কাল কী হল? গোদি মিডিয়া আবার সার্কাস দেখাল, এবং শিক্ষিত লোকজন আবার নাচলেন। মার্কিন মধ্যস্থতা এবং যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়ে গেল তো সব্বাই জানেন। সুমন্দে অর্ণব বা ময়ূখ এঁরা এত বড় সাংবাদিক, কিন্তু হবার আগে কেউ কিচ্ছু টের পাননি। কিন্তু হয়ে যেতেই তাঁরা রোমহর্ষক সব খবর পেতে শুরু করলেন। জি ২৪ ঘন্টা বলল, নেহাৎই 'পাকিস্তান চেয়েছে তাই সংঘর্ষবিরতি'। এবিপি আনন্দ জানাল 'পাকিস্তানের কান্নায় মার্কিন হস্তক্ষেপ'। সবার উপরে রিপাবলিক। তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিল 'এবার হাতে-পায়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা পাকিস্তানের'। সবই নির্ঘাত 'সূত্র'এর খবর। এদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল, ভাই আপনাদের সূত্র যদি এতই সুপারম্যান, তো জাঙ্গিয়া প্যান্টের নিচে পরেনা কেন, অর্থাৎ কিনা ... ...
সেদিনের কথা আমার খুব মনে পড়ে। আমরা তিন ভাই, মেজদার কঠোর তত্ত্বাবধানে নিঃশব্দে বিদ্যাভ্যাস করিতেছি। সুমনদা, ময়ূখদা ও আমি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি এবং গম্ভীর-প্রকৃতি মেজদা বারবার এন্ট্রাসে ফেল করিবার পর গভীর মনোযোগের সহিত ২০২৪ হইতে তৃতীয়বারের জন্য শাসন করিতেছেন। আমরা আড়ালে তাঁহাকে উনিদা বলিদাম, কারণ তাঁহার প্রচণ্ড শাসনে একমুহূর্ত কাহারো সময় নষ্ট করিবার জো ছিল না। আমাদের পড়ার সময় ছিল প্রাইমটাইমে, সাড়ে সাতটা হইতে নয়টা। এই সময়টুকুর মধ্যে কথাবার্তা কহিয়া মেজদার ‘পাশে’র পড়ার বিঘ্ন না করি, এই জন্য তিনি নিজে প্রত্যহ পড়িতে বসিয়াই কাঁচি দিয়া কাগজ কাটিয়া বিশ-ত্রিশ খানি টিকিটের মত করিতেন। তাহার সবকটিতে নানারকম ব্রেকিং নিউজ লেখা থাকিত। সেদিন ... ...
দেখুন, স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করেই বলি। একটু বড়, কিন্তু পড়ুন। ভারতীয় মিডিয়া যে কাণ্ডটা ঘটিয়েছে সবাই মিলে, বিশ্বের অন্য যেকোনো জায়গায় এর ভগ্নাংশ হলেও তৎক্ষণাৎ এদের চাকরি যেত। ওই অবধি গড়াতই না, কারণ তার আগে নিজেরাই পদত্যাগ করে ফেলতেন। কিন্তু এখানে এঁরা শুধু যে অপদার্থ তাইই নন, নেহাৎই দুকানকাটা বলে, পদত্যাগ তো দূরস্থান, এর পরের দিন আবার ওই শ্রীমুখ গুলিই টিভিতে দেখাবেন। মাথার উপরে কার স্নেহ আছে সেও আন্দাজ করা যায়, ফলে চাকরিও যাবেনা। এতে সমস্যা কিছু নেই, নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়ে ফেলেছেন। ভারতীয় মিডিয়া সারা পৃথিবীতে তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। চারদিকে খিল্লির চূড়ান্ত। এদেরকে কেন বিশ্বাস করছিনা, এই নিয়ে একজন দুদিন আগে জানতে চাইছিলেন। উত্তর, একদম বহুরূপে ... ...
প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী পুঞ্চে অন্তত ১১ জন মারা গেছে। সংখ্যাটা সম্ভবত আরও বেশি। তার মধ্যে দুজন মহিলা, কয়েকটি শিশু। একটি গুরুদ্বারে শেল পড়েছে। হতাহত সব্বাই বেসামরিক। ঘটনাটা মৃত্যুর বিচারে পহেলগাঁও এর চেয়ে কিচ্ছু কম না। এটা সরাসরি পাক সেনার কীর্তি। সীমানার ওপারে উল্লাস চলছে, এপারে লোকজন হতচকিত। যুদ্ধে তাদের কী অপরাধ কেউ জানেনা। বদলা চাই বলে সোশাল মিডিয়ায় চলছে দাবীদাওয়া। ঠিক আগের রাতেই হয়েছে অপারেশন সিঁদুর। আন্তর্জাতিক মিডিয়া কাল খবর করেছিল ২৮ জন মৃত। তার মধ্যে অন্তত দুটি শিশু একটি নাবালিকা। অন্তত একটা মসজিদে আঘাত হয়েছে বলে পাকিস্তানি মিডিয়ার খবর। যারা মারা গেছে, সবাই বেসামরিক। কোনো জঙ্গী ... ...
এই জঙ্গীহানার সম্পূর্ণ দায় কেন উনিজির নয়, এবং ওঁর জবাবদিহি চাওয়া হবেনা, বোঝা যাচ্ছেনা। পশ্চিমবঙ্গে তো একটা বোম ফাটলেই শুনি সরকারের দায়, ইভটিজিং এ মৃত্যুর গুজব রটলেও বড়-বড় করে প্রবন্ধ নেমে যায়, দিল্লিতে দুর্নীতি হল কি হলনা, আস্ত মন্ত্রীসভা জেলে চলে যায়, খালি উনিজি হলেন দুধের শিশু, কাশ্মীর গত দেড় দশক ধরে প্রায় ফ্রিহ্যান্ড নিয়ে চালাচ্ছেন, কিন্তু ওঁর কোনো দায় নেই।দায় আরও বেশি হবার কথা, কারণ এই নিয়ে ফাটিয়েছেন উনি অনেক বেশি। পরশুরাম ১৭ বার পৃথিবীকে নিষ্ক্ষত্রিয় করেছিলেন, উনিজিও প্রায় ততবারই কাশ্মীরকে জঙ্গিমুক্ত করেছেন। শুরু করেছিলেন ২০১৬ তে সার্জিকাল স্ট্রাইক দিয়ে। দুর্জনে বলে তাতে নাকি বেশ কিছু পাইনগাছ এবং একটি কাক মরেছিল, কিন্তু ঢাকঢোল বাজাতে উনি ... ...
এটা আরজিকর আন্দোলন নয়, যেখানে একটা মর্মান্তিক ঘটনা এবং প্রশাসনের চূড়ান্ত অপদার্থতার পর, চর্চা হল স্রেফ অজস্র আষাঢ়ে গুজব নিয়ে। গুজব নিয়ে প্রশাসনের কোনো দায় থাকা সম্ভব না, ফলে তারা ফাঁকতালে পাশমার্ক পেয়ে বেরিয়ে গেল স্রেফ ধৈর্য দেখিয়ে। কিন্তু এখানে গুজব কিচ্ছু নেই। সবই আদালতে হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে কেউ কনটেস্টই করেননি, ফলে ওটা প্রমাণিতই বলা যায়। এবং সেটার মাপ কম না, আন্দাজ ২৫% নিয়োগে গরমিল আছে। এবং এর জন্য বিকাশরঞ্জন বা আদালত বা গ্রহান্তরের জীব, কাউকে দোষ দিয়েই লাভ নেই। রায়ে যে ন্যাচারাল জাস্টিসের নীতি মানা হয়নি, তার সঙ্গে আমি একমত না, আগেও লিখেছি। কিন্তু তারপরেও, দুর্নীতি না হলে এসব কিচ্ছু ঘটতনা। উকিলের কাজ উকিল করবেই, এজেন্সি রাজনৈতিক কাজ করবেই, আদালত রায় দেবেই, কিন্তু এতদূর জিনিসটা গড়াতই না, দুর্নীতি না হলে। দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রী তো বিচারাধীন হয়ে জেলে আছেন, বলেও কোনো লাভ নেই, কারণ, তিনি দোষী হন বা না হন, এই দুর্নীতিটা চোখের সামনে হতে দেওয়া হয়েছে। এবং খুব কম করে ধরলে, সরকার নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে। এবার, এই কেলেঙ্কারির দায় আর কেউ নেবেনা, রত্নাকরের মতো সরকারকে নিজেকেই নিতে হবে। এবং তাদেরই মেটাতে হবে। কীকরে মেটাবেন জানা নেই, কিন্তু মেটাতে হবে। কীকরে মেটাবেন জানা নেই বললাম, কারণ, জটিলতা আছেই। প্রথম সম্ভাব্য জটিলতা, ... ...
বাংলার অর্ধেক বিষয়ই নারী এবং সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে পরিণত হয়। সন্দেশখালি দেখুন, স্রেফ গুন্ডামি বা জমিদখল নয়, একটা রগরগে যৌনদাসীর ফ্যান্টাসিতে পৌঁছল, যে যৌনদাসী পুষত এক বিশেষ সম্প্রদায়। ঠিক যেন আরব্য রজনী। আরজিকরে দেখুন, একটা সরকারি হাসপাতালে খুন, ধর্ষণ, অধ্যক্ষের প্রাইজ-পোস্টিং, এইসব না, জিনিসটা পৌঁছল কুৎসিততম একটা পর্নোগ্রাফিতে। এক বিশেষ সম্প্রদায়ের ছেলেদের দ্বারা গণধর্ষণ, একটা মেয়ের অবধি হাত চেপে ধরে রাখা, এইসব মিলিয়ে আমি-সোমা-বলছি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিল, তাকে টপকানো সম্ভব বলে মনে হচ্ছিলনা। কিন্তু তাকেও টপকে এল লাশের সঙ্গে সঙ্গমের গল্প। দৈনিক সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়। বিকৃতির এই মাপ আগে কখনও দেখা গেছে বলে মনে হয়না। এবারও এই মুর্শিদাবাদ নিয়ে দেখুন, সংখ্যালঘু তো ছিলই, এখন মহিলা কমিশন এসে গেছে। ... ...
এটা একটু মন দিয়ে পড়ুন, কারণ, চিত্র ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই বন্যার মতো সংখ্যাগুরুর উপর "অত্যাচার"এর অডিও-ভিশুয়াল পাচ্ছিলেন। শুধু হিংসা না, দলে-দলে সংখ্যাগুরু মুর্শিদাবাদ ছেড়ে পালাচ্ছে। তার সঙ্গে মর্মস্পর্শী চোখে-দেখা বিবরণী। সঙ্গে ছবি, পোস্টার, ভিডিও। মিডিয়া ভেসে যাচ্ছিল, হোয়াটস্যাপ তো বটেই। তা, কাল সুকান্ত মজুমদার এই সিরিজের সর্বশেষ পোস্টারটা ছেড়েছিলেন টুইটারে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাগুরুদের ভয়াবহ অবস্থার বিবরণ দেওয়া হয়েছে, ছবিতে গল্পের মতো। সেখানে সংখ্যালঘুদের যথারীতি বলা হয়েছে, দুধেল গাই, এবং চারদিকে জ্বলন্ত বাংলার ছবি। পোস্টটা তিনি তুলে নেন, খানিক পরেই, কারণ ঠাণ্ডা মাথায় লোকে সব মিলিয়ে দেখে। দেখা যায়, গণেশ চতুর্থীর ছবিটা আসলে সিএএ আন্দোলনের। সরস্বতী পুজোরটা আসলে লক্ষ্নৌয়ের। জলন্ধরের একটা ছবিকে বলা ... ...
কাল থেকে আর মিডিয়া দেখা যাচ্ছেনা। হোআ খুললেও পরিচিতদের একটাই আর্তনাদ, "খুব খারাপ অবস্থা"। নতুন কিছু নয়। বছর ১১ আগেও শোনা যাচ্ছিল অবস্থা খারাপ, এবং "আচ্ছে দিন" আসবে। এবার সঙ্গে একটা "খুব" যোগ হয়েছে, এবং ভুল করার কোনো কারণ নেই, নিশ্চিতভাবেই এরপর "বহুত আচ্ছে দিন" আনার আহ্বান আসতে চলেছে। এতে আমরা সবাই যথাযথ ভূমিকা পালন করেছি। মিডিয়া নির্লজ্জভাবে মিথ্যে কথা বলেছে, গুজব ছড়িয়েছে, উসকানি দিয়েছে। সরকার দুর্নীতি করেছে, অপকম্মো করেছে, পুরোনো কংগ্রেসি লাইনে দুই ধর্মকেই তোল্লাই দিয়েছে। অপকম্মো বলতে একটাই, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ধৈর্য না দেখালে এতদিন আচ্ছে দিন এসেই যেত। প্রগতিশীলরাও মিডিয়ার সঙ্গে নেচেছেন, বীরদের বিরোধিতাকে চুরি-চামারি-চটিচাটা বলে অভিহিত করেছেন। ... ...
রাম কহিলেন, ওহে সুগ্রীব, বঙ্গজয় আর কদ্দূর? সুগ্রীব কহিলেন, রাত দশটায় দখল করে ফেলব স্যার। রাম নিশ্চিন্ত হইলেন। তখন সকাল সাত ঘটিকা। বানর সেনা বঙ্গে মার্চ করিতে লাগিল। তাদের মুখ নিশ্ছিদ্র কালো, কোনটি মুখ কোনটি মাথা, কোনটি সম্মুখ, কোনটি পশ্চাত বোঝার উপায় নাই। পশ্চাতে বৃহল্লাঙ্গুল দোদুল্যমান। দুই নগরললনা পথে হাঁটিতেছিল। তাহাদের একজন দেখিয়া আঁতকে উঠিয়া কহিল, মুখপোড়াদের শরম নাই গো, সব কিছু বার করে হাঁটছে? দ্বিতীয়জন তাহাকে সান্ত্বনা দিয়া কহিল, ওটা তো পিছন দিক রে, পিছন থেকে ন্যাজ বেরিয়ে আছে। এই লইয়া কিছু রঙ্গ হইল। এইসব তামাশা সত্ত্বেও যুদ্ধজয় অনিবার্যই ... ...