ধেত্তেরি!আমারই দোষে আগের পোস্ট উড়ে গেল, পরেরটা পেস্ট হল। যাকগে শর্টে সারছি।
@অরণ্য,
সবচেয়ে আগে মিঃ ভোপটকর সাভারকরকে "স্বাতন্ত্র্যবীর" আখ্যা দেন। সেটাই পরে সংক্ষেপে শুধু "বীর" হয়ে যায়। এসব কখন কেন ঘটেছিল সেটা ঠিক সময়ে বলা হবে।
তবে সাভারকরের এই টাইটেল বেশ পছন্দ ছিল। চিত্রগুপ্ত নাম দিয়ে নিজের জীবনী নিজে লেখার গল্প যথাসময়ে আসবে।
বন্ধুরা,
আমার একটা কথা বলার ছিল।
বীর, ভীতু, সাহসী, কাপুরুষ, ভা্ল মন্দ, --এসব তো অভিধা বা বিশেষণ। এগুলো ভ্যালু জাজমেন্ট। তাই বেশির ভাগ সময় এতে বক্তার মাইন্ডসেট এবং প্রেজুডিস কাজ করে।
ইতিহাস চর্চায় এটা এড়ানো অসম্ভব। কিন্তু সবচেয়ে আগে দরকার ফ্যাক্ট বা ঘটনাগুলোকে ঠিক করা। মিথ এবং গল্পকথার থেকে বাস্তবে কি ঘটেছিল সেটা আলাদা করা।
আসুন, আমরা সবাই মিলে আগে তথ্য এবং পালটা তথ্যগুলোর বিশ্বাসনীয়তা কতখানি --সেটা খতিয়ে দেখি।
তারপর নাহয় সবাই মিলে নিজের নিজের পছন্দমত পুজো করব বা নিন্দে করব।
কিন্তু কোন ইতিহাসপুরুষকেই তাঁর সময় এবং প্রেক্ষিত থেকে বিচ্ছিন্ন করে চেরি পিকিং করলে তাঁকে বোঝা অসম্ভব হয়।
একটা উদাহরণ দিচ্ছিঃ
বেয়াল্লিশের আন্দোলনকে সাভারকর সমর্থন করেন নি। শুধু এই একটি ঘটনা থেকেই কি সাভারকরকে ইংরেজের চামচা বা ভীরু বলা যায় ? তখন তো আরও অনেকেই সমর্থন করেন নি, যেমন কমিউনিস্ট পার্টি, আম্বেদকর এবং জিন্না।
এঁদের প্রত্যেকেরই আলাদা এজেন্ডা, আলাদা কারণ ছিল।
তাই দরকার কোন কাজ কেউ কেন করলেন --সেটা বোঝা, সাভারকরের মানসকে বোঝা। যেমন কেসি গোড়াতে বলেছিলেন।
তারজন্যে আবার খিলাফত আন্দোলন এবং গান্ধীজির সমর্থনের লাভ্লোকসানের খতিয়ান দেখাও দরকার। ইতিহাস সাদাকালো রঙে বা সরল রেখায় চলে না।
একই মানুষ একসময় নায়ক, অন্য সময়ে বা বদলে যাওয়া প্রেক্ষিতে খলনায়ক হয়ে যান।
ধরুণ পুণের চাপেকর ব্রাদার্সের কথা। ১৮৯০ এর দশকে এঁরা ২২ জুন ১৮৯৭ তারিখে ব্রিটিশ অফিসিয়াল র্যান্ড এবং লেফটেন্যান্ট আয়ার্স্টকে গুলি করে হত্যা করেন নিজেরা ফাঁসিতে চড়েন।
এটা কিন্তু দেশ স্বাধীন করার কোন আন্দোলন বা প্রোগ্রামের অঙ্গ ছিলনা।
তখন পুণেতে প্লেগ মহামারী হয়ে দেখা দিলে র্যাণ্ড সৈনিক দিয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে জোর করে ভ্যাকসিনেশন এবং রোগীদের কোয়ারান্টাইন করা ও মৃতদের আলাদা জায়গায় পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ জারি করেন।
এতে দেবস্থান এবং ধার্মিক রীতি রেওয়াজে হস্তক্ষেপের কারণে জনতা ক্ষূব্দ হয়।
এইরকম প্রতিক্রিয়া কি আমরা গতবছরই কোভিডের সময় দেখি নি? সেটা তো ১২৫ বছর আগের কথা।
চাপেকর ভাইয়েরা সেই রাগ থেকেই ওই দুটো হত্যা করেন।
আজ মনে হতে পারে র্যান্ড ঠিক করেছিলেন কিন্তু কমিউনিটির আবেগের কথা ভেবে অনেক নমনীয় কৌশল দরকার ছিল।
কাজেই চটপট লেবেল লাগানোর আগে দরকার চাল থেকে কাঁকর বেছে আলাদা করা। ইতিহাসের প্রমাণিত তথ্য আর মিথের তফাত চেনা।