এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • সাভারকর চর্চা, সবে মিলেঃ পর্ব ৫.১ (বাকি মাফিনামা, মুক্তির চেষ্টা) 

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৫ অক্টোবর ২০২২ | ৬৩৭ বার পঠিত
  • সাভারকর চর্চা, সবে মিলেঃ ৫.১ (বাকি মাফিনামাগুলো, মুক্তির চেষ্টা)

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর

    আগেই বলা হয়েছে হোম সেক্রেটারি ক্র্যাডক বিশ্বাস করেন নি যে সাভারকরের মত পরিবর্তন এবং বিপ্লবের পথ ছেড়ে সংস্কার পরবর্তী বৃটিশ সংবিধান মেনে দেশের সেবা করার আশ্বাস কতটা আন্তরিক। উনি ভেবেছিলেন –এসব ফক্কিকারী; একে বাইরে কাজ করতে দেওয়া বা দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা নিরাপদ হবে না। এ হয় পালাবে অথবা দেশের বাইরে অপেক্ষারত বিপ্লবী বন্ধুরা একে মাঝপথে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

    কিন্তু ক্র্যাডকের রিপোর্টের ভিত্তিতে টার্ম কনভিক্ট বা যারা স্বল্মেয়াদি কয়েদি, বা যাবজ্জীবন নন, তাদের ১৯১৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের মূল ভুখন্ডের বিভিন্ন জেলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হল। রইলেন জনা কুড়ি দীর্ঘমেয়াদি কয়েদি — সাভারকর ভাইয়েরা, মানিকতলা, ঢাকা, খুলনা, ষড়যন্ত্রের অভিযুক্তরা।

    ইতিমধ্যে ১০১৪ সালে লেগে গেল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। সাভারকর হাল ছাড়েন নি, ওঁর ব্যারিস্টার মানস এই পরিস্থিতিতে অনুকূল সুযোগ দেখতে পেল। উনি আবার পিটিশন পাঠালেন আন্দামান দ্বীপসমূহের চিফ কমিশনারের কাছে, অক্টোবর ১৯১৪। অনুরোধ করলেন যে এটি উনি যেন ভারত সরকারকে পাঠিয়ে দেন।

    চিঠির মূল কথাগুলোঃ

    ১. ইউরোপে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। যদি বৃটিশ সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য কমন এনিমির বিরুদ্ধে ভারতের দেশপ্রেমিক যুবকদের হাতিয়ার ধরতে অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে ওরা গোরা সৈন্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবে এবং এইভাবে ওদের হৃদয়ে সাম্রাজ্যের প্রতি প্রভুভক্তি জেগে উঠবে।

    ২. ভলান্টিয়ার সংগ্রহ করার কাজ বেশ এগিয়ে চলেছে দেখে ভাল লাগছে। লর্ড হার্ডিঞ্জের দূরদর্শিতা এবং সঠিক রাজকীয় নীতিতে আমার বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে।

    ৩. আজ আমি বিনম্রচিত্তে নিজেকে এই যুদ্ধে যে কোন কাজের জন্যে এক স্বয়ংসেবক হিসেবে পেশ করছি, এখন ভারত সরকার আমাকে যে দায়িত্ব নেবার যোগ্য ভাবেন তাই করতে রাজি। আমি জানি যে এই সাম্রাজ্য আমার মতন ক্ষুদ্র ব্যক্তির সাহায্যের মুখাপেক্ষী নয়। কিন্তু এটাও জানি যে যত ছোটই হোক না কেন, একজন দেশভক্ত নিজের সাম্রাজ্য রক্ষার জন্যে সর্বোত্তম সব কিছু দিতে কর্তব্যবদ্ধ। যদি সমস্ত রাজবন্দীদের আম মাফি বা ক্ষমাদান করা যায় তাহলে তাদের বিশ্বস্ততা আরও গভীর হবে এবং বিদেশীদের ওই ভ্রমও দূর হবে যে ভারতীয়রা সাম্রাজ্যের ভিতরে সমান অধিকার চায়, বা এর থেকে মুক্তি পেতে ব্যগ্র। অথবা ওই লক্ষ্য পাবার জন্যে বাইরের শক্তির সঙ্গে হাত মেলাবে। এই কয়েদীরা বরং সেই শক্তির সঙ্গে যুক্ত হবে যে শাস্তি দেয় বটে, কিন্তু খুব সহ্য করে এবং মাফ করে আরও শক্তির পরিচয় দেয়। যখন লর্ড হার্ডিঞ্জ সাংবিধানিক সাফল্যের রাজপথ খুলে দিয়েছেন তখন কোন পথভোলা অথবা গোঁড়া রক্তপাত এবং অপরাধের কন্টকিত পথে পা ফেলতে চাইবে? আম মাফী প্রমাণিত করবে যে সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে ভারতীয় এবং ইংরেজ, উভয়েই, একে অন্যের উপর পুরোপুরি ভরসা করে।

