দেখুন, শিক্ষক দিবস চলে গেছে, কিন্তু আমাকে কিছু কথা বলতে দিতেই হবে। আপনারা যারা মাস্টারমশাই-দিদিমণিদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, তাঁরা বিলকুল ভুল করেছেন। কারণ, আগে শিক্ষা বলতে ইশকুল-কলেজ এইসব ছিল, এখন কিন্তু কলেজের জায়গায় এসেছে গোদি মিডিয়া আর উচ্চশিক্ষা মানেই হোয়াটস্যাপ ইউনিভার্সিটি। এখন ইশকুল মাস্টারদের ধড়াদ্ধড় চাকরি যায়, কিন্তু তাতে কোনো ক্ষতি হয়নি, কারণ গোদি মিডিয়া আর হোআ অজর অমর অক্ষয়। শিক্ষায় বিপ্লব এনে দিয়েছে প্রায়। গোদি-মিডিয়া আমাদের শিখিয়েছে, কীকরে বিনা যুদ্ধে করাচি-লাহোর সব দখল করে ফেলতে হয়, কীকরে হাসপাতালে মড়ার সঙ্গে সঙ্গম করে পর্নো বেচতে হয়, কীকরে মৃতার শরীরে বীর্য ইনজেক্ট করে দেওয়া যায়, কীকরে তিলকে তিলোত্তমা বানাতে হয়। এবং এর কোনোটাকে বলে দেশপ্রেম, কোনোটাকে সংবেদনশীলতা, কোনোটাকে প্রতিবাদ, কোনোটাকে মনশীলতা।এই ... ...
বাংলার সীমান্তবর্তী একটা গ্রামে বিএসএফ এর অত্যাচারের ব্যাপারে শুনানি হল পরশু দিন অমৃতা সিনহার এজলাসে। অভিযোগ ছিল অত্যাচারের, সে তো বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু শুনানিতে যা হল শুনে আমি হতবাক। ভারতীয় আদালত খুব বড় ইংরাজ। সবই ইংরিজিতে হয়। সওয়ালে কথাবার্তা যা হল, তা মোটামুটি বাংলা অনুবাদে এরকমঃ উকিলঃ ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের একটা গ্রাম। বিএসএফ এর লোকজন সমানে গ্রামের লোকজনকে অত্যাচার করছে।বিচারপতি অমৃতা সিনহাঃ কেন?উকিলঃ গ্রামটা সীমান্তবর্তী।বিচারপতিঃ না না, কেন অত্যাচার করছে?উকিলঃ কোনো কারণ ছাড়া।বিচারপতিঃ কোনো কারণ ছাড়া একজন গিয়ে অত্যাচার করবে?উকিলঃ আমার কাছে যা বার্তা আছে, সেই অনুযায়ী, ডাক্তারি পরিষেবা একদম বন্ধ হয়ে গেছে। অবস্থা খুব খারাপ। দয়া করে...বিচারপতিঃ ওখানে কারা থাকে?উকিলঃ ভারতের লোকজন।বিচারপতিঃ ঠিক জানেন?উকিলঃ ... ...
আপনারা ভুলে গেছেন, বোধহয় বছর খানেক আগেই উনি বলেছিলেন, অপু-দুগ্গা যেমন ট্রেন দেখতে যেত, ছোটোবেলায় উনি কলকাতার মেট্রো দেখতে আসতেন। ওদিকে ওঁর জন্ম ১৯৫০ সালে, কলকাতা মেট্রো চালু হয় ১৯৮৪ তে। অপু-দুগ্গার ব্যাপারটা অবশ্য বলেননি, ওটা বিবেকের পরের সিনেমায় থাকবে। উনিজি হাপ্প্যান্ট পরে ধোকলা খেতে খেতে হাঁ করে পার্কস্ট্রিট মেট্রো স্টেশন দেখছেন। দূর থেকে কু-ঝিক-ঝিক করে ট্রেন আসছে। স্টেশনের দেয়ালে লাল অক্ষরে লেখা বামফ্রন্টের স্লোগান "বাংলাদেশী লাও, বাংলা বাঁচাও"। সেই লেখা মুছে "মা ভারতী"র ছবি আঁকছেন এক বিখ্যাত চিত্রকর। তিনি অরিন্দম চ্যাটার্জি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভাই। দূর থেকে দেখতে পেয়ে সিপিএম মোল্লাবাহিনী মার মার বলে দৌড়ে আসছে। ডায়রেক্ট অ্যাকশন। তাদের তাতে অস্ত্র, থুতনিতে লম্বা দাড়ি, লেনিনের মতো ... ...
