ত্রিনিদাদ নিবাসী দ্বিতীয় প্রজন্মের ভারতীয় বিদ্যাধর সূরজপ্রসাদ নইপল ছোটবেলা থেকেই হিন্দু আচার, ভারত ইত্যাদি শুনে শুনে চাক্ষুষ করতে আগ্রহী। ভারতে তিনবার ঘুরতে এসেছিলেন - ১৯৬২, ১৯৭৫ এবং ১৯৮৯ সালে। অর্থাৎ তিন দশকে ভারতের পরিবর্তন তার চোখে ধরা পড়ে। এই বইগুলি ভ্রমণকাহিনী কম, ভারতের সমাজ, রাজনীতি ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ে ভাষ্য বেশি বলাই যুক্তিসংগত হবে। তৃতীয় বইটিকে বিশেষ করে বিবিধ চরিত্রের গ্যালারি এবং তাদের দীর্ঘ ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক ইতিহাসের সাক্ষ্য বলে মনে হয়।পিতামহ ভারতের উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলের যে গোরখপুর গ্রামে থাকতেন, সেখানে সবাই ছিল দুবে অথবা তিওয়ারি। সবাই ব্রাহ্মণ এবং পরস্পরের লতাপাতায় আত্মীয়। অল্প বয়সে নৈপলের পিতামহ সেই গ্রাম ছেড়ে বেনারসে গেছিলেন পড়াশুনো করতে। গরীব সেই গ্রামে হয়ত একবার দুর্ভিক্ষ হল। এক আড়কাঠি তাকে বোঝায় বহুদূরে ত্রিনিদাদ নামের দেশে শ্রমিকরা আছে, কাজ করছে। তারা পন্ডিত এবং পুরোহিত চায়। অন্যসময় হলে তাকে হয়ত ঢিলিয়ে মেরে ফেলা হত। দুর্ভিক্ষের সময় বলে পাঁচ বছরের জন্য তিনি চুক্তিতে আবদ্ধ হলেন এবং ত্রিনিদাদ পৌঁছোনর পর যথারীতি সেখানে টোল খোলেননি, চিনির কারখানায় কাজ করতেন। ঘর, খাবার এবং মজুরি পেতেন। রাতের বেলা যজমানি। বেনারস ফেরত পুরোহিতের চাহিদা ছিল ত্রিনিদাদে। কারখানার সাহেব একদিন তাকে বললেন - 'তুমি পন্ডিত। আমাকে সাহায্য করতে পারবে? আমি এক ছেলে চাই।" অতঃপর নৈপলের পিতামহ সাহেবের স্ত্রীকে এক ক্ষেত্ৰজ পুত্র উপহার দিলেন। খুশি হয়ে সাহেব সমস্ত আখ গাছ শুদ্ধ তিরিশ বিঘা জমি দিয়ে দিলেন পিতামহকে।
প্রথম বইতে নইপলকে একজন ভয়ার্ত পর্যটক বলে মনে হয় -
I had seen photographs of the Punjab massacres of 1947 and of the Great Calcutta Killing; I had heard of trains – those Indian trains! – ferrying dead bodies across the border; I had seen the burial mounds beside the Punjab roads. Yet until now I had never thought of India as a land of violence.
এছাড়াও নইপলকে খুব বিরক্ত বলে মনে হয়, কারণ তিনি নানাবিধ হিসেব মেলাতে পারছেন না। তার ভারতীয় ইংরেজিকে একরকম অক্ষম নকল বলে মনে হতে থাকে। এংলো ক্লাব , সাহেব চাপরাশি ইত্যাদি নিয়ে বহু কৃত্রিমতা। ভারতে বক্সওয়ালা [সমাজের ওপর তলার মানুষ যারা সরকারি অথবা বৃটিশ কোম্পানিতে কর্মচারী ছিলেন] দের জীবন যেন অতিরঞ্জিত একরকমের বৃটিশ রূপকথা যা ইংল্যান্ড ধ্বংস হয়ে গেলেও বেঁচে থাকবে।
To be English in India was to be larger than life.
These boxwallahs represented in their own eyes a synthesis of Indian and European culture. They were admired and envied by Indians outside the group because their boxwallah jobs were secure, in addition to being, with the British connection, a badge of breeding.
