এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • এই ফাটকাবাজির দেশে স্বপ্নের পাখিগুলো বেঁচে নেই: ১৫ই আগস্ট ট্র্যাজেডি (পর্ব ৩)

    জোনাকি পোকা ৭১ লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ১৭৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | |
    যে কথা বলতে ভুলে গেছি

    আমি যখন এই সিক্যুয়াল গদ্য লেখা শুরু করেছিলাম, বলেছিলাম, জুলাই হয়তো বাংলাদেশের বুকে এক অভিশপ্ত মাস। তখন আমি আগস্টের কথা বলতে ভুলে গেছি। যা আমাদের ইতিহাসকে অসম্পূর্ণ ভাবে দেখাতে পারে। যা অন্যায় হয়েছে। কারণ একজন বাংলাদেশি হিসেবে এই '১৫ই আগস্টের রক্তাক্ত' অতীতের কথা ভুলে গেলে ইতিহাস আমায় ক্ষমা করবে না। একজন মননশীল মানুষ কখনোই তার অতীতের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া দগদগে ঘাঁ'কে বেমালুম ভুলে যেতে পারে না। তাই আমার সেই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ করে যদি বলি, তাহলে এরকম বলতে হবে, জুলাই হয়তো বাংলাদেশের বুকে এক অভিশপ্ত মাস। আর আগস্ট হলো বাংলাদেশের ইতিহাসের হৃদয়ে  নিরবিচ্ছিন্ন রক্তক্ষরণ। 

    ভুলকে শুধরে নিতেই আমার এই কথামালা। আমার কথায় হয়তো দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এমনকি বর্তমানে তথ্য বিকৃতির যে মহোৎসব চলছে, ইতিহাসকে নতুন মোড়কে পরিবেশনের এই যে চক্রান্ত চলছে, তাতেও কোনো ভাঁটা পড়বে না। কারণ আমার মতন একজন ক্ষুদ্র, পরিচয়হীন, গুপ্ত পরিচয়ের মানুষ কতটুকুই আর প্রভাব ফেলতে পারে?! তবু লিখতে তো হবে। ভূতগ্রস্তের মতন। গুপ্ত থেকেই। কেননা, এই সব সম্ভবের হীরক রাজার দেশে, স্রোতের বিপরীতে কথা বললে আপনার পরিচয় গুপ্ত রাখাই রীতিমত রণকৌশল! এটা তো একরকম যুদ্ধই! বর্ণমালার যুদ্ধ। বয়ানের যুদ্ধ। 

    তথ্যসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই। যুগে যুগে আমাদের এই লড়াইটা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। কেননা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এখনো বাংলাদেশের একাংশ জনগোষ্ঠী আছে, যারা তাদের পিতার পরিচয় দিতে কুন্ঠা বোধ করে। কুন্ঠা বললে আসলে অপরাধ'টা হালকা হয়ে যায়। তার চেয়ে বলা প্রয়োজন, পরিচয় দিতে অস্বীকার করে। আর যারা পিতার পরিচয় দিতে কুন্ঠা বোধ করে, তারা নিশ্চয়ই জারজ, তারা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তা'কে বিশ্বাস করতে চায় না, তারা পাকিস্তানের কৃতকর্ম'কে ; সেই বিভীষিকাময় হত্যা আর অত্যাচারের মহাযজ্ঞ'কে নানান ভাবে লঘু বয়ানে পরিবেশন করে।
     
    বঙ্গবন্ধু ১টি চেতনার নাম

    হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিদের মধ্যে অন্যতম একটি নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশে যত যত মহামানবেরা জন্ম নিয়েছেন, তাঁদের মাঝে তিনি অদ্বিতীয়। তিনি কেন অদ্বিতীয়? এই প্রশ্নের উত্তর ১টাই, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি। যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের রণাঙ্গনে সশরীরে উপস্থিত না থেকেও পুরো জাতিগোষ্ঠী'র মননে এমনই প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগোষ্ঠী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে পুরো জাতি একাত্মবোধ করে মুক্তিযুদ্ধের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েছিল। যাঁকে তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাপ্তাহিক 'নিউজউইক' ম্যাগাজিনে পয়েট অব পলিটিক্স খেতাব দেয়া হয়েছিল। আর তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের যে অল্প কিছু তথ্যচিত্র পাওয়া যায়, তার মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় ১টি হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছে, আমার নেতা তোমার নেতা: শেখ মুজিব শেখ মুজিব। এরকম অনেক প্রমাণ আছে, যা বঙ্গবন্ধু'কে তাঁর অবদানের জন্য অম্লান করে তোলে।

