দুটি লেখা : শর্মিষ্ঠা রায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ আগস্ট ২০১৬ | ২০৫৬ বার পঠিত
এমন এক বিচিত্র সময়ে কী করছিলেন নবারুণ? যে মৃত্যু উপত্যকাকে নিজের দেশ বলে মানতে তীব্র অস্বীকার করেছিলেন তিনি, সেই মৃত্যু উপত্যকাই তাঁর সাহিত্যের জরুরি মোটিফ হয়ে রইল সারা জীবন। বহু ব্যর্থতা, অনাচার, জীর্ণ পোকায় কাটা অস্তিত্ব দেখেও আমরণ বামপন্থায় আস্থা হারাননি তিনি। তাঁর সাহিত্যের পাত্ররা তাই সময়মতো পাল্টে নিয়েছে নিজেদের একটু একটু করে। হারবার্টের বিনুর মতো তারা আর গুলি খেয়ে মরার মতো বোকামি করে না। ভূতের সঙ্গে কথা বলে বলে ক্লান্ত হারবার্ট কবজির শিরা কেটে বরফ জলে হাতটা ডুবিয়ে দিয়েছিল। তার বিছানার নীচে রাখা ডিনামাইট চুল্লির ভিতর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কী হুলুস্থূল বাধিয়ে দিল তা আর দেখে ওঠা হয়নি হারবার্টের। অতখানি কল্পনাশক্তিও ছিল না তার।
মেয়েদের কষ্টে অর্জিত কড়ি ডাকাতি হয়ে যায় : ডাঃ শর্মিষ্ঠা দাস
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৮ মার্চ ২০২০ | ৪৭৬৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৯
দেশের বাজেটের মত পারিবারিক বা ব্যক্তিগত বাজেটেও একটা হিসাব থাকে কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ । আগে মাসকাবারির থলেতে থাকত বড়জোর একটা বোরোলীন বা একটা হিমানী স্নো , কিউটিকুরা পাউডার , সঙ্গে কিছু নিখরচার ঘরোয়া প্রসাধনীতেই কাজ চলে যেত । আজকাল সব মিডিয়া জুড়ে অবিরত পুঁজিবাদী কর্পোরেট দুনিয়ার ইস্কুল চলে । রোগা ভোগা গ্রামীণ গৃহবধূ ও অভাবী সাফাইকর্মী সবাই সেই ইস্কুলের ছাত্রী--এরকম সব রোগীরা দেখাতে এসে ঝোলা থেকে উপুড় করে নামিয়ে দেখায় -- নামী ব্রান্ডের হাজার হাজার টাকার অপ্রয়োজনীয় বিউটি প্রডাক্ট --"এইসব মাখি ,তবু গ্লো আসছে না "। যদি প্রশ্ন করি -"সকালে কি খাও মা? দুপুরে? রাতে?" তাদের বিরক্ত চোখমুখ বলে সুষম খাদ্যের কোনো বালাই নেই । যদি বা এতবছর ধরে এত লড়াই করে মেয়েদের হাতে সামান্য ক্রয়ক্ষমতা এল --সেই অর্থ এমন বিপথে ডাকাতি হয়ে যায় ! 2020 সালেও দেখি--বহু কষ্টে পড়াশোনা করে পাওয়া চাকরি , বরের আবদারে ছেড়ে দেয় মেয়ে আর বিবাহবার্ষিকীর উপহার, মিনে করা সোনার লকেট তুলে গদগদ ভাবে সবাইকে দেখায় ।
অন্তর্জলি যাত্রায় অপেক্ষমান যাত্রী : শর্মিষ্ঠা রায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : অর্থনীতি | ১০ আগস্ট ২০২১ | ৩৭৬০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
লাইফ ইনশিওরেন্স কর্পোরেশন, মানে এলআইসির কথাই বলছি। সেই মানুষটির কথা ভাবুন - অফিস-ফেরত এক-কাপ চায়ের খরচ বাঁচিয়ে, সস্তা সাবানে দাড়ি কামিয়েও, প্রতিটি পাই-পয়সা তুলে রেখেছেন প্রভিডেন্ট ফান্ডে - যাতে শেষ বয়সে টাকার জন্য বৃদ্ধ মা-বাবার চিকিৎসা, ছেলেমেয়ের উচ্চশিক্ষা - আটকে না যায়। কোনও এক শুভ্র, নির্মল সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি তিনি জানতে পারেন - এই প্রতিষ্ঠানগুলি বেমালুম ভ্যানিশ হয়ে গেছে, তাহলে তো তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ারই কথা।
হ্যাঁ, এটাই ঘটতে চলেছে। আমাদের আপাত-নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের আড়ালে নিঃশব্দে মাথা তুলেছে এক সর্বগ্রাসী সর্বনাশের আয়োজন। পড়তে থাকুন...
হিন্দুপুরুষদিগের জন্য বাহান্নটি যোগাভ্যাস : শর্মিষ্ঠা
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৮ জুন ২০২৪ | ২৬১৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৩
কৌতুহলে উবু হয়ে বসে পড়ে বুড়ো, ‘লোকে পড়ে?’
‘না পড়ে যাবেটা কোথায়? মাথাটা তো বাঁচিয়ে খাঁচিয়ে রাখতে হবে! না পড়ে পড়ে, না ভেবে ভেবে মগজ তো সব মশারির মত জ্যালজেলে হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তারে সব প্রেসক্রিপশনে কি দাওয়াই লিখছে আজকাল, দেখেননি? রিজিউম রিডিং। শর্টে লেখে, খেয়াল করে দেখবেন - ডাবল আর। দ্য ওল্ড গোল্ড বং হবি।'
বুড়ো চোখ কুঁচকে, ‘সকাল থেকে আজ বউনি হয়েছে?’
হাতে তালি দিয়ে দোকানী, ‘আলবাত হয়েছে! এই যে, 'অধর্ম'র এ সংখ্যাটা। হেএবি ডিমান্ড। অলমোস্ট সবকটা পাতা আপনারই মত একজন খুঁজে পেতে নিয়ে গেলেন। খেয়াল করে দেখুন, এ সংখ্যাটা আবার পঞ্চমুখী হনুমানের লেখা৷ বাহিনীর লোকেরা কভারে এসব দেখলে খুব খুশি হয়। এরম কিছু থাকলেই হল। ভেতরের ব্যাপার নিয়ে অত মাথা ঘামায় না৷ বাইরের র্যাপারটা সেফ থাকলেই হল - মাল সেফ।'