England of the Raj. This still lived. It lived in the division of country towns into ‘cantonments’, ‘civil lines’ and bazaars. It lived in army officers’ messes
এছাড়াও
Indians defecate everywhere. for it is said that the peasant, Muslim or Hindu, suffers from claustrophobia if he has to use an enclosed latrine.
ফলে, নইপলের মনে একরকম বিচ্ছিন্নতা জন্মায় তার শিকড় বলে যাকে ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছেন সেই দেশের প্রতি।
Colonial India I could not link with colonial Trinidad. Trinidad was a British colony; but every child knew that we were only a dot on the map of the world, and it was therefore important to be British: that at least anchored us within a wider system. It was a system which we did not feel to be oppressive; and though British, in institutions and education as well as in political fact, we were in the New World, our population was greatly mixed, English people were few and kept themselves to themselves, and England was as a result only one of the countries of which we were aware.
I was not English or Indian; I was denied the victories of both.
বোম্বাই বন্দরে জাহাজ থেকে নামার পর ট্রেন ধরে দিল্লি, সেখান থেকে পাঠানকোট। সেখান থেকে শ্রীনগর। রাস্তায় অবন্তীপুরের ধ্বংসাবশেষ। হরি পর্বতের ওপর আকবরের বানানো কেল্লা। অন্যদিকে শঙ্করাচার্য পাহাড়। হজরতবাল মসজিদ। বাটের মতো বহু কাশ্মীরি পদবী এখনো হিন্দুদের, অথচ হিন্দু হবার কোনো স্মৃতি তাদের মনে নেই। পাহাড়ে থাকে গুহা মানুষরা, যাদের দেখে নইপলের মধ্য এশিয়ার ঘোড়সওয়ার দের উত্তরসূরী মনে হয়। সমতলের কাশ্মীরিরা তাদের ঘৃণা করলেও গরমকালে খচ্চর নিয়ে তারা সমতলে নেমে আসে। উপত্যকায় সবথেকে ভারত বিরোধী হল পাঞ্জাবি মুসলিমরা। U.N. ছাপ মারা জীপ আর স্টেশন ওয়াগনেরা যুদ্ধবিরতি সীমা কেউ লঙ্ঘন করছে কিনা সেটা নজরে রাখে। রেডিও পাকিস্তানের শব্দ ভেসে আসে বেতারে। নইপল ঘুরে বেড়াতে থাকেন পান্ড্র্রেথান মন্দির এবং পহেলগামের সূর্যমন্দিরে।
একসময় কাশ্মীরের মহারাজ করন সিং বললেন অমরনাথ যাত্রায় যেতে। যাত্রাপথে একটি বিদেশী মেয়ের সঙ্গে আলাপ হয় যে রাজাগোপালাচারীর লেখা মহাভারতের ওপর একটি বই পড়তে ব্যস্ত অথচ পরে এক কাশ্মীরি মুসলিমকে বিয়ে করে ফেলে।
পশ্চিম ইন্ডিজের ভূগোল যথেষ্ট পুরোনো হলেও বৃটিশ সাম্রাজ্য 'নতুন'। ত্রিনিদাদ ছিল সমুদ্র সাম্রাজ্যের অংশ আর এদিকে ওদিকে একটা বন্দর একটা বাজার ছাড়া কিছু স্থাপত্য ছিল না। ১৮০০ জনসংখ্যার ত্রিনিদাদে কোনো 'ইতিহাস' ছিল না। উল্টোদিকে ভারতের ক্ষেত্রে -
It is like reading of a land periodically devastated by hordes of lemmings or locusts; it is like turning from the history of a coral reef, in which every act and every death is a foundation, to the depressing chronicle of a succession of castles built on the waste sand of the sea-shore.
This is Woodruff on the difference between European history and Indian history.
It is a history whose only lesson is that life goes on. There is only a series of beginnings, no final creation. The sandcastle is flattened by the tide and leaves no trace, and India is above all the land of ruins.
নইপলের চোখে ভারত একটি অঞ্চল যেখানে বারবার লুঠ করা যায়, করা হয়েছে। যেখানে নিজের বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে বিজেতারা এক একটি স্মারক বানিয়েছে পাঁচশো বছর ধরে , আবার কেউ এসে তা ভেঙে দিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে বিষয়টি ব্যক্তিগত ইতিহাস এবং সামগ্রিক হিসেবে কোথাও পৌঁছতে পারেনি। এখনো ভারত নিজের ইতিহাসকে ইউরোপের চোখ দিয়ে দেখছে।
In any clash between post-Renaissance Europe and India, India was bound to lose.*The stupefaction of people is one of our mysteries. At school in Trinidad we were taught that the aboriginal inhabitants of the West Indies ‘sickened and died’ when the Spaniards came.
অথচ একই সঙ্গে নইপল স্বীকার করতে বাধ্য হন ভারত পেরু বা মেক্সিকোর মত শুকিয়ে যায়নি। হিন্দু ভারত বিজেতাদের নিজেদের অংশ করে নিতে পেরেছে। প্রথমদিকে বৃটিশরা ভারতে স্বাগত ছিল। মুঘলদের মত বৃটিশরা বলেনি যে পৃথিবীতে স্বর্গ থাকলে তা এখানেই। ভারত শাসন করার সময় তারা এই চিন্তাকেই অবজ্ঞা করেছে এবং ইংল্যান্ডকে প্রোজেক্ট করেছে তাই ভারতবাসীরা বৃটিশদের অনুকরণে তৈরী একটি জাতীয়তাবাদকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।
In the acquiring of an identity in their own land they became displaced. It is part of the mimicry of the West, the Indian self-violation.
*If I had read Camus’s The Rebel before writing this chapter, I might have used his terminology. Where Camus might have said ‘capable of rebellion’ I have said ‘positive’ and ‘capable of self-assessment’; and it is interesting that Camus gives, as examples of people incapable of rebellion, the Hindus and the Incas.
এই বইতে নইপল কিছু ভারতীয় ইংরেজি লেখক যেমন আর কে নারায়াননের প্রশংসা করেছেন -
He seems forever headed for that aimlessness of Indian fiction – which comes from a profound doubt about the purpose and value of fiction – but he is forever rescued by his honesty, his sense of humour and above all by his attitude of total acceptance. He operates from deep within his society. Some years ago he told me in London that, whatever happened, India would go on.
নইপলের ভারত ভ্রমণ কালেই এক সপ্তাহের জন্য চীন ভারত আক্রমণ করে। শিকড়হীন অবস্থায় ঝুলে থাকা থেকে নইপল কিছুটা মুক্তি পান যখন তিনি তার পূর্বপুরুষের গ্রামে ফিরে যান এবং সবাই তাকে চিনতে পারে।
Customs are to be maintained because they are felt to be ancient. This is continuity enough; it does not need to be supported by a cultivation of the past, and the old, however hallowed, be it a Gupta image or a string bed, is to be used until it can be used no more.
India had not worked its magic on me. It remained the land of my childhood, an area of darkness; like the Himalayan passes, it was closing up again, as fast as I withdrew from it, into a land of myth; it seemed to exist in just the timelessness which I had imagined as a child, into which, for all that I walked on Indian earth, I knew I could not penetrate.
India is for me a difficult country. It isn’t my home and cannot be my home; and yet I cannot reject it or be indifferent to it; I cannot travel only for the sights. I am at once too close and too far.
এমার্জেন্সির সময় নইপল পুনরায় ভারতে আসেন কিছুদিনের জন্য, এই দ্বিতীয় বইতে জোর দিয়েছেন গান্ধী পরবর্তী ভারতে নানারকম ক্ষত সারিয়ে ওঠার চেষ্টার ওপর।
এই সফরে তুঙ্গভদ্রা তীরে বিজয়নগরের মালেশ্বরম মন্দির দেখে নইপলের মনে পড়ে বিজয়নগরের ক্রীতদাস বাজার ছিল, দেবদাসী ছিল, সতীপ্রথা প্রচলিত ছিল।
বইতে এক ভারতীয় মেয়ের কথা আছে যে বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। অথচ সে ভারতকে ছেড়ে যেতে পারে না কারণ ওই নতুন জায়গায় তার নিজস্ব কোনো পরিচয় নেই। সে এক শূন্যতার মধ্যে বসবাস করে। বেঁচে থাকতে গেলে ভারত এবং নিজের পরিবারের আশ্বাস তার প্রয়োজন তাই সে যখন ইচ্ছে দেশে চলে আসে।
Like a sleepwalker, she moved without disturbance between her two opposed worlds.
