শুভেন্দু অধিকারী জয় বাংলা স্লোগান শুনে কালকে রাস্তায় একজনকে মারতে গিয়েছিলেন। জয় শ্রীরাম বলে খানিকক্ষণ চেঁচামেচি করেন, তারপর রোহিঙ্গা বলে গাল দেন, এবং সবশেষে নিজের নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে হিন্দিতে আদেশ দিয়ে ওই একলা বাঙালি যুবকটিকে ঠ্যাঙান। এই ভিডিও ভাইরাল (বিশদে জানতে হলে গুরুর ভিডিও চ্যানেল দেখুন দুপুর ১২টায়)। খিল্লি, ছিছিক্কার সবই হচ্ছে, কিন্তু দেখুন, যে যাই বলুন, শুভেন্দুর প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমবেদনা আছে। কেউ কেউ বলবেন, উনি নিজের পার্টির পিছনেই বাঁশ দিয়েছেন। সেটা ঠিকই, কারণ ওঁর দলের নেতারা বাংলায় এসে বাঙালি হবার চেষ্টা করছেন, কেউ জয় মা কালী বলছেন, কেউ তো জয় বাংলাও বলছেন। শুনে যদিও ভারতীয় জেমিনি-সার্কাস পার্টির মতো লাগছে, কিন্তু চেষ্টায় কোনো খামতি নেই। কেন করছেন? না, বাংলায় জয় ... ...
জাত গোখরো চতুর্দিকে। জনৈক অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী গতকাল বললেন শুনলাম, বাঙালির উপর কোথাও কোনো আক্রমণ হচ্ছেনা। রাগ করে লাভ নেই, বলিউডি নায়করা মূলত অশিক্ষিত, এঁদেরকে আক্রমণের লিস্টি, এনআরসির ইতিহাস বলে লাভ নেই। তার আগের দিন শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ভিন-রাজ্যের বাঙালি আতঙ্কিত নাকি মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে। জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে হচ্ছিল, যে, আগে বাঙালি তাড়ানো শুরু হয়েছে, না আগে ভাষণ? কিন্তু সেটা করেও লাভ নেই, কার্যকারণ সম্পর্ক গুলিয়ে না ফেললে হিন্দু বীর হওয়া যায়না। তাছাড়া ওই অর্ধেক-হিন্দি, সবদিক-বাঁচিয়ে-খেলা ভাষণের কারণে যদি কেউ বিপদে পড়েন, তাহলে মানতে হয়, যে রাজ্যে বিপদে পড়ছেন, সে রাজ্যের সরকারই বর্বর। ওটাতে কারো উপর কোনো থ্রেট একেবারেই ছিলনা। সত্যিকারের আপত্তিকর ভাষণ দিয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর উগ্র এবং চরম আপত্তিকর ভাষণে বাংলার অসমীয়ারা আতঙ্কে? এঁদের তবু একটা ... ...
বিশ্বাস না হলেও সত্যি। কাল এক টিভি চ্যানেল মনোজিৎ কাণ্ডে মনোজিতের মোবাইলে রেকর্ড করা অত্যাচারের ভিডিও সরাসরি দেখিয়েছে টিভিতে। যাচাই করার উপায় নেই, অন্তত, সেরকমই দাবী করেছে। "রিয়েল রেপ ভিডিও" বলে খুব নাকি সার্চ হচ্ছিল গুগলে। দর্শকের চাহিদা ছিলই। সেটা আর পানু চ্যানেলের হাতে ছেড়ে দেবে কেন। নিজেরাই দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্বাস না হলেও এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। "ন্যায়"এর ছদ্মবেশে বিকৃত যৌনতায় সুড়সুড়ি, বা সুড়সুড়িটাকেই ন্যায় বলা, বাংলার টিভি তো আজ শুরু করেনি। সন্দেশখালির সময় তারা যৌনদাসীর ফ্যান্টাসি তুলে ধরেছিল হই হই করে। ঠিক যেন আরব শেখ আর তার হারেমের আরব্য রজনী। আরজি করের সময় নিয়ে এসেছিল বহুজনে মিলে লাঞ্ছনার চিত্রকল্প। বেশ কিছু লোক মিলে ছিঁড়ে খাচ্ছে একটা মেয়েকে, চেপে ধরে আছে ... ...
আজ শমীক ভট্টাচার্য দ্বিতীয় ভাগ। এত লোক ছেড়ে এই দিগগজকেই সভাপতি করা হল কেন? কেনই বা এত চোখে লাগার মতো ফোকাস? টিভিতে দেখে মনে হচ্ছিল, বিরোধী দলের রাজ্যসভাপতি না, যেন মহারানী ভিক্টোরিয়া এসেছেন। নেহাৎই একটা দলের একটা রাজ্যের সভাপতি হয়েই এত অভ্যর্থনা আমার জীবদ্দশায় দেখিনি। দিলীপ ঘোষ বা সুকান্ত তো ননই, যা পড়েছি, শেষ পেয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু, কংগ্রেস সভাপতি হয়ে। তিনি অবশ্য সর্বভারতীয় সভাপতি হয়েছিলেন, অভ্যর্থনা মানুষের কাছে পেয়েছিলেন। এখানে মানুষ নেই, তাই মিডিয়া। তো, এইটা কেন? ওঁর ইতিহাসের দৌড় তো আগেরদিনই লিখেছি, মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, আর হিন্দুবীরের দৌড় হোয়াটস্যাপ অবধি। আজ অন্য বক্তব্যগুলো একটু ধরা যাক। আমাকে পছন্দ করুন, না করুন, এটা একটু মন দিয়ে পড়বেন, নইলে রাজনীতিটার তল খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ওঁর ... ...
শমীক ভট্টাচার্য নাকি এখন বাংলার নতুন নায়ক। চ্যানেলে চ্যানেলে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার। একটা সময় এরকম দিচ্ছিলেন ভগবান অভিজিৎ গাঙ্গুলি। তাঁর প্রথমে জজিয়তি গেল, এবার ভগবানের পোস্টও গেল, তাই এবার নতুন মুক্তিসূর্য। যেমন বাগ্মী, তেমন জেন্টলম্যান, যেমন বুদ্ধিজীবী তেমন পণ্ডিত। তা, চ্যানেলরা তাদের কাজ করুক, আমাদের একটু দেখে নিতে হবে, শমীকবাবুর দৌড় কেমন। সভাপতি হবার পরেই তিনি একটা সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে দেখলাম, অনেকক্ষণ ধরে তিনটে পয়েন্ট বললেন। এক এক করে দেখা যাক। ১। শমীকবাবু বললেন, সুভাষ বসুর কথা। ১৯৩৯ সালে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হবার পরেও তাঁকে কমিটি গঠন করতে দেয়নি কংগ্রেস। বরং হটিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস প্রণম্য বিপ্লবীদের মিসগাইডেড প্যাট্রিয়ট বলেছে। কোনো কোনো জায়গায় সন্ত্রাসবাদীও বলেছে। কথাটা ভুল না। কংগ্রেস এইসব পাপকর্ম করেছে। কিন্তু তার ... ...
আপনারা সবাই জানেন, যে, বিশ্বগুরু উনিজির আমলে ভারত স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘরে ঘরে দুধ, বাটিতে বাটিতে মধূ, হাতে হাতে পনেরো লাখ। চোর-ডাকাতের উপদ্রব তো একেবারেই নেই। কারণ, চোরদেরই চৌকিদার করে দেওয়া হয়েছে। বহিঃশত্রুরা খতম, সন্ত্রাসবাদ শেষ, পাকিস্তান আর উঠে দাঁড়াতেই পারছেনা। আক্রমন তো পরের কথা। ভারতে এখন অপার শান্তি, সংখ্যালঘুরা আনন্দে, মেয়েরা সারা রাত নিরাপদে হিরে জহরৎ পরে ঘুরছে। বাঙালিরা দু-হাত তুলে নাচছে। যেকোনো সময় তাদের পিটিয়ে বাংলায় ফেরত পাঠানো হতে পারে, তারপর বাংলাদেশে। কিন্তু তাতে সমস্যা কিছু নেই। বাঙালিরা তো সবাই এমনিই বাংলাদেশী। সবই ভালো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, উনিজির এই বাণী বিশ্বসংসারে কেউ বিশ্বাস করছেনা। এমনকি পরম মিত্র আমেরিকাও না। এই কয়েকদিন আগে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট ... ...
সের্গেই বুবকা বছর বছর নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙতেন, উনিজি সেটাকেও টপকে যাবেন ঠিক করেছেন। সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে পাইনগাছ কেলেঙ্কারির ব্যাপারটা আমরা জানি। ভাবা গিয়েছিল ওটাই বিশ্বরেকর্ড, কিন্তু সিঁদুর নিয়ে এই নতুন কেলেঙ্কারিটা সেটাকেও ছাপিয়ে যায়। গত আট তারিখ রাতে, গোদি মিডিয়া পাকিস্তানকে প্রায় ধ্বংসই করে দিয়েছিল। অনেক "দেশপ্রেমী"ই যুদ্ধ কী জিনিস জানেন না, কিন্তু সকালে উঠে নয়া লাহোরে বাড়ি কিনবেন ঠিক করে ফেলেছিলেন. উনিজিও সারা জীবনে প্লেন চালাননি কিন্তু হাতে হেলমেট নিয়ে এয়ারফোর্সের পোশাকে গোটা গোবলয় হোর্ডিং এ মুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কোথায় কী, ভারতের সেনানায়কই যা বললেন, তার মানে হল, পাকিস্তান তো ধ্বংস হয়ইনি, বরং ভারতীয় সেনা সম্ভবত একাধিক বহুমূল্য বিমান হারিয়েছে এই হামলা করতে গিয়ে। একাধিক, কারণ ইংরিজিতে তিনি বহুবচন ব্যবহার করলেন। সাক্ষাৎকারটা ... ...
কাল কী হল? গোদি মিডিয়া আবার সার্কাস দেখাল, এবং শিক্ষিত লোকজন আবার নাচলেন। মার্কিন মধ্যস্থতা এবং যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়ে গেল তো সব্বাই জানেন। সুমন্দে অর্ণব বা ময়ূখ এঁরা এত বড় সাংবাদিক, কিন্তু হবার আগে কেউ কিচ্ছু টের পাননি। কিন্তু হয়ে যেতেই তাঁরা রোমহর্ষক সব খবর পেতে শুরু করলেন। জি ২৪ ঘন্টা বলল, নেহাৎই 'পাকিস্তান চেয়েছে তাই সংঘর্ষবিরতি'। এবিপি আনন্দ জানাল 'পাকিস্তানের কান্নায় মার্কিন হস্তক্ষেপ'। সবার উপরে রিপাবলিক। তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিল 'এবার হাতে-পায়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা পাকিস্তানের'। সবই নির্ঘাত 'সূত্র'এর খবর। এদের জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল, ভাই আপনাদের সূত্র যদি এতই সুপারম্যান, তো জাঙ্গিয়া প্যান্টের নিচে পরেনা কেন, অর্থাৎ কিনা ... ...
সেদিনের কথা আমার খুব মনে পড়ে। আমরা তিন ভাই, মেজদার কঠোর তত্ত্বাবধানে নিঃশব্দে বিদ্যাভ্যাস করিতেছি। সুমনদা, ময়ূখদা ও আমি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি এবং গম্ভীর-প্রকৃতি মেজদা বারবার এন্ট্রাসে ফেল করিবার পর গভীর মনোযোগের সহিত ২০২৪ হইতে তৃতীয়বারের জন্য শাসন করিতেছেন। আমরা আড়ালে তাঁহাকে উনিদা বলিদাম, কারণ তাঁহার প্রচণ্ড শাসনে একমুহূর্ত কাহারো সময় নষ্ট করিবার জো ছিল না। আমাদের পড়ার সময় ছিল প্রাইমটাইমে, সাড়ে সাতটা হইতে নয়টা। এই সময়টুকুর মধ্যে কথাবার্তা কহিয়া মেজদার ‘পাশে’র পড়ার বিঘ্ন না করি, এই জন্য তিনি নিজে প্রত্যহ পড়িতে বসিয়াই কাঁচি দিয়া কাগজ কাটিয়া বিশ-ত্রিশ খানি টিকিটের মত করিতেন। তাহার সবকটিতে নানারকম ব্রেকিং নিউজ লেখা থাকিত। সেদিন ... ...
দেখুন, স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করেই বলি। একটু বড়, কিন্তু পড়ুন। ভারতীয় মিডিয়া যে কাণ্ডটা ঘটিয়েছে সবাই মিলে, বিশ্বের অন্য যেকোনো জায়গায় এর ভগ্নাংশ হলেও তৎক্ষণাৎ এদের চাকরি যেত। ওই অবধি গড়াতই না, কারণ তার আগে নিজেরাই পদত্যাগ করে ফেলতেন। কিন্তু এখানে এঁরা শুধু যে অপদার্থ তাইই নন, নেহাৎই দুকানকাটা বলে, পদত্যাগ তো দূরস্থান, এর পরের দিন আবার ওই শ্রীমুখ গুলিই টিভিতে দেখাবেন। মাথার উপরে কার স্নেহ আছে সেও আন্দাজ করা যায়, ফলে চাকরিও যাবেনা। এতে সমস্যা কিছু নেই, নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়ে ফেলেছেন। ভারতীয় মিডিয়া সারা পৃথিবীতে তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। চারদিকে খিল্লির চূড়ান্ত। এদেরকে কেন বিশ্বাস করছিনা, এই নিয়ে একজন দুদিন আগে জানতে চাইছিলেন। উত্তর, একদম বহুরূপে ... ...