মোর কোনো জাতি নাই। মোর কোনো ধর্ম নাই। মোর কোনো ভগবান নাই। মো, কা..ঞ্চ...ন..জ..ঙ্ঘা..আমি কাঞ্চনজঙ্ঘা। জুবিন গর্গ। আসামের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত একটাই নাম... জুবিনদা! ভারতবর্ষের ইতিহাসে একটি মানুষের মৃত্যুতে তিনদিনে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষকে পথে নামতে কেউ কখনও দেখেনি। এত ভালোবাসা মানুষের বুকে ছিল। হারানোর হাহাকার কোন পর্যায়ে গেলে মানুষ লাশের পিছু পিছু হাঁটে জুবিন দেখিয়ে দিয়েছেন। এত সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি বিশ্বে চার নম্বরে স্থান পেয়েছে। প্রথম স্থানাধিকারী মাইকেল জ্যাকসন। মৃত্যুর কয়েকদিন আগের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল... যাতে অসমীয়া ভাষায় জুবিনকে বলতে শোনা যায়, "সোনু নিগম কুমার শানু আমার ভাল বন্ধু। ওরা প্রচুর গান গেয়েছে। খুব ভাল গেয়েছে। কিন্তু সোনু ... ...
(চলুন ঘুরে আসা যাক জাদুকরদের অজানা দুনিয়ায়)আদি যুগ থেকেই ভারতীয়রা চিরকাল জাদুবিদ্যার ভক্ত। তারফলেই ভৌতিক আধাভৌতিক তন্ত্র মন্ত্র কালাজাদু ইত্যাদির এদেশে বোলবালা। প্রাচীনকাল থেকেই বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সন্ন্যাসী এবং সাধুসন্তরা অলৌকিকতা প্রক্ষেপণ কে জাদুবল দেখিয়ে আসছেন। অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত ভারতবাসীর কাছে সেই জন্যেই সন্ন্যাসী ও সাধুসন্তদের চিরকাল প্রাধান্য। যাঁরা বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সেই জাদুকে মানুষের মনোরঞ্জনে ব্যবহার করেছেন তাঁরাই জাদুকর নামে পরিচিত হয়েছেন। জাদুবিদ্যা বলে আপাতদৃষ্টিতে কিছু হয়না। মানুষের অজানা বিজ্ঞান আর দৃষ্টি বিভ্রমকেই জাদুকররা সুনিপুণভাবে কাজে লাগিয়ে এক আশ্চর্য্য চমকের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে দর্শকের মনোরঞ্জন করে থাকেন। জাদুকরদের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞান বা প্রায় অশিক্ষিত বাঙালিদের জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং বিশ্ববিখ্যাত জাদুকর ... ...
"পাঁচে নয় সাতে আছি।" এক সময়ে শহর জুড়ে বড় বড় হোর্ডিংয়ে এইরকম লেখা আমরা অনেকেই দেখেছি। বাংলার এক বিখ্যাত সংবাদপত্রের পাঠক সংখ্যা কত, তার হিসেব জানানোর বিজ্ঞাপন ছিল ঐ ভাষায়(৭ লক্ষ পাঠক)। প্রায় দশ বছর হতে চলল ঐ জাতীয় বিজ্ঞাপন শহরে আর চোখে পড়েনা। কারণ সংবাদপত্রের পাঠক আর বাড়ছে না, ক্রমশ কমছে। আগে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে অন্যসব পণ্যের মতোই সংবাদপত্রের সার্কুলেশন বাড়তো। কিন্তু স্মার্ট ফোনের দৌরাত্মের যুগে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন ক্রমহ্রাসমান। একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বোধহয় শেষ পর্যায়ের দিন গুনছে। পরিচিত অনেক মাধ্যম আজ বিলুপ্তির পথে অথবা বিলুপ্ত হয়েই গেছে। যেমন ট্র্যাডিশনাল রেডিও। এখন কজন মানুষ কলকাতা ক কিংবা বিবিধ ভারতীর অনুষ্ঠান ... ...
