৮.
আমি তো আছিই। শুধু সময়ের ছোবলমৃন্ময়ে মুহূর্ত সঞ্চয় হয়ে আছি। কিম্বা এ জীবনে যেসব সখ্য ভাঙলো গড়লো, যে অনুবোধ পথের নুড়ির মতো পড়ে রইলো মুথা ঘাসে তাদের বিভেদ প্রলেপে বস্তুত বিভোর হয়ে আছি। এ এক মাল্যবান সুচারু সময় প্রেক্ষা, যার পটে আমি নিদারুণ নিরাগ্রহের কুসুম ! ! ফুটে উঠি । ঝরে যাই। কখোনো বা জলের কাছে বসে থাকি সান্ধ্য গড়ানে, আর ভাবি, এই যে চাঁদের নকুল টুপ করে ঝরে পড়লো জলে, এও কি অশ্রু মাত্র নয় ! মাথার ওপরে ওই যে অযাচিত আকাশ সেও কি নয় আমারই বিষাদ বর্ণের নিকশিত নীল মাত্র!
৯.
মনের এই মর্ষকাম ঢিবি। শব্দের এই শবাধার পেরিয়ে আমি তোমার কাছেই পৌঁছতে চাইছি, অয়ি অক্ষ নির্জনপথ তুমি কি নেবে এই অস্তিজলঢেউ ! অথবা যে মেরুকাঙ্খা আমাদের বিচ্ছেদমোক্ষ মনের মৌরসী, দেখো তার স্তিমিত তিমির খন্ডে, ওই যে ফুল ও তার আত্মরতি আলো, ওই কি গন্তব্য শেষ নয় ? ওই কি নয় আমাদের মোক্ষমর্ষকাম সমাপ্তিবলয়? তবে কেন এই পুনরাবৃত্তি, কেন দ্বন্দ্ব ও বীজে ফুটে উঠি রোজ কেন স্বকৃত দোয়াত ভ'রে ওঠে শব্দের বিফলবিলাসে ! আহ্ নিষিক্তপ্রণয় ! এ মর্মরে এ মীমাংসা আজো কেন সহজ হলো না।
১০.
চল ধ্বনির কিছু বিফলতা। মনোধ্বনির এই বিন্দু কুটির। এই নিয়েই একটি জলভাগের নাবিক আমি।
ভেসে থাকি একহারা রাত্রিমোক্ষণে,আসলে অক্ষরের আলো জ্বলে অলক্ষ্য লতার নীলে নাহলে কি চারণ আর কি চাঁদের গাঢ়তা কোনোকিছু রজন ঢালে না। শুধু শান্ত কুটিরে ফিরে এলে একটি ভুবন ডাকে বিগলিত তরলে ডাকে গহনবধূটি, যেন জ্যোৎস্নাপথ-
আর স্খলিত ইশারায়৷! তুমি তার মোহন ভ্রুকুটির শিখা তুলে নিতে গিয়ে দেখো,তোমারই বেদনদুহিতা
পড়ে আছে অর্ধ দগ্ধ, অক্ষরের আলে !
১১.
চমৎকার এ রজনী মাংস। চমৎকার এ অনিকেত সুরা। কেননা অঝোর নির্জন পথে এ আয়োজন ছিল টুপার্ত এক খনন আশ্রম! এ ভ্রমণ, এ জন্ম শ্রেয় ও সহনশীল করে তোলা সে যে কি টলনস্থিতি, সে যে কি অক্রুরসমতা ! তুমি তার কতোটুকু তুলে আনবে শব্দ যোজনায়! তবুও সুদূরের তর্জনীশাসন থেকে ফিরে আসে মন ! গলিত এক অবয়ব। চলিত এক নিঝুম সঞ্চয়ে, 'আমি'টির ভেতরিক দাদন খাটতে খাটতে এই, একজীবন ও তার স্খলন প্রশ্রয়ে ছোপ সীবনের সুস্বাদ তুলে নিচ্ছে ক্ষরিত রাত্রি, প্রবাহিতা..