এমার্জেন্সিতে একরকম 'ক্লিন আপ' হয়েছিল। জয়পুরের প্রাক্তন মহারানীকে কর ফাঁকি দেবার অভিযোগে বিনা বিচারে জেলে ভরা হয়েছিল। গ্বলিয়রের রাজবাড়ি ঢুঁড়ে ফেলা হচ্ছিল গুপ্তধনের খোঁজে। বোম্বেতে সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকের মাথা, ব্যবসায়দের ফ্ল্যাট তল্লাশি হচ্ছিল কালো টাকার খোঁজে। ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধী দারিদ্রকে রাজনৈতিক বিষয় করে তুলেছিলেন এবং ভোটের সময় আওয়াজ তুলেছিলেন - গরিবি হটাও। অথচ অত্যাচার , দারিদ্রের মতই চিরকাল ভারতে ছিল। এই এমার্জেন্সির সময় যেন নতুন করে সবাই আবিষ্কার করল। উল্টোদিকে বিরোধীরা আওয়াজ তুলেছিল - ইন্দিরা হটাও। জোরালো বিরোধী দল হিসেবে গোমাতার পুজো করে ধীরে ধীরে জন সংঘের উত্থান হচ্ছিল। প্রধান রাজনীতিবিদরা সকলেই নিজেদের মত করে গান্ধীবাদী এবং সকলেরই ভিন্ন ভিন্ন রামরাজ্যের ধারণা আছে।
বিজয় তেন্ডুলকরের 'সখারাম বিন্দে' নাটক ১৯৭২ সালে সেন্সর করা হয়। কিছুদিন আগে বিজয় নেহেরু ফেলোশিপ পেয়েছেন যাতে তিনি সারা দেশ ঘুরে হিংসার ওপর কিছু লিখতে পারেন। তেলেঙ্গানা, বিহার এবং পশ্চিম বঙ্গ ঘুরে সেই বই লিখছেন নকশাল আন্দোলনের ওপর। তেন্ডুলকরের পশ্চিমবঙ্গের নকশাল নিয়ে 'কালী কাল্ট' তত্ত্ব - যে আসলে ওখানকার নকশালরা মাওকে শুধু বলি দেবার ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করেছিল।
even for a writer like Tendulkar, the discovery of India could be like the discovery of a foreign country.
বোম্বেতে এক লক্ষ লোক ফুটপাথে ঘুমোয়। শলে এক একখানা ঘরে আটজন করে ঘুমোয়। এমনকি বিছানা শিফটেও ভাড়া পাওয়া যায়। শিব সেনা এইসব জায়গায় নিজেদের সংগঠনকে জোরালো করে তুলছে।
Caste and clan are more than brotherhoods; they define the individual completely. The individual is never on his own; he is always fundamentally a member of his group, with a complex apparatus of rules, rituals, taboos.
একই রকম ভাবে নইপল ইউ আর অনন্তমূর্তির 'সংস্কার' বইটি নিয়েও কথা বলেছেন। যে বইয়ে একজন ব্রাহ্মণ তার পরিচয় হারিয়ে ফেলে।
India blindly swallows its past. To understand that past, it has had to borrow alien academic disciplines;
গান্ধীজির এক প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন যমুনালাল বাজাজ। ১৯৪৮ র পর বাজাজের স্ত্রী বিনোবা ভাভের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। বাকিরাও তাকে গান্ধীজির উত্তরসূরি মনে করতে শুরু করে।
Gandhi was made by London, the study of the law, the twenty years in South Africa, Tolstoy, Ruskin, the Gita. Bhave was made only by Gandhi’s ashrams and India.
প্রথম দুই বইতে নইপলকে খুবই বিভ্রান্ত মনে হয়, ভারত যেন একটি ধাঁধা যার উত্তর তিনি একজন বহিরাগত হিসেবে কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেন না।
It seems to be always there in India: magic, the past, the death of the intellect, spirituality annulling the civilization out of which it issues, India swallowing its own tail.
পঁচাত্তরের এমার্জেন্সির সময় বোম্বের মত শহরে মাফিয়ারা চোরাচালান ছেড়ে বাড়ি বানানো শুরু করে। তারা মানুষকে 'উৎসাহ' দিত, যাতে তারা জমি ছেড়ে চলে যায় এবং সেই জমিতে বাড়ি তোলা যায়। দালাল স্ট্রিটের জৈন ট্রেডার নইপলকে ভারতে ব্যবসার হাল হকিকত বোঝান। তার কথায় অম্বানী প্রথম ধরে ফেলেন পলিয়েস্টার ভারতের জন্য আদর্শ, কারণ মানুষ বেশি জামাকাপড় কিনতে পারে না।
This man Ambani goes one step ahead. He makes and breaks policies for himself. Now he sees a demand for polyester. So he gets into polyester, and he makes sure that nobody else is involved in it. After this he takes the next step – making the raw material for polyester. Then he wants other people to make polyester so they can use his raw material.
নইপল ১৯৮৪ দাঙ্গা পরবর্তী ধারাভির বসতির মত বোম্বাইয়ের অলিগলি ঘুরে বেড়ান। কথা বলেন শিবসেনা নেতাদের সঙ্গে, বোম্বের ছবিতে গল্প লিখিয়ের কাজ করা বাঙালির সঙ্গে। মুসলমান ডন যে ভবানী শংকরের পুজো দেয়। শিবসেনা নেতার ঘরে দিনেশ্বরী, তুকারাম, একনাথের মত ধ্রুপদী মারাঠা শিক্ষকদের বই রাখা থাকে।
When there are riots, you don’t know the meaning of sleep. You can’t sleep. It’s a big sin if someone of your faith is assaulted and you do nothing about it.’
এত সব ঘোরাঘুরি এবং কথাবার্তার ফলে -
My vision of Bombay began to change: the ‘poor’, the people down there, were acquiring individuality and had begun to stake their own claim to the city; piety (or rage at their condition, or disgust) was no longer a sufficient response.
নৈপলের সঙ্গে 'দলিত প্যান্থার' দলের নেতা এবং কবি নামদেও ধসালের পরিচয় হয়। পুনের কাছে এক গ্রামে নামদেও ধসালের বেড়ে ওঠা, যেখানে কড়া ছোঁয়াছুঁয়ি ছিল এবং উঁচু জাতের সঙ্গে জল ব্যবহার নিয়ে মারামারি।
বোম্বে থেকে নইপল চলে যান গোয়াতে। ইউরোপ থেকে ছমাসের জলপথের দূরত্ত্বে পর্তুগিজরা গোয়াকে স্প্যানিশদের মেক্সিকোর মত নতুন বিশ্বের শূন্যতা দিয়ে ভরতে চেয়েছিল, পারেনি। পর্তুগিজ ভাষার 'লুসিয়াদ' মহাকাব্যের রচয়িতা কামিওনসের (১৫৭২ ) মূর্তি ছিল একদা পুরোনো গোয়ার কেন্দ্রে। এখন সেখানে গান্ধীজির মূর্তি।
গোয়ার পর নইপলের ব্যাঙ্গালোর এবং মাদ্রাজ যাত্রা। রাস্তায় দেখেন আয়াপ্পা তীর্থে [সবরীমালা] চলেছে শুধু কালো পোশাক পরিহিত পুরুষেরা। আয়াপ্পার যারা তীর্থ করতে যান, তাদের আয়াপ্পার বন্ধু বাবরকেও সম্মান জানাতে হয়।
কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুতে গিয়ে নইপল দক্ষিণী ব্রাহ্মণ দের জাত রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন। কর্ণাটকের এক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়।
Power came from the people. The people were poor; but the power they gave was intoxicating. As high as a man could be taken up, so low, when he lost power, he could be cast down.
