এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • সাভারকর চর্চা, সবে মিলেঃ ৫ (বিতর্কিত মাফিনামা ইত্যাদি)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৩ অক্টোবর ২০২২ | ১০৯৪ বার পঠিত
  • সাভারকর চর্চা ৫ - বিতর্কিত মাফিনামা, মুক্তি ইত্যাদি

    [ আমরা এই পর্বে কিছু বিতর্কিত প্রশ্ন তথ্যের আলোকে যাচাই করে দেখব। যেমন, সাভারকর আদৌ কোন মাফিনামা লিখেছিলেন কিনা, লিখে থাকলে কবে এবং কতবার, আর কে কে এমন মাফিনামা বা ক্লেমেন্সি পিটিশন লিখেছিলেন এবং তাতে কোন ফল হয়েছিলা কিনা। আর দেখব এ বিষয়ে সাভারকর নিজে কী বলেছেন। ]

    সাভারকর এবং ক্লেমেন্সি পিটিশন

    প্রথমেই দুটো জিনিস নিয়ে একটু বলি।

    এক, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় বিভিন্ন শর্তে সাইন করা — যেমন, এতদিন থানায় হাজিরা দিতে হবে, বা এতদিন কোন রাজনৈতিক কাজকর্ম /বক্তৃতা/ উত্তেজক প্রবন্ধ লেখা চলবেনা — এসব মাফিনামা নয়। জামিনে ছাড়া পাওয়ার সময়ও এ’ধরণের শর্ত মেনে নিতে হয়, বর্তমান ভারতেও।

    যাঁরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে ছাড়া পেয়েছেন তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু যাঁরা আদালতের বিচারে দোষী প্রমাণিত হয়ে সাজা হিসেবে জেলে রয়েছেন্‌ তাঁদের শাস্তি কমানো বা মুক্তিতে বিশেষ শর্ত থাকবেই।

    আমরা এখানে ক্লেমেন্সি পিটিশন বলতে সেই সব আবেদনের কথা বলব যা কোন রাজবন্দী শাস্তি পাওয়ার পর জেল থেকে ক্ষমা চেয়ে অনুগ্রহ হিসেবে মুক্তির জন্যে লিখেছেন।

    দুই, আমার বক্তব্য -- সাভারকরকে ভীরু কাপুরুষ বলা মানে গোড়ায় গণ্ডগোল।

    যিনি তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু লন্ডনে বসে তাদের বিরুদ্ধে এজিটেশন, প্যাম্ফলেট লেখা এবং সশস্ত্র আক্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন, তিনি আর যাই হোন, ভীরু নন কিছুতেই। ব্যাপারটা অত সরল নয়।

    তার মানে ওঁর আপাত আলাদা আচরণের মানে বুঝতে আমাদের বুঝতে হবে তার মানসিক গঠন এবং বিচারধারা বা ইডিওলজিকে।

    এবার এক এক করে বিতর্কিত ইস্যুগুলো দেখা যাক।

    আদৌ মাফিনামা লিখেছিলেন কি?

    এই প্রশ্ন উঠছে কেন? কারণ কোন ইতিহাসপুরুষকে ভক্তের দৃষ্টিতে অতিমানব বানানোর প্রচেষ্টা হলে বেশ কিছু মিথ গড়ে ওঠে।

    যেমন, মাতৃভক্ত বিদ্যাসাগর মাকে দেয়া কথা রাখতে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্দ তরঙ্গসংকুল দামোদর সাঁতরাইয়া পার হইয়া মধ্য রাত্রে বীরসিংহ গ্রামে পৌঁছিয়াছিলেন। অথবা আমাদের নেতাজি জার্মানিতে বিপ্লব করতে গিয়েছিলেন। কাজেই উনি ওখানে কোন জার্মান মহিলার প্রেমে পড়তে পারেন না, বিয়ে তো পরের কথা।

    আজকে আমরা জানি যে দুটোই ভুল তথ্য।

    আর এটাও জানি যে ওগুলো মিথ্যে হওয়ায় ওঁদের মাহাত্ম্য এবং ভাবমূর্তি কিছুমাত্র ক্ষুণ্ণ হয় নি। বিপ্লবী মানেই আনন্দমঠের সন্ন্যাসী নয়।

    একই কথা সাভারকরের সম্বন্ধেও।

    এবার তথ্যগুলো।

    আমাদের যেমন রবি ঠাকুর ও নেতাজিকে নিয়ে আবেগ রয়েছে, ওঁদের সম্বন্ধে কোন বিরূপ সমালোচনা শুনলে আমরা প্রথমেই খারিজ করে দিই। তেমনই মারাঠিরাও সাভারকরের সম্বন্ধে অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

    তাই ২০১৮ সালে মুম্বাইয়ের মারাঠি খবরের কাগজ লোকসত্তায়[1] লেখা হয় সাভারকর আদৌ কোন পিটিশন -- পাঠান নি, আর যদিও পাঠিয়ে থাকেন তাহলেও তাতে কোন মার্জনা ভিক্ষা (ask for clemency) করেন নি। এর দেড় দশক আগে, ওয়াই ডি ফড়কে লেখেন – মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী সাভারকর কখনও ব্রিটিশ শাসকের সঙ্গে সহযোগিতা করেন নি[2]

    সাভারকরের গবেষণাভিত্তিক জীবনী লেখক বৈভব পুরন্দরে জানাচ্ছেন কথাটা সত্যি নয়, কারণ সাভারকর নিজেই ক্লেমেন্সি পিটিশন লেখার কথা অস্বীকার করেন নি। [3]

    কতগুলো লিখেছিলেন?

    এ নিয়ে অনেকে বলছেন ৬টি, কিন্তু পুরন্দরে বলছেন ৭টি। পুরন্দরে তারিখগুলো নিয়েছেন সাভারকরের জেল হিস্ট্রি টিকেট থেকে। উনি যে তারিখগুলো দিয়েছেন সে হিসেবে দেখলে নীচের ছবিটা পাই।

    সাভারকর প্রথম পিটিশন লেখেন আন্দামানে আসার দু’মাসের মাথায়, ৩০ অগাস্ট ১৯১১ তারিখে। ওটা চারদিনের মাথায় খারিজ হয়ে যায়।

    দ্বিতীয় পিটিশন পাঠান চোদ্দমাস পরে, ২৯ অক্টোবর, ১৯১২ তারিখে। তাতে বলেন যে ওঁর আচার আচরণ এখন অনেক ভাল, কাজেই জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হোক।

    তৃতীয় এবং চতুর্থ পিটিশন পাঠান হয় যথাক্রমে, নভেম্বর ১৯১৩ এবং সেপ্টেম্বর ১৯১৪ তারিখে। তৃতীয়টি সাভারকর পোর্ট ব্লেয়ারে জেল পরিদর্শনে আসা হোম সেক্রেটারি স্যার ক্র্যাডকের সঙ্গে দেখা করে হাতে দেন এবং সাক্ষাতকারে নিজের চিন্তায় পরিবর্তনের কথা বলে সশস্ত্র বিপ্লবের ভুল পথ ছেড়ে সাংবিধানিক পথে সহযোগিতার রাজনীতি করার আশ্বাস দেন।

    সাভারকর ভাইসরয়ের কাছে মার্জনা চেয়ে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ পিটিশন পাঠান ১৯১৫ এবং ১৯১৭ সালে।

    সপ্তম এবং শেষবারের মত আপিল করেন ৩০ মার্চ, ১৯২০ তারিখে।[4]

    এখানে বলে রাখা ভাল যে এখন সাভারকরের মৃত্যুর পরে ন্যাশনাল আর্কাইভ থেকে ওনার পিটিশনগুলো পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে। ফলে এ নিয়ে কোন কন্ট্রোভার্সি হওয়ার কথা নয়। আর প্রথম পিটিশনটি পাওয়া যায় নি। কিন্তু তার উল্লেখ জেল টিকেটে এবং সাভারকরের দ্বিতীয় পিটিশনে রয়েছে।

    ফলে প্রত্যেকটি পিটিশনের অন্তর্বস্তু যে কেউ পড়ে দেখতে পারেন।

    গান্ধীজির নির্দেশে মাফিনামা ?

    আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দিল্লিতে ‘সাভারকর’ নিয়ে লেখা একটি বইয়ের বিমোচন উপলক্ষে বলেছিলেন যে সাভারকর তো গান্ধীজির নির্দেশে বৃটিশের কাছে মার্জনা ভিক্ষার আবেদন লিখেছিলেন। [5]

    বক্তব্যটি ভুল।

    কারণ সাভারকরের সাতটি পিটিশনের মধ্যে প্রথম চারটি পাঠানো হয় ১৯১১ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে। তখন গান্ধীজি দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্দোলনরত এবং মাঝে মধ্যেই গ্রেফতার হয়ে জেলে ঢুকছেন আর বেরোচ্ছেন।

    অক্টোবর ২০২১ সালে ‘লল্লন টপ’ চ্যানেলে সান্ধ্যকালীন দীর্ঘ বিতর্কের সময় সাভারকরের নবীনতম জীবনীলেখক ভি সম্পত স্বীকার করেন যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যটি অর্ধসত্য। ১৯২০ সালে সাভারকরের ছোটভাই ডাক্তার নারায়ণ রাও গিয়ে গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করে দাদার মুক্তির জন্য কিছু করার অনুরোধ করলে গান্ধীজি বলেছিলেন আর একবার আবেদন পাঠাতে, উনি চেষ্টা করবেন। তখন সাভারকর শেষ বা সাতনম্বর মাফিনামাটি লেখেন এবং ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’য় সাভারকরের মুক্তির দাবিতে গান্ধীজির জোরালো প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়।

    পিটিশনগুলোর পৃষ্ঠভূমি এবং অন্তর্বস্তুঃ

    সাভারকরের পাঠানো পিটিশনগুলোর মধ্যে ১৯১৪, ১৯১৯ এবং ১৯২০ সালের, অর্থাৎ চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তমগুলির কথাই খালি আগে জনসমক্ষে এসেছিল। আগেই বলেছি, সমস্ত পিটিশনগুলোর সম্পূর্ণ বয়ান ন্যাশনাল আর্কাইভের সৌজন্যে ওনার মৃত্যুর কিছুদিন পর (২৮শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬) প্রকাশিত হয়েছে।

    আমরা এখানে কিছু চিঠির মূলবিন্দুগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করব।

    তিন নম্বর ক্লেমেন্সি পিটিশনঃ ১৪ নভেম্বর ১৯১৩

    কোলকাতা, লাহোর এবং লণ্ডনে বিভিন্ন পত্রিকায় সেলুলার জেলের অমানবীয় দুর্দশার কথা( রাজবন্দী হোতিলালা বর্মার গোপন চিঠির ভিত্তিতে) প্রকাশিত হওয়ায় ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে ১৯১২-১৩ সালের স্ট্রাইকের পর রাজবন্দীদের বিক্ষোভ এবং অসন্তোষের দমকে ব্রিটিশ প্রশাসন নড়ে চড়ে বসে। ইন্দুভুষণের আত্মহত্যা এবং উল্লাসকরের উন্মাদ হয়ে যাওয়ার খবরও প্রশাসনকে বিপাকে ফেলেছিল।

    জেল সুপারিন্ডেন্ট, চিফ কমিশনার, ডেপুটি সেক্রেটারি (হোম) বাটলার এবং হোম সেক্রেটারি স্যার ক্র্যাডকের মধ্যে ওই সময়ে লেখা বিভিন্ন ডেমি-অফিশিয়াল চিঠি এবং নোটস্‌ দেখলে বোঝা যায় যে এ নিয়ে খোঁজখবর হচ্ছে এবং যথারীতি জেল কর্তৃপক্ষ অভিযোগগুলো উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। [6]

    আবার লালমোহন সাহার গোপন অভিযোগের ভিত্তিতে বোমা মেরে জেল উড়িয়ে দেওয়ার গল্পটি উত্তেজনার সৃষ্টি করে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের টেগার্ট (২৩ অক্টোবর, ১৯১৩) অভিমত দিলেন যে যতটুকু প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দাঁড়ায় না।

