কিয়োতো, ওসাকা, নারা, কোবে এসব চারদিনে ঘুরে আমরা সবাই খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। শনিবার আর রবিবার জেবরাজের ছুটি থাকে তার সঙ্গে সে সোমবারও ছুটি নিয়েছে আমাদের গাড়ী করে কিছু জায়গা ঘোরাবে বলে। শনিবার কোথাও বেরোলাম না। রবিবার সকালবেলা উঠে লাঞ্চ তৈরি করে গাড়িতে নিয়ে ওদাইবা যাওয়া স্থির হল। ওখানেই বিচের ধারে বসে খাওয়া হবে। কিয়োতোর গলিতে গলিতে ঘুরেছি আমরা। সেখানে সনাতন জাপানী বাড়ি দেখার পরে টোকিও-তে মর্ডান জাপান দেখতে বেরোলাম। জাপানের রাস্তাঘাটে সামান্য কাগজের টুকরো খুঁজে পাওয়া দায়। এখানে আবর্জনা সংগ্রহ করে সেগুলোর সুষ্ঠূভাবে ডিসপোজাল একটা দেখার মতো বিষয়। সবওয়ার্ডের নিজস্ব গার্বেজ কর্ণার আছে। প্রত্যেক বাড়িতে দুটো করে ডাস্টবিন রাখতে হয়। একটা পচনশীল জিনিসের জন্য, আর একটা অপচনশীল জিনিসের জন্য। এই দুই ধরণের ... ...
চাইনিজে চান, কোরিয়ানে সিওন, ভিয়েতনামিসে থিয়েন তাই হল গিয়ে জাপানিতে জেন। বৌদ্ধ ধর্মের অনেক শাখার মধ্যে ‘জেন’ বুদ্ধিজম’ এশিয়ায় বহু;প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম শাখা। ভারি সহজ ও সাধারণ এই জেন বুদ্ধিজম। নেই আচার অনুষ্ঠানের বাড়াবাড়ি। ধ্যানের মাধ্যমে নিজের আত্মিক উন্নতি সাধনই এই ধারার মূলমন্ত্র। সুন্দরের প্রকাশকে নিজের মধ্যে উপলব্ধি করা আর অন্তরের সৌন্দর্যকে সুন্দর করে প্রকাশ করা জেন বুদ্ধিজমের ... ...
১২ ই এপ্রিল, শুক্রবার সকালে ওসাকার পাঠ চুকিয়ে আমরা চললাম কিয়োতো। কিয়োতো থেকে সন্ধ্যাবেলায় টোকিও ফিরে যাওয়ার জন্য আমাদের টিকিট হিকারিতে বুক করা আছে। বৃষ্টির জন্য অনেক কিছু দেখা বাকি রেখে কিয়োতো থেকে ওসাকা চলে এসেছিলাম তাই সকাল সকাল কিয়োতো দেখে তারপর সন্ধ্যার ট্রেনে ফিরব এমনটাই ঠিক করলেন আমাদের গাইড দিদিমণি। যেমন ভাবা তেমন কাজ। জে আর কিয়োতো লাইন ধরে ওসাকা স্টেশন থেকে কিয়োতো পৌঁছতে মিনিট কুড়ি ... ...
ইসুইএন বাগান থেকে হাঁটা পথেই তোদাইজি মন্দিরে পৌঁছে যাওয়াগেল। সকাল থেকে টই টই করে ঘুরছি তবু আমাদের ক্লান্তি নেই। এখন পৃথিবী বিখ্যাত দাইবুতসুদেন দেখতে চলেছি আমরা। নারাশহরের গর্ব এই মন্দির সম্রাট সমু ৭৪৫ সালে তৈরি করেন আর এইমন্দির উদযাপিত হয় ৭৫২ সালে ... ...
ওসাকা থেকে জে আর রেল পাস দিয়ে ইয়ামাতোজি লাইনের ট্রেন ধরে আমরা ষোল’শো শতক থেকে সিধে পৌঁছে গেলাম অষ্টম শতকের ইতিহাসের শহর নারা তে। ওখান থেকে ট্যাক্সি করে সিধে কোফুকুজি মন্দিরের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া গেল। নারা যুগ বলতে জাপানের ইতিহাসে ৭১০ থেকে ৭৯৪ সাল পর্যন্ত বোঝায়। জাপানের রাজতন্ত্রের শৈশব পর্বে ৭১০ সালে এখানে রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন রানী গেমমেই ... ...