২০২৬ সাল। বাংলার ইশকুলের খুব খারাপ অবস্থা। কোথাও কোনো মাস্টার নেই, সবার চাকরি গেছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদে কেউ কোনো ফাইল নড়ায়না, কারণ কম্পিউটারে দুর্নীতির ভাইরাস কখন ঢুকে পড়বে কেউ জানেনা। ছাত্রদের পড়াশুনো গোল্লায় গেছে। সবাই পরীক্ষায় গোল্লা পায়, মহানন্দে সাইকেল চালিয়ে ঘোরে, আর ট্যাব নিয়ে গেম খেলে। চারদিকে হাহাকার। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন খবর এল, গাঁয়ের ইশকুলে সবাই অঙ্কে একশয় একশ পেতে শুরু করেছে। সেই নিয়ে হুলুস্থুল, খবরের কাগজে খবর, হাইকোর্টে সওয়াল। আরও এক দুর্নীতির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। ইশকুলের হেডমাস্টারকে তলব করা হল। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, আমাদের কোনো দোষ নেই ধর্মাবতার, আমরা যথাসাধ্য না পড়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ... ...
শুভেন্দু অধিকারী জয় বাংলা স্লোগান শুনে কালকে রাস্তায় একজনকে মারতে গিয়েছিলেন। জয় শ্রীরাম বলে খানিকক্ষণ চেঁচামেচি করেন, তারপর রোহিঙ্গা বলে গাল দেন, এবং সবশেষে নিজের নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে হিন্দিতে আদেশ দিয়ে ওই একলা বাঙালি যুবকটিকে ঠ্যাঙান। এই ভিডিও ভাইরাল (বিশদে জানতে হলে গুরুর ভিডিও চ্যানেল দেখুন দুপুর ১২টায়)। খিল্লি, ছিছিক্কার সবই হচ্ছে, কিন্তু দেখুন, যে যাই বলুন, শুভেন্দুর প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমবেদনা আছে। কেউ কেউ বলবেন, উনি নিজের পার্টির পিছনেই বাঁশ দিয়েছেন। সেটা ঠিকই, কারণ ওঁর দলের নেতারা বাংলায় এসে বাঙালি হবার চেষ্টা করছেন, কেউ জয় মা কালী বলছেন, কেউ তো জয় বাংলাও বলছেন। শুনে যদিও ভারতীয় জেমিনি-সার্কাস পার্টির মতো লাগছে, কিন্তু চেষ্টায় কোনো খামতি নেই। কেন করছেন? না, বাংলায় জয় ... ...
জাত গোখরো চতুর্দিকে। জনৈক অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী গতকাল বললেন শুনলাম, বাঙালির উপর কোথাও কোনো আক্রমণ হচ্ছেনা। রাগ করে লাভ নেই, বলিউডি নায়করা মূলত অশিক্ষিত, এঁদেরকে আক্রমণের লিস্টি, এনআরসির ইতিহাস বলে লাভ নেই। তার আগের দিন শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ভিন-রাজ্যের বাঙালি আতঙ্কিত নাকি মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে। জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে হচ্ছিল, যে, আগে বাঙালি তাড়ানো শুরু হয়েছে, না আগে ভাষণ? কিন্তু সেটা করেও লাভ নেই, কার্যকারণ সম্পর্ক গুলিয়ে না ফেললে হিন্দু বীর হওয়া যায়না। তাছাড়া ওই অর্ধেক-হিন্দি, সবদিক-বাঁচিয়ে-খেলা ভাষণের কারণে যদি কেউ বিপদে পড়েন, তাহলে মানতে হয়, যে রাজ্যে বিপদে পড়ছেন, সে রাজ্যের সরকারই বর্বর। ওটাতে কারো উপর কোনো থ্রেট একেবারেই ছিলনা। সত্যিকারের আপত্তিকর ভাষণ দিয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর উগ্র এবং চরম আপত্তিকর ভাষণে বাংলার অসমীয়ারা আতঙ্কে? এঁদের তবু একটা ... ...
বিশ্বাস না হলেও সত্যি। কাল এক টিভি চ্যানেল মনোজিৎ কাণ্ডে মনোজিতের মোবাইলে রেকর্ড করা অত্যাচারের ভিডিও সরাসরি দেখিয়েছে টিভিতে। যাচাই করার উপায় নেই, অন্তত, সেরকমই দাবী করেছে। "রিয়েল রেপ ভিডিও" বলে খুব নাকি সার্চ হচ্ছিল গুগলে। দর্শকের চাহিদা ছিলই। সেটা আর পানু চ্যানেলের হাতে ছেড়ে দেবে কেন। নিজেরাই দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্বাস না হলেও এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। "ন্যায়"এর ছদ্মবেশে বিকৃত যৌনতায় সুড়সুড়ি, বা সুড়সুড়িটাকেই ন্যায় বলা, বাংলার টিভি তো আজ শুরু করেনি। সন্দেশখালির সময় তারা যৌনদাসীর ফ্যান্টাসি তুলে ধরেছিল হই হই করে। ঠিক যেন আরব শেখ আর তার হারেমের আরব্য রজনী। আরজি করের সময় নিয়ে এসেছিল বহুজনে মিলে লাঞ্ছনার চিত্রকল্প। বেশ কিছু লোক মিলে ছিঁড়ে খাচ্ছে একটা মেয়েকে, চেপে ধরে আছে ... ...
