SIR এবং নাগরিকত্ব ভীষণ রকম একে অপরের সঙ্গে যুক্ত, তা যতই ইলেকশন কমিশন অস্বীকার করুক না কেন।নাগরিকত্বের অধিকারের মধ্যে ভোটাধিকার একটা প্রধান অধিকার।
তবে ভারতবর্ষে নাগরিকত্বের আইন চুপিসারে পরিবর্তন করা হয় ১৯৮৪ সাল নাগাদ ( সালটা ভুলও হতে পারে)।
ঐ সময়ে ভারত ভূখণ্ডে জন্মানোর অধিকারে নাগরিকত্ব পাবার অধিকার লুপ্ত হয়েছিল। একমাত্র ভারতীয় মাতা বা পিতা বা উভয়ের সন্তান শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশে জন্মালেই বংশগতিসূত্রে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবার অধিকার পেত। এই প্রসেসটা এতটাই চুপিসারে হয়েছিল যে অনেকেই তা জানতে পারে নি।
তবে ঐ কিছু অন্য নিয়মও ছিল, যেমন ভারতে লাগাতার অন্ততঃ পাঁচবছর বসবাস করা, বিবাহ সূত্রে ভারতীয় নাগরিকের স্ত্রী বা স্বামী হওয়ার মাধ্যমেও নাগরিকত্ব অর্জন করা যেত, এবং ভারতীয় পাসপোর্ট পেয়ে গেলে আর কোনও সমস্যা থাকত না।
জন্ম নিবন্ধন শংসাপত্র বা পাসপোর্ট পাওয়া কারও কারও ক্ষেত্রে কোনও কঠিন বিষয় না হলেও সেসব সকলের পক্ষে পাওয়া সবসময় সহজ হয় না। বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষদের ক্ষেত্রে। সকলের জন্ম নিবন্ধন শংসাপত্রও থাকে না। মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও কম। সকলের নিজস্ব জমিজমা ঘরবাড়ি থাকে না। অনেকেই ইস্কুলের গন্ডি পার হতে পারে না। ভারতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানুষের সামাজিক অবস্থানে বিশাল ফারাক। এগারোটা নথির যে কোনও একটাও না থাকতে পারে অনেক মানুষের।
অথচ বেনাগরিক যাতে ভোট দিতে না পারে সেইটে SIR এর মূল লক্ষ্য একটা দুধের শিশুও জানে। কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণ করবার বিষয়টা ঘাঁটা।
ভারতের মতো বিশাল জনসংখ্যার এবং পুরোপুরি অসমসত্ব সমাজে, যেখানে সবরকমের ক্যাওস চলছে, বিশাল দারিদ্র্য, ধর্ম নিয়ে সর্বক্ষণ ঝামেলা, জাতপাত ভাষা জনজাতির মধ্যে লাগাতার বিভাজন, আরও নানান সমস্যা রাজনৈতিক হিংসা, এসবের মধ্যে ঠাণ্ডাঘরে বসে এরকম এগারোটা নথির যে কোনও একটা দেবার দাবি তুললে মানুষ বিভ্রান্ত হবে। ভয় পাবে অনেকেই, সেই ভয় আরও বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।
কবছর আগে "কাগজ আমরা দেখাবো না" ড্রাইভ হয়েছিল, সেলিব্রিটিদের গান গেয়ে ভিডিও করতে দেখা গেছল।
আপনারা তাহলে এখন কাগজ দেখাবেন কেন?
কেউ দেখাবেন না। এরকম মলের জোর বা সাহস বা সলিডারিটি আছে আপনাদের?
না থাকলে এসব ভাট বকাই সার হবে।