বাংলাদেশ এগোতে চাইলে ভারতই বা পিছন পানে চাইবে কেন? : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৩ নভেম্বর ২০২১ | ২৩২৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
প্রাথমিকভাবে এই ঘটনা ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুর বিবাদের আবর্তে ঘুরপাক খেলেও, ঘটনা পরম্পরার প্রবাহ কিন্তু ইতিমধ্যেই অন্য খাতে বইতে শুরু করেছে। বর্তমান ঘটনার পরম্পরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু, কিংবা হিন্দু-মুসলমানের দ্বন্দের সীমারেখাকে ছাপিয়ে রাষ্ট্রের ধার্মিক চরিত্রের মৌলিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তাকে ভীষণভাবে উস্কে দিয়েছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বর্বরোচিত হিংস্রতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের দায়িত্বশীল নাগরিক সমাজ বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় উদ্দীপ্ত হয়ে পুনরায় ‘রাজধর্মহীন’ রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। শাহবাগ স্কোয়ারের সমবেত সুধী নাগরিকেরা এমন এক রাষ্ট্রের দাবীতে সোচ্চার হয়েছেন, যে রাষ্ট্র কোন নির্দিষ্ট ধর্মীয় আভরণে নিজেকে মুড়ে রাখবে না। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র হোক সবার। রাষ্ট্রের নিজস্ব কোন ধর্ম থাকবে না।
বহুত্ববাদী ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কতটা বাস্তব সঙ্গত? : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৪ মার্চ ২০২৪ | ১৩৫৪ বার পঠিত
সম্প্রতি বিজেপি পরিচালিত, যা রাজ্যপালের অনুমোদন সাপেক্ষে আইনে পরিণত হয়ে সমগ্র উত্তরাখণ্ড রাজ্যে লাগু হবে। উত্তরাখণ্ড সরকারের এই পদক্ষেপ ভারতবর্ষে আবহমান কাল ধরে প্রতিষ্ঠিত ও লালিত ‘বহুত্ববাদ’ সম্পর্কিত বেশ কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রশ্নও খুঁড়ে বার করে ফেলেছে। ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ বা ‘ইউসিসি’ আসলে এমন কিছু দেওয়ানি বিধি, যার দ্বারা ধর্ম-বর্ণ-জাতপাত নির্বিশেষে সমাজের সকল অংশের মানুষের ব্যক্তি জীবনের ধারাকে এক সূত্রে বেঁধে রাখার উদ্দেশ্যে প্রযুক্ত জাতীয় নিয়মবিধি, যা সকলের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার, দত্তক ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়সমূহের অভিন্ন নিয়মবিধি ‘ইউসিসি’-র আওতাধীন।
সংবিধানের 'অনুচ্ছেদ ৩৭০' অবলোপনের ছায়াপথ বেয়ে : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৫ মার্চ ২০২৪ | ১১৪২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
৫ই অগাস্ট, ২০১৯। ভারত রাষ্ট্র এবং জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের কাছে নিঃসন্দেহে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতির আদেশনামা বলে বিগত ৭০ বছর ধরে জম্মু-কাশ্মীরে লাগু থাকা ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের ঐতিহাসিক বিলুপ্তি। শুধু তাই নয়, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে জম্মু-কাশ্মীরের অস্তিত্বকে বিলোপ করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভাজন। আশ্চর্যজনক হলেও সেইসঙ্গে একথাও ধ্রুব সত্য যে, তা ঘটানো হয়েছিল কাশ্মীরকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন ও অবরুদ্ধ করে এবং কাশ্মীরী জনতাকে সম্পূর্ণভাবে অন্ধকারে রেখেই। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের এই অবলুপ্তির পক্ষে-বিপক্ষে তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তিতর্ক নিয়ে কাঁটাছেঁড়ার আগে জম্মু-কাশ্মীরের ঐতিহাসিক অবস্থান এবং জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রবর্তনের সূত্রপাত বিষয়ক কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের সাথে আলাপচারিতা অবশ্য প্রয়োজন।
প্রকৃতির রুদ্রমূর্তির কাছে সুন্দরবনের আত্মসমর্পণ বিনা আর কি কোন পথ নেই! : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : পরিবেশ | ১৫ জুলাই ২০২৪ | ১২৭০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
কালের নিয়মে, হিংস্র মৃত্যুদানবের উন্মত্ত নেশাতে এক সময় অবসাদ এসে জমাট বাঁধে। অহর্নিশি তোলপাড়ের ক্লান্তিতে খরস্রোতা নদীর চোখ ক্ষণিকের তরে বুজে আসে। বিধ্বস্ত চরাচরে ঝুপ করে নেমে আসে শ্মশানের স্তব্ধতা। গোবর নিকানো আদুরী উঠোনময় শুধু চরে বেড়ায় স্মৃতির বিধ্বংসী খণ্ডচিত্র। সুন্দরবনের মানুষদের আছেটাই বা কি, যে হারাবে! কিঞ্চিত জমি-জিরেত, খান কয়েক গবাদি পশু, স্বপ্ন বোঝাই ডিঙি নৌকো, আর নদীর ওপারের ভয়াল বাদাবন।
গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য অবাধ মতপ্রকাশের পরিসর অপরিহার্য : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৫ আগস্ট ২০২৪ | ১২১৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
অভিযোগটা যদি দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে কোন ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে হয়; কিংবা দেশের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে খেপিয়ে তোলার প্রসঙ্গে হয়, নিঃসন্দেহে তা গুরুতর এবং তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে কঠোরভাবে দণ্ডনীয়ও বটে। সুতরাং, দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে রাষ্ট্র যদি কোন বিষয়কে বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় নিয়ে আসে, তা রাষ্ট্রের মৌলিক কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু অনিবার্যভাবে প্রশ্ন উঠবেই, যদি দেখা যায় যে, দেশের অখণ্ডতা রক্ষার খোলসের আড়ালে রাষ্ট্র যদি দেশের নাগরিক সমাজের বাক্ স্বাধীনতা ও অবাধ মতপ্রকাশের অধিকারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খর্ব করতে উদ্যত হয়।
যুদ্ধ শুরু হোক কাশ্মীরে নিশ্চিন্ত সূর্যোদয়ের সন্ধানে : ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২২ জুন ২০২৫ | ৪৪২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাকাণ্ড স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের অন্যতম শোকার্ত কালো অধ্যায়। গত ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ বৈসরন উপত্যকায় যে নৃশংসভাবে নিরীহ পর্যটকদের হত্যা করা হল, তা সমগ্র ভারতবাসীর হৃদয়ের প্রতিটি শিরা-উপশিরা তীব্র শোকার্ত তরঙ্গে প্লাবিত করেছে। অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই এই পৈশাচিক হত্যালীলার প্রতিক্রিয়ায় সমগ্র দেশবাসী একদিকে যেমন স্বজন হারানোর শোকে মুহ্যমান হয়েছে, তেমনি অন্যদিকে এই বর্বরোচিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে সমগ্র দেশ তীব্র প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা জুড়ে হতভাগ্য সহনাগরিকদের জন্য সমবেদনার হাহুতাশ এবং বদলার নেওয়ার উদ্বেল আহ্বান। রাষ্ট্র পরিচালকদের বক্তব্য জুড়ে যোগ্য জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার। কোন সন্দেহ নেই যে, ঘটনার নারকীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে এই সবই অত্যন্ত স্বাভাবিক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু মৌলিক প্রশ্নটা হল, বদলাটা কার বিরুদ্ধে? কোন পথে? যোগ্য জবাবই বা কোন অর্থে?