একটি কাঁচের গ্লাস, যার তলদেশেধরা আছে পৃথিবীর সবক'টা সূর্যাস্তের আলোকবিন্দু, মাটিতে পড়ে টুকরো-টুকরো হয়ে গেল। ঘন্টার পর ঘন্টা মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে যেসব বায়োলজিস্টদের ঘাড় টনটন করছে, তারা মুখ তুলে দেখল মরচে পড়া করোগেটেড টিনে নেমে আসছে হাজার বছরের জমানো বৃষ্টি। ... ...
১ নিউ ইয়র্ক শহরে রাত তিনটের সময় ঘুম আসে না;তুমি জেগে থাকো, আর টের পাও তোমার অ্যাপার্টমেন্টের কোনো কোনো জায়গায় বাস্তবতা নষ্ট হয়ে গেছে —রাত তিনটের নিউ ইয়র্ক শহর টেলিপ্যাথির মাধ্যমে তোমাকে সংকেত পাঠাচ্ছে। সমস্ত হাইভোল্টেজ করিডর খুলে যাচ্ছে একে একে, সমস্ত গোলকধাঁধা ও জটিল সুড়ঙ্গের নকশা; একজন জ্যাজশিল্পীর মতো, কিংবা একজন নিঃসঙ্গ কনস্টেবলের মতন তুমি হেঁটে যাও নিউ ইয়র্কের শীতার্ত অ্যাভেনিউগুলি ধরে —সূর্য একটা কাল্পনিক তারা এবং গ্রীষ্ম কেবল সর্বনাম।২ তোমার মনে পড়ে শেষবার নভেম্বরের শহরে মিউজিয়মে গিয়ে আমরা যে নগ্ন মেয়েটির পোর্ট্রেট দেখেছিলাম, তার জঙ্ঘা ও মেরুদন্ড; তার সুগোল পাছার খাঁজ — একটা পারস্যের ফুলদানীর মতো — সেরাতে অনেকক্ষণ গল্প করেছিলাম আমরা, আর জানতে পেরেছিলাম তোমার বিয়েটা ভেঙে যাচ্ছে; একটি বালিয়াড়ি ... ...
১সেন্ট প্যাট্রিক স্টেশনে নেমে আমি কতবার ওভারকোটের পকেটে হাত রেখে হেঁটে গেছি কুইনস পার্কের ভেতর দিয়ে;দেখেছি জমে-যাওয়া ফোয়ারাগুলো, বরফে বিপর্যস্ত পাখিদের শরীর। সিনেপ্লেক্সের সামনে অপ্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যুবক-যুবতীরা, গাড়ীর উইন্ডস্ক্রিন থেকে ঝরে পড়ছে তুষার,এসময় অন্ততঃ দুটো ফটোগ্রাফ আমার স্মৃতিতে ধরা থাকে: দুটোই বোলানিওর —নিকানোর পারার সঙ্গে।শীতের দুর্ঘটনাময় সন্ধ্যেগুলোয় যখন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার লার্নিং মডেল ট্রেন করাতে ব্যস্ত,জানতে ইচ্ছা করে ফটোগ্রাফগুলোর কথা তোমার কখনো মনে পড়েছে কিনা।তোমার অ্যাপার্টমেন্টে কতদিন যাইনি আর দেখিনি তামাটে রঙের বৃষ্টি, যা শুধু আমাদের যন্ত্রণা দেয়;আমাদের মাঝখানে একটি নিশ্চুপ অ্যান্টেনা মুখ তুলেদাঁড়িয়ে থাকে। ২ আমার মনে আছে একদিন আশ্চর্য নিরর্থক গলায় তুমি বলেছিলে: মহাবিশ্ব একটা হলোগ্রাম,এবং সমস্ত রাত আমরা তর্ক করেছিলাম কৃষ্ণগহ্বর আর তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র নিয়ে;এখন আমার শহর ... ...
১ক্রান্তীয় সমুদ্রবীচে দাঁড়িয়ে দেখি ভাঙাদরজার পাল্লায় হাত-রেখেসাদা বিধবাদের কঙ্কাল থেকে ঝরা চুনআর ফসফেট-গুঁড়ো —চাঁদ ক্রমে অজানা উড়ন্ত বস্তুর মতোবিবর্ণ নষ্ট হয়ে গ্যালো।আইসক্রিম স্টলগুলি ছাতা মেলেঅপরিবর্তিতভাবেচলে গেল হাইওয়ের দিকে;কার্তেজীয় তল ছেড়ে আভাঁগার্দ লেখকেরাক্রমশ পরিদৃশ্যমান।সবুজ সাইনবোর্ডে লেখা: সাবধান!ভিয়েনার পুরোনো গলিতেঅমুক মেটামডার্নিস্ট এখন নিকেলের ঘড়িবেচে খায়। ২অন্ধকার হলওয়ের মাথায় দাঁড়িয়ে দেখিদৈর্ঘ্যের শেষপ্রান্তেএকটা অ্যালুমিনিয়াম দরজা।সামান্য আলো ছিটকে আসছেদৃশ্য-বর্ণালীর ভেতর,সাটিনের পর্দাগুলি মৃদু হাওয়ায় সঞ্চারণশীল —মৃত্যু সম্পর্কে এই পর্যন্ত: জেগে উঠি বেডে;মনে পড়েনা কেন হাসপাতালে এসেছি,বিশেষত মধ্যরাতেযখন ফোঁটা-ফোঁটা স্যালাইনসময়ের হিসেব রাখছেআর ব্যাকইয়ার্ডে তিনটে অ্যাম্বুলেন্সমুখোমুখি স্থির।আলো নেভানোর পরেকোনো নন-ইউক্লিডিয়ান স্পেসেঢুকে যাচ্ছে স্বপ্নেরা: প্রেইরীর কুকুর,নদীতীরে তাঁবু আর ছাইরঙা নুড়ি;দূরে এক মহিলা জিওলজিস্ট হাঁটুগেড়েপরীক্ষা করছেন পাথরের রীতি। ৩বন্ধ কারখানার ভেতর দাঁড়িয়ে ... ...
ইস্পাতের মিনার থেকে প্রতিফলিত আলো / নষ্ট করে দিচ্ছে চোখের রেটিনা, / সাতজন অন্ধ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মক্কা চলেছে; ... ...
১)রোদ প্রায় পড়ে এসেছে। সেপ্টেম্বর, ১৯০৯; এক ভ্যাপসা ক্লান্তিকর মরা বিকেলে বুড়ি মিস রোজা কোল্ডফিল্ড বসে আছেন সেই ঘরটাতে যেটাকে তাঁর বাবা 'অফিস' বলতেন। ঘরটায় বেশি আলো ঢোকেনা, হাওয়া চলাচল করে না; তেতাল্লিশটি গ্রীষ্ম ধরে জানলার পর্দাগুলো টানা রয়েছে, কেননা যখন তিনি ছোট ছিলেন, কেউ, আমরা জানিনা কে, তাঁকে বলেছিল আলো আর বাতাস ঘরকে আরো গরম করে তোলে, এবং ছায়া সবসময় শীতলতর হয়। অন্ধকার শীতল ছায়া, অতীতের ছায়া এই সাদার্ন গথিকে বারবার ফিরে আসবে, কারণ যেখানে মিস কোল্ডফিল্ড বসে আছেন, সেই জায়গাটা আসলে একটা ধ্বংসস্তূপ — জেফারসন, মিসিসিপি; সিভিল ওয়ার-পরবর্তী সাউথ। তাঁর সামনে বসে রয়েছে একটি বছর আঠেরোর ছেলে, কোয়েন্টিন। তাকে মিস ... ...
১হাইওয়ের ওপর একটা ডাইনো-সাদা এরোপ্লেনের খোল —ধোঁয়া, আর আগুনে ঢাকা ব্যাকগ্রাউন্ড আকাশ; নিউ ইয়ার্স ইভ।পাশের ঘরে টেলিভিশন চলছে।মেটাল ব্যান্ড: আটটা তুলোর কুকুর বাচ্চা,নাথান-ফিলিপস স্কোয়ারে মানুষ ও মানুষীদের ভিড়;উড়ন্ত ড্রোনগুলি যেন ঝুঁকে নামবে অবতলে। ফ্লাইং সসারটি শুধু ঘুরছিলো, ঘুরছিলো —ফ্লুরোসেন্ট আলো জমে মরা স্থির চোখ তার;মাইক্রোওয়েভের গোঁ-গোঁ আওয়াজ।সাদা দেয়ালগুলোর ভেতর সে দাঁড়িয়েছিল, একা।এও হয় যে, ফ্রোজেন ফুড ক্রমে উত্তাপে প্রস্তুত; কাউন্টডাউনফুরিয়ে আসছিলো কাঁটায় কাঁটায় — চার, তিন, দুই ইত্যাদি। ২ বীভৎস জেটপ্লেন নেমে আসছেড্রয়িংরুম ভেঙে; সিলিঙে বিদ্যুৎ-আলো পুড়ে যাচ্ছে এখন,হাইওয়ে ৭৮ জুড়ে কারচেজ সিকোয়েন্স —মেয়েটা প্যান্টি খুলে রাখল বিছানার ওপর।নীঈঈ ঈ ঈ ঈ ঈ শব্দআর ফোঁটা খসে টপটপ আওয়াজ;দূরের দেশে হোটেল থেকে নিখোঁজ হয়ে গ্যাছে যেসব ... ...