একটা থ্রিলার দেখবো ভেবে দেখতে বসলে, ওয়েব সিরিজের ধর্ম অনুযায়ী প্রথম এপিসোড সেভাবে টানটান না লাগতেই পারে, এমন কী প্রথম এপিসোডের শেষে পরের এপিসোডের শেষে যাওয়ার যে অব্যর্থ "হুক" সেটাও আপনি পাবেন না প্রথম বা দ্বিতীয় এপিসোডে....আসলে এটা বর্তমানে বহুল প্রচলিত, অকারণ গুলি এবং গালি " সমৃদ্ধ" ওয়েব থ্রিলার সিরিজ নয়। এটা মাথায় রাখলে সিরিজ দেখতে বসার আগেই একটা প্রাক নির্ধারিত এড্রেনালিনের ক্ষরণ সম্ভাবনা সরিয়ে রেখে ধীরে ধীরে গল্পের ভেতরে ঢোকার পদ্ধতিটা আপনি উপভোগ করতে পারবেন হয়ত। ... ...
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। প্রাক ভোটের পরিবর্তনপন্থী হাওয়ায় সরগরম নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া। সেইখানে দু’টি মেয়ে একসঙ্গে হাত ধরাধরি করে আত্মহত্যা করল বিষ খেয়ে। বিষ খেয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণার কোনো চিহ্ন অবশ্য দু’টি মেয়ের মুখে ছিল না। মেয়েদু’টির নাম সুচেতা (১৮) আর স্বপ্না (২২)। সুচেতা স্বপ্নার ছাত্রী ছিল। পরস্পরকে দারুণ ভালোবাসত। এই অস্বাভাবিক ভালোবাসার অবসান ঘটাতেই বোধহয় স্বপ্নাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সে বিয়ে সুখের হয়নি। অবশেষে দু’জন আত্মহত্যা করে আর রেখে যায় একটি দীর্ঘ অন্তিম চিঠি। সে চিঠিতে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। শুধু অন্তিম ইচ্ছা ব্যক্ত করে যায় তারা – যেন তাদের একসঙ্গে সৎকার করা হয়। না, তাদের এই ইচ্ছাটুকুও পূর্ণ করেনি তাদের পরিবার তথা সমাজ। তাদের দেহ নিতেও তারা অস্বীকার করে। মর্গে বেওয়ারিশ লাশ হয়ে পড়ে থাকে তারা। অথচ শেষ চিঠিতেও পরিবারের প্রতি, বাবা-মার প্রতি তাদের ভালোবাসা আর উৎকন্ঠা ঝরে পড়ে। কেন এমন হয়? ... ...
একসময় চলচ্চিত্র দেখার সু্যোগ বাড়ল ইনটারনেটের কল্যাণে, কিন্তু চলচ্চিত্র সংক্রান্ত আলোচনার পরিসর ও প্রভাব গেল কমে। ফলে সাম্প্রতিক ফরাসি চলচ্চিত্র সম্পর্কে আমরা খুব একটা কিছু জানি না। কিন্তু শুধু ইনটারনেট নয় , এখন বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও সেসব সুযোগ কিছুটা তৈরি হয়েছে। বিশেষত Mubi নামক প্ল্যাটফর্মটিতে এরকম ছবির আধিক্য আছে। সেখান থেকেই কয়েকটি ফরাসি ছবি বেছে নিয়ে আমার এই ঝাঁকিদর্শন প্রচেষ্টা। ... ...
Memories of murder (২০০৩) খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বং জো-হো এর ২০১৯ সালের ছবি ‘Parasite’ নিয়ে আলোচনা করলেন শুভদীপ ঘোষ। ... ...
বিজয় তেণ্ডুলকর, মহেশ এলকুঁচওয়ার অথবা সতীশ আলেকারের মত নাট্যকারের নাট্যকৃতি দেখা বা পড়ার সুযোগ থাকায় মারাঠি নাটক সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা আছে। মারাঠি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত গায়ক বা গায়িকাদের বিরাট ঐতিহ্য সম্পর্কেও আমরা সশ্রদ্ধ অনুরাগ পোষণ করি। কিন্তু মারাঠি চলচ্চিত্র বিষয়ে আমাদের বিশেষ কিছু জানা নেই। তার একটা কারণ বোধহয় এই যে আমাদের দেশে আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রের প্রসার এখন ভীষণ অবহেলিত। তার মধ্যে আবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সর্বোৎকৃষ্ট ছবির শিরোপার ৭১ শতাংশ হিন্দি, বাংলা এবং মালয়ালম ছবির দখলে এসেছে গত ৬৯ বছরের ইতিহাসে। সত্যজিৎ রায় সমেত দশ জন পরিচালক তাঁদের প্রথম ছবিতেই এই সম্মান পেয়েছেন। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মারাঠি পরিচালক চৈতন্য তামহানের নাম ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কোর্ট’ ছবিটির জন্য। ... ...
বলি, গল্পে একটু কম গা ঘিনঘিনেমি না দিলে কি ভাত হজম হত না বাছা? একজন স্বাধীন উপার্জনক্ষম নারী মনোবিদ মানেই কি তাঁকে দর্শন চোবানো আইটেম বানিয়ে ফেলতে হবে, যিনি রোগ সারাতে সারাতে নিজের অরগাজমে ভেসে যান? মানছি যে কোনও অ্যাকমপ্লিশমেন্টের মধ্যেই অরগাজমের সমতুল্য সুখ লুকিয়ে থাকে। ... ...
রাগপ্রধান ও রাগাশ্রয়ী গানগুলি শুনলে খুব মনে পড়ে যায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সেই অ-শিক্ষকদের, যাঁদের সাংগীতিক মধ্যমেধা বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে রাগ সঙ্গীতের প্রতি সহজাত আগ্রহগুলিকে যত্নে নষ্ট করেছে। বিগত দুই প্রজন্মের এই ‘গানের মাস্টার-নাচের মাস্টার’ দৃষ্টিভঙ্গির এবং উলটো পক্ষের সেই অশ্রদ্ধার কাছে মাথা নোয়ানোর ফলাফল — জাতিগতভাবেই বাঙালির রাগ সঙ্গীতের উৎকর্ষতা তলানিতে এসে ঠেকা। ... ...