    অথচ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে, এই বাংলাদেশের একাংশ পাকি-পন্থী আছে যারা বঙ্গবন্ধু'কে অস্বীকার করে। ২০২৪ সালে রিজিম পরিবর্তনের পর সব মুখোশ খুলে গেছে। অনেকেই এখন নগ্ন। ড.ইউনূস ক্ষমতায় বসার পর, সবার আগে যাঁর চেতনার উপর, যাঁর প্রতিকৃতির উপর প্রথম আঘাত আসে তিনি বঙ্গবন্ধু। রাজাকারের উত্তরসূরিগণ ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য'র নিরন্তর উস্কানিতে সারা বাংলাদেশে যত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছিল, সব ভেঙে চুরমার করেছে। এমনকি ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর যে স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ছিল, যা জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত ছিল, সেটিও বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। 'ইউনূস সরকার' এবং বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী অকালকুষ্মাণ্ড'র মতো সেই ভ্যান্ডালিজম'কে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছে। 

    কথা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি থেকে শুরু করে যা কিছুই নিশ্চিহ্ন করে দেবার ষড়যন্ত্র করা হোক; বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তাঁকে মুছে ফেলা সহজ নয়। কেননা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১টি আপোষহীন স্বাধীনচেতা চেতনার নাম। ২০২৪ সালেই যে প্রথম বঙ্গবন্ধু'কে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, তা তো নয়। এই ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। যে কারণে আজকের দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৫ই আগস্ট এক দগদগে রক্তক্ষরণ। 

    ১৫ই আগস্ট ট্র্যাজেডি
     
    ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটেছিল এক নৃশংসতম হত্যাকান্ড। ঠিক শেষরাতে, যখন ঢাকার সকল মানুষ ঘুমে, তখন গাড়িবহর নিয়ে রাস্তায় নামে বাংলাদেশ আর্মি'র একদল বিচ্ছিন্নতাবাদী ঘাতকেরা। আমি নতুন করে পুনরায় ইতিহাস আওড়াতে চাই না। ইতিহাসে আমরা তাদের নাম-পরিচয় সবই পেয়েছি। এমনকি সেই ঘাতকদের বয়ানও পেয়েছি। ঘাতকদের যুক্তি ছিল, বঙ্গবন্ধু'কে সরাতে হবে কেননা তিনি বাকশাল করেছেন। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই, তিনি বাকশাল করে তখনকার বাংলাদেশে রাজনীতির পথ সরু করে ফেলেছিলেন, তারপরেও বাংলাদেশ আর্মি'র তখন কীসের ম্যান্ডেট ছিল, যে ম্যান্ডেটে তারা দলবদ্ধ হায়েনার মতন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকে পরিবারসহ তাঁকে হত্যা করে? জনগণ কি মেজর ডালিম'কে গুপ্তভোটের মাধ্যমে জানিয়ে ছিল, বঙ্গবন্ধুকে নির্বংশ করে দিন? 
     
    আচ্ছা রাজনৈতিক কারণে ধরেই নিলাম, বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দেয়া দরকার ছিল, কিন্তু তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে কেন তারা হত্যা করেছিল? ​​
     
    "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।

    ১৫ আগস্টের সেই রাতে সেনাসদস্যদের আরেকটি দল শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাঁকে ও তাঁর কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকে হত্যা করা হয়।" (সূত্র:  দৈনিক প্রথম আলো)
     
    বেলজিয়ামে অবস্থান করার কারণে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা সেই দিন প্রাণে বেঁচে যায়। 
     
    আমি অবশ্য আমার এই লেখায় যেভাবে বাংলাদেশ আর্মি'কে সরাসরি দোষারোপ করছি, অন্যান্য পত্রপত্রিকায় বা লেখায় সেরকমটা করা হয় না। যেমন আজকের দৈনিক প্রথম আলো'তে বলা হয়েছে, বিপথগামী সেনাসদস্যরা সেই হত্যাকান্ড চালিয়েছিলো। আমার প্রশ্ন হলো, সেই সেনাসদস্যরা যদি বিপথগামীই হতো, তাহলে তাদের 'কোর্ট মার্শাল' না করে কেন সহিসালামত দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল? এই সেফ এক্সিট কেন? 
     