    তখন ঠিক হল, গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিলের হোম সেক্রেটারি স্যার রেজিনাল্ড ক্র্যাডক স্বয়ং অক্টোবর-নভেম্বর ১৯১৩ নাগাদ সরেজমিনে আন্দামান এবং সেলুলার জেলের অবস্থা দেখতে আসবেন এবং তাঁর রিপোর্ট হাউস অফ কমন্সে পেশ করা হবে।

    ওনার রিপোর্টে বিশেষ কোন কাজ হয়নি। তবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কম শাস্তি পাওয়া রাজবন্দীদের আন্দামান থেকে সরিয়ে ভারতের বিভিন্নপ্রান্তের (ইউ পি, মাদ্রাজ, গুজরাত, বোম্বে ইত্যাদি) জেলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

    সেই সময় উনি পাঁচজন রাজবন্দীকে তাঁদের পিটিশনের ভিত্তিতে ‘পার্সোনাল হিয়ারিং" মঞ্জুর করেছিলেন। এঁদের মধ্যে বিনায়ক সাভারকর, বারীন্দ্র কুমার ঘোষ, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, সুধীর সরকার এবং নন্দগোপাল।

    ইতিহাসবিদ এবং সাভারকরের প্রশংসক ডঃ রমেশ চন্দ্র মজুমদারের ‘দ্য পেনাল সেটলমেন্টস অফ আন্দামান অ্যান্ড নিকোবর’ একটি গবেষণাভিত্তিক প্রামাণ্য দস্তাবেজ। উনি বলছেন যে বারীন্দ্র, সাভারকরদের ক্ষমাভিক্ষা দেখে মনে হচ্ছে কালাপানির সাজা, নিঃসন্দেহে, ওই মহান বিপ্লবীদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দিয়েছে এবং তারা আর সশস্ত্র ক্রান্তি অথবা গুপ্ত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসন ধ্বংস করার কথা ভাবছেন না।[7]

    রাজবন্দীরা দাবি করলেন যে তাঁদের কয়েকজনকে ক্র্যাডকের সামনে উপস্থিত হয়ে নিজেদের অভিযোগ/দাবি দাওয়া পেশ করতে দেওয়া হোক।

    ক্র্যাডক কয়েকজনকে হাঁকিয়ে দিলেন যে ওদের সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডই প্রাপ্য ছিল। কিন্তু কয়েকজনের সঙ্গে, যেমন সাভারকর, বারীন্দ্র, কাঞ্জিলাল, সুধীর, নন্দগোপাল, আলাদা করে কথা বললেন।

    সাভারকর ওই ইন্টারভিউ নিয়ে তাঁর বক্তব্য আন্দামান বাসের স্মৃতিকথায় লিপিবদ্ধ করেছেন।

    আমরা স্যার ক্র্যাডকের রিপোর্ট (Home Deptt. Poll A. Feb. 1915, Nos. 68—160) থেকে বিপ্লবীদের সংগে কথাবার্তা নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন সংক্ষেপে উল্লেখ করছি।

    ‘জেলে গিয়ে সমস্ত রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধীদের সঙ্গে কথা বললাম। মানিকতলা বোমার মামলা, খুলনা, ঢাকা ষড়যন্ত্র, সাভারকর ভাই — সবার সঙ্গে। সবার অভিযোগ শুনলাম। এদের মধ্যে পাঁচজন অনুমতি নিয়ে পিটিশন লিখে জমা করল। আমি এক এক করে এদের জিজ্ঞাসাবাদ করলাম।
    এদের আগের রেকর্ড দেখলাম। এরা জেলের ভেতর নিয়ম ভাঙার জন্যে শাস্তি পেয়েছে, কেউ কাজ করতে অস্বীকার করেছে, কেউ কেউ ভুখ হরতাল করেছে।
    এদের বেশির ভাগের আপত্তি হল এখানকার কড়া নিয়মে সেলে বন্ধ থাকায়। এরা চাইছে ভারতীয় জেল ব্যবস্থার সুবিধেগুলো। যেমন, ভাল আচরণের জন্যে রেমিশন, বা জেলের আসামী-ওভারসিয়ারের অথবা আসামী-ওয়ার্ডারের দায়িত্ব পাওয়া। এরা বলছে যে ইদানীং ভাল আচরণ করেও এরা কী পেল? খালি কথায় কথায় শাস্তি পাওয়ার থেকে মুক্তি, ব্যস্‌। তাহলে ওদের ভারতের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হোক, এটাই দাবি।

    একজন হল ননীগোপাল -- এখন জামাকাপড় পরে শান্ত হয়েছে, চুপচাপ কাজ করছে। একে বুঝিয়ে সুজিয়ে শান্ত করেছে বারীন ঘোষ, আলিপুর বোমার মামলায় অরবিন্দের ডানহাত।

    আমি যাদের বেশি তর্ক করতে দেখলাম তারা হচ্ছেঃ বীরেন্দ্র সেন (সিলেট গ্যাং), উপেন্দ্র নাথ ব্যানার্জি, নন্দগোপাল (সম্পাদক), হোতিলাল বর্মা।

    দু’দিন পরে জেলের অফিসে পাঁচজন পিটিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলঃ

    বি ডি সাভারকর, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, বারীন্দ্র কুমার ঘোষ, নন্দগোপাল এবং সুধীর কুমার সরকার।

    “Savarkar’s petition is one for mercy. He cannot be said to express any regret or repentance, but he affects to have changed his views, urging that the hopeless condition of Indians in 1906-07 was his excuse for entering upon a conspiracy.

    হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল নিজের জন্যে কিছু চায় নি। ওর সন্দেহ, সহবন্দী কালীচরণ ঘোষের মৃত্যু সময়মত চিকিৎসা না পাওয়ায় এবং জেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় হয়েছে। ওকে মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং ট্রিটমেন্টের চার্ট দেখিয়ে একটু শান্ত করা হল।

    নন্দগোপাল বড্ড বকবক করে। ওর অভিযোগ সেলের ভেতর থেকে পায়খানার পাত্র ঠিক করে পরিষ্কার করার কোন ব্যবস্থা নেই। মাঝরাতে কারও পেটখারাপ হোলে সে কী করবে? পাত্র ভরে যায়, কিন্তু পরিষ্কার হয় সেই ভোর সাড়ে পাঁচটায়, যত্তসব!

    সুধীর সরকার বাচ্চা ছেলে। ও কারও নাম বলে দিতে রাজি হল না। বলল - কলেজে পড়ার সময় ১৮ বছর বয়েসে এই বিশ্বাসে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল যে এভাবে ইংরেজ তাড়িয়ে দেশের ভাল করা যাবে। এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে।

    ওর বেশি শাস্তি বাকি নেই। মনে হয় ছেড়ে দিলে শান্ত জীবন যাপন করবে। [8]

    বারীন্দ্র নাথ ঘোষের অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত চিঠিঃ [9]

    কুড়ি বছরের কালাপানির শাস্তি ভোগ করছি। আগে থেকেই ম্যালেরিয়ায় ভুগে দুর্বল ছিলাম। এখন পোর্ট ব্লেয়ারের ম্যালেরিয়ায় ভুগে সারাজীবনের মত পঙ্গু হবার জোগাড়। ইদানীং টাইফয়েডে ভুগে চারমাসের মত শয্যাশায়ী ছিলাম। ওজন খুব কমে গেছে।

    গ্রেশাস ম্যাজেস্টির অভিষেকের সময়* অনেক আশা ছিল ছাড়া পাব। এখন প্রার্থনা, উনি যেন অতীতের ভুল পথে যাওয়া কিছু তরুণকে ক্ষমা করে দেন। আমি কথা দিচ্ছি, ওঁর ক্ষুদ্রতম ইচ্ছেও পালন করব।

    যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে উনি যেন আমাকে ভারতের এমন কোন জেলে বদলি করিয়ে দেন যেখানে এখানকার জেল কোডের তুলনায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং পুষ্টিকর খাবার পাব।