আজ শমীক ভট্টাচার্য দ্বিতীয় ভাগ। এত লোক ছেড়ে এই দিগগজকেই সভাপতি করা হল কেন? কেনই বা এত চোখে লাগার মতো ফোকাস? টিভিতে দেখে মনে হচ্ছিল, বিরোধী দলের রাজ্যসভাপতি না, যেন মহারানী ভিক্টোরিয়া এসেছেন। নেহাৎই একটা দলের একটা রাজ্যের সভাপতি হয়েই এত অভ্যর্থনা আমার জীবদ্দশায় দেখিনি। দিলীপ ঘোষ বা সুকান্ত তো ননই, যা পড়েছি, শেষ পেয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু, কংগ্রেস সভাপতি হয়ে। তিনি অবশ্য সর্বভারতীয় সভাপতি হয়েছিলেন, অভ্যর্থনা মানুষের কাছে পেয়েছিলেন। এখানে মানুষ নেই, তাই মিডিয়া। তো, এইটা কেন? ওঁর ইতিহাসের দৌড় তো আগেরদিনই লিখেছি, মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, আর হিন্দুবীরের দৌড় হোয়াটস্যাপ অবধি। আজ অন্য বক্তব্যগুলো একটু ধরা যাক। আমাকে পছন্দ করুন, না করুন, এটা একটু মন দিয়ে পড়বেন, নইলে রাজনীতিটার তল খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ওঁর ... ...
শমীক ভট্টাচার্য নাকি এখন বাংলার নতুন নায়ক। চ্যানেলে চ্যানেলে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার। একটা সময় এরকম দিচ্ছিলেন ভগবান অভিজিৎ গাঙ্গুলি। তাঁর প্রথমে জজিয়তি গেল, এবার ভগবানের পোস্টও গেল, তাই এবার নতুন মুক্তিসূর্য। যেমন বাগ্মী, তেমন জেন্টলম্যান, যেমন বুদ্ধিজীবী তেমন পণ্ডিত। তা, চ্যানেলরা তাদের কাজ করুক, আমাদের একটু দেখে নিতে হবে, শমীকবাবুর দৌড় কেমন। সভাপতি হবার পরেই তিনি একটা সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে দেখলাম, অনেকক্ষণ ধরে তিনটে পয়েন্ট বললেন। এক এক করে দেখা যাক। ১। শমীকবাবু বললেন, সুভাষ বসুর কথা। ১৯৩৯ সালে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হবার পরেও তাঁকে কমিটি গঠন করতে দেয়নি কংগ্রেস। বরং হটিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস প্রণম্য বিপ্লবীদের মিসগাইডেড প্যাট্রিয়ট বলেছে। কোনো কোনো জায়গায় সন্ত্রাসবাদীও বলেছে। কথাটা ভুল না। কংগ্রেস এইসব পাপকর্ম করেছে। কিন্তু তার ... ...
আপনারা সবাই জানেন, যে, বিশ্বগুরু উনিজির আমলে ভারত স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘরে ঘরে দুধ, বাটিতে বাটিতে মধূ, হাতে হাতে পনেরো লাখ। চোর-ডাকাতের উপদ্রব তো একেবারেই নেই। কারণ, চোরদেরই চৌকিদার করে দেওয়া হয়েছে। বহিঃশত্রুরা খতম, সন্ত্রাসবাদ শেষ, পাকিস্তান আর উঠে দাঁড়াতেই পারছেনা। আক্রমন তো পরের কথা। ভারতে এখন অপার শান্তি, সংখ্যালঘুরা আনন্দে, মেয়েরা সারা রাত নিরাপদে হিরে জহরৎ পরে ঘুরছে। বাঙালিরা দু-হাত তুলে নাচছে। যেকোনো সময় তাদের পিটিয়ে বাংলায় ফেরত পাঠানো হতে পারে, তারপর বাংলাদেশে। কিন্তু তাতে সমস্যা কিছু নেই। বাঙালিরা তো সবাই এমনিই বাংলাদেশী। সবই ভালো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, উনিজির এই বাণী বিশ্বসংসারে কেউ বিশ্বাস করছেনা। এমনকি পরম মিত্র আমেরিকাও না। এই কয়েকদিন আগে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট ... ...