এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  সমাজ

  • ‘এক দেশ এক রেশন’ শুধু বাদ দেওয়া নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়ারও চক্রান্ত

    সুমন সেনগুপ্ত
    আলোচনা | সমাজ | ২৮ জুন ২০২১ | ৩৭০৯ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ উগান্ডার উদাহরণ দিয়ে লেখা শুরু করা যাক। কোটি কোটি উগান্ডাবাসী সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ তাঁদের অনেকেরই ডিজিটাল পরিচয়পত্র নেই। উগান্ডা সরকারের আইন অনুযায়ী এই ডিজিটাল পরিচয়পত্র জাতীয় সুরক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, কিন্তু সেই ব্যবস্থাকে যখন সরকারি পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, তখন দেখা যাচ্ছে তা থেকে বহু মানুষ বাদ পড়ছেন। ২০১৪ সালে যখন তৃতীয় বিশ্বের নানা দেশে ‘আইডি ফর অল’ অর্থাৎ ‘সবার জন্য পরিচয়পত্র’ এই প্রকল্প চালু করা হয়, তখন তা চালু হয় উগান্ডাতেও। তারপর সেখানে ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইলের সিম নেওয়া, পাসপোর্ট তৈরি করা বা চাকরি পাওয়া প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই এই ডিজিটাল পরিচয়পত্রকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সমস্ত কিছু চেনার চেষ্টা হচ্ছে, ফলত যা হবার তাই হচ্ছে, অসংখ্য মানুষ বাদ যাচ্ছেন। কোভিডের প্রতিষেধক পাওয়ার ক্ষেত্রেও এই পরিচয়পত্রটিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল, কিন্তু তারপরে বেশ কিছু সংগঠনের মামলা করার ফলে সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে।

    এরপর আসা যাক আমাদের পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের একটি উদাহরণে। কয়েকবছর আগেই বহু সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় স্থান পেয়েছিল একটি খবর। ১১ বছরের সন্তোষী ‘ভাত ভাত’ করতে করতে মারা যায়। তার পরিবারের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যুক্ত না থাকার ফলে সরকারি রেশন না পেয়ে খিদের জ্বালায় মারা যায় কিশোরীটি। যদিও তৎকালীন সরকারের তরফে এই মৃত্যু আধারের কারণে বঞ্চনার জন্য বলে মেনে নেওয়া হয়নি, তবে এ মৃত্যু যে অপুষ্টিজনিত অসুস্থতার কারণে, সে কথা স্বীকার করা হয়েছিল। যে কয়েকটি রাজ্য এই রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণে অগ্রগণ্য ভুমিকা নিয়েছিল তাদের মধ্যে ঝাড়খণ্ড অন্যতম। অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ এই বিষয়ে বিশদে কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন যে শুধুমাত্র এই বায়োমেট্রিক দিয়ে বা আধার দিয়ে চিনতে গিয়ে বহু মানুষ রেশন পাচ্ছেন না। শুধু ঝাড়খণ্ডেই বহু মানুষ রেশন না পেয়ে মারা গিয়েছেন এরকম অজস্র উদাহরণ আছে।