    আপনার দয়ার অপেক্ষায়,

    বিনায়ক দামোদর সাভারকরের দীর্ঘ চিঠিঃ

    সাভারকর প্রথম কয়েক পাতায় যে অভিযোগগুলো করলেন তার সারমর্ম হচ্ছে, ওর সঙ্গীসাথীদের তুলনায় ওনাকে বেশি বেশি উৎপীড়ন করা হচ্ছে। যেমনঃ
    • ১৯১১ সালে জেলে ঢোকার দিন থেকে আমাকে ‘ডি’ (ডেঞ্জারাস) ক্যাটিগরিতে রাখা হয়েছে, কিন্তু আমার দলের যারা আমার সঙ্গে জেলে এল, তাদের অমন করা হয় নি।আমায় ছ’মাসের নির্জন কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হল, অন্যদের নয়।
    • আমাকে নারকোলের ছোবড়া বের করতে এবং পরে আরও শ্রমসাধ্য কলুর ঘানি ঘোরাতে লাগানো হল। ওই সময় আমার আচরণ বিশেষ ভাল ছিল এবং আজও আমি যথাসম্ভব ভাল ব্যবহার করেই যাচ্ছি। তবু ছ’মাস পরেও আমাকে জেলের বাইরে যেতে দেওয়া হয় নি, অন্যদের দেওয়া হয়েছিল।
    • প্রমোশন চাইলে বলা হল, আমি বিশেষ শ্রেণীর কয়েদি, তাই আমার প্রমোশন হবে না।ভাল খাবার চাইলে বলা হল, তুমি সাধারণ কয়েদি, সেই খাবারই পাবে।অর্থাৎ শুধু বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করাই নয়, বিশেষ অসুবিধার কথা বললেও সেই বিশিষ্ট কয়েদি হওয়ার কথাই বলা হবে।
    • দেখুন, যারা এক ডজন বা তার চেয়ে বেশি বার ঠ্যাঙানি খেয়েছে তাদেরও জেলের বাইরে যেতে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমি তো দুই বা খুব বেশি হলে তিন কি চারবার ঠ্যাঙানি খেয়েছি , অথচ আমাকে ওদের মত বেরোতে দেয়া হল না। শেষে যখন বাইরে পাঠানো হল, তখনই সেখানে কিছু রাজনৈতিক বন্দী্রা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধালে সবাইকে ফের ভেতরে ঢোকানো হল। খামোখা অন্যদের অপরাধের শাস্তি আমাকেও পেতে হল।
    • কাজেই মহানুভব, হয় আমাকে কোন ভারতীয় জেলে পাঠান, নয় আমার সঙ্গে যে নিয়ম-বিরুদ্ধ ভাবে অন্য সাধারণ অপরাধীদের মত ব্যবহার করা হচ্ছে—সেটা বন্ধ করান। এভাবে চললে বোহহয় বেশি দিন বাঁচব না।
    • আমার চোখের সামনে নাচছে ৫০ বছর কালাপানির সাজা। এই অবস্থায় ৫০ বছর কাটানোর হিম্মত জোটাবো কী করে? বেশি কিছু চাইছি না, সবচেয়ে সাংঘাতিক অপরাধীরাও যেটুকু সুবিধা পেয়ে থাকে, আমায় অন্ততঃ তাই দিন। নইলে কোন ভারতীয় জেলে পাঠিয়ে দিন যাতে ১৪ বছর ভালো ভাবে কাটালে মুক্তি পাওয়ার অন্ততঃ নৈতিক অধিকার অর্জন করতে পারি।
    • এখানে আরও ২০ জন রাজনৈতিক যুবক বন্দী রয়েছে। ওরা যদি জেলের নিয়ম ভাঙে তার দায়িত্ব যেন আমার ঘাড়ে চাপানো না হয়। আমাকে আমার অপরাধের জন্যই দোষী সাব্যস্ত করা হোক, অন্যের কাজের জন্য নয়। আমার এভাবে রেকর্ড খারাপ হোলে ভবিষ্যতে ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।


    “In the end may I remind your honour to be so good as to go through the petition for clemency, that I had sent in 1911, and to sanction if for being forwarded to the Indian Government? The latest development of the Indian politics and the conciliating policy of the Government have thrown open the constitutional line once more.

