আসগর ও বানভাসি মানুষের কথা : সোমনাথ মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : পরিবেশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৩৮৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
বন্যা, নদী জলের ভাগ দখলদারি নিয়ে পারস্পরিক অসহযোগিতা ও সংঘাতের বিষয়টি ক্রমশই হাইড্রো ইম্পিরিয়ালিজিমের হাত ধরে হাইড্রো ক্যাপিটালিজমের পথ ধরেছে। প্রাকৃতিক জল শক্তির বিকাশ যে প্রকৃতপক্ষে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থারই অঙ্গ তা বোধহয় বোঝবার সময় হয়েছে। ঊনিশ ও বিংশ শতাব্দীর ফ্রান্সে এই ধারণার জন্ম যা নদীর জলের মতোই ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য উপনিবেশগুলোতে। নিজেদের স্বার্থেই ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো একেএকে উপনিবেশগুলোর দীর্ঘ সময় ধরে প্রচলিত রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বাস্তুতান্ত্রিক যাপনের সমস্ত ক্ষেত্রগুলোকে ধংস করে ফেলেছে। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থেই প্রাক্ বৃটিশ যুগের ভারতীয় কৃষি কাঠামোকে ভেঙেচুরে এক পুঁজিবাদী কৃষি ব্যবস্থার পত্তন করেছে। প্রথাগত ঋতুচক্রের সুবিধাকে নস্যাৎ করে পত্তন করেছে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি অর্থকরী বাজারি ফসলের চাষ। এজন্য নদীর জলের ওপর স্থাপিত হয়েছে একছত্র পুঁজিবাদী নিয়ন্ত্রণ। এখন কর্তার ইচ্ছায় চলে নদী জলের জোগান। কখন ছাড়বে আর কখন ধরবে তা তাঁরাই ঠিক করে। বন্যার প্রসাদ পায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
উৎসব উৎকণ্ঠা : সোমনাথ মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ৩১ অক্টোবর ২০২৪ | ৩০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
সেদিন সন্ধেবেলায় সবে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে টিভির পর্দায় চোখ রেখেছি, হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো। কাপটা টেবিলের ওপর নামিয়ে সদর দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি দরজার সামনে বাপি দাঁড়িয়ে আছে। চাবি এনে দরজা খুলতে খুলতেই প্রশ্ন করি – “ কী ব্যাপার বাপি ? হঠাৎ এমন সময়ে?” ম্লান হেসে বাপি উত্তর দেয় – “এই তোমার কাছে এলাম একটু পরামর্শের জন্য।” পরামর্শ? তাও আবার আমার মতো এক অচল গাড়ির গাড়োয়ানের কাছে?” “তুমি হলে মাস্টারমশাই মানুষ, তোমার সঙ্গে কথায় আমি পেরে উঠবো না।” – বেশ বিনয় করে কথাটা বলে বাপি। এই অবসরে আমার স্ত্রী বাপির জন্যও এক পেয়ালা চা এনে হাজির করেছেন। সেই কাপে ঠোঁট ঠেকিয়ে বাপি বলে, –“সামনের পরবের ছুটিতে বাড়ির সবাই মিলে একটু বেড়াতে যাবো বলে ঠিক করেছি।” বাপি মনের কথা সবটা বলে উঠতে পারে না, আমার গিন্নি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে ওঠেন, – “ বাহ্! এতো খুব ভালো কথা। যা ,যা, ঘুরে আয়। আমিতো তোর কাকুকে বলে বলে হয়রান হয়ে গেলাম। কতদিন বাড়ির বাইরে যাওয়া হয়না। তাই কোথায় যাবি ঠিক করলি? পাহাড় না সমুদ্র?” এক নাগাড়ে এতো কথা শুনে বাপিতো একরকম নাজেহাল। আমতা আমতা করে বাপি বলে,-- “এখনো তা ঠিক করে উঠতে পারিনি কাকিমা। মেয়েটা এবার মাধ্যমিক পাশ করেছে ওর দাবি তাই সবার আগে। ওর ইচ্ছে এবার পাহাড় দেখতে যাবে, অন্যদিকে ওর মায়ের ইচ্ছে সমুদ্র দেখতে যাবে। আমি তো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। কোথায় যাব। এই উৎসবের সময় এলেই আমার বুক , মাথা সব ধরফর করতে শুরু করে। একেতো পরবের জন্য কেনাকাটার খরচ,তার ওপর এই বেড়াতে যাওয়ার খরচ! সামলাবো কী করে,তা ভেবেই আমার ঘুম উড়েছে। কাকু, আমায় একটা উপায় বাতলে দাও দেখি।”