ক্রিকেট যুদ্ধ : ওয়াক্কাস মীর
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ মে ২০১৩ | ১০৪৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ভারত পাকিস্তানের ম্যাচ দিল্লিতে বসে দেখলে উত্তর ভারতের পাকিস্তান বিরোধী মনোভাবটাও বেশ টের পাওয়া যায়। কয়েকটা স্লোগান তো বেশ পরিষ্কারভাবে ধর্মবিদ্বেষী। আমার পিছনেই বসেছিলেন সাঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে একজন, বন্ধুরা তাকে পন্ডিতজী বলে ডাকছিলেন। আমার টীম পাকিস্তানের টী শার্ট পরাটা তার আর কিছুতেই হজম হচ্ছিল না। আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছিলেন, "পাকিস্তান আজ জিতলে আর জ্যান্ত ফিরতে হবে না" বা "কাসভের মতন সব পাকিস্তানীকেই ফাঁসিতে লটকে দাও"। শুধু পাকিস্তান বিরোধী নয়, স্লোগানগুলো ছিলো মুসলিম বিরোধীও। লাহোরে শেষ যে ইন্ডিয়া পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিলো তার সুর কিন্তু অন্যরকম ছিল। সচীন মাঠে নামলে গোটা স্টেডিয়াম উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানিয়েছিল। সেই খেলায় ভারত জিতলে লাহোরবাসীরা ভারতীয়দের আলিঙ্গন করতেও ভোলেন নি। স্টেডিয়ামের বাইরে ভারতীয়রা খেলা জিতে নাচতে শুরু করলে লাহোরের ঢোলওয়ালারা সোৎসাহে ঢোল পিটিয়ে ছিলো। ক্রিকেট তো সবাই ভালোবাসে কিন্তু স্টেডিয়ামে এসে পরস্পরের জাতি বিদ্বেষটাকে কি না উগরে দিলেই নয়? খুব কি একটা উপর উপর ব্যাখ্যা দিলাম? আমার বন্ধুরা, যারা এর আগে দিল্লিতে ইন্ডিয়া পাকিস্তানের ম্যাচ দেখেছিল, তাদের অভিজ্ঞতাও কিন্তু আমারই মতন।
বিকৃত আদর্শের ব্যবসা : ওয়াক্কাস মীর
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৮ জুলাই ২০১১ | ১০১৪ বার পঠিত
ধর্মের মূলকথাই হলো মানবিকতা। ধর্মকে বোঝার আর বোঝানোর মূলকথাও তাই। কোরানের ব্যাখ্যা করতে হলে আগে দেখা দরকার যে আমরা কোন পথে হাঁটবো। আমরা কি সেই পুরনো সময়ে আটকে থাকা আক্ষরিক মানে বেছে নেবো? নাকি দেশ-কালের উপযোগী ভাবার্থকে নিয়ে এগোবো? বলতে বাধ্য হতে হয় যে আমাদের মুসলিম বুদ্ধিজিবীদেরই কোথায় যেন খামতি থেকে গেছে। যাঁরা ইসলামের আসল ব্যখ্যা তুলে ধরতে পারতেন, ধর্মাচরণের রাস্তায় কোথায় যেন তাঁরা পিছিয়ে পড়েছেন। তার ফলে ধর্মকে লড়াইয়ের হাতিয়ার বানিয়ে একদল তথাকথিত ধর্মগুরু আজ সারা মুসলিম দুনিয়া কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। এদের কাজই হলো মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বোঝানো যে "আমাদের ওপর অন্যায় হয়েছে, তাই এখন শোধ তোলার দিন'। এদেরই প্ররোচনায় মানুষের মনে প্রতিনিয়ত ঘৃণা আর তিক্ততা ভরে যাচ্ছে। আর সেই থেকেই রোজ তৈরী হচ্ছে হাজার হাজার সন্ত্রাসী, খুনে, আতংকবাদী। কোনো অর্থাভাব নয়, কোন বঞ্চনা নয়, শুধুমাত্র ঘৃণা আর বিকৃতির আদর্শ রোজই জন্ম দিচ্ছে উগ্রপন্থার।
গণতন্ত্র ও আজকের পাকিস্তান : ওয়াক্কাস মীর
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৩ জুন ২০১০ | ১১২৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
