অমিত, ১ না, কংগ্রেসের জেনারেল মেম্বারশিপের ব্যাপারে কোন ডিস্ক্রিমিনেশন হত না।
২ একদম ঠিক বলেছেন।
শুধু সাভারকর কেন , অরবিন্দ, বারীন্দ্র, উপেন্দ্র, গান্ধীজি জিন্না, রবীন্দ্রনাথ, আপনি-আমি সবারই নিজের জীবন বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারে না।
অরবিন্দ বিপ্লবের রাস্তা ছেড়ে ঋষি হয়েছেন? বেশ করেছেন, ওটা তাঁর চয়েস। বারীন্দ্র উপেন্দ্র কালাপানি থেকে ফিরে এসে গৃহস্থ এবং লেখক হয়েছেন? বেশ করেছেন, কোন কথা হবে না।
সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস ছেড়ে অন্য দল বানিয়েছেন এবং জার্মানিতে পালিয়ে গেছেন? বেশ করেছেন।
গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিং কালাপানি ফেরত কমিউনিস্ট হয়ে গেলেন? ওটা ওনাদের চয়েস।
একইভাবে সাভারকর কালাপানি ফেরত সশস্ত্র বিপ্লবের পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক পথের রাজনীতি করছেন? বেশ করেছেন। তাতে উনি অন্যদের থেকে ছোট হয়ে যান না, বা তাঁর মতামতের গুরুত্ব কমে যায় না। হিন্দু মহাসভার সভাপতি হয়ে দলকে চাঙ্গা করেছেন? বেশ করেছেন।
৩ তাহলে আজ সাভারকরকে নিয়ে এত কথা এত প্রশ্ন কেন? উনি তো শেষজীবনে শান্তিতে থাকতে চেয়ে ভারত সরকারকে লিখে দিয়েছিলেন যে ওঁকে ছেড়ে দিলে বাড়িতে থাকবেন, সক্রিয় রাজনীতি করবেন না। যতদূর জানি, লালবাহাদুর শাস্ত্রী তাঁর জন্যে পেনশন চালু করেছিলেন।
তাহলে?
--আসলে এতদিন কেউ প্রশ্ন তোলে নি। হঠাৎ দু'দশক আগে থেকে শুরু হল ওঁর মত স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরল। উনি আসল নেতা ছিলেন। ঘরে বসে থেকেও ওনার পরামর্শেই জাপানে রাসবেহারী বোস এবং জার্মানীতে নেতাজি লড়াই করে গেছেন।
এবং উনি কোন মার্সি পিটিশন দেননি। এক মন্ত্রী বললেন --উনি তো গান্ধীজির নির্দেশে মাফিনামা দিয়েছিলেন।
বলা হল, উনি দশবছর ধরে তেলের ঘানি ঘুরিয়েছেন। ওঁর মত অত্যাচার আর কারও সঙ্গে হয়নি।
সাভারকরও ৫০ বছর পরে স্মৃতিকথা লিখতে গিয়ে গদর পার্টির প্রতিষ্ঠাতা লালা হরদয়ালকে তাঁর শিষ্য এবং প্রায় হিন্দু মহাসভার সদস্য বানিয়ে ফেলেছিলেন।
উনি তাঁর স্মৃতিকথায় ৬টা পিটিশনের উল্লেখ করেন নি।
এখন আর্কাইভ থেকে ৫টা পিটিশন পাবলিক ডোমেইনে, প্রথমটির উল্লেখ দ্বিতীয়টিতে আচে।
এইভাবে ইতিহাস চর্চার হদ্দমুদ্দ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
চাপা পড়ে যাচ্ছে ১৯৩০ সালের চট্টগ্রামের পাহাড়ে লড়াইয়ে কয়েক গণ্ডা ইংরেজ সৈনিকের মৃত্যু। সূর্য সেনের ফাঁসি, বাঘা যতীনের পাঁচ জনের ট্রেঞ্চ থেকে গুলির লড়াই। শচীন্দ্রের দ্বিতীয়বার কালাপানি যাওয়া।
উল্লেখ করার মত যে আমাদের হোম মিনিস্টার অমিত শাহজী অক্টোবর ২০১১তে সেলুলার জেলে গিয়ে শচীন্দ্র সান্যালকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেছেন। উনি বলেছেন --শচীন্দ্রনাথ সম্ভবতঃ একমাত্র সংগ্রামী যাঁকে দুই বার আন্দামানে পাঠানো হয়েছে।
আমার বিনীত প্রশ্নঃ
সাভারকরের নেতৃত্বে বিপ্লবী কার্যকলাপে লণ্ডন এবং পুণেতে দুই সিভিলিয়ান ইংরেজ রাজপুরুষ এবং একজন পার্শি ডাক্তার নিহত হয়েছেন। নিজেও দশ বছর আন্দামানে কঠিন জীবন কাটিয়েছেন।
কিন্তু এর থেকে বেশি তো আরও অনেকেই কাটিয়েছেন , এবং মিলিটারিলি অনেক বেশি অ্যাচিভ করেছেন। এবংঘটনাচক্রে তাঁদের অধিকাংশই বাঙালী।
তাহলে সবাইকে ছাপিয়ে উনি কী করে কাল্ট ফিগার হয়ে যান? কিছু মিথ্যে গালগল্প বাজারে ছাড়ার কী দরকার? উনি যা করেছেন তাঁর জন্যেই স্মরণীয়।