ওসাকা বেশ বড় শহর। শুধু শহর নয় ওসাকা জাপানের কান্সাই অঞ্চলের অন্যতম পারফেকচার। সরকারি কাজকর্মের সুবিধার জন্য জাপানকে সাতচল্লিশটা পারফেকচারে ভাগ করা হয়েছে। ওসাকা বন্দরশহরও বটে। সকালে চোখ খুলেই যখন মনে পড়ল আজ ওসাকা, নারা, কোবে অনেক কিছু ঘুরে দেখার আছে তখন মনে বেশ উৎসাহ জাগল। এতক্ষণে বুঝে গেছি এই ভ্রমণ শুধু দেশ বেড়ানো নয়। এ আসলে সময়ের গাড়ি চেপে ইতিহাসের আনাচে কানাচে ভ্রমণ ... ...
গিয়ন কর্ণার আর ফুশিমি ইনারি ঘুরে এসে রাতে বিছানায় যেতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানতেও পারিনি। পরেরদিন সকাল বেলা যখন ঘুম ভাঙল তখন বেশ খানিকটা বেলা হয়ে গেছে। যদিও আকাশের ভারমুখ দেখে মোটেও বোঝার উপায় নেই বেলা কতটা হয়েছে। দলের বাকিরা সবাই মোটামুটি তৈরি হয়ে গেছে। তারা প্রাত:রাশের জন্য ... ...
গিয়ন কর্ণারের আলো ঝলমল জনবহুল পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আমরা দু'বোন শিজো ডোরি ধরে হাঁটা লাগিয়েছি পরের গন্তব্য ইয়াসাকা স্রাইনের উদ্দেশ্যে।কিয়োতোর পুবদিক বরাবর প্রায় তিরিশ মিনিট হাঁটা পথ পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম মন্দিরে। তেরশো বছরের পুরোণো এই মন্দিরে সস্ত্রীক অধিষ্ঠিত আছেন সমুদ্র আর ঝড়ের দেবতা সঙ্গে তাঁর আট সন্তান সন্ততি। হেইয়ান যুগ শুরু হওয়ারও দেড়শো বছর আগে সপ্তম শতকে তৈরি হয় শিন্তো ধর্মের এই মন্দির ... ...
"পথিক, তুমি কি পথ হারাইয়াছ?" এ উক্তি বাঙলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক উক্তি বলা চলে।পথ হারানোর মধ্যে যে চূড়ান্ত রোমান্টিসিজমের ছোঁয়া আছে তা যুগে যুগে বাঙালির মন ছুঁয়ে গেছে। গানে, কবিতায়, উপন্যাসে বাঙালি বার বার পথ হারিয়েছে বা হারানোর কল্পনায় রোমাঞ্চিত হয়েছে। দুই বঙ্গ কন্যা সেদিন নবকুমারের সেই পথ হারানোর আনন্দ পেতে রাতের কিয়োতো দর্শনে বেড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাধ সাধল গুগুল ম্যাপ। প্রযুক্তির দৌলতে ... ...
জাপান পূর্ব এশিয়ার সব থেকে বড়ো দ্বীপপুঞ্জের দেশ। যদিও ছোট ছোট অসংখ্য দ্বীপের সমাহার সেখানে তবু মোটের ওপর চারটে প্রধান দ্বীপ হল হোক্কাইডো, হোনশু, শিকোকু আর কিঊশু। উত্তর থেকে দক্ষিণ, আর পূর্ব থেকে পশ্চিম সমুদ্র দিয়ে ঘেরা এক ভূখন্ড জুড়ে কতো যে পুরাণ, কতো যে ইতিহাস ছড়িয়ে আছে তার ইয়ত্তা নেই। দক্ষিণপূর্বের এক কোণ ছুঁয়ে আছে চীন সাগর, পূর্বে আছে ফিলিপিন সাগর আর প্রশান্ত ... ...