    বাংলাদেশের ইতিহাসের বুকে এই হত্যাকান্ড ১টি নিরবচ্ছিন্ন রক্তক্ষরণ, যে ক্ষরণ কোনোদিন বন্ধ হবে না। 
     
    ৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট নিয়ে স্রেফ ২টি কথা
     
    গতকাল দেখলাম, বাংলাদেশের এক কুচক্রী মহল ১৯৪৭'র ১৪ই আগস্ট কেন বাংলাদেশে পালন করা উচিত, তা নিয়ে রীতিমতো গরুর রচনা লিখতে শুরু করেছে। তারা যুক্তি দেখাতে শুরু করেছে, ৪৭ না হলে তো ৭১ হতো না। এরকম কথা যারা বলে, যখন বলে তখনই তাদের পিছনের লেজটা খুব সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। তারা যে পাকিস্তানকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে তা টের পাওয়া যায়। তারা আবার অখণ্ড পাকিস্তানে ফিরে যেতে চায়। বর্তমানের এক গোষ্ঠী আছে, যারা ২৪'কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলতে চায়। এই গোষ্ঠীই এখন ৪৭'কে প্রথম স্বাধীনতা বলতে চাচ্ছে। আচ্ছা ১টা মানুষের কয়টা জন্মদিন থাকে? বাংলাদেশের বাস্তবতায় অবশ্য ২টা থাকে মাঝোমাঝে। মানে ১টা রিয়েল থাকে আর আরেকটা থাকে স্কুলের সার্টিফিকেটে, বয়স ২/৩ চুরি করে, যাতে চাকরির শেষে অবসর একটু দেরিতে হয়। তাহলে কি ঐ কুচক্রী মহল বাংলাদেশের আরো ২/৩টা চুরি করা স্বাধীনতাকে ম্যান্ডেট দিতে চাইছে? তবে আমার আরেকটা জিনিস খুব জানতে ইচ্ছে করে, আর সব অত্যাচারের ইতিহাস ভুলে গেলেও আড়াই লক্ষ বীরাঙ্গনা'র সম্ভ্রমহানি'র ইতিহাস তারা কীভাবে ভুলে যায়? 
     
    ১টা কথা স্পষ্ট হওয়া উচিত, পাকিস্তান বাংলাদেশের উপর যে নৃশংস নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিল, তারপরও তাদের প্রতি যারা প্রেম দেখায়; তাদের সাথে একই টেবিলে বসা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। এখানে পাকিস্তান বলতে আমি তাদের অথরিটি'কেই বুঝি। 
     
    ১৫ই আগস্টকে কেন জাতীয় দিবস থেকে বাদ দেয়া হল? 
     
    ২৪'র অভ্যুত্থানে ড.ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে বসেন। তিনি আশ্বাস দেন দেশের উন্নয়নের জন্য সকলকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। অবশ্য যে কথাটি চেপে যান তা হলো, আওয়ামী লীগ'কে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগ'কে নিশ্চিহ্ন করার কাজ খুবই সুন্দরভাবে মেটিকুলাস ডিজাইনে শুরু হয়। প্রথম আঘাতটাই করা হয় বঙ্গবন্ধুর উপর। জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং প্রয়াণদিবস সবকিছু বাদ দেয়া হয়। বাদ যে দেয়া হবে, তা অনুমেয়ই ছিল। কেননা ড.ইউনূস যাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় বসলেন, সেই সঙ্গীসাথী, মানে জামাত-শিবিরের লোকেরা তো আর বঙ্গবন্ধু'কে সহ্য করতে পারবে না। অথচ কথা ছিল ঐক্যের। আর হলো বিভক্তি। 
     
    এমনকি ৮ই আগস্টে 'অন্তর্বর্তী সরকার' শপথ গ্রহণের পর তো ১৫ই আগস্ট এসেছিল, সেই দিবসকে চটজলদি জাতীয়দিবস থেকে বাদ দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছিল, ১৫ই আগস্টে যারা শোক করবে তাদের বিরুদ্ধে 'একশন' নেয়া হবে। গত বছর তো ১৫ই আগস্টের দিন পাকিপ্রেমীরা ৩২ নম্বরে ডিজে পার্টিও করেছিল। এবং যে মুক্তিযোদ্ধাগণ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে ৩২ গিয়েছিল, তাদেরকে সেই টোকাই-সন্ত্রাসীরা অপমান ও লাঞ্ছনা করে তাড়িয়ে দিয়েছিল। 
     