    ৪. যদি সন্দেহ হয় যে এই পিটিশন লেখার পেচ্ছনে আমার আসল উদ্দেশ্য নিজের মুক্তি আদায় করা, তাহলে আমাকে না ছেড়ে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হোক এবং যুদ্ধের জন্যে ভলান্টিয়ার সংগ্রহ অভিযান চলতে থাকুক—তাহলেই আমার এত আনন্দ হবে যেন আমাকেই যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা দেওয়া হয়েছে।

    সাভারকর আশা করেন নি যে এই চিঠির তাড়াতাড়ি কোন জবাব আসবে। তবে তাঁর নির্দেশে এবং ছোটভাই নারায়ণ রাওয়ের তত্ত্বাবধানে ফেব্রুয়ারি ১৯১৫ নাগাদ তাঁর বৌদি যেশুবাঈ এবং পত্নী যমুনা ‘উদার’ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের কাছে দুটো আলাদা চিঠি পাঠালেন[1]। আমলাতন্ত্র সেগুলো আগে বোম্বের গভর্নর লর্ড উইলিংডনের কাছে পাঠালো। তিনি সোজা ‘নো’ লিখে ফেরত দিলেন।

    এবার সাভারকর নিজে ১৯১৫ সালেই ভাইসরয় হার্ডিঞ্জের কাছে এবং দু’বছর পরে ১৯১৭ সালে ভারত উপনিবেশের স্টেট সেক্রেটারি (হোম) পদে সদ্যনিযুক্ত এডওয়ার্ড মন্টেগুর কাছে দুটো তাজা মাফিনামার আবেদন পাঠালেন।[2]

    এখানে তাঁর ষষ্ঠ মাফিনামার মূল পয়েন্ট তুলে দিচ্ছি। এটি ৫ অক্টোবর, ১৯১৭ তারিখে লেখা।

    ইতিমধ্যে নতুন ভাইসরয় হয়েছেন লর্ড চেমসফোর্ড। আর মন্টেগু-চেমসফোর্ড সাংবিধানিক সংস্কারের বিল প্রণয়নের সম্ভাবনার খবর অনেকের মতন সাভারকরের মনেও আশার আলো জাগিয়েছিল।

    উনি দুজনকেই লিখলেন যে যদিঃ

    • যদি রাজবন্দীদের মুক্তি না দিয়ে ভারতবাসীকে খালি স্বায়ত্তশাসন বা হোম রুলের অধিকার দেওয়া হয় তাহলে সেটা দেশের অসন্তোষের মূল কারণকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হবে।
    • আবার শুধু রাজবন্দীদের মুক্তি দিলে অথচ প্রশাসনিক অধিকার না দিলে সেটাও কোন কাজের হবে না। অন্ততঃ ভাইসরিগ্যাল কাউন্সিলে ভারতীয়দের মেজরিটি প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করা হোক।
    • দেশের কাজের জন্যে সাংবিধানিক পথ খোলা থাকলে কোন সাচ্চা দেশপ্রেমিক রক্তাক্ত বিপ্লবের পথে পা বাড়াত না। যখন সংবিধানই ছিল না, তখন ওই পথে চলার কথা বলা বাতুলতা মাত্র।
    • কিন্তু ইংল্যান্ড বা আমেরিকার মত নমনীয় প্রগতিশীল সংবিধান থাকলে বিপ্লবের কথা বলাও অপরাধ বলে মনে করি।*
    • যদি ভাবা হয় যে আমি এতসব শুধু আমার মুক্তির জন্যে লিখছি তাহলে বলব –আমার নাম কেটে দিয়ে বাকি রাজবন্দীদের ছেড়ে দেওয়া হোক।

    * পুরন্দরে লক্ষ্য করছেন যে সাভারকর এবার সহিংস বিপ্লবের পথ ছেড়ে ‘নিয়মতান্ত্রিক’ পথের পথিক হলেন।[3] যদিও ইংলণ্ড প্রবাসের সময় গোখলেদের হোমরুল আন্দোলনকে কত বিদ্রুপ করেছেন।

    শেষে, ১৯১৮ সালের মাঝামাঝি মন্টেগু-চেমসফোর্ড তাঁদের সাংবিধানিক সংস্কারের খসড়া পেশ করলেন, তাতে ‘স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান’ এবং ‘দায়িত্বশীল সরকার’এর কথা বলা হল। এছাড়া আজকের ভারতে যে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন প্রদেশে রাজ্য সরকার, আর কেন্দ্রীয় আইনে রাষ্ট্রপতির মোহর এবং রাজ্যের আইনে রাজ্যপালের --- এই দ্বিস্তরীয় (ডায়ার্কি) কাঠামোটির আঁটি বাঁধার শুরু ওই মন্টেগু-চেমসফোর্ড খসড়ার থেকে।

    শুধু রাষ্ট্রপতির জায়গায় ভাইসরয় (বড়লাট) এবং রাজ্যপালের জায়গায় গভর্নর জেনারেল (ছোটলাট) বসিয়ে নিন। তবে ভোট দেবার অধিকার এবং নির্বাচিত হবার অধিকার থাকবে কেবল সম্পত্তিবান অভিজাত শ্রেণীর ভারতীয়দের। কিন্ত কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য, দুটো অ্যাসেম্বলিতেই মনোনীত ইংরেজ রাজপুরুষেরা থাকবেন। আর দুটো অ্যাসেম্বলিরই নির্ণয় খারিজ করার ভেটো পাওয়ার থাকবে বড়লাট এবং ছোটলাটের।

    এছাড়া বলা হল রাজনৈতিক বন্দীদের সঙ্গে মানবীয় ব্যবহার করার কথা, কারণ আংশিক ভাবে হলেও ভারতীয়দের নিজের দেশের ব্যাপারে নীতি নির্ধারণের অধিকার বা স্বায়ত্তশাসনের দিন আসছে।

    মন্টেগুর নিজের ভাষায় “… sooner or later there must be peace restored between the Government of India and these men … Could they not be treated with courtesy and dignity as the honourable but dangerous enemies of Government?”

    এল ১৯১৯ সাল। এই বছরটি ভারত ইতিহাসে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। [4]

    আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উপনিবেশগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেবার ধারণাটি জাঁকিয়ে বসল। লীগ অফ নেশন্স গঠিত হওয়ায় এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের ১৪ পয়েন্ট নীতিতে এর উল্লেখ হল।

    ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পক্ষে উপনিবেশে একটি মানবীয় মুখোশ পরা জরুরি হয়ে উঠল। এদিকে আয়ারল্যান্ড, ইজিপ্ট, ভারতে বিপ্লবী আন্দোলন এবং মধ্যপ্রাচ্যে খিলাফত আন্দোলন সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জোয়ার আনল।

    তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইংরেজের জয়ের আনন্দে সম্রাট রয়্যাল অ্যামনেস্টি বা রাজকীয় মাফিনামার ঘোষণা করলেন। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ধারা ৩০২ (হত্যার ধারা) প্রযুক্ত হয়েছে তাদের ছেড়ে দেওয়ার আগে ভাল করে ঝাড়াই বাছাই করার নির্দেশ এল।

    আবার বিপ্লবীদের দমনের জন্যে রাউলাট কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী সিডিশন ল’ প্রণীত হল। উল্লেখযোগ্য, যে ওই মিঃ রাউলাট ছিলেন সাভারকরের বোম্বাই কোর্টে বিচারের সময় পাবলিক প্রসিকিউটর, যিনি পাইকারি হারে ইংরেজ হত্যার জন্যে অভিযুক্তদের শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দেওয়ার দাবি করতেন।

    মনে রাখা দরকার, ওই কলোনিয়াল সিডিশন ল বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ছিল পেনাল কোডের ধারা ১২৪-(এ)’র সংশোধিত রূপ। ওই আইনে গান্ধীজি , নেহেরুজি গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীন ভারতে আইনটি বাতিল হয়নি। আজকের ভারতেও যথাপূর্বং চালু রয়েছে।

    এবার উল্লিখিত মন্টেগু-চেমসফোর্ড খসড়াটি ১৯১৯শের মাঝামাঝি গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, ১৯১৯ নামে পাশ হল। তবে স্বায়ত্তশাসনের বদলে ইংরেজ পছন্দ করল ‘দায়িত্বশীল সরকার’ শব্দবন্ধটি।

    ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তীর মতে ইংরেজ সরকার যদি ১৯০৯ সালে মন্টো-মর্লি রিফর্মের বদলে মন্টেগু-চেমসফোর্ড রিফর্ম নিয়ে আসত, তাহলে দেশবাসী এতটাই সন্তুষ্ট হত যে বিপ্লবী আন্দোলন দাঁড় করানো কঠিন হত।[5]

    এই সংস্কারের পক্ষে বিপক্ষে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হল। প্রশ্ন ছিল এ’রকম আধ-খ্যাঁচড়া স্বায়ত্তশাসনে কোন কাজের কাজ হবে কিনা। কংগ্রেসের মধ্যেও বিতর্ক হল। পাল্লা দুদিকেই ভারী। শেষে গান্ধীজির নেতৃত্বে কংগ্রেস এই নতুন রিফর্ম এবং রাউলাট বিল বয়কট করে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করল। গান্ধীজি বললেন – পূর্ণ স্বরাজ চাই।

    পাঞ্জাবে মার্শাল ল’ জারি হল। জালিয়ানওয়ালা বাগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার উপর জেনারেল ও’ডায়ারের নেতৃত্বে বন্দুক ও মেশিনগান চলল। রবীন্দ্রনাথ নাইটহুড ত্যাগ করলেন।

    এর পর নতুন করে যে অসহযোগের জোয়ার এল তাতে ২৫০০০ লোক জেলে গেল। মহাত্মা গান্ধী বললেন -একবছরের মধ্যে, আগামী ৩১ শে মার্চ নাগাদ স্বরাজ এসে যাবে। কিন্তু তারিখ পেরিয়ে গেল, স্বরাজ এল না। [6]

    কিন্তু ত্রৈলোক্যের মতে গান্ধীজিরা ব্রিটিশের ভাঁওতা — একহাতে রিফর্মের গাজর অন্য হাতে রাউলাট বিল এবং জেল রিফর্ম বিলের লাঠি -- ঠিকই ধরতে পেরেছিলেন। তাই বৃটিশের চাল ব্যর্থ হয় এবং জনতা পূর্ণ স্বরাজের দাবিতে একজুট হতে থাকে।[7]

    তবে ১৯১৯ সালেই কোলকাতার মানিকতলা বোমা মামলার বারীন্দ্র, উপেন্দ্র, হেমচন্দ্র এবং দিল্লি ও লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার শচীন্দ্রনাথ সান্যাল ও ভাই পরমানন্দ সমেত ১৬ জন লাহোর মামলার শিখবন্দী আন্দামান থেকে ছাড়া পেয়ে যান।

    এদের মধ্যে শচীন্দ্রনাথ এবং শিখেরা কোন ক্লেমেন্সি চেয়ে আবেদন দেন নি। তিন বারীন্দ্র, হেমচন্দ্রেরা একবারই দিয়েছিলেন — ক্র্যাডকের ১৯১৩ সালে পরিদর্শনের সময়।

    চারদিন জাহাজে করে কোলকাতা বন্দরে ফেরার সময় রাজবন্দীরা আবেগে ভাসছিলেন। শচীন্দ্র ছাড়া বাকি সবারই এক দশক কালাপানি বাস হয়ে গেছে। কারাগারের মোট হিসেবে আরও দু’বছর।

    শচীন্দ্রনাথের ভাষায়ঃ
    বারীন্দ্র বললেন, “রাজবন্দীদের মধ্যে যাঁরা জেল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হরদম মাথা উঁচু করে লড়াই করতেন বাস্তবে তাঁরাই বীর এবং প্রশংসার যোগ্য”। তাঁদের তুলনায় নিজের দুর্বলতার কথা বারীন্দ্র স্বীকার করলেন।[8]

    একটা কথা বলা হয় যে সাভারকর ভাইদের ছাড়া সবাইকে ফেরত পাঠানো হয়। এটা ভুল।

    সাভারকর ভাইদের ফেরত পাঠানো হয় ১৯২১ সালের মে মাসে। তখনও ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, ঝাঁসিওয়ালে পণ্ডিত পরমানন্দ এবং বাকিরা সেলুলার জেলেই বন্দী। এঁদের ফেরত পাঠানো হয় ১৯২১ সালের শেষের দিকে।

    ত্রৈলোক্য চক্রবর্তীর জেল হিস্ট্রি টিকিটে অন্যসব মন্তব্যের সঙ্গে লেখা ছিল ‘১৪টি খুন এবং ডাকাতির ব্যাপারে লিপ্ত থাকার সন্দেহ। ভেরি ডেঞ্জারাস।[9]

    শচীন্দ্রনাথ সান্যালের তথাকথিত মাফিনামার রহস্যঃ

    হিন্দুস্থান রিপাবলিকান আর্মির মূল সংগঠক বেনারসের শচীন্দ্রনাথ সান্যালের বারীন্দ্র এবং অন্যদের সঙ্গে কালাপানি থেকে ছাড়া পাওয়ার ব্যাপারে সাভারকরের জীবনীকারদের অনেকেই, যেমন সম্পত ও পুরন্দরে বলেছেন যে উনিও মন্টেগু-চেমসফোর্ড রিফর্মের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি সমেত মাফিনামা দিয়ে ১৯১৯ সালে ছাড়া পেয়েছিলেন। এর ভিত্তিটি কী?

    আমি সম্পতের থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছিঃ
    “A young revolutionary, Sachindranath Sanyal ---- had been sentenced to life and imprisoned at Cellular jail. He was released after a brief period and he returned to his revolutionary ways.
    However, in a conversation with one B C Chatterjee, he wondered that while he had given an exactly similar assurance, as Vinayak had done, of cooperation with the government in the wake of the Reforms Act, he had been released but not Vinayak’.[10]

    সম্পত এই ঘটনার কোন তথ্যসূত্র জানান নি। এবার আমি জনৈক বি সি চ্যাটার্জির সাঙ্গে ওই কথিত আলোচনা শচীন্দ্রনাথের কারাবাসের স্মৃতিকথা (বন্দী জীবন) থেকে উদ্ধৃত করছি, হিন্দি থেকে বাংলা ভাষান্তর আমার।

    আগে উল্লেখ করা দরকার ‘জনৈক বি সি চ্যাটার্জি’ কে? শচীন আন্দামান থেকে রাতে কলকাতা বন্দরে নেমে বারীন্দ্রনাথ ঘোষের থেকে তিন টাকা নিয়ে কিছু খেয়ে সে রাত্তির কাটালেন। পরের দিন থানায় হাজিরা দিয়ে কালীঘাটে ভাইয়ের বাড়ি না গিয়ে সোজা ব্যারিস্টার বি সি চ্যাটার্জির বাড়ি গেলেন। কেন?

    ব্যারিস্টার বি সি চ্যাটার্জি বাংলায় এবং ইউ পিতে অনেকগুলো ‘কন্সপিরেসি কেসে’ বিপ্লবীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। শচীনের ‘বেনারস কন্সপিরেসি’ কেসেও উনি ডিফেন্স কাউন্সিল ছিলেন। এছাড়া উনি ছিলেন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ ব্যান্যার্জির জামাই। নিজে নরমপন্থী জাতীয়তাবাদী, কিন্তু বিপ্লবীদের প্রতি সহানুভুতি সম্পন্ন। অরবিন্দ ঘোষ এবং বিপিন চন্দ্র পালের ‘বন্দে মাতরম’ নামের স্বদেশী পত্রিকায় চ্যাটার্জিও প্রবন্ধ লিখতেন।

    একসময় বিপ্লবীদের বোঝাতেন — তোমরা স্বদেশীর নামে ডাকাতি ছেড়ে দাও। আন্দোলনে যত টাকা লাগে আমি জোগাড় করে দেব।

    কিন্তু কিছুদিন পরে হতাশ হয়ে বললেন-দূর, কেউ টাকাপয়সা দেয় না। তোমাদের যা ঠিক মনে হয় তাই কর।[11]

    চ্যাটার্জি এতদিন পর প্রথম সাক্ষাৎকারে বিহ্বল হয়ে শচীনকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর টেবিল থেকে শচীনের লেখা একটি চিঠি তুলে ওকে দেখতে দিলেন।এই চিঠি সেলুলার জেল থেকে শচীন নিজের ভাইকে লিখেছিলেন। চিঠিটি সেন্সারের কালিতে অনেক জায়গায় অস্পষ্ট।

    তাতে শচীন নানান কথার পর ভাইকে বলছেন যে ‘শুনছি ভারতে নতুন সংবিধান হবে। কর্তারা বলছেন যে এবার ভারতীয়দের নিজের দেশের উন্নতি করতে সুযোগ দেয়া হবে। কথাটা যদি সত্যি হয়, যদি আমরা ভবিষ্যতে ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মত উন্নতি করার সুযোগ পাই তাহলে খামোখা নিজের জীবন বিপন্ন করে বন্দুক-তলোয়ারের রক্তাক্ত পথে এগিয়ে যাবে -- এমন বদ্ধ-পাগল কে? বিপ্লবীরা পাগল তো নয়! যদি কথাটা সত্যি হয় তাহলে সরকারের উচিত সবচেয়ে আগে রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়া।

    চিঠিটি শচীনের ভাইয়ের হাত দিয়ে ব্যারিস্টার বি সি চ্যাটার্জির হাতে পৌঁছয় এবং উনি সেটি শ্বশুরমশায় সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির হাতে তুলে দেন। সুরেন্দ্রনাথ সেই চিঠিটি দেখিয়ে অ্যাসেম্বলিতে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হন।[12]

    চ্যাটার্জি এর পর শচীন্দ্রকে বলেন বৃটিশ সরকার ভারতীয়দের সুযোগ দেবে। তাই তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন তোমার কর্তব্য গুপ্ত ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে মন্টেগু রিফর্মের পথে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ কর।

    শচীনের ইংরেজ সরকারের কথায় বিশ্বাস নেই। বললেন যে সাভারকরও তো তাঁর চিঠিতে মন্টেগু রিফর্মের কথায় সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে চলার ভাবনার কথা লিখেছেন। যদি আপনার কথা সত্যি হয় তাহলে তাঁকে ছাড়ল না কেন?

    আমার মনে হয় সাভারকরজীকে না ছাড়ার আমাকে ছেড়ে দেওয়ার পেছনে দুটো কারণ।

    এক, বাংলায় রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে জনমত প্রবল। অধিকাংশ বাঙালি রাজবন্দীদের ছেড়ে দেওয়ার পেছনে এটাই মূল কারণ। কিন্তু মহারাষ্ট্রে ওই দাবি নিয়ে অমন তীব্র আন্দোলন কোথায়?

    দুই, সাভারকর ভাইদের বন্দী হওয়ার পর এক দশক ধরে মহারাষ্ট্রে বিপ্লবী আন্দোলন প্রায় সমাপ্ত, রাজপুরুষদের ভয় সাভারকরদের ছেড়ে দিলে ওই নেভা আগুন যদি আবার জ্বলে ওঠে!

    এছাড়া আরো একটা কারণ রয়েছে। সাভারকরের প্রেরণায় ইংল্যান্ডের এক ইংরেজ রাজপুরুষের হত্যা হয়েছিল। এ নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিশেষ রাগ। রয়্যাল ক্লেমেন্সির সময়েও রাজবন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে বলা হয়েছিল হত্যা এবং ডাকাতির অভিযুক্তদের যেন ছাড়া না হয়। এই নীতিও সাভারকরের মুক্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।[13]

    স্পষ্টতঃ শচীন কোন মাফিনামা লেখেন নি। সম্পতদের প্রেক্ষিত বাদ দিয়ে এক লাইন তুলে ‘মাফিনামার’ গল্পটি অর্ধসত্য বললেও কম বলা হয়।

    সাভারকর ভাইদের মুক্তির জন্যে মূল ভুখণ্ডে প্রয়াস

    শচীন তাঁর পৈতৃক গৃহ বেনারসে ফিরে গিয়ে তাঁর পুরনো কাজের জায়গা গোরখপুর গিয়ে সাভারকর এবং বাকি যারা সেলুলার জেলে পড়ে আছেন সেই সব সহবন্দীদের মুক্তির জন্যে বড় বড় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দরবার করতে লাগলেন। খুব একটা ফল হল না।

    অসহযোগ আন্দোলন চলছে। দেশের পারা চড়ছে। ইতিমধ্যে শচীন, বিনায়ক সাভারকরের ছোটভাই ডঃ নারায়ণ রাও সাভারকরকে চিঠি লিখে বললেন — বাকি রাজবন্দীদের মুক্তির জন্যে জোরদার চেষ্টা করতে হবে।

    ১৯২০ সালে কোলকাতায় কংগ্রেসের স্পেশাল কনফারেন্সে অ্যানি বেসান্ত, বি সি চ্যাটার্জি , লালা লাজপত রায় রাজবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে কড়া প্রস্তাব রাখলেন।

    তারপর সে’বছরই নাগপুর কনফারেন্স। বিশ হাজার ডেলিগেটস উপস্থিত । শচীন কনফারেন্সের ‘সাবজেক্ট কমিটি’র সদস্য। বিপিন চন্দ্র পালকে খুব ধরলেন—রাজবন্দীদের মুক্তির জন্যে একটা কিছু করতেই হবে। পাল একটা খসড়া বানালেন। চিত্তরঞ্জন দাশের প্রচেষ্টায় কংগ্রেসে প্রস্তাবটি পাশ হল। শচীন বক্তব্য রাখার জন্যে পাঁচ মিনিট সময় পেলেন। এই প্রথম কোন বাঙালী পশ্চিম ভারতে হিন্দিতে বক্তব্য রাখল। শেষ হোলে নারায়ণ সাভারকর শচীনকে বললেন যে তোমার কথা শুনে অনেক শ্রোতা কাঁদছে।

    তারপর উনি এবং নারায়ণ সাভারকর গিয়ে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জিকে ধরলেন। সুরেন্দ্রনাথ প্রথমে বললেন—তোমরা বিপ্লবীরা তো আমাকে গাল দাও। তারপর দু’জনে মিলে বুঝিয়ে সুজিয়ে সাভারকরের ভাইদের জন্য কিছু করতে ওনাকে সম্মত করালেন। সুরেন্দ্রনাথ সব শুনে নোটস্‌ নিলেন।

    কিন্তু হতাশ শচীন পরে লিখলেন — কিছুই করতে পারি নি। ব্রিটিশ সরকার যাকে ইচ্ছে তাকে ছেড়েছে।

    মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের চাপে জনমানসে রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি চাপা পড়ে গেছে। জনগণ বিপ্লবীদের সম্বন্ধে একরকম উদাসীন, আগের সেই স্পিরিট আর নেই। কিন্তু বঙ্গের বিপ্লবী আন্দোলন তিরিশ বছরের দমন উৎপীড়নেও নিভে যায় নি। শেষমেশ, বঙ্গের গভর্নর, দেশের ভাইসরয় এবং ইংল্যান্ডের মন্ত্রীরা মানতে বাধ্য হলেন যে জনগণের সহযোগ না পেলে বঙ্গের বিপ্লবী আন্দোলন থামানো অসম্ভব।[14]