তা হলে এর শেষ কোথায়? সমাধানের প্রথম ধাপ অবশ্যই অন্যায় স্বীকার করা। এবং তার পরের ধাপে সেই অন্যায় আর যাতে না-হয়, তা নিশ্চিত করা। আহমদী, হিন্দু, ক্রিশ্চান, শিখ, অন্য সমস্ত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে ঘৃণার চাষ হয়ে চলেছে আমাদের জনতার চৌহদ্দিতে, তাকে বন্ধ করতে হবে। একদিনে এই ঘৃণা নিশ্চিহ্ন হবে না, ঘরে বসে শুধু "নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক!' ভাবলেও তা নিশ্চিহ্ন হবে না। মুখ খুলতে হবে। আলোচনা চালাতে হবে।
মালালা বিতর্কঃ ভিন্ন স্বর : ওয়াক্কাস মীর, অদিতি ফাল্গুনী, কল্লোল
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ নভেম্বর ২০১২ | ২০৯৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
এটা ধর্মের ব্যাপার নয় - এটা পুরোটাই ক্ষমতা দখলের রাজনীতি। ধর্ম এখানে একটি অজুহাত মাত্র। যদি এই লোকগুলি নিরীশ্বরবাদী হতো তাহলেও এই হিংসার ঘটনা ঘটতো। এই সব হিংসার জন্য শুধু ধর্মকেই দায়ী করতে গিয়ে তারা ভুলে যাচ্ছেন যে মানুষকে নিজের দখলে আনতে হলে সব ইডিওলজিকেই হিংসার পথ ধরতে হয়েছে, অবশ্যই ধর্ম তার থেকে বাদ নেই। এটা শুধু কোনো ধর্মের দোষ নয়।নিশ্চয়ই এটা নিয়ে তর্ক ও আলোচনার সুযোগ রয়েছে কিন্তু শুধু ধর্মকে কাঠগড়ায় চাপালে মূল কারণটাকে আমরা বাদ দিয়ে ফেলব। বিশেষত; যখন আমাদের বোঝাতে হবে পাকিস্তানের আম জনতাকে যে এটা আমাদের এক যুদ্ধ। যেটা পরিষ্কার করে বলতে হবে যে টিটিপি যা করছে তা ধর্ম নয়, এটা ধর্মের বিকৃতি। আরো যেটা বোঝানো জরুরি যে টিটিপি এখন ধর্মকে ব্যবহার করছে, কেন না সেটা এখন তাদের পক্ষে সুবিধাজনক।
রাষ্ট্রই যখন নাগরিকদের বিরোধী : ওয়াক্কাস মীর
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৯ জুলাই ২০১২ | ৮৪১ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
কিন্তু ভেবে দেখুন আমাদের যে কারুর সাথেই তো এমন হতে পারতো। ঘটনাক্রমে যদি আমি বা আপনি আহমদী বা অন্য কোনো ধর্মের পরিবারে জন্মাতাম তাহলে এই আমাদেরই অত্যাচার, অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তায়াহীনতায় দিন কাটতো। একজন মুসলমান নিজের ধর্মে ঠিক যতখানি বিশ্বাস, যতখানি আস্থা রেখে চলেন একজন অমুসলমানের কাছেও তাঁর ধর্ম তো ঠিক ততখানিই। তাহলে সেই বিশ্বাস, সেই আস্থার জন্য তাঁকে বারবার এমন হেনস্থা হতে হবে কেন? আমি জানি রাতারাতি সমস্ত আহমদী বিরোধী নিয়ম কানুন দেশ থেকে উবে যেতে পারেনা। আর নিয়ম কানুন গেলেও মানুষের মন থেকে খুব সহজে এই বৈষম্য মুছে যাবে সে আশাও আমার নেই। কিন্তু অন্তত একটা কাজ আমাদের করতেই হবে।যাঁদের মধ্যে সামান্যতম নৈতিকতা, মানবিকতা আছে তাঁদের আজ এগিয়ে এসে এই ধর্মীয় বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে হবে।লাহোরে যা ঘটেছে, সারাদেশেই যা ঘটছে তার প্রতিবাদ করতে হবে। নেই।আজ এই যে আহমদীদের পক্ষ নিয়ে এতগুলো কথা বললাম এর জন্য পাকিস্তানে আমায় কত সমালোচিত হতে হবে তা আমার অজানা নেই।তবু এই কথা আমি বারবার বলে যাবো। কারণ ,এর মত সত্যি কথা আর কিছু নেই।