    এ বড় কঠিন সময়! আওয়ামী লীগের আমলে 'জোরপূর্বক' শোকদিবস পালিত হতো; আর ইন্টেরিম/ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে 'জোরপূর্বক' শোক পালনে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। তাহলে পরিস্থিতি আদতে খুব বেশি যে পাল্টেছে, তা কিন্তু না। আওয়ামী আমলে জোরপূর্বক শোকের কথা এইজন্যই বলছি, কারণ সেই আমলে বিকট মাইকের আওয়াজে পাড়া-মহল্লায় সরগরম করে ফেলা হতো। তাতে শোকদিবস যেন অনেকটা উৎসবে রূপ নিতো। 
     
    দিবস তো বন্ধ হলো মানুষের হৃদয় কি বন্ধ হয়েছে? 
     
    দিবস তো ইন্টেরিম সরকার বন্ধ করে দিল। ৩২ নম্বর যারা ভেঙে ফেললো তাদেরকেও যথাসাধ্য শেল্টার দিল। ভ্যান্ডালিজম'কে তারা কোনো অপরাধই মনে করলো না। আইনের শাসনকে হাতের পুতুলের মতো ব্যবহার করলো। সব জঙ্গীদের একে একে হাজত থেকে রেহাই দিল। যুদ্ধাপরাধীদের খালাস করলো। এমনকি এই বছর মানে ২০২৫ সালে ড.ইউনূসের প্রেস সচিব জনাব শফিক খুল্লাম খুললি চোখও রাঙালেন। চোখ রাঙিয়ে বললেন, যারাই শোক পালন করবে তাদের বিরুদ্ধেই 'একশন'! 
     
    কিন্তু মানুষের হৃদয়কে তো কোনো চোখ রাঙানো দিয়ে স্তব্ধ করা যায় না। আজ সামাজিক মাধ্যম জুড়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই পিতার মহাপ্রয়াণের ৫০ বছরে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ২ কলম লিখে কিংবা ছবি আপলোড করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে। শুধু কিছু 'পাকিবীজ' ছাড়া সকলেই পিতাকে স্মরণ করেছে। এমনকি জাতীয় দৈনিকগুলোতেও প্রতিবেদন বেরিয়েছে। 
     
     
    যাই হোক, বঙ্গবন্ধু'কে যারা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল, এখনও চাইছে, হয়তো ভবিষ্যতেও চাইবে তাদের জন্য কবি অন্নদাশংকর রায়ের ২টি লাইন উল্লেখযোগ্য 
     
    "যতদিন রবে পদ্ম-মেঘনা-গৌরী-যমুনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান"
     
    [বি:দ্র: আবার কথা হবে আগামী পর্বে। ধন্যবাদ] 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | |
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 2601:84:4600:5410:915b:d48c:af87:***:*** | ১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৩733368
  • পড়ছি 
  • জোনাকি পোকা ৭১ | ১৬ আগস্ট ২০২৫ ২০:৪৪733397
  • aranya 
    আপনাকে ধন্যবাদ, পড়ে অন্তত জানিয়ে তো গেলেন! 
     
    শুভ কামনা।
  • ar | .***.*** | ১৬ আগস্ট ২০২৫ ২১:৫১733400
  • পড়ছি, আপনি লিখতে থাকুন।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:c0a3:77f6:6eb4:***:*** | ১৮ আগস্ট ২০২৫ ০০:২২733433
  • খুবই জরুরী লেখা, অনেকেই পড়ছে। অন্ধকার সময়ের বর্ণনা, মন্তব্যের কিছু থাকে না, অনেক সময়েই। কলম (কী বোর্ড ) চলুক, কিছু মানুষ প্রতিবাদ করছেন, আলোর পথে হাঁটছেন, এ খুবই বড় পাওয়া 
  • জোনাকি পোকা ৭১ | ১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৮:০০733464
  • aranya 
     
    ধন্যবাদ। পাঠকের যৎসামান্য মন্তব্যই লেখককে উৎসাহ জোগায়। 
     
    আপনার সুস্থতা কামনা করি। 
     
    আর এই 'ঘনঘোর' একদিন কাটবেই। সুদিন আসবে। 'মহীনের ঘোড়াগুলি'র ১টা গানের ১টা লাইন এখানে না বলে থাকতে পারলাম না, 
     
    "সুদিন, কাছে এসো ভালোবাসি একসাথে " 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন