াই লিটার পানি পান করতে পারে। এর চেয়ে বেশি হলে সমস্যা দেখা দেবে। অর্থাৎ মাত্রারিক্ত কোন কিছুই ভাল নয়। ভৌগলিক কারণেই বাংলায় প্রতিবছর বন্যার মতন দূর্যোগ আসে। প্রচুর ধান আর ... ...
আজ অবেলার অবসরে কলেজে পৌঁছাতে শামীমের একটু লেট হয়ে গেছে। সে এসে দেখে কলেজ একদম ফাঁকা। অথচ মানববন্ধন হবার কথা ছিল। কলেজও তালাবদ্ধ। অনেকগুলো পুলিশ আনাগোনা করছে। পুলিশ দেখলেই এখন শামীমের গা জ্বালা করে। ঝিকিয়ে ওঠে চোখ। কোনো একটা যে ঝামেলা হয়েছে, তা শামীম বুঝতে পারে। তাই আর বেশি সময় ওয়েট করে না সে। বাইকটা স্টার্ট দিয়ে সে খুব দ্রুত কলেজ চত্বর থেকে বেরিয়ে যায়। পার্টি-অফিসে যাবে কিনা একবার ভাবে। পার্টি-অফিসের খেয়াল আসতেই শামীমের মুখ থেকে অটোমেটিক একটা কুৎসিত গালি বেরিয়ে আসে। তার চেয়ে মনা'র চা স্টলে যাওয়া যায়। চা-সিগারেট খাওয়া যাবে। আর মনা মিয়ার দোকানে গেলেই সব জানা যাবে। এই ... ...
আজ চলতে শিখে গেছি "মানুষ মরে যায়। তবে পৃথিবীর কর্মযজ্ঞ রয়ে যায়। মানুষ মরে গেলে কিছু স্মৃতির ভগ্নাংশ থাকে। সেই ভগ্নাংশও ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। ঘুণপোকার মতন জীবিত মানুষ মাত্রই স্মৃতিকে গিলে খায়। তারপর জীবিত মানুষেরা নিজেদের প্রাত্যহিক রুচিতেই ভুলে যাওয়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তা সে যতই প্রিয়জন হোক, সেই প্রিয়জনের স্মৃতিও ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অতলে হারায়। আদতে তো মানুষদের যদি ভুলে যাওয়ার শক্তি না থাকতো, তবে মগজের ঘিলু ফেটে মানুষগুলো নিশ্চিত মরে যেত। হলিউডের 'কিংসম্যান' সিনেমাতে মগজের ঘিলু ফেটে যাওয়ার একটা চমৎকার দৃশ্য আছে। স্টার মুভিজে মাঝে মাঝেই দেখায়। টেকনোলজি দিয়ে কী চমৎকার মেকি একটা দৃশ্য তৈরি করা হয়েছে ... ...
কত সুখ পাওয়া হয়ে গেল কবি-লেখকদের মূল উদ্দেশ্য আসলে কী? নাম? যশ? খ্যাতি? নাকি অমরতার তৃষ্ণা? আমি দেখলাম, আমার সময়ের অনেক লেখকরাই অলরেডি দুই-চারটা পদক/সনদ/পুরষ্কার বাগিয়ে নিয়েছে। আমার তো এসব হলো না। অবশ্য আমার তো এখনও কোনো বই প্রকাশিত হয় নাই। শুধুমাত্র ভাবনার বেড়াজালেই আটকে আছি। নজরুল লিখেছিলেন 'ভাব ও কাজ'। মানে ভাবনাকে কাজে পরিণত করাটাই আসলে চ্যালেঞ্জ। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এখনও সেরকমই। অনেকে বলে, পুরষ্কার-টুরষ্কার খুবই ক্লিশে জিনিস। ... ...
কেন বাড়লে বয়স ছোট্টবেলার বন্ধু হারিয়ে যায়একটা গল্প হয়ে উঠা বেশ কঠিন। তার থেকেও কঠিন একটা উপন্যাস হয়ে উঠা। সকল সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য একত্রিত হলেই উপন্যাস হতে পারে। কবিত্বকে পাশ কাটিয়ে একটা গল্পকারকে বের হয়ে আসতে হয়। সারাদিন ভেবে ভেবে কিছুই হলো না। যা হলো, তার কিছুটা এরকম।'বৃষ্টির রাত মানেই আমার কাছে পিকনিক। এই পিকনিক অন্যরকম। বনভোজন নয়, ঘুমভোজন নয়। অনেকটা বলা চলে গুমখুনের মতন। একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ রেইনকোর্ট পরে রহস্যভেদ করতে বের হয়েছে। ঝিরিঝিরি রোমান্টিক ফাঁকা রাস্তা। রহস্য সম্পর্কে ভাবতে ভাবতে সে খাদে পড়ে গেল। ডিটেক্টিভ বুঝতেই পারলো না রাস্তার মাঝে এই পাহাড়ী খাদ কখন উদয় হল! চোখ খুলতেই দেখা গেল অষ্টাদশী বর্ষীয়ান নিভৃত রহস্য। খরগোশের ... ...
প্রস্তাবনা: পাঠকের সুবিধার জন্য আমার এই উপন্যাস সম্পর্কে কিছু কথা বলে রাখা ভালো। এটাই আমার প্রথম উপন্যাস। ২০২২ সালে লেখা শেষ করেছি। বলা যায় প্রথম চেষ্টা। চেষ্টা কতটুকু সফল? সে কথা পাঠক ভালো বলতে পারবেন। তবে গত ৩ বছর বেশ কয়েকবার ঘষামাজা করেছি। আমার এই উপন্যাসের প্রায় সবগুলো অধ্যায় ১টি গানের লিরিকের নামে বিভক্ত। গানটির গীতিকার ও গায়ক বাংলাদেশের সনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান। তবে শেষের দিকের কয়েকটি অধ্যায়'কে আমি চলতি কিছু কথা'র নামে রেখেছি। মানে প্রবাদতুল্য কথা। যেমন: ম্যান ইজ আ পলিটিকাল এনিমাল। আবার গল্পের প্রয়োজনেও অধ্যায়ের নাম আছে। যেমন: মাথায় হাড় নেই, চাপ দেবেন না প্লিজ। তবে অধিকাংশ অধ্যায়ের ... ...
[ শুধুমাত্র প্রাপ্তমনস্কদের জন্য! সাধু সাবধান!!] সারাদিন বইসা থাকি। আর খাই। আর ডাকাডাকি করি। সেক্সের জন্য পার্টনার খুঁজি। সুরেলা ডাকে তাহাদের খুঁজি। তাহারা আমার ডাকে দেয় না তো সাড়া। তবু ডাকি। তাছাড়া আমার কোনো কামকাজ নাই। মানুষের জীবনের তো কত মহৎ উদ্দেশ্য থাকে। মাগার আমার জিন্দেগীতে কোনো এইম নাই। এইমলেস হওয়াটা অবশ্য এই জমানায় ফ্যাশন হয়া গেছে। কেউ যদি নিজেরে এইমলেস ডিক্লেয়ার করে ফেলে, তাহলেই সে হয়া যায় মোটিভেশান স্পিকার। মাগার আমি তো স্পিকারও হইতে পারবো না। কারণ মানুষ যে ভাষায় কথা বলে সেই ভাষা আমি তো কইতে পারি না। আর আমি যে ভাষায় ডাকাডাকি করি, সেই ভাষা মানুষ বোঝে না। ... ...