নিজের দেওয়ালে উৎপটাং কিছু লেখালিখি করাটাই আমার নেশা। অন্য কোনোরকম নেশার দাস আমি নই। অনেক আগে লিখতুম দেওয়াল পত্রিকায়। যেগুলো কলেজে কিংবা লাইব্রেরির দেওয়ালে টাঙানো থাকত। তার পরের দিকে গ্রামগঞ্জের কয়েকটি লিটিল ম্যাগাজিনে। সেই তখনই বকুপিসির কানে গিয়েছিল, আমি নাকি চাদ্দিকের রাজনৈতিক খবরাখবর নিয়ে লেখালিখি করছি। যা করা নাকি অত্যন্ত বিপজ্জনক। শুরু হয়েছিল বকুপিসির নিত্য ধমকাধমকি। তার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে লিটিল ম্যাগাজিনে লেখালিখি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলুম। তারও বেশ কিছু পরে দু একটি ছোটখাটো সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় লিখতে শুরু করি। সেও অবিশ্যি রাজনীতি নিয়েই। কে যেন সেই কাগজগুলো বকুপিসিকে দেখিয়ে দিয়েছিল। সেইসব লেখা দেখে বকুপিসি বলল, হ্যাঁ রে তোর এত সাহস কিসের? ... ...
জানুয়ারির বেলা এগারোটা। কিছুক্ষণ আগে মুম্বইয়ের এয়ারপোর্ট ছেড়ে বেরিয়েছি। বাতাসে ঠান্ডা ভাবটা রয়েছে, কিন্তু শীত ব্যাপারটা নেই। মুম্বইয়ের শীতকাল যেমন হয় আরকি! ক্যাবের জানালার কাচ তোলা নেই। এসি চলছে না। ড্রাইভারকে আগেই ঠিকানা দেওয়া ছিল। তাই নির্ঝঞ্ঝাটে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেলাম। তরতর করে লিফট দিয়ে উঠতে উঠতে ভাবছি, শেষমেষ ঢুকতে দেবে তো! কে জানে? আমার মত অখ্যাত অর্বাচীন ওঁর কাছে রোজ কত আসেন, তার কি ইয়ত্তা আছে! কপাল ঠুকে কলিং বেলটা বাজিয়েই দিলুম।কয়েক মিনিট অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ফ্ল্যাটের দরজাটি খুলে গেল। একজন মাঝবয়েসী মানুষের আবির্ভাব। নিজের পরিচয় দিতেই ভিতরে আহবান... আইয়ে। প্রশস্ত ড্রইং স্পেসে গিয়ে একটি প্রকাণ্ড সোফায় বসে পড়লুম। ... ...
আলেপ্পি নাদিয়ালা। এক বিদেশি বন্ধু। যে জীবনে ভারতে আসেনি। ভারতবর্ষ বলতে ওর চোখে ভেসে ওঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিচ্ছবি। আর সত্যজিৎ রায়ের কিছু সিনেমা। তাজমহল আর এভারেস্ট... ব্যস। তার বাইরে এ দেশ সম্পর্কে সে কিছুই জানেনা। জানার কথাও নয়। আমরা কজনই বা নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ছাড়া অন্য কোনো দেশের ক'টা খবর রাখি?আমাদের দেশ নিয়ে গর্ব করার জন্য অনেক কিছুই বলে চলেছিলাম। দুশো বছর পরাধীন থাকার পরেও আমাদের দেশ কত উন্নতি করেছে। দেশের অর্থনীতিতে গতি এসেছে। বাণিজ্যে রফতানি বেড়েছে। ঝকঝকে তকতকে হাইওয়ে তৈরি হয়েছে। বড়বড় এয়ারপোর্ট কিংবা হোটেল ইত্যাদি জন্ম নিচ্ছে। আমার দেশের উন্নতির বর্ণনা আলেপ্পি মন দিয়ে শুনছিল। ... ...
"তিনটি মন্ত্র নিয়ে যাদের জীবন। সত্যম শিবম সুন্দরম। দুঃখের পৃথিবীটা তাদের কাছে এক আনন্দ আশ্রম। সেই মানুষই আসল মানুষ, যার জীবন পরের তরে।" উত্তমকুমার অভিনীত, শক্তি সামন্ত পরিচালিত সুপারহিট ছবি আনন্দ আশ্রমের গানের লাইন। যে সময়ে গানটি লেখা হয়েছিল, সেই সময়ে এরকম মানুষ খুঁজলে পাড়ায় বেপাড়ায় দু একজনের সন্ধান মিলতো। দিন বদলের সাথে সাথে অমন মানুষ একেবারেই দুর্লভ দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেল। যারা নিজের জন্য নয়, অপরের জন্য বাঁচতে ভালোবাসতো। যাদের নিজের জন্য পার্থিব ভোগ্য বস্তুর চাহিদা থাকতো সবচেয়ে কম। দিন বদলের সাথে যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। মানুষের মন মহৎ থেকে সংকীর্ণ থেকে আরো সংকীর্ণ হয়েছে। আধুনিক জীবনযাপনে নিজেরটুকু ... ...
ভেঙ্কিদার স্কুল শিক্ষকের চাকরিটা অনেকের মত আপাতত সুতোয় ঝুলে। ইদানিং সে স্কুলে যায়না। বাড়িতেও থাকে না। অথচ চাকরি ফেরত পাওয়ার আন্দোলনেও নেই... সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ে যায় কোথায় কে জানে! শুনেছি শাসক দলের শাঁসালো এক নেতা কাম মন্ত্রীর সাথে ভেঙ্কিদার নাকি এখন ওঠাবসা। তাই চাকরি নেই বলে ওর মধ্যে আর সব্বার মত হাহুতাশ নেই। আজ রোববার। বেলার দিকে পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে দেখি ভেঙ্কিদা। চায়ের কাপ হাতে খবরের কাগজ ... ...
বহু চেষ্টা করেও আমি কখনও ভূতের দেখা পাইনি। শুনেছি, ঈশ্বর দর্শন যেমন সবার ভাগ্যে জোটেনা। ঠিক তেমনি ভূতও সবাইকে দেখা দেয়না। সরাসরি না দেখলেও ভূতের উপলব্ধি কিন্তু হয়েছে। অনেকের মুখেই শুনেছি, আমাদের অফিসে নাকি ভূত আছে। প্রতি রাতে আপনা থেকেই চেয়ারেরা ফ্লোর জুড়ে যাতায়াত করে। যেমন যারা একটু রাত করে অফিস থেকে বেরোয়, তারা চেয়ারগুলোকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিংবা যে যার ওয়ার্ক স্টেশনের কাছে রেখে চলে যায়। সকালে অফিস খুলে দেখা যায় সারা অফিসের প্রায় চল্লিশ পঞ্চাশটি চেয়ার এক জায়গায় গোল করে রাখা। আগে সারারাত কাজ হত। সেই সময়ে সারারাত থাকাকালীন অনেকেই নাকি দেখেছে চাকাওয়ালা চেয়ার আপনা আপনিই মেঝেতে সরে যাচ্ছে। আমি ... ...
চাকরি চলে গেছে। যদিও হঠাৎ করে যায়নি। এক বছর আগেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল। অনেকেই ভেঙে পড়েছেন। কান্নাকাটি করছেন। সরকারি চাকরি। তা হারানোর আক্ষেপ তো কম নয়। তাই অনেকেই গোপনে অথবা সোচ্চারে চোখের জল ফেলছেন। যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন সে যোগ্য অযোগ্য বিচারে না গিয়েই বলছি, প্রতিদিন প্রাইভেট সেক্টরে হাজার হাজার কর্মীর চাকরি যায়। তাদের কাউকে কখনও পথে বসে অথবা সামাজিক মাধ্যমে কাঁদতে দেখেছেন? কাঁদা দূর অস্ত। কাউকে হাহুতাশ করতেও কখনও দেখবেন না। কারণ প্রাইভেট সেক্টর লড়াই করে বাঁচতে শেখায়। প্রতিটা দিন প্রতিটা মুহূর্ত যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে চাকরিটা বাঁচিয়ে রাখতে হয়। তাই সেখানে চাকরি গেলেও পরদিন সকালে চাকরি খোঁজার চেষ্টায় নতুন উদ্যমে ... ...