বাংলাদেশ এখন ধর্মের লেবাসে আচ্ছন্ন। যে সেক্যুলার রাষ্ট্রের স্বপ্ন দু চোখে মেখে মুক্তিযোদ্ধারা এদেশকে স্বাধীন করেছিল, সেই স্বপ্নের গুড়ে বালি! বিগত ৫৪ বছরে যা ঘটেনি, তাই ঘটেছে এই ২৪'র জুলাই আন্দোলন'র পরে। স্বাধীনতাবিরোধী অতি ডানপন্থীরা সর্বগ্রাসী বিশ্বাসের ব্যবসায়ীরা তরুণ প্রজন্মের মননে বিশ্বাসের ভাইরাস ঢুকিয়ে দিতে এখন অধিকতর তৎপর। চলেন মূল ঘটনা নিয়ে কথা বলি। ডাকসু নির্বাচন গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে পটপরিবর্তনের পর এটিই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক নির্বাচন। যদিও এই নির্বাচনের সাথে জাতীয় রাজনীতিতে সরাসরি কোনো যোগসূত্র হঠাৎ ঠাউর করা যায় না, তবে এই কথাও মনে রাখা জরুরি যে, যুগে যুগে বাংলাদেশের ... ...
রাজনীতির মাঠে স্লোগান খুবই মারাত্মক ১টি অস্ত্র। এই অস্ত্রে কারো রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা নেই। মানে স্লোগান দিয়ে তো আর কাউকে রক্তাক্ত করা যায় না। তবে হ্যা, স্লোগানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা যায়। এবং ক্ষেত্রবিশেষে সেই উদ্বুদ্ধ জনতার অতি উৎসাহ'কে পূঁজি করে রক্তক্ষরণের অবস্থা সৃষ্টি করা সম্ভব। পাঠক নিশ্চয়ই এতক্ষণে ওয়াকিবহাল হয়ে গেছেন, আজকে আমাদের বাহাস হবে এই স্লোগান বিষয়ে! চলুন শুরু করা যাক! স্লোগানের ধারণা মানব ইতিহাসে মানুষ ঠিক কবে থেকে স্লোগান ব্যবহার করছে, তা সঠিক দিনতারিখ মেপে বলা কঠিন। স্লোগান তো আদতে এক রকমের নীতিবাক্য কিংবা আপ্তবাক্য। যে বাক্যে মূলত ৪টি বৈশিষ্ট্য থাকে। স্মরণীয় কথা, প্রভাবশালী অভিব্যক্তি, পুনরাবৃত্তিমুলক ছান্দসিক বাক্য এবং সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য। স্লোগান ... ...
বাংলাদেশের বুকের গভীর থেকে যেন এখন কেবলি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসছে। 'অভিশপ্ত' সময়ের কথা যদিও বা বলি, এই অভিসম্পাত কে কিংবা কারা দিয়েছে, কে জানে? হয়তো মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্ব হারানো সেই তরুণ শহীদ; যাঁর বুক জুড়ে এক সোনার বাংলার স্বপ্ন টগবগে রক্তস্নাত হয়ে আকুলিবিকুলি করতো, এরকম সেই সব আত্মদানকারী মহাত্মাদের দীর্ঘশ্বাস এখন এই দেশের ইতিহাস জুড়ে। শিরোনামে পরে আসছি গত ২৫ আগস্টের পত্র-পত্রিকা থেকে আমরা দেখলাম, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে এসে বলেছেন, একাত্তরের অমীমাংসিত বিষয় আগেই সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু সমাধানের সেইসব নথিপত্র কোথায়? বাংলাদেশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান যাতে ১টি রাষ্ট্র হিসেবে এবং জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি ... ...
চেতনা বিষয়ক প্রস্তাবনা আলোচনার প্রথমে আমরা খোলা মনে চেতনা বিষয়ক ২টা কথা ঝটপট শেষ করতে চাই। প্রথমত, 'চেতনা' হচ্ছে এমন বিষয়, যার মাধ্যমে ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত, রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক জ্ঞানসমৃদ্ধ এক রকমের প্রজ্ঞাপ্রসূত সচেতনতা সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ে 'সংক্রামিত' হয়। সংক্রমণের কথা বলার প্রধান কারণ, এই চেতনা ঠিক ভাইরাসঘটিত রোগের মতনই সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ত, চেতনা কখনোই ব্যক্তি পর্যায়ে থেমে থাকে না। যদি থেমে থাকে, যদি সমাজের দশ জনের বিবেচনাবোধের উপর প্রভাব বিস্তারে ব্যর্থই হয় তবে তাকে আমরা 'চেতনা' বলতে পারি না। চেতনা বস্তুত বহুরৈখিক এবং প্রায়োগিক সমষ্টিগত উপলব্ধি। ৭১'র বয়ান ১৯৭১ ছিল আদতে বাংলাদেশে বাঙালি এবং অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর মুক্তির সনদ। যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ... ...
যে কথা বলতে ভুলে গেছিআমি যখন এই সিক্যুয়াল গদ্য লেখা শুরু করেছিলাম, বলেছিলাম, জুলাই হয়তো বাংলাদেশের বুকে এক অভিশপ্ত মাস। তখন আমি আগস্টের কথা বলতে ভুলে গেছি। যা আমাদের ইতিহাসকে অসম্পূর্ণ ভাবে দেখাতে পারে। যা অন্যায় হয়েছে। কারণ একজন বাংলাদেশি হিসেবে এই '১৫ই আগস্টের রক্তাক্ত' অতীতের কথা ভুলে গেলে ইতিহাস আমায় ক্ষমা করবে না। একজন মননশীল মানুষ কখনোই তার অতীতের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া দগদগে ঘাঁ'কে বেমালুম ভুলে যেতে পারে না। তাই আমার সেই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ করে যদি বলি, তাহলে এরকম বলতে হবে, জুলাই হয়তো বাংলাদেশের বুকে এক অভিশপ্ত মাস। আর আগস্ট হলো বাংলাদেশের ইতিহাসের হৃদয়ে নিরবিচ্ছিন্ন রক্তক্ষরণ। ভুলকে শুধরে নিতেই আমার এই কথামালা। আমার ... ...
জুLie বিপ্লব এর আগে কয়েকটা কথা আমাদের বাংলাদেশে বারংবার বিপ্লবের অপমৃত্যু ঘটেছে। এই দেশে বিপ্লব অভিশপ্ত। এ যেন সেই স্বাধীনতার আগে থেকেই একই রকম একঘেয়ে। ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ যেমন হয়েছিল ধর্মকে কেন্দ্র করে, মুসলমানদের পাকিস্তান, হিন্দুদের হিন্দুস্তান; সেই বিপ্লবও ছিল এক মরীচিকা। যে জন্য ৪৭'র দেশভাগের পরপরই রাজপথে লোকের মুখে মুখে স্লোগান উঠেছিল 'ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যাঁয়'। বিপ্লবকে কেন অভিশপ্ত বলছি? ভেবে দেখেন, মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা, বাঘা যতীন, ক্ষুদিরাম, ভগত সিং, নেতাজি সুভাস প্রভৃতি ঐতিহাসিক ব্যক্তিরা বিপ্লব করেছিলেন ইংরেজ কলোনির বিরুদ্ধে। ইংরেজ চলে গেছে ঠিক। কিন্তু তারা 'ডিভাইড এন্ড রুল' ফর্মূলা প্রয়োগ করে এখনো আমাদের তাদের ছায়ার ... ...
মাইলস্টোন ট্রাজেডি এ বছরের জুলাই বিদায় নিয়েছে। এখন ঘড়িতে ১টা বেজে ২১ মিনিট। লিখতে বসেছি। মানে আগষ্টের প্রথম প্রহর চলছে। জুলাই কি বাংলাদেশের বুকে এক 'অভিশপ্ত' মাস? প্রতি বছর জুলাই আসে তার লকলকে লাল জিভ বের করে, কিছু না কিছু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটাবার জন্যই হয়তো আসে। গত বছরের জুলাইতে বাংলাদেশের জনজীবনে এবং রাজনৈতিক মহলে বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। গত বছরের জুলাই, মানে ২০২৪ সালে, 'কোটা সংস্কার আন্দোলন' এর মুখোশে 'সরকার পতনের' আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে এবং ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণকারীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অসংখ্য সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিল। জাতিসংঘের হিসেবে প্রায় ১৪০০ জন। যাক, এখন আমি সেই আলাপ নিয়ে এগোতে চাই না। অন্য ... ...
হুদাই। অলস। নড়বড়ে। মুখের সামনে থেকে খাবার নিয়ে গেলেও প্রতিবাদ করে না। মনে মনে ভাবে, বলে কী হবে? এতটা নির্বিষ হওয়া ভালো নয়। মনে হয়, পোকার কোনো সাহস নেই। যেন ভীতুর ডিম। কাফকার মেটামরফোসিস! তাই ছদ্মনামে আবির্ভাব। কথা বলতে হবে। তা মুখোশে মুখ ঢেকে হলেও। কথা তো বলতেই হবে। এখানে 'জোনাকি পোকা ৭১' আদতে পরিচয়ের আড়ালে রাখা বারুদের ভাষা। বাঙলাদেশের কোনো এক নিশুতি গ্রাম থেকে পোকা'র আবির্ভাব। এছাড়া পোকা'র বিশেষ কোনো পরিচিতি দেবার কিছু নেই। জোনাকি পোকা তো নিশিতের অন্ধকারে মিটিমিটি জ্বলে। জোনাকি তো নিজেকে জ্বালিয়ে অল্প আলোতে পৃথিবীর বিশেষ ভরকে ক্ষণিকের জন্য বহন করে। ৭১ হলো সেই ক্রান্তির চেতনা। ১৯৭১ সালে বাঙলাদেশের বুকের ভেতর যে ... ...
জোনাকি পোকা ৭১ আপনি দেশপ্রমী না কাজি নজরুল? ... ...