মাদ্রাজের ব্রাহ্মণ এলাকা মাইলাপোর, ত্রিপলিকেন এবং সেখানকার হাজার বছর পুরোনো পার্থসারথি মন্দির। নইপল দক্ষিণ ভারতে দুরকমের হোটেল দেখতে পান - ব্রাহ্মণ হোটেল এবং মিলিটারি হোটেল [যেখানে আমিষ পাওয়া যায়]
The average aspiration of the Indian is to grow under a shadow – and this is all right as long as someone else throws the shadow.
শিকড় থেকে বিচ্যুত হলে এক একটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী কিভাবে ধ্বংস হতে পারে, সে বিষয়ে নইপলের বক্তব্য -
first the language going, then the reverence for the rituals and the need for them (the rituals going on long after they had ceased to be understood), leaving only a group sense, a knowledge of family and clan, and an idea of India in the background, an idea of India quite different (more historical, more political) from the India that had appeared to come with one’s ancestors.
এছাড়াও নইপল দ্রাবিড় আন্দোলনের নেতা পেরিয়ার সম্পর্কে জানতে পারেন। নাস্তিক এবং যুক্তিবাদী পেরিয়ার হিন্দু দেবতাদের নিয়ে মজা করতেন। জাতপাত মানতেন না, ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং সংষ্কৃত ভাষা বর্জন, জাত এবং উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন, বর্তমান ডি এম কে যে আন্দোলন থেকে উদ্ভূত। হিন্দুদের পুড়িয়ে ফেলা হয় কিন্তু মৃত্যুর পর তার কথামত পেরিয়ার থিরালে তাকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। তার ঘরের ছোট আলমারির ভেতরে নই পল দেখতে পান গৌতম বুদ্ধ এবং লেনিনের ছোট মূর্তি। ভারতীয় সংবিধান পোড়ানোর অভিযোগে পেরিয়ারের ১৯৫৭ সালে ছ মাস জেল হয়েছিল।
এরপর নইপল যান কলকাতায় -
The British had built Calcutta and given it their mark. And – though the circumstances were fortuitous – when the British ceased to rule, the city began to die.
চিদানন্দ দাশগুপ্তর সঙ্গে নইপলের পরিচয় হয় [একদা বক্সওয়ালা ছিলেন]।
Chidananda heard Tagore, nearly eighty, deliver a talk in the Shantiniketan temple on ‘Crisis in Civilization’. In that talk – a famous talk, published a few months after Chidananda heard it – Tagore said he had always believed that ‘the springs of civilization’ would come out of ‘the heart of Europe’. Now, with the war and the coming cataclysm, he could no longer have that faith.
The calamity Tagore hadn’t foreseen was the calamity that was to come to Calcutta.
Communism in Bengal had a long history. It was another colonial import, one of the things that had come after the New Learning of the 19th century, and the mixed culture
প্রাক্তন নকশাল, বর্তমানে এক কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের সঙ্গে নইপলের বিশদে আলোচনা হয়। ‘রেড গার্ড একশন’ অনুযায়ী যে গ্রামে গেছিল কিন্তু খারাপ জলের আমিবায়োসিস আর স্ক্যাবিসের ভয়ে শহরে ফের চলে আসে। একসময় পার্টি খতমের লাইন নেয়। ধরা পড়ার পর জেল থেকে পিটিশনে সই করে লন্ডনে তার রিসার্চ করতে চলে যাওয়া, পুলিশ সঙ্গে করে প্লেনে তুলে দিতে গেছিল।
By 1973 the Marxist-Leninist camp was divided into 20 factions. police and their gangs had killed several thousands.
The unions represent what ultimately the true Bengali is like: he is indolent, doesn’t want to work, but he wants something for nothing, and he must protect his dignity at all costs. He will publicly despise the Marwari trader, but he wouldn’t be able to do the same job himself.
The only section of people here who seem to be thriving in Calcutta are the Marwaris. They thrive by being middlemen, buying and selling.
Perhaps when a city dies the ghost of its old economic life lingers on.
লখনৌর এক মুসলিম যে দেশভাগের সময় পাকিস্তানে চলে গেছিল আবার ফেরত চলে আসে কারণ -
It was just the wretched laws, hanging like a cloud over one: the call to prayers, the moulvi coming to my friend’s house and asking why he hadn’t seen us at the mosque recently. The thought police. Islam on wheels.
রাসেলের কাইজারবাগ লুঠ , বিদ্রোহের সময়ের রেসিডেন্সি। লখনৌ থেকে নইপলের আবার দিল্লি যাত্রা, ‘ওমেন্স এরা’ কাগজের সম্পাদকের সঙ্গে কথোপকথন ইত্যাদি।
সাম্প্রতিক ভিন্দ্রেনওয়ালে এবং অপারেশন ব্লু ষ্টার নিয়ে নইপলের অনুসন্ধান করার জন্য গুরতেজের সঙ্গে কথাবার্তা। একবার জেলে গরিব কয়েদির মৃত্যু হয়েছিল পুলিশি অত্যাচারে, কিন্তু গুরতেজকে ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি, উল্টে যে খুনি তার পদোন্নতি হয়েছিল। অথবা একবার না খেতে পেয়ে মারা গেছিল একটি পরিবার, কিন্তু ডি এম এবং কালেক্টর গুরতেজকে বলেছিলেন সেটা লিখলে হইচই পড়ে যাবে অতএব অন্য কিছু লিখতে হবে।কপূর সিংয়ের অনুকরণে গুরতেজ সিং একসময় আই এ এস থেকে পদত্যাগ করেন।
পাঞ্জাবের হিন্দু ছাপাখানা নিয়ন্ত্রণ করত আর্য সমাজ, যারা প্রতিনিয়ত শিখ বিরোধী লেখাপত্র ছাপত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শাবেগ সিং ভিন্দ্রেনওয়ালের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।
এতকিছুর পর নইপল আবার শ্রীনগরে ফিরে যান সাতাশ বছর বাদে, আজিজের সঙ্গে দেখা করেন।
In 27 years I had succeeded in making a kind of return journey, shedding my Indian nerves, abolishing the darkness that separated me from my ancestral past.
But there was in India now what didn’t exist 200 years before: a central will, a central intellect, a national idea. The Indian Union was greater than the sum of its parts; and many of these movements of excess strengthened the Indian state, defining it as the source of law and civility and reasonableness.
The mutinies were not to be wished away. They were part of the beginning of a new way for many millions, part of India’s growth, part of its restoration.
কিন্তু শেষপর্যন্ত নইপল নিজের পরিচিতিকে আর খুঁজে পেলেন কোথায়? একজন বহিরাগত হিসেবেই থেকে গেলেন কি? নইপল নিজেই বলেছেন ভাষা ভারতীয় গোষ্ঠীগুলির প্রধান জোরের জায়গা, কিন্তু সব জায়গাতেই বাধ্য হয়ে দোভাষীর সাহায্য নিতে হয়েছে তাকে। এই তিন বইতে আসলে লুকিয়ে আছে বহু অনাবাসী ভারতীয় ডায়াস্পোরার প্রথম, দ্বিতীয় প্রজন্মের ভারত সম্পর্কে, নিজেদের শিকড় সম্পর্কিত ধোঁয়াশা। নইপল নিজের মত করে সেই ধোঁয়াশা কাটাতে চেষ্টা করেছেন , অথচ ইংল্যান্ডের একদা পৃথিবীব্যাপী সাম্রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে পাশ্চাত্যের চশমা দিয়েই ভারতকে দেখেছেন। তৃতীয় বইতে নইপলের ভারত সম্পর্কিত সুর যেন অনেকখানি নরম, যেন নইপল এতদিনে বুঝে গেছেন তার সঙ্গে এই দেশের নাম জুড়ে যাওয়াই ভবিতব্য। এবং এই ভবিতব্যকে তিনি মেনে নিয়েছেন। এই আইডেন্টিটি রাজনীতির যুগে, ঋষি সুনকের মত 'ভারতীয় বংশোদ্ভূত' রা যখন ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন, তখন এই বইগুলি নতুন ভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।
[শেষ]
[লেখার শিরোনাম একটি প্রকাশিত নিবন্ধের বইয়ের অনুকরণে দেওয়া]
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।