    সাভারকরের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডিঃ

    কিন্তু কোথাও যে কিছুই হচ্ছিল না এমন নয়। সাভারকরের স্মৃতিকথা অনুযায়ী ইউনাইটেড প্রভিন্স, অন্ধ্রের এবং বোম্বাইয়ের প্রাদেশিক সম্মেলন আন্দামানের রাজবন্দীদের নৈতিক সমর্থন জানিয়ে প্রস্তাব পাশ করল।[15] দেশের জাতীয়তাবাদী পত্র-পত্রিকা, যেমন বোম্বে ক্রনিকল, সমস্ত রাজবন্দীদের জন্যে ‘ এ জেনারেল অ্যামনেস্টি’র দাবিতে সোচ্চার হল। সাভারকরের স্বাস্থ্য নিয়ে আশংকা প্রকাশ করা হল।

    অনেক রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবী লেজিসলেটিভ কাউন্সিল এবং সরকারকে চিঠি লিখে সাভারকর ভাইদের, অন্ততঃ বাবারাওকে ছেড়ে দেবার দাবি করতে লাগলেন। কিন্তু বোম্বে প্রভিনশিয়াল সরকার অনঢ়, বাবা রাওকেও নয়।

    সাভারকরেরা বড় দুইভাই প্রচণ্ড কংগ্রেস বিরোধী, কিন্তু ছোটভাই ডঃ নারায়ণ রাও কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য। উনি মার্চ ১৯১৯শে অনেক চেষ্টায় আন্দামানে বড় দুইভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার বিশেষ অনুমতি পেলেন। সঙ্গে নিলেন নিজের স্ত্রী শান্তা এবং বিনায়কের স্ত্রী যমুনাকে। বড়বৌদি যেসুবাঈ, বাবারাওয়ের স্ত্রী, অসুখে ভুগে গত হয়েছেন।

    জেল টিকিটের বিবরণ অনুযায়ী ওঁরা সেলুলার জেলে প্রথম দিন একঘন্টা, দ্বিতীয় দিন একঘন্টা কুড়ি মিনিট দেখা করার সময় পেলেন।

    বিনায়ক তাঁর স্ত্রী যমুনার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলার জন্যে অতিরিক্ত আরও আধঘন্টা সময় পেলেন। দুজনের দেখা হল আট বছর পরে। কিন্তু ওঁর মাতৃসমা বৌদি আর ইহজগতে নেই!
    উপরোক্ত পরিপ্রেক্ষিতে বিনায়ক সাভারকর তাঁর সাত নম্বর মাফিনামাটি ৩০মার্চ, ১৯২০ তারিখে লিখলেন।[16]

    (চলবে)

    [1] বৈভব পুরন্দরে, ‘সাভারকর’, পৃঃ ১৪৯
    [2] ঐ। *যুদ্ধে রাজবন্দীদের ভলান্টিয়ার করে পাঠানো
    [3] পুরন্দরে, “সাভারকর”, পৃঃ ১৫১
    [4] দুর্বা ঘোষ, ‘জেন্টলম্যানলি টেররিস্ট’, কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০১৭
    [5] ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, “জেলে ত্রিশ বছর ও পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম”, পৃঃ ১৩৯
    [6] ঐ, পৃঃ ১৪০
    [7] ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, “জেলে ত্রিশ বছর ও পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম”, পৃঃ ১৪০-৪১
    [8] শচীন্দ্রনাথ সান্যাল, ‘বন্দী জীবন’, পৃঃ ১৯৭
    [9] ত্রৈলোক্যনাথ, পৃঃ ১২২
    [10] Vikram Sampat, ‘Savarkar: Echoes from Andaman’, pp-355
    [11] শচীন্দ্রনাথ সান্যাল, ‘বন্দী জীবন’, পৃঃ ২০৫
    [12] শচীন্দ্রনাথ সান্যাল, ‘বন্দী জীবন’, পৃঃ ২০৬
    [13] ঐ, পৃঃ ২২৩
    [14] ঐ, পৃঃ ২১৭
    [15] সাভারকর, ‘অ্যান ইকো ফ্রম আন্দামান’, পৃঃ ৬২-৬৩
    [16] পুরন্দরে, “সাভারকর”, পৃঃ ১৫৯

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন