সুন্দরবন এতদিন আমাদের বাঁচিয়েছে কিন্তু এখন সুন্দরবনকে কে বাঁচাবে? : কল্লোল মুস্তাফা
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২৯ আগস্ট ২০১৩ | ৩৮৮৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩২
সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে যেমন ১৪ কিমি দূরত্বের কথা বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চলছে, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ফায়েত্তি কাউন্টিতে ১৯৭৯-৮০ সালে ১২৩০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সময়ও স্থানীয় মানুষকে এভাবে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। এমনকি কিছু দিন পরে এর ক্ষমতা বাড়িয়ে ১৬৯০ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ করা হয়। ফলাফল সাথে সাথে বোঝা না গেলেও ৬৬ থেকে ১৩০ ফুট উচু বিশালাকৃতি পেকান বৃক্ষগুলো(একধরণের শক্ত বাদাম, কাজু বাদামের মতো) যখন একে একে মরতে শুরু করল ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ১৯৮০ থেকে ২০১০ সালের হিসেবে ফায়েত্তি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস বিশেষত সালফার ডাই অক্সাইডের বিষ ক্রিয়ায় পেকান, এলম, ওক সহ বিভিন্ন জাতের গাছ আক্রান্ত হয়েছে, বহু পেকান বাগান ধ্বংস হয়েছে, অন্তত ১৫ হাজার বিশালাকৃতির পেকান বৃক্ষ মরে গেছে। এবং এই ক্ষতিকর প্রভাব কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এমনকি ৪৮ কিমি দূরেও পৌছে গেছে।
কানন দেবী : কল্লোল লাহিড়ি
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সিনেমা | ২৮ আগস্ট ২০১৬ | ১৪৮৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
ভয় পেয়ে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটা। অনেক লোকের মাঝে তাকে সকাল থেকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এই পাড়াতে, এইরকম বাড়িতে আগে কোনোদিন আসেনি সে। তার বাড়ির লোকেরাও কোনোদিন আসেনি। তাকে আসতে দিতেও মন চায়নি তাদের। প্রায় জোর করেই চলে এসেছে ছোট্ট মেয়েটি। কারণ সে জানে তার ওপর এবার সংসারের অনেকটা দায়িত্ত্ব। কিছুদিন আগেই বাবা মারা গেছেন। মাকে সঙ্গে নিয়ে তাকে উঠে আসতে হয়েছে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানে সারাদিন, সারা রাত অমানুষিক পরিশ্রম করেও বাড়ির লোকের মন পায়নি তারা। চলে আসতে হয়েছে সেই অপমানকর আশ্রয় থেকেও। মায়ের সেই দুঃখ ছোট্ট মেয়েটি ভুলতে পারেনি কোনোদিন। ভুলতে পারেনি পড়শিদের সেই কানা-ঘুষো। আসলেই যাকে বাবা বলে ডাকতো, আদতে সেই কি ছিল তার বাবা? নাকি মায়ের অন্য কেউ...? লজ্জায় রাঙা হয়ে যেত ছোট্ট সেই মেয়েটার মুখ। দারিদ্র্য ছিল। কিন্তু দারিদ্র্যের সাথে সম্মানবোধ ছিল খুব তীব্র। ছোট্ট মেয়েটা মনে মনে পণ করেছিল আর যাইহোক দিদি, মা, এই সংসারটাকে সে কোনোদিন ভেসে যেতে দেবে না। সবাই যাতে দুবেলা খাবার পায়, পড়ার কাপড় পায়, মাথা গোঁজার জায়গা পায়, সন্মানের সাথে জীবন নির্বাহ করতে পারে তার জন্য ছোট্ট মেয়েটা নিজের সমস্ত শখ, আহ্লাদ, নিজের ছোটবেলাটা বিসর্জন দিয়ে একলা একলা প্রতীক্ষা করছে। অনেক আলো, অনেক যন্ত্রপাতি আর বেশ কিছু রঙ-চঙে মানুষের মাঝে। মনে হচ্ছে আজ তার অগ্নি পরীক্ষা। হ্যাঁ, এই ছোট্ট বয়সেই।
রিকশা ফ্যাশনের নান্দনিকতা এবং : কল্লোল মুস্তাফা
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ০৪ এপ্রিল ২০১১ | ১৯৬৭ বার পঠিত
সামনের অন্ধকার ভবিষ্যতের আশংকায় দিশেহারা রিকশা শ্রমিকরা উপায়ন্তর না দেখে অবশেষে শুরু করেন ভাঙচুর। সেই ভাঙচুরে স্বাভাবিক ভাবেই গাড়িওয়ালা উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে অফিসগামী পথচারী মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। সেই ভোগান্তির চিত্র, খবর পত্রিকার পাতায় বিশদ ভাবে স্থান পেলেও যে নির্মম বাস্তবতায় রিকশা শ্রমিকেরা এই ""তান্ডব'' চালাতে বাধ্য হয়েছেন তা কিন্তু তথাকথিত গণমাধ্যমে স্থান পায়নি। তাই বাস-গাড়ি থেকে তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে পথচারী আহত হওয়ার খবর ছাপা হলেও, কিংবা গাড়ি-যাত্রী শিশুর কান্নার ছবি ছাপা হলেও রিকশা চালকের অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা, বস্তির জীর্ণ ঘরে অপুষ্ট শিশুটির শুকনো মুখের ছবি আমরা পত্রিকার পাতায় দেখিনা। এগুলো গণমাধ্যম না শ্রেণীমাধ্যম?
গুরু বলি কারে : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৩ মে ২০১১ | ১২৬৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
- তবে ভেবে দ্যাখ দিনি, এই জগত সংসারের হাজার হাজার কোটি কোটি মানুষদের মধ্যে তুই লাখে এক।
- তা বটে।
- কেমন গর্ব হয় বল?
- তা হয়।
- হয়ে গ্যালো। তোরে অহম ধরলো। তোর দ্বারা আর কিছু হবে না।
- সে তো তুমিও।
- অ্যায়, ধরেছিস এক্কেরে ঠিক।
- তবে?
- তাই তো মাধুকরী।
- সে আবার কী?
- সে ভিক্ষেই তো। ভিক্ষে করলে সবার কাছে মাথা নীচু করতে হয়। মাথা নীচু করতে শেখ, তবে পার পাবি। রোজ তিন জনের কাছে ভিক্ষে করবি। পয়সা চাইবি না। এই যেমন চা খাওয়াতে বলবি, একটা বিড়ি চাইবি, তাতেই হবে। সক্কলের কাছে মাথা নীচু করতে শিখবি।
সেই যে মাথাটা নামিয়ে দিয়েছিলেন।
অমাবস্যায় চাঁদের উদয়। সে তো গুরুই পারেন। যিনি অ¡ন্ধার (গু) দূর করেন (রু)।
আমার সনাতন গুরু।
প্রিয় বইয়ের সাথে আলাপ : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বই | ১৯ এপ্রিল ২০১০ | ২৩৯১ বার পঠিত
একদিকে শার্লক হোমস যখন আঙ্গুলের ক্ষয়ে যাওয়া নখ, জুতোর গোড়ালি, কলারের ভাঙ্গা কোনা থেকে মানুষ সম্পর্কে "অকাট্য" ধারণা তৈরী করছেন, তখন একটা মানুষের বলা গল্পের পটভূমি, তার শরীরভাষার মতন, সেইসময়কার যুক্তিকাঠামোর বাইরে থাকা বিষয় কে, গুরুত্ব দিয়ে ভাবা - নি:সন্দেহে সাহসের পরিচয়। এর কিছু আগেকার ঘটনা (১৮৩৮) গৌতম ভদ্র তার "জাল রাজার কথা"তে, দেখিয়েছেন মানুষ চেনার ঐ সব লক্ষণগুলিকে, ঔপনিবেশিক বিচারব্যবস্থা কিভাবে অস্বীকার করছে।
প্রিয় বইয়ের সাথে আলাপ : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ এপ্রিল ২০১০ | ১১৯৮ বার পঠিত
একদিকে শার্লক হোমস যখন আঙ্গুলের ক্ষয়ে যাওয়া নখ, জুতোর গোড়ালি, কলারের ভাঙ্গা কোনা থেকে মানুষ সম্পর্কে ""অকাট্য"" ধারণা তৈরী করছেন, তখন একটা মানুষের বলা গল্পের পটভূমি, তার শরীরভাষার মতন, সেইসময়কার যুক্তিকাঠামোর বাইরে থাকা বিষয় কে, গুরুত্ব দিয়ে ভাবা - নি:সন্দেহে সাহসের পরিচয়।
মৃত্যুদণ্ড বিতর্ক : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৮ নভেম্বর ২০১০ | ১৩৭৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
কেন একজন খুনি, খুন হওয়া মানুষটির মানুষগুলির পরিবারের সেবাতে নিযুক্ত হবে না? কেন একজন চোর কায়িক বা মানসিক শ্রম দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষটির ক্ষতিপূরণ করবে না? ঠিক ঠিক এমনটিই হতে হবে তার কোন মাথার দিব্যি নেই, অন্য অনেক কিছুই হতে পারে যার মূলে থাকবে অপরাধী মানুষটির অপরাধবোধকে জাগিয়ে তোলা। কোন বিচার-আইন-শাস্তি ব্যবস্থা যতক্ষণ না অপরাধীকে মানসিকভাবে তার অপরাধের গুরুত্ব, সমাজে (বৃহত্তর এবং সংকীর্ণ সব অর্থেই) তার কুপ্রভাব সম্পর্কে সচেতন না করতে পারছে ততক্ষণ সে ব্যবস্থা অর্থহীন। অপরাধ লাঘব বা নির্মূল করার লড়াইয়ে তা চূড়ান্ত ব্যর্থ।
সোনামুখীর মাওবাদীরা : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | খবর : টাটকা খবর | ১৯ জুলাই ২০১০ | ১১৫৪ বার পঠিত
৩০ জুন, ভোর ৫টা। গ্রামটি ঘিরে ছিলো যৌথ বাহিনী ও স্থানীয় পুলিশের ৩০০ জনের একটি দল। জঙ্গলে ঝোপে লুকিয়ে ছিলো লাঠি আর বন্দুক। শেষ পর্যন্ত ওরা এলো। মাথায় কলো কাপড়, জংলা ঊর্দি গায়ে ওরা এলো অসংখ্য জিপ আর কালো ভ্যান নিয়ে। সাথে এলো ওখানকারই বীরচন্দ্রী গ্রামের বীর চাঁদেরা, সিপিএম কর্মীরা। প্রশান্ত দাস আর জিতু সাউ, স্থানীয় সিপিএম নেতা। এরা অবশ্য এর কিছুদিন আগে থাকতেই সোনামুখীতে আসছে আর শাসিয়ে যাচ্ছে মহিলাদের - ইজ্জত থাকবে না।
৩০ জুন, যখন যৌথ বাহিনী এলো তখন গ্রামের পুরুষরা সবাই গ্রাম ছেড়ে গেছে। সেটা বড়ো কিছু নয়। এ তো নিত্যনৈমিত্যিক। পুলিশ বা যৌথ বাহিনী আসছে খবর পেলেই পুরুষদের গ্রাম ছেড়ে যেতে হয়। এটাই নিয়ম। অন্যথায় মার-ধোর, জেল-হাজত, মিথ্যা মামলা-হয়রানি। সোনামুখী ও তার আশেপাশের গ্রাম বীরহান্ডি, শিমলি, বাঁকশোল, ঘৃতখাম, দিদিধা, জারুদিয়ায়ও এসব নিত্যিকার ব্যাপার স্যাপার।
সরকারী খবর, সোনামুখীতে মাওবাদীরা ছিলো। অথচ সেদিন যারা আহত, লঞ্ছিত হয়েছেন দুজন বয়স্ক মানুষ বদে সকলেই মহিলা ।
ব্যাঙ্গালুরুর ফ্যাৎরা পুজো : কল্লোল দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ অক্টোবর ২০১১ | ১০৯৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
সাঁঝের ঝোঁকে তিন মূর্তি হাজির। জলপথে আড্ডা চলছিলো এক শুক্কুর সন্ধ্যায় বন্ধু পম্পা-নীলাঞ্জনের ছাদে, সেখানে প্রায় চাঁদেরই সাম্পান বেয়ে হাজির, সৈকত, বরুণ আর গৌরব। তিনজন তিন আকৃতির। সৈকতকে ভীমের রোল দিলে আর কেউ ঠেক খাবে না। গৌরব বেশ গণেশ মতন, আর বরুণ ফ্রেঞ্চ কাটে কাত্তিকটি। এরা তিনজনাই বেঙ্গলী-ইন-ব্যাঙ্গালোরের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। সাঝেঁর ঝোঁকে এহেন অতর্কিত হামলা - কওহে ইহার কারণ কী?
এক্সট্রা : কল্লোল লাহিড়ী
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১৪ নভেম্বর ২০২০ | ৩৬১৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
বিজু স্কুলে এসে জানতে পারলো হেডস্যার আসতে পারেনি। তার নাকি জ্বর। কাল কোন এক স্যার চাল বিলির ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আজ তারা খাবে কী? রান্না হবে কি দিয়ে? এইসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে বিজু যখন বাড়ি ফিরলো বাবাকে দেখে সে অবাক হয়ে গেল। বাবা দাড়ি কামিয়ে, চান করে, আলমারী থেকে জামা কাপড় বের করে, পরে, রেডি হয়ে বসে আছে। বিজুকে দেখতেই বাবা বললো তাড়াতাড়ি চান করে নে বিজু। একটু পরেই আমরা বেরিয়ে যাবো। গনেশ কাকু গাড়ি নিয়ে আসবে। বিজু তো অবাক। কোথায় যাবো আমরা বাবা? বাবা বলে সেও জানে না। কোন একটা জায়গা। শ্যুটিং দেখবো। বিজুর চোখ বড় বড় হয়ে যায়। ফিল্মের শ্যুটিং বাবা? বাবা ঘাড় নাড়ে, হ্যাঁরে ফিল্মের শ্যুটিং। বলেছে নাকি শ্যুটিং দেখাবে। খেতে দেবে। চল চল দেরি করিস না।