এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • স্ট্রাইক দা পয়েন্ট - ১ 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৭ আগস্ট ২০২২ | ৬৭৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • সকাল আটটা বাজে। কলতান এক কাপ কফি নিয়ে বসে খবরের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিল।

    কাল রাত্রে অপরাধ বিজ্ঞানের ওপর এক বিদেশী লেখকের লেখা একটা বই পড়ছিল। তাতে একটা দারুণ উপপাদ্য পেল গোয়েন্দাতত্বের ব্যাপারে ----- 'স্ট্রাইক দি পয়েন্ট ব্লাইন্ডলি অ্যন্ড ফলো দা ওয়ে দি রিবাউন্ড কামস ব্যাক ... ইউ উইল রিচ ইয়োর এন্ড '। মানে, কোন লক্ষ্যে আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ে দেখ কি দাঁড়ায় .... প্রতিক্রিয়ার গতিপথ থেকেই তোমার গন্তব্যের ঠিকানা পাবে ...।

    বাংলা কাগজ শেষ করতে পনের মিনিটের বেশি লাগে না। তারপর ইংরেজি কাগজটা তুলে নিল। ভিতরের পাতাগুলোয় দেশ বিদেশের হরেক খবর, হরেক নিবন্ধ। রাশিয়া আর ইউক্রেনের যুদ্ধবিদ্ধস্ত অংশগুলোর ছবি দিয়েছে। কিছু ভয়ার্ত শিশু কাঁদছে। দেখলে বুক মুচড়ে ওঠে কষ্টে। কলতানের এক এক সময়ে মনে হয় এ গ্রহে মানুষ নামক প্রাণীটির উৎপত্তি না হলেই ভাল হত। মানুষ তো প্রকৃতিদত্ত বুদ্ধিকোষের সাহায্যে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের কত রহস্য জেনে ফেলেছে। জানতে পেরেছে যে এই অসীম অনন্ত প্রকৃতিতে পৃথিবীর অস্তিত্ব এক বিশাল সমুদ্র সৈকতের অগনন বালুরাশির এক কণা বা তার চেয়েও অকিঞ্চিৎকর কিছু। সেই পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অন্যান্য নানা প্রাণী এবং মানুষ। সুবিপুল অপরিমেয় সেই শক্তির কাছে অসহায় মানুষের এই দাপট একেবারেই হাস্যকর। কিন্তু কে বোঝে কার কথা। মানুষের শক্তি প্রদর্শনের এবং আস্ফালনের কোন শেষ নেই।

    কলিং বেলের টুং টাং ... টুং টাং ... আওয়াজে কেটে গেল উচ্চস্তরীয় চিন্তার তার। সে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দাঁড়াল। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন একজন বছর পঁয়তাল্লিশের ভদ্রলোক এবং একজন বছর চল্লিশের ভদ্রমহিলা। ভদ্রলোকের চেহারা বেশ সুঠাম ও শ্যামবর্ণ। একটা কালো রঙের ট্রাউজার এবং মাখন রঙা টি শার্ট পরে আছেন। ভদ্রমহিলার পরনে হলুদ সুতির শাড়ি।

    কলতানের ফ্ল্যাটের বাইরে তার নামে নেমপ্লেট লাগানো আছে। সুতরাং কেউ ঠিক জায়গাতে এসেছে কিনা জিজ্ঞেস করার দরকার পড়ে না।

    ভদ্রলোক বিনীত কন্ঠে বললেন, ' মিস্টার কলতান গুপ্ত আছেন? অ্যপয়েন্টমেন্ট ছিল না অবশ্য .... মানে .... '।
    ----- ' না না ঠিক আছে ... আমিই কলতান ... '।
    এবার ভদ্রমহিলা দুহাত জড়ো করে বললেন, ' নমস্কার .... আমরা একটা সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে এসেছি। নানা কারণে আগে ফোন করতে পারি নি। সেই জন্য .... একটু সকাল সকাল এসে পড়লাম ... '।
    ------ ' ঠিক আছে ... ঠিক আছে ... আসুন আসুন ... ' ।

    কলতানের পিছন পিছন ওরা ঘরে ঢুকল ।

    কলতান বলল, 'বসুন বসুন ... '।
    ওরা দুজনে পাশাপাশি বসলেন। ভদ্রমহিলা বললেন, ' আমরা দুজন স্বামী স্ত্রী। একটা জটিল সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে এসেছি ... অবশ্য সমস্যাটা আপনার কাছে জটিল মনে নাও হতে পারে ... '।
    কলতান বলল, ' আপনারা কোথায় থাকেন? '
    ----- ' মহেশতলায় .... যাদবপুরের কাছে ... আমার নাম অম্বরীশ চ্যাটার্জী ... ', ভদ্রমহিলার দিকে দেখিয়ে বললেন, ' আমার মিসেস কণিকা চ্যাটার্জী ... '।
    ---- ' ও আচ্ছা আচ্ছা ... আমার অ্যড্রেস, ফোন নাম্বার কোথা থেকে পেলেন ? '
    ----- ' ওটা আমার এক অফিস কলিগের কাছ থেকে পেয়েছি। নামটা এক্ষুণি জানাতে চাই না', ভদ্রলোক বললেন।
    ----- ' আচ্ছা আচ্ছা .... বলুন ... আচ্ছা দাঁড়ান ... চা না কফি? '
    ----- ' না না ... প্লিজ মিস্টার গুপ্ত ... কিচ্ছু না .... আমরা ব্রেকফাস্ট করেই এসেছি ... আমার প্রবলেমটা একটু যদি শোনেন .... খুব কনসার্নড আছি .... '।
    ----- ' হ্যা হ্যা ... নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই ... বলুন .... '।

    ভদ্রলোক চুপ করে বসে রইলেন খানিক্ষণ। কলতান অপেক্ষা করতে লাগল।

    ভদ্রলোক বলতে লাগলেন ....

    ------ ' সমস্যাটা আমার অফিসের। আমি একটা মার্কেন্টাইল ফার্মের ... বলতে পারেন ... সেজবাবু। বড়, মেজ, সেজ .... সেই সেজবাবু বলতে পারেন। ফিনান্সিয়াল ম্যাটার আমাকেই হ্যান্ডল করতে হয়। পঞ্চাশ লাখ পর্যন্ত ডিল ভাউচার আমিই সাইন করি। আমার সিগনেচারের বেসিসেই কোম্পানির পেমেন্ট রিলিজড হয়। এখন, ব্যাপার হচ্ছে অফ লেট, এরকম একটা ডিল পেপারে আমার সাইন দেখা গেছে ... জানি না কখন কিভাবে সাইনটা করলাম আমি .... যেটা সম্পূর্ণ আনঅথরাইজড। মানে, হায়ার অথরিটির অ্যপ্রুভাল নেই। ওই পার্টির সঙ্গে আমাদের কোন বিজনেস কানেকশানই নেই, ফর সাম পাস্ট ফল আউট। সেক্ষেত্রে এই অ্যডভান্স পেমেন্টটা আমাদের খাতায় ওই ব্ল্যাকলিস্টেড কোম্পানির ফেভারে বেরিয়ে যাওয়ায় আমি একটা বিরাট স্ক্যামে জড়িয়ে পড়েছি। স্ক্যাম বা ফ্রড যাই বলুন প্রুভড হলে চাকরি তো যাবেই, উপরন্তু কোম্পানি যে অ্যমাউন্টের ডেমারেজ এবং কমপেনসেশান ডিম্যান্ড করবে তা আমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আমি কোম্পানির এক ছা পোষা ম্যানেজার ... অনাদায়ে দশ বছরের জেল নিশ্চিত .... ' ।

    কণিকাদেবী বললেন, ' খুব আশা করে আপনার কাছে এসেছি .... আমাদের নাওয়া খাওয়া মাথায় উঠেছে ...রাতের ঘুম চলে গেছে ... আমাদের বাঁচান ... উ : মাগো ... '।
    ভদ্রমহিলা দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে মাথা নীচু করে বসেন।

    কলতান বলে, ' দাঁড়ান দাঁড়ান..... আগে কেসটা একটু বুঝে নিতে দিন। মোদ্দা ব্যাপারটা হল কোন পার্টির পেমেন্ট সংক্রান্ত অর্ডারের কাগজে আপনি সই করছেন যেটা করবার কথা নয় এবং পেমেন্টটা বেরিয়েও গেছে। আপনি বলছেন যে পেমেন্টটা ওই পার্টির পাবার কথাই নয়, অথচ তারা পেয়ে গেছে। আপনার কোম্পানি সাসপেক্ট করছে আপনারও এই অবৈধ লেনদেনে মোটা বখরা আছে। তাই তো? '।
    ----- ' হ্যা ... ঠিক তাই ', অম্বরীশবাবু বললেন।
    ----- ' আচ্ছা আগে বলুন তো ওই পেয়ি পার্টির রিয়্যাকশান কি। তাদের তো এ পেমেন্টটা পাবার কথাই নয়। তাদের কোন ফিড ব্যাক পাওয়া যায় নি? '
    ----- ' না ... ইটস কোয়াইট সারপ্রাইজইং যে তারা একদম সাইলেন্ট, যেন এ পেমেন্টটা তাদের প্রাপ্যই ছিল। নো রিয়্যাকশান, নো ফিডব্যাক ... '
    ----- ' ওই কোম্পানিটার নাম কি ? '
    ----- ' সুর ইনডাস্ট্রিজ '
    ----- ' প্রাইভেট লিমিটেড? '
    ----- ' হ্যাঁ... '
    ----- ' আপনার কোম্পানির নাম কি ? '
    ---- ' ওরিয়েন্টাল ট্রেডস ... '
    ----- ' ও আচ্ছা। আচ্ছা এবার বলুন ... আপনার আগে বা পরে স্যাংশান পেপারে আপনার কোম্পানির আর কেউ এনডোর্স করেন না ? '
    ------ ' হ্যাঁ... আগে আমার দুজন সুপিরিয়রের কাছ থেকে এনডোর্সড হয়ে আসে । তারপর আমি ফিনান্সিয়াল ম্যানেজার হিসেবে সাইন করি । '
    ------ ' সুপিরিয়রদের এনডোর্সমেন্ট চেক করে নিয়ে তারপরে আপনি সাইন করেন তো ? '
    ----- ' হ্যা.... নিশ্চয়ই ... '
    ----- ' তাহলে এটা ঘটল কি করে ? আপনি কি সাইন করার আগে সুপিরিয়রদের এনডোর্সমেন্ট চেক করে নেননা ? '
    ----- ' আমার তো মনে পড়ছে না যে, আমি উইদাউট প্রপার অ্যপ্রুভাল কোন কিছুতে সাইন করেছি বলে । কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমার সাইন রয়েছে ... '
    ----- ' কিন্তু আপনার আপার হায়েরার্কির সই ছাড়া পেমেন্টটা রিলিজড হল কি করে ? '
    ---- ' সেটা হতে পারে ... যে পেমেন্ট ডিসবার্স করে সে শুধু ফিনান্সিয়াল ম্যানেজারের সাইনটা চেক করে । তার ওপরের সাইনগুলো সে নাও দেখতে পারে । যদিও সেটা চেক করা উচিত... কিন্তু এই কোম্পানির এইরকমই সিস্টেম । '
    ----- ' আই সি .... আপনার কাছে সাইন করার ডকুমেন্টগুলো আসত কিভাবে ? মানে কেউ নিয়ে আসত আপনার টেবিলে ? '
    ----- ' দুজন ক্লাস ফোর স্টাফ .... এক এক দিন এক এক জন নিয়ে আসত । তবে লাস্ট পনের দিন ধরে যে নিয়ে আসছিল তার নাম অচিন্ত্য ... অচিন্ত্য দলুই । সে এখন ছুটিতে আছে । '
    ---- ' ছুটিতে আছে কেন ? '
    ----- ' ওর ছেলে হয়েছে । তাই দেশের বাড়িতে গেছে । '
    ----- ' কবে ছেলে হল ? '
    ----- ' যেদিন আমার ওপর ব্লেমটা চাপানো হল ঠিক তার পরদিন । '
    ---- ' আই সি ... '
    ----- ' নিশ্চয়ই এক বাঞ্চ পেপার একসঙ্গে নিয়ে আসত ?'
    ----- ' বাঞ্চ না হলেও একসঙ্গে অনেকগুলো পেপার নিয়ে আসত ... '
    ----- ' আদিত্যর নাম ঠিকানা, ফোন নাম্বার চাই ... আপনার সুপিরিয়রদেরও ফোন নাম্বার চাই ... যদি সম্ভব হয় ঠিকানাও । আর যে এমপ্লয়ী অ্যমাউন্ট ডিসবার্স করেছে তারও ডিটেলস চাই । আপনি কি এখনও অফিসে যাচ্ছেন ? '
    ----- ' হ্যা যাচ্ছি । আমায় শো কজ করেছে । দশদিনের মধ্যে রিপ্লাই দিতে হবে । রিপ্লাই স্যাটিসফ্যাকটরি না হলে কোম্পানি অ‌্যকশান নেবে । দশদিনের মধ্যে দুদিন হয়ে গেল । হ্যা.... যেগুলো আপনি চাইলেন , সেই আই ডি গুলো আমি এখনি দিয়ে দিচ্ছি .... ' অম্বরীশবাবু তার মোবাইল স্ক্রল করে ওদের আই ডি খুঁজতে লাগলেন ।
    কলতান বলল, ' অফিসে আপনার শত্রু কারা জানা আছে কি ? '
    ----- ' শত্রু .... কি জানি ... তেমন কেউ আছে বলে তো জানি না ... '
    ----- ' হুমম্ ... আপনি তা'লে বলছেন যে আপনার যতদূর মনে পড়ছে আপনি সুর ইন্ডাস্ট্রিজের কোন পেমেন্ট অর্ডারে সাইন করেননি ... ' কলতান আবার বাজাল অম্বরীশবাবুকে ।
    ----- ' হ্যা শিওর শিওর ... '
    ----- ' যে পেপারটায় আপনার সাইন দেখা গেছে তার একটা ডুপ্লিকেট কপি নিশ্চয়ই আছে আপনার ফাইলে ? থাকলে আপনার সাইনটা মিলিয়ে দেখা যেত .... '
    ----- ' হ্যা ... কপি আছে .... তবে সেটা ফিনান্স ম্যানেজার গৌতম চ্যাটার্জীর ফাইলে .... সেখানে দেখলাম আমার সাইন করা অ্যপ্রুভাল রয়েছে .... হাউ স্ট্রেঞ্জ .... আর গৌতম কিছুতেই কপিটা আমাকে দিতে রাজি হল না ... কি জানি কেন ! দিলে একটা জেরক্স করিয়ে রাখতাম ... '
    ----- ' দেয়ার ইউ আর .... ওই অর্ডার কপিটাই আমার দরকার ...
    ----- ' আঁ ..... কি বললেন ?
    ----- ' না ... কিছু না ... ঠিক আছে ... আপনি নাম ঠিকানা, ফোন নাম্বারগুলো দিন । আমি সময়মতো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করে নেব । রাস্তা একটা বেরোবে ঠিকই । চিন্তা করবেন না । '
    কনিকাদেবী বললেন , ' প্লিজ একটু দেখবেন ... অনেক আশা করে আপনার কাছে এসেছি । আমরা একদম সাধারণ লোক । এসব স্ক্যাম ট্যামের ধাক্কা সামলানোর জোর আমাদের নেই .... খুব টেনশানে আছি । '
    ----- ' বললাম তো টেনশান নেবেন না । রাস্তা একটা বেরোবেই ... '
    তারপর আরও প্রায় আধঘন্টা বসলেন অম্বরীশবাবুরা । ওনারা বোধহয় যতক্ষণ সম্ভব কলতানের সান্নিধ্যে থেকে মানসিক শক্তি সঞ্চয় করে ভেঙে পড়া মনোবল জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন । বিদায় নেবার ঠিক আগে অম্বরীশবাবু একটা সাদা খাম বার করে বললেন , ' আপনার অ্যডভান্সটা .... '
    কলতান বলল, ' এখন না .... আমি ঠিক সময়ে চেয়ে নেব ... '

    ********** ********** *********

    অম্বরীশবাবুর দেওয়া তার কোম্পানির, মানে ওরিয়েন্টাল ট্রেডস-এর কুশীলবদের বৃত্তান্তগুলো সাজিয়ে বসল কলতান ওরা চলে যাওয়ার পরই ।
    দেবব্রত চৌধুরী : সি ই ও, ডেভেলপমেন্ট , মো. নং -- ৯৩৩৪ .....
    শ্যামাশিস দত্ত : জেনারেল ম্যানেজার , সেলস অ্যন্ড পারচেজ , মো . নং --- ৮৭৩৩ .....
    অচিন্ত্য দলুই : পিওন , মো. নং --- ৯০৫১ ....
    মহাদেব সরকার : পিওন , মো. নং ---- জানা নেই ।
    গৌতম চ্যাটার্জী : ফিনান্স অফিসার , মো . নং ----- ৯৮৩৬ .....
    এর মধ্যে গৌতম চ্যাটার্জী ছাড়া আর কারও ঠিকানা দিতে পারেননি অম্বরীশবাবু। পেলে, পরে দেবেন বলেছেন ।
    সুর ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কারও কিছু পাওয়া গেল না । পেলে খুব ভাল হত , কলতান ভাবল ।

    ঠিক করল, তলা থেকেই শুরু করবে । বেলা এগারোটা নাগাদ অচিন্ত্য দলুইয়ের মোবাইল নাম্বার ডায়াল করল ।
    আট ন'বার রিং হবার পর ওদিক থেকে আওয়াজ এল ' হ্যা ... লো... '
    কলতান উত্তর দিল , ' হ্যা .... নমস্কার অচিন্ত্যবাবু .... আপনি আমাকে চিনবেন না .... আমি গৌতমবাবু , মানে গৌতম চ্যাটার্জীর কাছ থেকে আপনার নম্বরটা পেয়েছি । উনি আপনাকে একটা টেকনিক্যাল কারণে ফোন করতে পারছেন না । তাই আমাকে খবরটা দিয়ে দিতে বললেন ... '
    ----- ' খব..রটা মানে ? কি ...কি ... খবর ? '
    ---- ' হ্যা ... বলছি বলছি । উনি বলেছেন যে আপনার বৌয়ের বাচ্চা হয়েছে বলে আর গা ঢাকা দিয়ে থাকার দরকার নেই । যার বিয়েই হয়নি ... তার আবার বাচ্চা কি ? হ্যা: হ্যা: হ্যা: হ্যা: .... যাকগে , যেটা বলছিলাম ... গৌতমদা বলেছেন পরশু দুপুর দুটোর সময় সুর ইন্ডাস্ট্রিজের গেটের পাশে দাঁড়াতে । ওখানে আপনাদের জেনারেল ম্যানেজার শ্যামাশিস দত্ত যাবেন ওই সময় । ওনার গাড়িটা ওখানে এসে দাঁড়াতে দেখলে আপনি গাড়ির কাছে যাবেন । মিস্টার দত্ত আপনাকে পঁচিশ হাজার টাকা দেবেন । আপনি সেটা সুর ইন্ডাস্ট্রিজের যে অফিসারের সঙ্গে আপনার ডিল হয়েছে তার হাতে গিয়ে দেবেন । তাকে কি বলতে হবে সেটা শ্যামাশিসবাবু আপনাকে শিখিয়ে দেবেন ... '
    ফোনের ওদিক থেকে কোন আওয়াজ নেই । শুধু শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ আসছে । সে নিঃশব্দে শুনে যাচ্ছে । কলতান বুঝতে পারছে তার ছোঁড়া স্রেফ অনুমানভিত্তিক ঢিলটা ঠিক জায়গায় গিয়ে লেগেছে ।
    কলতান বলে উঠল , ' হ্যালো .... হ্যালো .... '
    ওদিক থেকে মৃদুকন্ঠে জবাব এল, ' হ্যা বলুন ... শুনছি ... '
    ----- ' আপনি কিন্তু গৌতমবাবুর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না । অসুবিধে আছে । তাতে আপনি ফেঁসে যেতে পারেন । উনিই আপনার সঙ্গে ঠিক সময়ে যোগাযোগ করে নেবেন । ঠিক আছে ? '
    আবার ফিসফিসে স্বরে জবাব এল , ' ঠিক আছে ... বুঝতে পেরেছি ... '
    ----- ' তা'লে ওই কথাই রইল ..... পরশু দুটো নাগাদ .... আর হ্যা.... আর একটা কথা , এই দুদিন আপনার মোবাইল সুইচড অফ রাখবেন কিংবা অন্য সিম ব্যবহার করতে পারেন .... '
    ---- ' হুঁ হুঁ .... ঠিক আছে .... '
    কলতান ফোন কেটে দেয় । এবার গৌতম চ্যাটার্জীর নম্বর ডায়াল করল ।
    নীচু গলায় সতর্ক আওয়াজ এল , ' হ্যালো ... '
    ---- ' হ্যালো... মিস্টার গৌতম চ্যাটার্জী বলছেন ? '
    ---- ' বলছি '
    ----- ' আমাকে আপনি চিনবেন না স্যার ... আপনাদের কোম্পানির অচিন্ত্য দলুই আমাকে আপনার ফোন নম্বরটা দিয়েছে । অচিন্ত্য আমার ছোটবেলার বন্ধু । সেই ছোটবেলায় স্কুলে .... একবার কি হয়েছে ...
    ----- ' ঠিক আছে ঠিক আছে ... ওসব বাদ দিন .... কি বলতে চান বলুন ... '
    ----- ' হ্যা বলছি ... অচিন্ত্য বলল আপনাকে জানিয়ে দিতে যে পরশুদিন বেলা দুটো নাগাদ সুর ইন্ডাস্ট্রিজের গেটের পাশে থাকতে হবে আপনাকে .... '
    ----- ' কেন কেন ? আমি ওখানে যাব কিসের জন্য ? অচিন্ত্য বলেছে এ কথা ? ও আমাকে বলার কে ? রোগ ক্যারেকটার সব .... ও আছে কোথায় এখন ? '
    ----- ' সে তো জানেনই আপনারা .... দেশের বাড়িতে .... ছেলে হয়েছে বলে .... '
    ------ ' ছেলে হয়েছে ! হাঃ: হাঃ হাঃ ... বীজই পড়ল না মাটিতে গাছ বেরিয়ে গেল .... যত দুনম্বরী ইয়ে সব .... তা কি জন্য যেতে বলেছে শুনি .... '
    ----- ' আপনি কি এখন অফিসে আছেন স্যার?'
    ---- ' হ্যা '
    ----- ' একটু ফাঁকা জায়গায় যান '
    ----- ' ফাঁকাই আছি । তা ছাড়া ফাঁকা জায়গায় যেতে হবে কেন ? আপনার নামটা কি বলুন তো .... তখন থেকে উল্টোপাল্টা বলছেন । বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমি পুলিশে ইনফর্ম করব কিন্তু .... '
    কলতান বুঝতে পারল ইনি খুব সহজ বান্দা নন। সহজে মচকাবার নয় ।
    সে বলল, ' কেন কেন স্যার ? আমি কি করলাম ? আমি তো শুধু অচিন্ত্যর কথাটা আপনাকে ইনফর্ম করলাম । কি সব টাকাপয়সা দেবার ব্যাপার ট্যাপার আছে । তাছাড়া ওই অম্বরীশবাবুর ব্যাপারে ... হিস্যা তো আপনিও পাবেন .... যাক , যা ভাল বোঝেন করুন ... আমাকে অচিন্ত্য যা বলতে বলেছে বলে দিলাম .... এখন আপনি যা ভাল বোঝেন করুন ... নমস্কার ... ভাল থাকবেন .... '
    কলতান ফোন কেটে দিল ।
    এবার শ্যামাশিস দত্ত , জেনারেল ম্যানেজার, সেলস অ্যন্ড পারচেজ । তবে, তার কাছে কল গেল রাত নটা নাগাদ ।
    সেই একইরকম গম্ভীর সংক্ষিপ্ত আওয়াজ ,
    ---- ' ..লো '
    ---- ' আজ্ঞে স্যার... আমার নাম প্রভাস পাল । আপনি আমায় চিনবেন না । আপনাদের কোম্পানির অফিসার গৌতম চ্যাটার্জী একটা ইনফর্মেশান দিতে বলেছে আপনাকে .... '
    ----- ' তার মানে ! কি ইনফর্মেশান .... আপনাকে দিতে বলেছে কেন ? '
    ----- ' না ... মানে ... এই মুহুর্তে উনি নিজে ডায়রেক্ট ফোন করতে পারছেন না । একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম আছে .... বুঝতেই তো পারছেন ... উনি সুর ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যাপারটায় তো ফেঁসে বসে আছেন .... '
    ---- তার মানে ? সুর ইন্ডা .... তাতে ও কেন ফাঁসবে ? ব্লান্ডার তো করেছে অম্বরীশ চ্যাটার্জী .... অ্যন্ড হি উইল হ্যাভ টু পে ফর ইট ...'
    ----- ' হ্যা... স্যার, সে তো বটেই । দোষ করলে ভুগতে তো হবেই । তবে কিনা , সত্যি কথা বলতে কি .... আমি তো সুর ইন্ডাস্ট্রিজের ভেতরের লোক । কেসটা মোটামুটি জানা আছে । আর এত জেনেই বা কাজ কি ! আমি তো আর কিছু পাব না । ইনফর্মারগিরি করে আর ক'টা টাকা কামাই হয় ? পুরোটাই তো ভাগাভাগি হবে আপনাদের মধ্যে .... '
    ----- ' আপনি কে বলুন তো মশায় .... তখন থেকে পাগলের মতো বকবক করছেন .... আপনার সাহস তো কম নয় .... থানায় ফোন করছি এক্ষুণি ..... '
    ----- ' সে আপনি করতেই পারেন .... তাতে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন .... আমাকে বলুন না কোন থানায় যেতে হবে .... এক্ষুণি হাজির হয়ে যাচ্ছি । যাকগে , গৌতমবাবু বলেছেন অম্বরীশবাবুর সই করা ওই পেমেন্ট এনডোর্সমেন্ট কপিটা নিয়ে পরশু বেলা দুটো নাগাদ সুর কোম্পানির রেললাইনের দিকের গেটের পাশে আসতে । না আসলে কোন প্রবলেম আসতে পারে .... '
    ----- ' কি .. কি ... প্রবলেম ? প্রবলেম আবার কি ? আমি .... আমি কি ক্রিমিনাল নাকি ? আমাকে ফাঁসালে আমিও ছেড়ে দেব না ... '
    কলতান বুঝল এ গভীর জলের মাছ হলেও চার খেতে শুরু করেছে ।
    সে বলল, ' না না স্যার .... একি বলছেন ! আপনি ফাঁসবেন কেন ? আপনাদের মতো গুরুজনদের গার্ড দেবার জন্য তো আমরা আছি .... বড় গরীব মানুষ স্যার.... একটু দেখবেন ... সামান্য কিছু হলেও যেন পাই .... '
    ওদিক থেকে কোন উত্তর আসছে না । ভদ্রলোক সময় নিচ্ছেন ঠিক ঠিক উত্তর সাজাবার জন্য । শো শো ... খড়খড় আওয়াজ হচ্ছে মোবাইলের ভিতর । কলতান খুব সম্ভবত: ভদ্রলোককে ঠেলতে ঠেলতে খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে । এখন দুটোই বিকল্প আছে শ্যামাশিস দত্তের কাছে । হয় , রে রে করে তরোয়াল উঁচিয়ে পাল্টা আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়া আর নয়ত নরমভাবে বোঝাপড়া করে নিয়ে খাদের কিনারা থেকে সরে আসা ।
    প্রভাস পাল , মানে কলতান বলল, ' হ্যালো ..... হ্যালো স্যার.... শুনতে পাচ্ছেন ? '
    নরম গলায় আওয়াজ এল , ' হ্যা ... শুনছি ... ঠিক আছে... মানে , হয়ে যাবে .... অসুবিধে হবে না .... আমারটা একটু দেখবেন .... আমি এসব করতে চাইনি .... ওই সি ই ও- র পাল্লায় পড়ে।
    ----- না না স্যার.... জোর জবরদস্তি কিছু নেই । যা ন্যায্য মনে করবেন তাই দেবেন ... গরীব মানুষ ... আর, কোন সিইও-র কথা বলছেন ... দেবব্রত চৌধুরী ? '
    ----- ' হ্যা... তাছাড়া আবার কে ? আপনি তো নাড়িনক্ষত্র সব জানেন দেখছি । ও..ই তো নাটের গুরু ... সে আর বলবেন না .... ওর পাল্লায় পড়েই তো .... বেচারি অম্বরীশ ... আমার কতদিনের পুরনো কলিগ .... '
    ----- ' না না ঠিক আছে .... আমাকে অত বলতে হবে না .... আর , বলছি যে আপনি আমার সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার কথা যেন নিজের পরিবারকেও জানাবেন না । অন্যদের কথা তো ছেড়েই দিলাম .... কেমন ? নইলে বিপদ আসতে পারে কিন্তু ... '
    ------ ' আচ্ছা ঠিক আছে ... বলছেন যখন। এখন তাহলে রাখি ? '
    ----- ' হ্যা স্যার.... নিশ্চয়ই ... নমস্কার । '
    কলতান বুঝতে পারল যে শ্যামাশিসবাবু লাইনে নতুন এবং কাঁচা খেলোয়াড় । তার সঙ্গে পুরো কথোপকথন কলতানের মোবাইলে রেকর্ড হয়ে গেল ।

    রাত দশটার সময়ে সিইও, ডেভেলপমেন্ট দেবব্রত চৌধুরীর ফোন বাজতে লাগল ।
    ------ ' হ্যালো ... ডি চৌধুরী বলছি ... '
    ----- ' হ্যা... নমস্কার স্যার ... এত রাতে আপনাকে ডিসটার্ব করার জন্য মাফ করবেন । আসলে খবরটা এইমাত্র পেলাম তাই ...'
    ----- ' ... কি খবর ! কে আপনি ? ' মিস্টার চৌধুরী অধৈর্যকন্ঠে বলেন ।
    ------ ' বলছি স্যার... আমার নাম প্রভাস পাল ...
    আপনাদের অম্বরীশ চ্যাটার্জীর কেসটা একটু সাবধানে হ্যান্ডল করবেন ... আপনার এগেনস্টে একটা কন্সপিরেসি হচ্ছে .... একটু সাবধানে থাকবেন .... আপনার কলিগদের বা সুর ইন্ডাস্ট্রির যাদের সঙ্গে ডিলটা করেছেন তাদের চোখ বুজে বিশ্বাস করবেন না .... '
    দেবব্রতবাবু আচমকা ধাক্কায় টাল খেয়ে গিয়ে প্রবল উত্তেজনার মাথায় বলে ফেললেন , ' কেন কি হয়েছে ? ওদেরও তো ইনভলভড করেছি এ ভেনচারে .... '
    তার পরের মুহূর্তেই সামলে নিয়ে বললেন , ' সুর ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে ডিল মানে ... কিসের ডিল ? তুমি কে বল তো ? যেই হও, জেনে রাখ আমি কিন্তু লোক সুবিধের নয় .... যে ওস্তাদই তোমাকে কাজে লাগাক তাকে জানিয়ে দিও আমার হাত কিন্তু অনেক লম্বা .... চব্বিশ ঘন্টাও লাগবে না সাইজ করতে .... '
    ----- ' আরে .... আপনি মিছিমিছি টেনশান নিচ্ছেন স্যার .... আমার ওপর বেকার খার খাচ্ছেন ... আমি এক চুনোপুটি .... আপনারা হলেন রাঘববোয়াল .... আমি কি আপনার সঙ্গে পাঙ্গা নিতে পারি .... সে যাক, যেটা বলবার জন্য আপনাকে ফোন করা ....পরশুদিন বেলা দুটো নাগাদ আপনি, সুর ইন্ডাস্ট্রিজের যার সঙ্গে আপনাদের ডিলটা হয়েছে বা আগের ডিলগুলো হয়েছিল তার সঙ্গে দেখা করে নকল এনডোর্সমেন্ট পেপারটা চাইবেন ... অরিজিনাল । ওটা অবশ্যই চেয়ে নেবেন । নইলে কিন্তু বিপদে পড়তে পারেন । ঢোকার আগে গেটের দুপাশে ভাল করে দেখে নেবেন । আড়াল থেকে ভাল করে নজর করে নেবেন । তাদের দেখতে পাবেন ... তারা মনে হয় আপনার পরিচিত লোকই হবে । এরাই আপনাকে ফাঁসাতে চাইছে । একটা গ্রুপের সঙ্গে মোটা টাকার কন্ট্র্যাক্ট হয়েছে এ ব্যাপারে .... '
    ফোনের ওপারের ব্যক্তিটি স্তব্ধবাক হয়ে গেলেন। এইসব অপ্রত্যাশিত কথাবার্তার উত্তরে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া জুতসই হতে পারে বোধহয় সেটাই ভাবছেন । কলতান তার সূক্ষ্ম আন্দাজ এবং সাধারণ অঙ্কের অনুমানে বানানো তীরগুলো অবিশ্বাস্যভাবে ঠিক ঠিক জায়গায় একটার পর একটা লাগতে থাকায় ভীষণ উৎফুল্ল হয়ে উঠল ।
    অবশেষে দেবব্রত চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল , ' আচ্ছা ... অনেক তো বকবক করলে এতক্ষণ ধরে .... যদি বুকের পাটা থাকে একটা সত্যি কথা বল তো .... তুমি কি বসাকের লোক ..... শালা মহা হারামখোর .... যার খাচ্ছে তাকেই .... '
    ----- ' মাফ করবেন .... কোন বসাকের কথা বলছেন স্যার ? ঠিক বুঝলাম না .... '
    ----- ' আর ন্যাকা সেজ না ... কোন বসাক হবে আবার ! বৈকুন্ঠ বসাক । 'এ টু জেড ডিজিটাল'-এর মালিক ... '
    ----- ' ও তা হবে হয়ত ... কিন্তু না, বৈকুন্ঠ বসাককে আমি চিনি না ... তবে একটা কথা বলছি , যদি কিছু মনে না করেন .... আপনারা গন্যিমান্যি লোক .... '
    ----- ' কি কথা শুনি ... '
    ---- ' গরীব মানুষ স্যার ... যদি কিছু পাই ... তা'লে খোঁজ চালাতে পারি ... মানে ওই বসাকের ব্যাপারে .... '
    দেবব্রত বাবুর সুর নরম হয়ে আসে । অপরাধী মনে সর্বদাই একটা উৎকন্ঠা থাকে । ঝানু অপরাধীও উৎকন্ঠার ঠেলায় অন্তত একটা অন্যমনস্ক ভুল করে বসে । সেই ভুলটাই তার জন্য একসময়ে মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায় ।
    মিস্টার চৌধুরী বললেন , ' আ..চ্ছা , সে জন্য চিন্তা করতে হবে না .... ব্যবস্থা হয়ে যাবে ... '
    ----- ' অনেক ধন্যবাদ স্যার.... হ্যা বলুন , ওই এ টু জেড, না কি বললেন , দোকানটা কোথায় ?'
    এইখানেই দেবব্রত চৌধুরী মারাত্মক ভুলটা করে বসলেন ।
    তিনি বললেন , ' সূর্য সেন স্ট্রীটে .... ফর্টিফাইভ বাই ওয়ান সূর্য সেন স্ট্রীট ... শিয়ালদার দিকে ... '
    ----- ' ঠিক আছে স্যার .... আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন ... হাড়ির খবর বার করে আনব .... আপনার কাজ করে এত টাকা কামিয়েছে ... অথচ আপনার সঙ্গেই বেইমানি .... কিছুতেই ছাড়ব না । খুব তাড়াতাড়ি খবর দেব আপনাকে .... '
    ---- ' কিন্তু ও তো তোমাকে কাজে লাগায় নি বলছ .... '
    ----- ' তাতে কি ? আজ লাগায়নি , কাল লাগাতে পারে ... কাউকে বিশ্বাস করা যায় না । ধান্দাবাজ লোক সব ... '
    ----- ' সে তো বুঝলাম .... কিন্তু এটা তো জানা হল না তোমাকে কে লাগিয়েছে .... '
    ---- ' ওটা নিয়ে চিন্তা করবেন না স্যার .... ঠিক
    সময়ে জেনে যাবেন । যাক, এখন তা'লে ছাড়ছি .... পরশু বেলা দুটোর কথাটা কিন্তু ভুলবেন না স্যার ....'
    কলতান আচমকা ফোন কেটে দেয় । মোবাইল থেকে প্রভাস পালের নামের সিম খুলে ফেলে এবং তার নিজের নামের আসল সিম পুরে দেয়।
    আচমকা ফোন কেটে যাওয়ায় ওদিকে দেবব্রতবাবু মহা বিব্রত বোধ করতে থাকেন । তিনি একনাগাড়ে 'হ্যালো হ্যালো' করতে থাকেন । কোন সাড়া না পেয়ে ওই নম্বরে বার বার আঙুল লাগাতে থাকেন । কিন্তু ফোন রইল নিঃশব্দ এবং প্রতিক্রিয়াহীন । সিইও দেবব্রত চৌধুরীর যে আরো কিছু জানার ছিল , আরও কিছু বলার ছিল ।

    ( ক্রমশঃ )

    ************************************************************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Mousumi Banerjee | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:০০511767
  • শুরুতেই কলতানের কেরামতি!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন