রাম কে নাম : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ৩০ আগস্ট ২০১৯ | ১৬০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
একটা শিল্পবস্তু কি রাজনীতির গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করবার ক্ষমতা আর রাখে? মাকেল মুরের ফারেনহাইট ৯/১১ আমেরিকার ইতিহাসে সর্বাধিক লাভ করা তথ্যচিত্র হয়েও জর্জ বুশের দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হওয়া আটকাতে পারেনি। আনন্দ পটবর্ধন পরের পর দলিত প্রান্তবাসী প্রতিবাদী স্বরদের তাঁর তথ্যচিত্রে আনার পরেও নরেন্দ্র মোদির বিপুল ভোটে পুনর্নির্বাচিত হওয়া রোধ করতে পারেনি। আজকের পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে শিল্প এতটাই সাধারণের জীবনযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন, এমনকি আভা-গাঁর্দও, যে কিছুতেই কোনও প্রভাবই তা ফেলতে পারছে না। এমনকি 'রাম কে নাম', তার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েও, নিছক শিল্পের হিসেবেই একটি ম্যাড়ম্যারে এবং সরলরৈখিক তথ্যচিত্র মাত্র। এই ধরণের তথ্যচিত্র প্রদর্শনের সমস্যা হল, এদের টার্গেট অডিয়েন্স সম্বন্ধে সঠিক ধারণা না থাকা। এগুলো গ্রামের দিকে, বা বস্তিতে দেখালে মানুষ কতটা গ্রহণ করবেন সন্দেহ আছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের যে পরিমণ্ডলগুলিতে দেখানো হয়, এবং যাঁরা দেখেন, সেই ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যেই অসাম্প্রদায়িক, উদারনৈতিক, বামপন্থী সেকুলার। ফলে পুরো ব্যাপারটাই প্রিচিং টু দ্য কনভার্টেড হয়ে যায়।
আউশভিৎস : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য্য
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৯ এপ্রিল ২০১৬ | ৪৭৫২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪৮
প্রতি সন্ধেবেলা যখনই অফিসফেরতা বাসটা ঠাকুরপুকুর ছাড়িয়ে ডানদিকে বাঁক নেয় ত্রিদিবের আজকাল পেটের ভেতর হামাগুড়ি দিয়ে ভয় পাকিয়ে উঠতে থাকে। তার মনে হয় কলকাতার সভ্যতা থেকে এবার সে আদিম অন্ধকারের রাজ্যে প্রবেশ করছে।
তার নতুন কেনা ফ্ল্যাট হাঁসপুকুর ছাড়িয়ে এক অনন্ত নিঃসীম মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে নিঃঝুম হয়ে। চারদিকে ঘাপটি মেরে থাকা অন্ধকার লাফিয়ে পড়তে চায় সুযোগ পেলেই। সেই অন্ধকারকে টর্চের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা করে দিয়ে দুই পাশের মজা পুকুরের মধ্যেকার সরু রাস্তা দিয়ে পাঁক কাদা আর সাপখোপ এড়িয়ে সন্তপর্ণে মেন গেটের দিকে এগিয়ে যেতে হয় । এই নতুন ফ্ল্যাটের পেছনেই লুকিয়ে রয়েছে গণ্ডগ্রাম। মরা ঝোপ, বুনো জংগল, ক্ষেতের জমিতে সিমেন্ট ফেলে তার ওপর মাথা তুলছে প্লাস্টিক কারখানা, খোলা মাঠের এখানে ওখানে শ্বেতীর মতন জমাট বেঁধে টুকরো টুকরো বাড়িঘর, কলাবন, অবৈধ খাটাল। কলকাতার দিকে কিছুটা এগোলে ঠাকুরপুকুর বাজার। কিন্তু এইদিকটায় বড়ই নির্জন। সন্ধ্যে হয়ে গেলে শুধু টিমটিম করে মোবাইল রিচার্জের দোকান, চায়ের গুমটি অথবা ম্যাড়ম্যাড়ে মুদীর দোকানের আলো জ্বলে। মাঝে মাঝে রাস্তা কাঁপিয়ে বাস বা ট্রেকার চলে যায় গুম গুম করে। এই ধু ধু প্রকৃতির মধ্যে রিয়েল এস্টেট বানাবার কথা সমাদ্দার ছাড়া আর কেউ ভাবতেই পারত না।
ডেসমন হাঁসদা ও তার সুসমাচার : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য্য
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০২ নভেম্বর ২০১৬ | ১৮০৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২২
বারে বারে সে নিজের মাউথ অর্গান তুলে নিয়েছে ঠোঁটে। যা যা সুর শুনছে, সেগুলোকে নকল করবার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। সবসময় পারেনি। কিন্তু কোনও কোনও মুহূর্তে তার সুর হুবহু টিলার মাথার সুরের সংগে মিলে গেছে। রোমাঞ্চিত হয়ে উঠেছে তার সারা শরীর। আর যখনই এটা হয়েছে, ডেসমন দেখেছে টিলার মাথায় লোকগুলো গান বাজনা থামিয়ে দিয়েছে। থামিয়ে দিয়ে তার দিকে যেন তাকিয়ে থেকেছে। ডেসমনের গায়ে কাঁটা দিয়েছে। আপনা হতেই চুপ হয়ে গেছে তার মাউথ অর্গানও। তারপর সে দেখেছে, লোকগুলো সকলে যেন কোমরের ওপর থেকে শরীর একটু ঝুঁকিয়েছে তার দিকে। তারপর আবার শুরু করেছে গান। লোকগুলো কি তাকে অভিবাদন জানাল? ডেসমন ঠিক বোঝে না, তবে এরকম ভংগী সিনেমাতে দেখেছে। দেখেছে মাথায় টুপি কালো কোট আর মাছি গোঁফওয়ালা একটা লোকের সিনেমাতেও। কাউকে সম্মান জানাতে হলে মানুষ এমন ভাবে নুয়ে পড়ে। ডেসমনও মাথা ঝোঁকায়। প্রণাম করে মনে মনে। তারপর আবার মাউথ অর্গান তুলে নেয়।
রথের রশিতে টান : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০২ জুলাই ২০১৭ | ২৫২০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
কিন্তু এর আগে কখনো এমন হয়নি। গুর্জরদেশের সৌরাষ্ট্রের উপর দিয়ে যখন সমগ্র জম্বুদ্বীপে আর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কামনায় শ্রীকৃষ্ণ তাঁর রথযাত্রা সূচিত করেছিলেন, তখন থেকেই সে যাত্রার নিয়তি ছিল অপ্রতিরোধ্য বিজয়। অবশ্য রথযাত্রা করতেই হত। কিছুকাল পূর্বেই হস্তিনাপুর থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে রাজকার্য, অমাত্য, সান্ত্রী, শাসন ইত্যাদি কর্মে সাতাশ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে শূদ্র, দ্রাবিড় এবং নিষাদদের হাতে। এ রায়দান অসহ্য, এবং সমগ্র জম্বুদ্বীপের আর্য স্বাভিমানের উপর মস্ত বড় আঘাত। দূষিত রক্তের অধিকারী এই সব পশুর মত লোকজন, যারা গণ্ডায় গণ্ডায় সন্তান উৎপাদন, সন্ত্রাসী কার্য্যকলাপ এবং অরণ্য আশ্রমের সমাহিত শান্ত পরিবেশকে দূষিত করা ছাড়া আর কিছুই করেনি এতকাল ধরে, সেই তাদেরকে এখন তোষণ করে চলতে হবে! এবং সেটাও হস্তিনাপুর রাজচক্রবর্তীর পেছনে জনসমর্থন সংহত করবার খাতিরে! এতখানি অন্যায় স্বাভিমানী আর্যের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রথম গর্জন এসেছিল পশ্চিম প্রান্তের মহারট্ট প্রদেশের তিলক কুলপতির থেকে। তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলেছিলেন এই রায় কার্যকর হলে সমগ্র জম্বুদ্বীপ দ্রাবিড় রক্তে সিঞ্চন করে পরিশুদ্ধ করবেন তিনি। আর্যহৃদয়সম্রাট চতুর শ্রীকৃষ্ণ বুঝেছিলেন এটাই উপযুক্ত ক্ষণ। এখনই যদি আর্য সংখ্যাগুরুকে রক্তের স্বাদ না দেওয়া যায়, তাহলে সাম্রাজ্য গঠনের স্বপ্ন অধরাই থাকবে। এই সাম্রাজ্য গঠনের মূল বাধা যে প্রাচীন প্রথা, অর্থাৎ মহাজনপদগুলির গণতান্ত্রিক উপায়ের মাধ্যমে সম্রাট নির্বাচন, সেই গণতন্ত্রকে পিষে ফেলে আর্য একনায়কতন্ত্রের বিজয়রথ চালাবার এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। ঠিক সেই কারণেই মন্দির স্থাপনার আহ্বান।
শঙ্কু পাঁজার খোয়াবনামা : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ১৮৫৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৬
কিন্তু আজ আর শেষরক্ষা হল না। দানীবাবুর গলা থেকে সাঁই সাঁই আওয়াজ উঠছে। চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। গ্যাঁ গ্যাঁ করে কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না। পালঙ্কের একটা কাঠের ময়ূরের গলা শক্ত করে চেপে ধরলেন। শঙ্কু জল খাওয়াতে গেল, গলা দিয়ে নামল না। জলের গেলাস পাশের টেবিলে নামিয়ে রেখে শঙ্কু কর্তার মুখে ইনহেলারটা ধরল। প্রবল যন্ত্রণায় মাথা সরিয়ে নিলেন কর্তা। বোঝা গেল, নাকে লাগানোর ক্ষমতাটুকুও আর নেই।
শঙ্কু মোবাইল ফোন খুলল। দুর্বল সিগনাল দেখাচ্ছে। এই দুর্যোগ, তার মধ্যে আজকেই এমন বিপদে পড়তে হল?
অপমানের ইতিবৃত্ত : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ৩১ মে ২০১৮ | ১৯৫৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
চারটে বাচ্চা হয়েছিল। সাদা কালো পশমের বলের মতন। ভাল করে হাঁটতেও পারত না। দাঁড়াতে গেলে পা বেঁকে যেত। তুরতুর করে ছুটে ছুটে গলির এই ধার থেকে ঐ ধার করত তারা। তাদের নেড়ি-মা ডাস্টবিন, হোটেলের আশপাশ, হাসপাতালের ময়লা জঞ্জাল আবর্জনা ঘেঁটে যদি কিছু পেত, মুখে করে নিয়ে আসত। রাত্রিবেলায় মায়ের পেট ঘেঁসে ঘুমোত চারখানা চোখ সবে ফোটা বাচ্চাগুলো।
গতকাল একটা তীব্র স্পিডে ছুটে আসা সুইফট ডিজায়ার দুটো বাচ্চাকে মাড়িয়ে দিয়ে গেল । রাস্তার ওপরেই খেলা করছিল তারা। গাড়ির আওয়াজ বুঝে সাবধানী এবং সচকিত হবার মত অভিজ্ঞতা ছিল না। গাড়িটাও, চাইলে স্পীড কমাতেই পারত। গলির মধ্যে আর কত স্পিডেই বা গাড়ি চালানো সম্ভব! দেখতে পায়নি এমনও নয়, কারণ তখন দুপুরবেলা। হয়ত, দেখতে পেয়ে গতি হালকা কমিয়ে দুখানা হর্ন দিতে পারত। অথবা স্টিয়ারিং হালকা বাম দিকে ঘুরিয়ে দিলেও কাজ চলে যেত হয়ত। কিন্তু, সম্ভবত দাঁড়াতে চায়নি। সম্ভবত, তার অনেক তাড়া ছিল।
কার্ফিউড নাইট: আগ্নেয়গিরির শিখরে পিকনিক : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৩ আগস্ট ২০১৫ | ৮০৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০৩
তাই সবকিছুর পরেও এই বই সেই মানুষদের গল্প বলে, সেই ভূখণ্ডের গল্প বলে, আধিপত্যবাদের নিষ্পেষণে গুঁড়িয়ে যেতে যেতেও যা তুমুল জীবনের উদযাপনে বাঁচতে চায়। গ্রামের স্থানীয় মসজিদে গিয়ে সৌদির ক্যাম্প থেকে ফেরা কট্টর ইসলামিস্ট ছোকরা যখন চোখ-মুখ পাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে ‘কবীরন কবীরা’ (শ্রেষ্ঠ কে?) তার উত্তরে কেউ ‘আল্লাহু আকবর’ চেঁচিয়ে ওঠে না, বরং একে অন্যের মুখ চাওয়া-চায়ী করে। চেঁচাবে কি করে? আরবি জানলে তো! ছেলেপুলের কাছে তুমুল প্যাঁক খেয়ে চোখমুখ লাল করে সেই ইসলামিস্ট বুঝিয়ে দেয় যা এই স্লোগানের উত্তরে আল্লাহু আকবর বলাটাই নিয়ম। তারপর আব্বার চেঁচিয়ে ওঠে ‘কবীরন কবীরা”। দুই একজন মিনমিন করে বলে ওঠে ‘আল্লাহু আকবর’। প্রোগ্রাম সুপারফ্লপ হবার পর এক বছর ধরে সেই ছোকরা আওয়াজ খেতে থাকে গ্রামের অন্য ছেলেপুলের কাছে। ততদিনে কিন্তু ধর্মের হাত ধরে রেজিস্টান্স পৌঁছে গেছে কাশ্মীরের ঘরে ঘরে। পণ্ডিতদের মাস এক্সোডাস ঘটে গেছে, শ্রীনগরের রাস্তা উজিয়ে উঠছে আজাদ কাশ্মীরের দাবীতে, হাজার হাজার ছেলেমেয়ে নিখোঁজ এবং ঘরছাড়া। কিন্তু জীবন যেখানে যেটুকু চেটেপুটে নেবার, নেবেই। আগ্নেয়গিরির চূড়ায় বসে পিকনিক করার নাম-ই কাশ্মীর, বারবার মনে করিয়ে দেয় এই বই।
এই স্বপ্ন, এই গন্তব্য! : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ৩১ অক্টোবর ২০২০ | ৩৭৭৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
“পরব হল, এই ধর আমোদ, নাচ গান। সোহরাইতে ঠাওর করিসনি, কেমন নাচ করে বিটিছেলারা?” ধাতুরির ফ্যাসা কণ্ঠে চঞ্চল জীবের কামজ্বর চিতাধূমচালিত চৈত্রের বিশুদ্ধ পাতার ন্যায় অন্তর্হিত হইবার পূর্বে যেরূপ অবশেষ রাখিয়া যায়, ধাতুরি সেমতো চক্ষু উন্মীলন করিয়া বুধনিকে অবলোকন করিল, সে দংশনে শীতপত্রের বিশুষ্কতা, ফলত নিষ্ফল—“এই, এই যে সারদাপ্রসাদ আর বুধনি, উয়াদের বাপলা হবেক সব্ব অগ্রে। উয়ারা বর বউ হবেক, গাঁও জুড়ে বসবেক ভোজ, উয়ার অন্তে আসবেক বারুনি পরব। কিত্তে মজা! মজাই মজা!” হাহাকার করিয়া বুড়া বাতাস ধাতুরির জিহ্বা চুম্বন করিল।
বসন্ত উৎসব : শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : নববর্ষ | ১৫ এপ্রিল ২০২১ | ২৭১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
“জানি না”, অস্থির সীতাপ্রসাদ মাথার চুল খামচে ধরল। “কিন্তু গত বছরের সব কটা ঘটনা পর পর খেয়াল করে দেখো। মে মাসে প্রভুজির হুকুম আসল। আমরা ত্রিশূল নিয়ে গ্রাম ঘুরে ঘুরে কবরখানায় হামলা চালালাম। এখানে, ঠিক এই জায়গাতে,” সীতাপ্রসাদ এলোমেলো হাত চালাল চারপাশে, “এখানে আমাদের গোটা দল এসে কবরগুলো একটার পর একটা খুঁড়লাম। এমনকি পচে গলে যাওয়া বডিগুলোকেও ছাড়িনি । যেসব জেনানারা কংকাল হয়ে গিয়েছিল তাদের বাদ দিলাম শুধু। তারপর কাজ হয়ে গেলে লাশগুলো সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলাম যাতে সকলে দেখতে পায়। পরদিন থেকে টেনশন শুরু হল। বলা হল ওরা অ্যাটাক করবে, তাই পার্টি অফিস থেকে রাত্রিবেলা তলোয়ার আর ত্রিশূল বিলি হল। আমরা হামলা চালালাম। খুনখামারি যা হবার তা তো হল, ওদের সবাই চলে গেল রিফিউজি ক্যাম্পে। সব কিছুই জুন মাসের মধ্যে মিটে গেছে। ভোটার লিস্ট চেক করে দেখো, যে কয়খানা ঘর এখনো টিকে আছে তাদের একটাতেও কোনো জোয়ান মদ্দ নেই। আগাছা সাফ করে দেবার মত উপড়ে ফেলেছি। তাহলে এতদিন বাদে এই মার্চ মাসে এমন কাজ করল কে? কে এমনভাবে খুন করল তিনজনকে? আশেপাশের গাঁও গুলোর কেউ নয় কারণ এই কাজ করবার জন্য গায়ের যা শক্তি লাগে তা ওই কয়েকঘর বুড়োহাবড়াদের মধ্যে নেই। আর এমনভাবে বডিগুলো সাজিয়ে রাখল ঠিক যেভাবে আমরা ঐ লাশগুলোকে সাজিয়ে রেখেছিলাম।