মাঠ ও মেদিনী যে আখ্যানের ধাত্রীভূমিপুরুষোত্তম সিংহকোনো কোনো লেখক আখ্যানমাঠ ক্রমেই প্রসারিত করে চলেন। আবার কোনো কোনো লেখক বৃত্তকে ছোট রেখে তার মধ্যেই নানা আঙ্গিকে পাঠককে পাক খাওয়ান। প্রথম পর্বের লেখক স্বপ্নময় চক্রবর্তী, মধুময় পাল। দ্বিতীয় পর্বের লেখক তপনকর ভট্টাচার্য, দেবর্ষি সারগী। কেউ কেউ ব্যক্তিকেই চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট বৃত্তের যাবতীয় সারাৎসার, রহস্যবিন্দুসহ মস্তিষ্কের কার্যকলাপ স্পষ্ট করেন, কেউ কেউ ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে সমষ্টির চিত্রে চলে যান। আনসারউদ্দিন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেও ব্যক্তির সঙ্গে জড়িত যে সমষ্টির মহাভারত তাই প্রতিপন্ন করতে চান। আনসারউদ্দিন, লুৎফর রহমান আখ্যান মাঠ প্রসারিত করলেও দু-জনের মধ্যে প্রভেদ আছে। আবার সোহারাব হোসেন শিল্পমূল্য প্রতিস্থাপনে যতটা কার্যকারী বাকি দু-জন ততটা ... ...
বাঙালি আর কত লাশ বইবে? পুরুষোত্তম সিংহ মধুময় পাল এই দগ্ধ বাংলার অমাবস্যার আলো। সুতীব্র সময়চেতনা, সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অভিজ্ঞান, সুমিষ্ট ভাষা দক্ষতা ও ব্যঙ্গ-শ্লেষের সুকঠোর আঘাতে তিনি যাপিত সময়কে ছিন্নভিন্ন করেন। এই সচেতন আখ্যান পরিক্রমা বিগত তিনদশক ধরে তিনি ধারাবাহিকভাবে করে আসছেন। সময়ের পোড়া চামড়ার যেন কিছুটা শুশ্রুষার মলম লাগাতে চান। আবার বাঙালির আদেখলেপনা, ন্যক্কারজনক রোমান্টিকতা, মেকি ভাবাবাদের ঘোমটা খুলে দেখিয়ে দেন এই তোমার অবস্থা। কোথাও মধুময় ক্রূর, বিধ্বংসী, ঘাতক সময়কে আক্রমণ করেন। হ্যাঁ মধুময় আক্রমণের ভাষা ও আক্রান্তের ভাষা দুইই আয়ত্ত করেছেন। কে আক্রমণ করে? রাষ্ট্র। কে আক্রান্ত হয়? বাঙালি। ভীতু বাঙালি পর্বে-পর্বান্তরে সব হারাচ্ছে। শুধু সংস্কৃতি নয় পরিবেশ, সভ্যতা, ন্যায়বিচার, ... ...
সমকালীন ভারতের গেরুয়া রাজনীতি যে আখ্যানের চালকপুরুষোত্তম সিংহআদ্যন্ত রাজনৈতিক বয়ান গড়ে তুলেছেন সাদিক হোসেন হোসেন ‘ভারতবর্ষ’ (২০২৪) উপন্যাসে। বহুত্ববাদের দেশ ভারতে রাষ্ট্রশক্তি বলপ্রদত্ত নিজস্ব ধর্মকে কীভাবে কেন্দ্রে রেখে অন্যধর্মসহ বিরোধী জনমতকে পরাজিত করতে বদ্ধপরিকর তার গোপন পাঠ আখ্যানকে বহুমুখী সত্যে ভাসিয়েছে। রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে জয়ী রাষ্ট্রপ্রধানেরও নির্দিষ্ট ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবিক হওয়া প্রয়োজন। অথচ আজকের প্রধানমন্ত্রী ধর্ম নিরপেক্ষতার বদলে ধর্মের বেশে ভেল্কি নাচন দেখাচ্ছেন। পুরো জোকার সুলভ আচরণ করে, ধর্মীয় গোঁড়ামি দ্বারা দেশকে যেমন ধ্বংস করছে তেমনি দেশের সুমহান ঐতিহ্য, সম্প্রীতিকে ধ্বংস করছে। এই ভাঙনকালে একজন লেখক কী করবেন? সাদিক হোসেন এই ভাঙনের ফাঁকফোকর যেমন আবিষ্কার ... ...
‘কোনো একদিন’ : কথাবৃত্তের নতুন সমীক্ষাপুরুষোত্তম সিংহবাংলা উপন্যাসের মোড় ঘুরিয়েছেন সাধন চট্টোপাধ্যায় ‘কোনো একদিন’ (২০২০) আখ্যানে। শুধু এ উপন্যাস নয় সাধন চট্টোপাধ্যায়ের সমস্ত উপন্যাসই সারাজীবনের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফসল। খুব সচেতনভাবে বাংলা উপন্যাসের বলিষ্ট পাঠক হিসেবে তিনি উপন্যাসের জমি নির্মাণে পদার্পণ করেন। অস্তিত্বের বহু সংরূপময় সত্তাকে নির্ভেজাল আড্ডায় বসিয়ে দিয়ে জীবনের গভীর তলদেশের সংবাদ খুঁজতে অগ্রসর হয়েছেন ‘কোনো একদিন’ উপন্যাসে। আমিত্বের দ্বিরালাপে ছদ্মময় জীবনের সংযত-অসংযত পাঠের বিন্যস্ত-অবিন্যস্ত সজ্জা কেমন হতে পারে, ব্যক্তির সংরূপময় সত্তা ব্যক্তিকে কীভাবে আক্রমণ করে, দংশন করে, সঙ্গী হয়ে পথ চালায় তার বহুস্তরীয় ভাষ্য ‘কোনো একদিন’ আখ্যান। ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসে ওসমানের দুই সত্তা। রমানাথ রায়ের ‘আমি রমানাথ ... ...