    Now no man having the good of India and Humanity at heart will blindly step on the thorny paths which in the excited and hopeless situation of India in 1906-1907 beguiled us from the path of peace and progress.

    Therefore, if the Government in their manifold beneficence and mercy release me, I for one cannot but be the staunchest advocate of constitutional progress loyalty to the English Government which is the foremost condition of that progress.

    As long as we are in jails there cannot be real happiness and joy in hundreds and thousands of homes of His Majesty’s loyal subjects in India, for blood is thicker than water; but if we be released the people will instinctively raise a shout of joy and gratitude to the Government, who knows how to forgive and correct, more than how to chastise and avenge.

    Moreover, my conversion to the constitutional line would bring back all those misled young men in India and abroad who were once looking up to me as their guide.

    I am ready to serve the Government in any capacity they like, for as my conversion is conscientious so I hope my future conduct would be. ------
    The Mighty alone can afford to be merciful and therefore where else can the prodigal son return but to the parental doors of the Government?”

    সাভারকরের নিজের কথায়ঃ

    আমি ক্র্যাডককে বললাম যে আমাকে এর থেকে বের করে নেওয়া পুরোপুরি আপনার হাতে। গোখলের ইম্পিরিয়াল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলে পেশ করা ‘বাধ্যতামূলক শিক্ষা’র প্রস্তাব যদি গৃহীত হয়, এবং সরকার যদি এ’জাতীয় প্রগতিমূলক কদম বাড়ানো স্থির করে তাহলে ‘not only myself but all my friends who are dubbed as revolutionaries will be ready to turn to the path of peace.’[10]

    এখানে সাভারকর মন্টো-মর্লি সাংবিধানিক সংস্কারের কথা বলছেন যা পঞ্চম জর্জের করোনেশন উপলক্ষে ঘোষণা করা হয়েছিল।

    আশ্চর্য্যের ব্যাপার, পাঁচ-ছয় বছর আগেও যে সাভারকর নরমপন্থী বা সংস্কারপন্থী গোখলের সমালোচনায় মুখর ছিলেন তিনিই আজ কথিত বাধ্যতামূলক শিক্ষা বিলের জন্যে বিপ্লবের পথ ছেড়ে সাম্রাজ্যের সেবা এবং নিজেকে কট্টর সংবিধানপন্থী বলছেন।

    কিন্তু ক্র্যাডক সাভারকরকে বললেন যে অমন একবার হৃদয় পরিবর্তন হয়েছে বললেই হবে না, আরও কয়েকবছর জেলে লক্ষীছেলে হয়ে থাক। বইপত্তর পড়ার অনুমতি দিচ্ছি - সেসব পড়। কয়েক বছরে বোঝা যাবে সত্যিই তোমার চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে কিনা।
    কারণ তুমি ম্যাজিস্ট্রেট জ্যাকসন - হত্যার অপরাধে জড়িত থাকার শাস্তি পেয়েছ।
    সাভারকরঃ আমি আদৌ ওই হত্যায় জড়িত নই।
    ক্র্যাডকঃ তোমার পাঠানো পিস্তলের গুলিতে জ্যাকসন মরেছে, এটা অস্বীকার করতে পার?
    সাভারকরঃ আমি হত্যার জন্য পিস্তল পাঠাই নি, ওগুলো সাথীরা বিপ্লবের জন্য সংগ্রহ করেছিল।
    ক্র্যাডকঃ আচ্ছা? শোন, পিস্তল দিয়ে বিপ্লব হয়না, মানুষ খুন করা হয়।
    (মজুমদার,ঐ )।

    ক্র্যাডক লিখেছেন যে মনে হয় না সাভারকরকে ছেড়ে দিলে দেশে বা বাইরের বিপ্লবীরা সাভারকরের কথা মেনে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিকতার পথ ধরবে।

    পিটিশনের ফল কী হল?