    প্রথমে জানা দরকার এই ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে। কোনও একজন ব্যক্তিকে তাঁর আধার নম্বরের সঙ্গে রেশন কার্ড এবং মোবাইল নম্বর যুক্ত করতে হবে। ফলে আধারে যে হাতের ছাপ বা চোখের মণি দেওয়া আছে তা কেন্দ্রীয় একটি তথ্যভাণ্ডার অর্থাৎ সিআইডিআরে সঞ্চিত হবে। পরে যখন সেই ব্যক্তি কোনও রেশন দোকানে যাবেন এবং সেখানকার যে পিওএস বা পয়েন্ট অফ সেল মেশিনে নিজের হাতের ছাপের যাচাই করাবেন, তখন যদি হাতের ছাপ মেলে তাহলেই সেই ব্যক্তি তাঁর জন্য ধার্য সরকারি রেশন পাবেন। যদি তা না মেলে তাহলে মোবাইলে একটি এককালীন নম্বর আসবে, সেই নম্বরটি যথাযথভাবে বলতে পারলেও তিনি রেশন পেতে পারবেন। এরপর জানা দরকার আধার কী? মানুষের হয়তো ধারণা আছে যে আধার একটি অভিনব পরিচয়পত্র এবং তা নকল করা সম্ভব নয়। হাতের ছাপ, চোখের মণি বা মুখের ছবি এই সমস্ত কিছুকে বায়োমেট্রিক্স বলে। এইগুলো কি অভিনব মানে ইউনিক, মানে নকল করা সম্ভব নয়? আধার কি সত্যি কোনও পরিচয়পত্র? না কি আধার একটা চেনার পদ্ধতি? আধার আইন কী বলে? আধার বলে যে কার্ডটি আমাদের দেওয়া হয় তাতে লেখা আছে? লেখা আছে, আধার কোনও পরিচয়পত্র নয়। আধার একটি যাচাই করার পদ্ধতি এবং আধার দিয়ে মানুষকে চেনা যায় যদি তা মানুষের বায়োমেট্রিক্সের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়। ধরা যাক কোনও মানুষকে তাঁর পরিচিত দুই বন্ধুর ছবি দেওয়া হল,তারপর সেই ছবিগুলো দশটা ছবির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হল। তারপর বলা হল খুঁজে বার করতে। দশ সেকেন্ডে খুঁজে বের করা যাবে। তারপর বলা হল, ওই দুটো ছবি একশোটি ছবির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হল, তখন নিশ্চিত বেশি সময় লাগবে। যদি ১ লক্ষ ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে কী হবে? খুঁজে পাওয়া যাবে তো? বায়োমেট্রিক্স দিয়ে চেনার পদ্ধতি অনেকটা এইরকমই একটি অনুশীলন। সেও আগে থেকে কম্পিউটারের তথ্যভাণ্ডারে রাখা ছবি, চোখের মণি বা হাতের ছাপের সঙ্গে নতুন বায়োমেট্রিক্স মিলিয়ে দেখে সিদ্ধান্তে আসে। সেও চেষ্টা করে। যতক্ষণ পারে করে, তারপর অনেক সময়ে সেও ব্যর্থ হয়। যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে কি সেই মানুষটির অস্তিত্ব থাকে না?
    কেন এই ধান ভানতে শিবের গীত গাইতে হচ্ছে? আসলে ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল ‘দুয়ারে রেশন’। ক্ষমতায় আসার পরেই দেখা গেল নতুন সরকার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারকে যুক্ত করার কাজকে প্রাধান্য দিতে শুরু করলো। অর্থাৎ ‘এক দেশ এক রেশন’ কার্ডের যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প আছে তাতে অন্তর্ভুক্ত হতে রাজি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরে পশ্চিমবঙ্গ রাজি হয়েছে। আদালতের যুক্তি ছিল যেহেতু এই মুহূর্তে পরিযায়ী শ্রমিকেরা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন, তাঁদের কাছে সরকারি সুবিধা অর্থাৎ বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তাই স্থায়ী বাসস্থান না থাকলে যাতে কোনও মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য এই ব্যবস্থা সমস্ত রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। এই বক্তব্যে সেই অর্থে কোনও ভুল নেই, কিন্তু আবারও সেই প্রাথমিক প্রশ্নে ফেরা জরুরি। আধার কি বাসস্থানের শংসাপত্র? আধার কি জন্মের শংসাপত্র? তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়ে করা এই দুটি প্রশ্নেরই উত্তরেই কিন্তু বলা হয়েছে, না। তাহলে কেন আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযোগ করানোর জন্য এই চাপাচাপি? ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে আধারের এবং রেশন কার্ড সংযোগ করার পরেও রেশন না মেলার অভিযোগ আসছে। বিভিন্ন সময়ে কাজের ধরন, বয়সের কারণ বা অন্যান্য অনেক কারণে মানুষের হাতের ছাপ মেলে না, তাহলে কি সেই মানুষটির অস্তিত্ব থাকে না? রাজ্য সরকার দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযোগ করাচ্ছেন, কিন্তু তাতে কি সমস্যার সমাধান হবে? যেখানে আধারের তথ্যভাণ্ডার কোনোদিন পরীক্ষিত হয়নি, কত ভুয়ো আধার আছে তা জানা নেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু সময়ে বহু সন্ত্রাসবাদীও ধরা পড়েছেন যাঁদের কাছে ভুয়ো আধার পাওয়া গিয়েছে, সেখানে আধারের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযোগ তো একটি দুর্নীতি নয় অপরাধও।

    আধার শুধু বাদ দেওয়ার উপকরণ নয়, একটি বড় দুর্নীতিকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টাও বটে। একজন মানুষের পরিচয় যখন একটি সংখ্যায় পর্যবসিত হয় তখন সেই মানুষটির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়। বিকল্প অন্য কোনও ব্যবস্থা কি করা যেত না? যেভাবে উগান্ডাতে মানুষ বাদ যাচ্ছেন যেভাবে ঝাড়খণ্ডে মানুষ মারা গিয়েছেন না খেতে পেয়ে, তা দেখার পরও আমরা কি চাইবো আমাদের রাজ্যে আবার আমলাশোল হোক?

    এছাড়াও আরো একটি বিষয়ের উল্লেখ করাও প্রয়োজন কেন এই ‘এক দেশ এক রেশন’ প্রকল্পের বিরোধিতা করা এই অঙ্গ রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। প্রতিটি রাজ্যের মানুষের খাদ্যাভ্যাস আলাদা, একজন বাংলার মানুষ বেশিরভাগ সময়ে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তিনি যদি কাজের জন্য পাঞ্জাব বা রাজস্থানে যান, এবং সেখানকার গণবণ্টন ব্যবস্থা থেকে তাঁর প্রয়োজন মতো খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে চান, তাহলে তাঁকে কিন্তু সেই রাজ্যে যে খাদ্যশস্য দেওয়া হয়, তা-ই নিতে হবে, এবং এক্ষেত্রে তা অবধারিত ভাবে গমই হবে, ফলে একজন বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিককে রুটিই খেতে হবে। উল্টোটাও সত্যি। এটা কি এক ধরনের খাদ্যাভাস জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নয়? এটাও কি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী নয়? আসলে যাঁরা সংবিধান প্রণেতা ছিলেন তাঁরা কিন্তু অনেক কিছু ভেবেই সংবিধান বানিয়েছিলেন। মানুষের খাদ্যাভ্যাসও তার অন্যতম। জোর করে সেই সব কিছু ভুলিয়ে দিয়ে, সবাইকে এক করে সমস্ত আমিষভোজী মানুষকে নিরামিষাশী বানানোও যেমন ফ্যাসিবাদ, একজন তামিল মানুষকে রুটি খেতে বাধ্য করাটাও এক ধরনের ফ্যাসিবাদ। সুতরাং ‘এক দেশ এক রেশন’ ব্যবস্থা শুধুমাত্র মানুষকে বাদ দেবে তা নয়, সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসও সুকৌশলে বদলে দেবে, এটা কি বিজেপি বিরোধী রাজ্যের নেতা মন্ত্রীরা বুঝতে চাইছেন না, নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে বুঝছেন না! এটাও কিন্তু আসন্ন ২০২৪-এর নির্বাচন মাথায় রেখে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারবিরোধী লড়াইয়ের একটা দিক।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৮ জুন ২০২১ | ৩৭০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ray | 2409:4060:93:c2dd:c38:c254:6b78:***:*** | ২৮ জুন ২০২১ ২৩:১৮495408
  • অদ্ভুত এঁড়ে যুক্তি,


    প্রথমত, একজন রেশনে খাবার না পেয়ে কষ্টে থাকার চেয়ে চালের বদলে যদি গম পেয়ে পেট ভরাতে পারে সেটা ভালো নয় কি?


    দ্বিতীয়ত, লেখকের Biometrics সিস্টেম এবং ডেটাবেস এবং তার সার্চ algorithm সম্বন্ধে ধারণা নেই। ডেটাবেসে এন্ট্রি হলে না পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মানছি চোখে আঘাতের কারণে রেটিনা এবং অন্য কোনো কারণে হাতের ছাপ পরবর্তন হয়ে যেতে পারে। এর যেকোনো একটি দিয়ে বাকি গুলো আপডেট করা যেতে পারে। কোনো মানুষের একই সঙ্গে রেটিনা এবং 10 টা আঙুলের ছাপ একই সঙ্গে চেঞ্জ হয়ে গেল এটা এই ধরনের কল্প-প্রবন্ধেই সম্ভব, বাস্তবে নয়।


    তৃতীয়ত, তর্কের খাতিরে ধরাই যাক করো biometrics মিলল না, তিনি বিল-মেট্রিক আপডেট না করিয়েই যে OTP এর মাধ্যমে রেশন তুলতে পারেন এটা তো উনিই স্বীকার করেছেন। তাহলে আধার সংযুক্তি হলে কি মানুষ রেশন তুলতে পারবে না এই ভয়ের থেকে ভুয়ো রেশন কার্ডে কিছু লোকের রেশন তুলতে আর পারবে না এই ভয়ই বেশি কাজ করছে?


    চতুর্থত, উনি যে ভুয়ো আধার কার্ডের প্রসংগ তুলেছেন... আপনি হুবহু আধার কার্ডের নকল ছাপিয়ে তাতে মন মত 12 টা নাম্বার বসিয়ে নিতেই পারেন, তার মানেই সেটা বৈধ হয়ে গেল না। সেটা বৈধ তখনই যখন আপনার কার্ডের তথ্য আধার ডেটাবেসে মজুত থাকবে/ ম্যাচ করবে। অন্য যে কোনো সিস্টেমের চাইতে biometric ব্যবস্থায় দ্রুত নির্ভুল এবং কোরাপশন ছাড়া এই verification সম্ভব। 


    এবং সবশেষে, আধার কার্ড পরিচয় এর প্রমাণ নয় কার্ডের ওপরে লেখা আছে... এই তথ্য উনি কোথায় পেয়েছেন? আমার এবং আপনাদের ও যে অরিজিনাল কার্ড ( বড়) পাঠানো হয়েছিল এবং E aadhar এও স্পষ্ট লেখা আছে Addhar is proof of Identity, ( not Citizenship) / আধার পরিচয়ের প্রমাণ ( নাগরিকত্বের নয়)... বিশ্বাস না হলে চেক করে নিন। তাহলে উনি ও কি সেই জাল কার্ড ধারীদের একজন?


    আসলে এই সমস্ত মানুষে কখনো কোনো সমাধান দেন না খোঁজেন না অযৌক্তিক বিরোধীতা করেই খুশি।

  • Ray | 2409:4060:93:c2dd:c38:c254:6b78:***:*** | ২৮ জুন ২০২১ ২৩:১৮495409
  • অদ্ভুত এঁড়ে যুক্তি,


    প্রথমত, একজন রেশনে খাবার না পেয়ে কষ্টে থাকার চেয়ে চালের বদলে যদি গম পেয়ে পেট ভরাতে পারে সেটা ভালো নয় কি?


    দ্বিতীয়ত, লেখকের Biometrics সিস্টেম এবং ডেটাবেস এবং তার সার্চ algorithm সম্বন্ধে ধারণা নেই। ডেটাবেসে এন্ট্রি হলে না পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মানছি চোখে আঘাতের কারণে রেটিনা এবং অন্য কোনো কারণে হাতের ছাপ পরবর্তন হয়ে যেতে পারে। এর যেকোনো একটি দিয়ে বাকি গুলো আপডেট করা যেতে পারে। কোনো মানুষের একই সঙ্গে রেটিনা এবং 10 টা আঙুলের ছাপ একই সঙ্গে চেঞ্জ হয়ে গেল এটা এই ধরনের কল্প-প্রবন্ধেই সম্ভব, বাস্তবে নয়।


    তৃতীয়ত, তর্কের খাতিরে ধরাই যাক করো biometrics মিলল না, তিনি বিল-মেট্রিক আপডেট না করিয়েই যে OTP এর মাধ্যমে রেশন তুলতে পারেন এটা তো উনিই স্বীকার করেছেন। তাহলে আধার সংযুক্তি হলে কি মানুষ রেশন তুলতে পারবে না এই ভয়ের থেকে ভুয়ো রেশন কার্ডে কিছু লোকের রেশন তুলতে আর পারবে না এই ভয়ই বেশি কাজ করছে?


    চতুর্থত, উনি যে ভুয়ো আধার কার্ডের প্রসংগ তুলেছেন... আপনি হুবহু আধার কার্ডের নকল ছাপিয়ে তাতে মন মত 12 টা নাম্বার বসিয়ে নিতেই পারেন, তার মানেই সেটা বৈধ হয়ে গেল না। সেটা বৈধ তখনই যখন আপনার কার্ডের তথ্য আধার ডেটাবেসে মজুত থাকবে/ ম্যাচ করবে। অন্য যে কোনো সিস্টেমের চাইতে biometric ব্যবস্থায় দ্রুত নির্ভুল এবং কোরাপশন ছাড়া এই verification সম্ভব। 


    এবং সবশেষে, আধার কার্ড পরিচয় এর প্রমাণ নয় কার্ডের ওপরে লেখা আছে... এই তথ্য উনি কোথায় পেয়েছেন? আমার এবং আপনাদের ও যে অরিজিনাল কার্ড ( বড়) পাঠানো হয়েছিল এবং E aadhar এও স্পষ্ট লেখা আছে Addhar is proof of Identity, ( not Citizenship) / আধার পরিচয়ের প্রমাণ ( নাগরিকত্বের নয়)... বিশ্বাস না হলে চেক করে নিন। তাহলে উনি ও কি সেই জাল কার্ড ধারীদের একজন?


    আসলে এই সমস্ত মানুষে কখনো কোনো সমাধান দেন না খোঁজেন না অযৌক্তিক বিরোধীতা করেই খুশি।

  • সুমন | 117.194.***.*** | ২৯ জুন ২০২১ ০৭:৫৫495417
  • প্রথমত আপনার আধারেরতথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে আমার বা আপনার হাতের ছাপ বা চোখের মণির উদাহরণ নিয়ে কথা বলা যাক। এটা যে মিলছে না বা মেলে না, তার অজস্র উদাহরণ দিয়ে এই কথা বলা যায়। 


    দ্বিতীয়ত একজন মানুষ কি করে তাঁর আধার তৈরী করেছেন ? কোনো প্রাথমিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে। তাহলে তার পরে কি করে আধার ই একমাত্র পরিচয়পত্র হয়ে ওঠে ?


    তৃতীয়তঃ আরো একট উদাহরণ দেওয়া যাক একটা তালা খুলতে গেলে কি তালাটা চাবিকে চেনে না চাবি যার হাতে আছে, তাঁকে চেনে ? যদি চাবিকে চেনে , তাহলেই তালা খোলে। সুতরাং যদি বায়োমেট্রিক নকল করা যায় এবং যা সম্ভব তাহলে একজনের পরিবর্তে অন্য জন সরকারের থেকে আসা সুবিধা পাবেন এটাই তো হবে, তাই না। 

  • Anindita Roy Saha | ২৯ জুন ২০২১ ১০:০৯495419
  • ভাত-রুটির প্রসঙ্গে একটা কথা। যেখানে থাকবো সেখানের খাদ্যাভাস গ্রহণ করলে সেটা খারাপ কেন?  এটা  কি লাদাখে গিয়ে দাদা-বৌদির হোটেলে সিদ্ধ চালের ভাত খোঁজা হয়ে যাচ্ছে না? 

  • Santosh Banerjee | ২৯ জুন ২০২১ ১০:৫৮495420
  • এই " আঁধার ""টা কেন ???কেন ???কেন ???কূট জালিয়াতি কিছু নেতা মন্ত্রী আর তথাকথিত টেকনোলজিস্ট  ( কংগ্রেস কে স্মরণ করুন ) এটা তৈরি করে বিজেপি কে ট্রান্সফার করলো আর এরা মানুষ কে রবীন্দ্র নাথের "" রক্তকরবী "'শ্রমিক দের মতো শুধু সংখ্যা যুক্ত জীব  করে তুললো !!দেশের মানুষের পরিচয় কি ওই একটা প্লাষ্টিক কার্ডের মধ্যে ?? কেন ??ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন কার্ড , ভোটার কার্ড পান কার্ড সব গুলো কে টেকনোলোজিক্যালি এবং সুইট্যাবলী এমালগেমটেড করে একটা পরিচয় পত্র কেন করাযায় না ???সব বজ্জাতের বুদ্ধি , আর কিছু না ।সুযোগ নিচ্ছে সবাই এই আঁধার দিয়ে ।..আধার সত্যিই """আঁধার """!!!!

  • জুবি সাহা | 115.187.***.*** | ২৯ জুন ২০২১ ১২:৩৯495425
  • রেশনের সাথে আধার বাতিল করার দাবিটা গুরুত্বপূর্ণ। 'এক দেশ এক রেশন' তো সমস্যাজনক বটেই, একইসাথে 'দুয়ারে রেশন'ও সমস্যাজনক। দুটোরই বিরোধিতা করা উচিত।


    কারণ দুয়ারে রেশনে আরও অনেকগুলো সমস্যা আছে।


    1. ওজন পরিমাপের কোনো স্বচ্ছতা থাকবে না। ফলে দুর্নীতির ব্যাপক সম্ভাবনা থাকছে।


    2. কোনো দুর্নীতি হলে রেশন ডিলারের দোকানে যেভাবে সম্মিলিত বিক্ষোভ প্রকাশের সুযোগ থাকে, বাড়ি বাড়ি distribution হলে সে সম্ভাবনা কমে যায়।


    3. ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বে যারা থাকবেন তারা ডেফিনিটলি সরকার পক্ষের লোক। ফলত খাদ্যসুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও অধিকার থেকে দয়াদাক্ষিণ্যে পরিণত হবে।


    বরং, সর্বত্র রেশনের বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং কার্ডের ধরনের বৈষম্য দূর করার দাবি রাখা উচিত। বিশেষত FCI এর গোডাউনে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত আছে তাতে সবাইকে AAY কার্ডের সমান রেশন দেওয়ার দাবি তোলা উচিত। এবং অবশ্যই সবাইকে রেশনকার্ড অবিলম্বে দেওয়ার দাবি থাকা উচিত।

  • G Ghosh | 103.217.***.*** | ২৯ জুন ২০২১ ১৩:৩৭495427
  • এক রাজ্যের বোঝা অন্য রাজ্য বইবে কেন ?

  • Prosanta Dutta | ২৯ জুন ২০২১ ২৩:০৫495457
  • এই রকম ভাবে দেখলে তো কোনো কিছুই করা যাবে না ! বড় সমস্যার সমাধান এর জন্য কিছু ছোট সমস্যা তো হবেই !

  • Ranjan Roy | ৩০ জুন ২০২১ ১৫:৫৯495481
  • "

    • এক রাজ্যের বোঝা অন্য রাজ্য বইবে কেন" ?

    • --এক রাজ্যে অন্য রাজ্যের মানুষ কাজ করতে গেলে সে নতুন রাজ্যকে শস্তা শ্রমের যোগান দিয়ে তাদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে না? ফলের পরের রাজ্যের জিডিপি বাড়ছে না?

    •  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন