স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসছিল – এমন চিত্রকর্মের সলতে পাকানো পর্বটি কেমন ছিল এবং গুহার দেওয়ালে, পিলারে এবং ছাদে এমন মসৃণ চিত্রকর্ম কীভাবে সম্ভব হল? বিভিন্ন চিত্র গবেষণা থেকে যেটুকু জানা গেছে, তা হল মাটি-কাদার সঙ্গে গোবর ও তুষের গুঁড়োর মিশ্রনের প্রলেপ দিয়ে প্লাস্টার হত, তার ওপর চুণের আস্তরণ দিয়ে মসৃণ করে তার ওপর চিত্রিত হয়েছে সেইসব অমূল্য চিত্রাবলী। রং তৈরি হত মূলত বিভিন্ন লতাগুল্ম, গাছের রস, খনিজ পদার্থ, iron oxide, manganese di oxide এবং কাঠকয়লা। এইসব মিশ্রিত রং টেম্পারা পদ্ধতিতে চিত্রায়ণ হয়েছিল। ভাবতে অবাক লাগে, প্রায় ২ হাজার বছর ধরে সময়ের ঝড়ঝাপ্টা সহ্য করে এখনও অনেকটা রয়ে গেছে। ... ...
চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েনসাং-এর বর্ণনায় এই গুহামালার উল্লেখ আছে। সপ্তম শতাব্দীর পর থেকেই বৌদ্ধধর্মের প্রাসঙ্গিকতা ক্ষীণ হয়ে আসে, ফলে অজন্তার গুরুত্ব হ্রাস পেতে থাকে। ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর এই শিল্পসম্পদ সম্পূর্ণ ঢেকে যায় গভীর জঙ্গলে এবং অনাদৃত পড়ে থাকে প্রায় ১১০০ বছর, ফলে গুহার ভেতরকার অমূল্য চিত্রমালার ক্ষতিসাধন শুরু হয় তখন থেকেই। গুপ্তধনের মত এই সম্পদের পুনরাবিষ্কার ঘটেছিল হঠাৎই, ১৮১৯ সালে এক ইংরেজ সামরিক ক্যাপ্টেন জন স্মিথ বাঘ শিকারের নেশায় পৌঁছে গেছিলেন গভীর জঙ্গলে ঢাকা অজন্তা গুহামালার উত্তরদিকের এক পাহাড়ের মাথায়। ওয়াঘুর নদীর অন্য পারে স্মিথ লক্ষ্য করলেন—জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে অস্পষ্ট এক গুহার আভাস। উৎসাহী স্মিথ স্থানীয় এক কিশোরকে সঙ্গী করে চললেন গুহামুখের অন্বেষণে। নদীর অপর পারের দুর্গম জঙ্গলের অনেকটা পার হয়ে আবিষ্কার করলেন সেই অনাদৃত সম্পদ। ধীরে ধীরে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল এর খবর এবং ১৯৮৩-তে অজন্তা গুহামালা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেল। ... ...
সকালে উঠে ব্রাশ্ করে কচৌরি গলিতে কচুরি খেতে যাওয়ার সময় মনটা লুচি-লুচি হয়ে থাকে। আলতো করে ফুলে ওঠা লুচি। কিন্তু আঙুল দিয়ে টোকা মেরে ফুটো করে গরম বাষ্প বের করে দিলে লুচির যেমন অবস্থা হয়, হঠাৎ মনেরও তাই। কিছুদূর যেতেই তিনজনের সঙ্গে দেখা। ম্যাটাডোরে পাশাপাশি শুয়ে আছেন ওঁরা। পা থেকে মাথা পর্যন্ত কমলা-হলুদ কাপড়ে মোড়া। জ্বলছে ধুপ। ইতস্তত গাঁদার পাপড়ি। সবাই এক আঙুলে প্রণাম সারছে। পথচারী কেউই খুব একটা বিচলিত নয়। তিনজনেরই গন্তব্য মণিকর্ণিকা। মুখ হাঁ হয়ে যায়। এ কি সিস্টেম? আমাদের শ্মশান হয় গ্রামের প্রান্তে, শহরের উপকণ্ঠে। শহরের মধ্যিখানে শ্মশান? না হওয়ার হাজার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে, জানি। .... অত জানি না। তবে মণিকর্ণিকা কান ধরে শিখিয়ে দেয় - আজ যারা জিলিপি খেতে খেতে প্রণাম ঠুকলে, কাল এই জিলিপি প্রণাম যে তাদেরই প্রাপ্য হবে না - এই গ্যারান্টি খোদ মহাদেবও দিতে পারবেন না। ... ...
ডোকরার কাজে বিশেষ ধরনের মোম লাগে। মোম দিয়ে নকশার বিষয়টা বুঝতে পারছিলাম না আমরা। প্রবীণ শিল্পী অশৈল্পিক চারজনকে হাতে কলমে দেখিয়ে দিলেন। সরু সুতোর মতো মোম দিয়ে কচ্ছপের ছাঁচের পিঠে নকশা করলেন। জ্যান্ত কচ্ছপের পিঠে যেমন ছোপ দেখা যায় তার একটা ছাঁদ। মোম দিয়ে চোখ তৈরি করলেন। ছাঁচের নকশার জন্য বিভিন্ন আকার লাগে। গোল, তিন কোণা। শিল্পী প্রথমে সেই কেন্দু কাঠের টুকরো দিয়ে মোম পিষে লম্বা, চ্যাপ্টা করে নেন। তার পর মাপ অনুযায়ী কেটে নেন। কেন্দু কাঠের টুকরো দিয়ে মোম পেষাইয়ের পদ্ধতিটা বাবালা আর ইন্দ্রর চেনা লেগেছিল। ওদের কথায়, সোনার কাজে যে দলনা মেশিন ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে এর মিল রয়েছে। সেটি যন্ত্র, ডোকরার দলনা কেঠো। ... ...
দক্ষিণ ইওরোপের আইবেরিয়ান উপদ্বীপের দেশ। প্রাচীন রোম সাম্রাজ্য, মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন, প্রাক-আধুনিক ঔপনিবেশিক শক্তি, আধুনিক কালে দীর্ঘ স্বৈরতন্ত্র ওপরে গণতন্ত্রের মিশ্রণে বিচিত্র রঙিন সংস্কৃতি। ঠিক পর্যটক হয়ে সাইট-সিয়িং নয়। কখনও শিক্ষার্থী, পরে তরজমাকার হয়ে এদেশের নানা শহরের অন্দরমহলে উঁকি-ঝুঁকির অভিজ্ঞতা। একিস্তিতে কুইম্ব্রা ও তার আশপাশ। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য থেকে মধ্যযুগীয় পোর্তুগালের দুনিয়ায় ঘোরাফেরা। ঋতা রায় ... ...
দক্ষিণ ইওরোপের আইবেরিয়ান উপদ্বীপের দেশ। প্রাচীন রোম সাম্রাজ্য, মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন, প্রাক-আধুনিক ঔপনিবেশিক শক্তি, আধুনিক কালে দীর্ঘ স্বৈরতন্ত্র ও পরে গণতন্ত্রের মিশ্রণে বিচিত্র রঙিন সংস্কৃতি। ঠিক পর্যটক হয়ে সাইট-সিয়িং নয়। কখনও শিক্ষার্থী, পরে তরজমাকার হয়ে এ দেশের নানা শহরের অন্দরমহলে উঁকি-ঝুঁকির অভিজ্ঞতা। এ কিস্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়-শহর কুইম্ব্রা। ঋতা রায় ... ...
স্থানীয় ভাষায় বলে ‘তামু’। আলু, পটল, ঢ্যাঁড়শ, কুমড়ো। লকলকে সবুজ শাক। পুঁটি, মৌরলা, পাবদা। মায় কাছিম পর্যন্ত। এক্কেবারে যেন বাংলার হাট। থলি হাতে ঘুরলেন সুকান্ত ঘোষ ... ...
তামাশা-এ-গুলশন, তমন্না-এ-চিদন/বাহার-আফরিনা গুনাহগার হ্যায়ঁ হম! বাগান অবলোকন, বাসনায় চয়ন/বাসন্তী দেবী, পাপী যে এ মন! হায় মির্জা গালিব, বাগান থেকে ফুল ছেঁড়ার অনুশোচনায় এমন কবিতা, ফুল চয়নের এই বহর দেখলে না-জানি কী লিখতেন জনাব! এক ছাদের তলায় ২২০০ বিঘার বাজার—শুধু ফুল আর ফুল। বছরে বিকিয়ে যায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি পিস্ ফুল! হল্যান্ডের আল্সমীর। সুকান্ত ঘোষ ... ...