    আরও একটা কথা বলি। ক্লেমেন্সি পিটিশন লিখে কেউ মুক্তি পান নি, না বারীন, না উপেন্দ্র, না সাভারকর। অনেকেই এর সঙ্গে ছাড়া পাওয়ার সময় শর্ত মেনে চলার প্রতিশ্রুতি বা মুচলেকার সঙ্গে পিটিশনকে গুলিয়ে ফেলছেন।

    এঁরা সবাই মুক্তি পেলেন বিশ্বযুদ্ধ জয়ের খুশিতে সম্রাটের ‘রয়্যাল অ্যামনেস্টি’ বা শাহী মাফিনামার সময়ে ১৯১৯ থেকে ১৯২১এর মাঝে।

    তাহলে নগদ লাভ কী হল? কিছু হল বৈকি! এঁরা সবাই তেলঘানি এবং ছোবড়া পেটানোর জায়গায় হালকা কাজ পেলেন। খাওয়া দাওয়া একটু ভাল হল, নিজেরা রান্না করার সুবিধে পেলেন। লাইব্রেরির বইপত্তর, নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা ইত্যাদির সুযোগ, তাই বা মন্দ কি!

    আর একটা ব্যাপার লক্ষ্য করার মত।

    সাভারকর এবং বারীন ছাড়া কেউ মাফিনামা চেয়ে পিটিশন দেন নি। সম্পাদক নন্দগোপাল এবং হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল অন্য কয়েদিদের প্রতি অন্যায় এবং জেলের সামগ্রিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের দাবিতে পিটিশন দিয়েছিলেন।

    বারীন্দ্র নিজের জন্যে মাফিনামা দিয়ে ছাড়া পেলে আর বিপ্লবের পথে যাবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন।

    সাভারকর বললেন—উনি নিজে বিপ্লবের ভুল পথ ছেড়ে সংবিধানসম্মত সহযোগিতার পথে চলবেন তো বটেই, সঙ্গে যাঁরা ওনার নেতৃত্বে আস্থা রাখে এমন সব ভুল পথে পা বাড়ানো বিপ্লবীদের বুঝিয়ে সুজিয়ে ফিরিয়ে আনার এবং সরকার যা দায়িত্ব দেবে তা পালন করার কথা দিলেন।

    এর পরে ১৯১৪, ১৯১৫, ১৯১৭ এবং ১৯২০ সালের পিটিশনের কথা আসবে।

    (চলবে)

    [1] লোকসত্তা, ২৭ মে, ২০১৮
    [2] ‘ এ কমপ্লেক্স হিরো’, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৩১ অগস্ট, ২০০৪, দিল্লি
    [3] পুরন্দরে, ‘সাভারকর’, পৃঃ ১৭২
    [4] ঐ , পৃঃ ১৫৯
    [5] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ১২ অক্টোবর, ২০২১
    [6] আর সি মজুমদার, দ্য পেনাল সেটলমেন্টস অফ আন্দামান অ্যান্ড নিকোবর, পৃঃ ১৪৫-১৭৫
    [7] ঐ; পৃঃ ১৯৮
    [8] ঐ , পৃঃ ২০৬
    [9] ঐ , পৃঃ ২০৮
    [10] মজুমদার, ঐ, পৃঃ ২৪৭-৫০

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিমোচন | 117.194.***.*** | ০৪ অক্টোবর ২০২২ ০৮:২৩738534
  • বইয়ের বিমোচন? 
  • Ranjan Roy | ০৪ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৫৬738536
  • প্লীজ, একটু হেল্প করুন।
       'Book release'  এর হিন্দি হল 'পুস্তক বিমোচন'। বাংলা প্রতিশব্দ মনে আসছে না। প্লীজ বলে দিন।
      বাহাত্তুরে  হয়েছি সত্যিই। বয়সে এবং মানসিকতায়।
  • Ranjan Roy | ০৪ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৫৯738537
  • গুগল কাকু বলছেনঃ বইয়ের 'মুক্তি' (!)  অথবা প্রকাশনা উৎসব?
     সিনেমা মুক্তি পায়, বইও?
  • হজবরল | 185.194.***.*** | ০৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:০৫738538
  • আনুষ্ঠানিক প্রকাশ
  • Ranjan Roy | ০৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:৩৯738539
  • ইয়াঃ , অনেক ধন্যবাদ হজবরল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন