বাংলা ব্লগের ওপর খড়গহস্ত বিটিআরসি : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২৮ মার্চ ২০১৩ | ১৪৭৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
বলা ভালো, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে 'ব্লগ', 'ব্লগার', 'ফেসবুক' ইত্যাদি এখন সাধারণজনের কাছে অনেক পরিচিত শব্দ। কারণ, স্বাধীন বাংলাদেশের ৪২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তরুণরা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ মোড়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। অভূতপূর্ব এই গণজাগরণটি খুব শিগগিরই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কারণ ৪২ বছর ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া তথা ১৯৭১ এর অমিমাংসিত অধ্যায়টির যৌক্তিক মিমাংসা না হওয়া জনমনে ব্যপক ক্ষোভের সঞ্চার করেছিলো। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় না হওয়ায় এটি গণবিস্ফোরণে পরিণত হয়। দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে তারুণ্যের এই জাগরণ। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ১৯৯২ সালে প্রধান যুদ্ধাপরাধী ও জামাতে ইসলামের তৎকালীন আমীর গোলাম আজমের বিরুদ্ধে গণআদালত গঠন এবং তাকে প্রতীকী ফাঁসির রায় দিয়ে চলমান আন্দোলনটির প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন।
জেগে থাকে শাহবাগ, জেগে থাকে বাংলা! : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ | ২০১৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
শাহবাগের মোড়– প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনটি একটি বারুদের স্তুপে স্ফুলিংগ সংযোগ সূচনায় গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন । সেখান থেকে গণজাগরণ, গণ বিস্ফোরণটি ঘটে। প্রথমদিকে আন্দোলনটি শুধু কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠে। ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তরুণদের আহ্বানে খুব শিগগিরই এতে ব্যপক সাড়া মেলে; কারণ সচেতন নাগরিকরা কাদের মোল্লার মতো চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, শীর্ষ জামাত নেতার শুধু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় মেনে নিতে পারেননি। তরুণরা এই আন্দোলনটিতে পথ দেখালেও শিগগিরই ছাত্র-জনতা সকলেই এতে যোগ দেন; দেশের জেলা শহরগুলোতে তো বটেই, এমনকি উপজেলা পর্যায়েও গণদাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। জনমত তৈরি হয়, শুধু কাদের মোল্লা নয়, সব যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি –ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনটি দানা বাঁধে। বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশী, বাঙালি ও সমমনারাও খুব শিগগিরই ১৯৭১ এর মানবতা বিরোধী অপরাধ বিরোধী আন্দোলনটির সঙ্গে একাত্নতা প্রকাশ করতে থাকেন। এই নয়া বসন্তের বজ্র নির্ঘোষ হয়ে শাহবাগের চেতনা ছড়াতে থাকে দেশে দেশে।
আদিবাসী শিশু মাতৃভাষায় পড়বে কবে? - দ্বিতীয় পর্ব : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৩ মার্চ ২০১৯ | ৩০০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
পাহাড় ও সমতলের ভাষাগত সংখ্যালঘু, তথা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে আদিবাসীর মাতৃভাষায় পাঠের ওই বেহাল চিত্র প্রায় একই। পার্বত্য চট্টগ্রাম, বৃহত্তর উত্তরবঙ্গে, কক্সবাজার ও পটুয়াখালিতে ব্যক্তি উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে অল্প কয়েকটি চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, রাখাইন ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়। ব্রাকসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাও এগিয়ে এসেছে এ ক্ষেত্রে। অনেক দেরিতে হলেও ২০১৪ সালে প্রথম খোদ সরকারই এগিয়ে আসে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে। তবে আর সব সরকারি প্রকল্পের মত চার বছরে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ উদ্যোগ।
বাংলাদেশের প্রায় ৭০টি আদিবাসী জনগোষ্ঠির ২৫ লাখের বেশী মানুষ হাজার বছর ধরে বংশপরম্পরায় ব্যবহার করছেন নিজস্ব মাতৃভাষা। পাশাপাশি বাঙালির সঙ্গে ভাব বিনিময়ে তারা ব্যবহার করেন বাংলা। প্রতিটি আদিবাসী জনগোষ্ঠির রয়েছে নিজস্ব প্রাচীন ভাষা, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।
গোড়ায় গলদ : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ২৪ জুলাই ২০১৬ | ৮৮৭০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮০
জিহাদীদের সিরিজ খুনের চাপাতির কোপ "নাস্তিক ব্লগার" এর পরিধি ছাড়িয়ে শিগগিরই বিদেশি, ভিন্ন ধর্মালম্বী, অধ্যাপক, হোমিও চিকিৎসক, সমকামী, এমনকি মসজিদের ইমাম, শিয়া ও পুলিশ পর্যন্ত গড়ালে শেষমেষ সরকার কিছুটা নড়েচড়ে বসেন। ঢাকাসহ দেশের বেশ কিছু স্থানে অভিযানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় আইন-শৃংখলা বাহিনী। অভিযানে ধরা পড়ে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী-জঙ্গি। অবশ্য আমরা মুক্তমনারা আগেই সরকারকে সতর্ক করে বলেছিলাম, ব্লগার খুন হচ্ছে জিহাদের সূচনা মাত্র; খেলাফত, তথা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার খোয়াবে মশগুল মুজাহিদরা শিগগিরই হত্যার পরিধি বিস্তৃত করবে। রাষ্ট্র দখল করাই যেহেতু তাদের লক্ষ্য, তাই তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর আঘাত হানবে শিগগিরই। আর সরকারি উদাসিনতায়, বলা ভালো, জিহাদীদের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় দিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের হত্যাযজ্ঞ দেশজুড়ে ছড়াতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে আবারো প্রকাশক খুন : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ১২ জুন ২০১৮ | ১২৬৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ২১
বাংলাদেশে আবারো খুন হলেন মুক্তমনা প্রকাশক, কবি ও কমিউনিস্ট নেতা শাহজাহান বাচ্চু(৫৫)। সোমবার (১১ জুন) বিকালে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কাকালদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহজাহান বাচ্চু ‘বিশাখা’ প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধীকারী ও মুক্তমনা লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শাহজাহান বাচ্চু মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশ বলছে, কাকালদী মোড়ে দুটি মোটরসাইকেলে করে চার দুর্বৃত্ত শাহজাহানকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার লাশ মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বাচ্চুর মেয়ে দূর্বা জাহান সোমবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘আমার বাবা শাহজাহান বাচ্চু আজকে মরে গেছে। আমাদের গ্রামে। বাবাকে কারা যেন দুইটা গুলি করে মেরে ফেলেছে।’
সাবাস বাংলাদেশ! এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়… : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৪ আগস্ট ২০১৮ | ২৭২৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৬
প্রশ্ন উঠতে পারে, এই ছোট ছেলেমেয়েদের রাস্তাদখল আর কর্তৃত্বের অধিকার কে দিল? আসলে এই অধিকার দিল তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আর মালিকানাবোধ। তারা এখন বড়দের শেখাচ্ছে এইদেশের মানুষ প্রজা নয়, তারা নাগরিক, নাগরিকের অধিকার লুন্ঠিত হলে তা প্রতিষ্ঠার অধিকার ও দায়িত্ব তাদের আছে। এই দেশের মালিক এই দেশের মানুষ, কিছু লোভী ব্যক্তি আর নিপীড়ক গোষ্ঠী নয়। বড়রা যদি এই মালিকানা দাবি করতে না পারেন, তাহলে ছোটরাই এগিয়ে এসে বড়দের পথ দেখাবে।
আসলে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যে গণজাগরণ ঘটেছিল, সেটি ছিল প্রজন্ম ’৭১র বিদ্রোহ। মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় প্রজন্ম সেদিন যুথবদ্ধ হয়ে পথ দেখিয়েছিল দেশকে। আর এখন যারা আন্দোলন করছে, এই ছোটরা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্ম, যাদের হাতে আগামীতে দেশের স্টিয়ারিং থাকলে, কখনোই পথ হারাবে না বাংলাদেশ!
গুজব দিয়ে যায় চেনা : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ২০ আগস্ট ২০১৮ | ১৪৬৭ বার পঠিত
বাংলাদেশে গত ২৯ জুলাই জাবালে নূরের দুটি বাসের রেষারেষির মধ্যে একটি বাস ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের এমইএস এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একদল শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায়। এতে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলেই নিহত হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাদের সহপাঠীরা। ধীরে ধীরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকার সব রাজপথে গড়ে তোলে “নিরাপদ সড়ক আন্দোলন”। অভূতপূর্ব এই স্বতস্ফূর্ত আন্দোলন খুব শিগগিরই স্ফূলিঙ্গ থেকে দাবানলের মতো ছড়িয়ে যায় শহর থেকে বন্দরে, নগর থেকে নগরে, সারা বাংলাদেশে। শিক্ষার্থীরা রোদ-বৃষ্টি, পুলিশ ও ছাত্রলীগের লাঠিপেটা উপেক্ষা করে ট্রাফিকের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বুঝিয়ে দেয় সিস্টেমের গলদ।
তবে বলো, জিতলো কে জন্মভূমি? : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৫ মার্চ ২০১৮ | ৯১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
গত বছর ১৯ এপ্রিল দুপুরে রাঙামাটির নান্যাচর কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে ৫ এপ্রিল সকালে নান্যাচরে সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক ও অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছিলেন রমেল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকী, শান্তিচুক্তি বিরোধী পাহাড়িদের গ্রুপ ইউপিডিএফের চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী ছিলেন!
মানবাধিকার কর্মীরা সে সময়েই প্রশ্ন তোলেন, রমেল চাকমা সন্ত্রাসী হলে তাকে পুলিশে হস্তান্তর করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? তাকে সেনা হেফাজতে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে কেন?
নিহত রমেল ছিলেন নান্যাচর উপজেলার পূর্ব হাতিমারা গ্রামের কান্তি চাকমার ছেলে। তিনি ডানচোখে দেখতে পেতেন না। মারা যাওয়ার আগে গুরুতর আহত অবস্খায় রমেল সেনা নজরদারি ও পুলিশের পাহারায় দু’সপ্তাহ ধরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পড়ে তার লাশটিও পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে সেনা হেফাজতে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অভিযোগে প্রকাশ।
চাপাতিতন্ত্রের ভেতর : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ১১ আগস্ট ২০১৫ | ১২৩৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
তো, আমারো কি এখন থেকে পরিবারের কথা মেনে সাবধান হওয়া উচিৎ? আমাকে কতল কাল কখন, কোথায় হবে? ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার সময় রাতের বেলা গলির মুখে কি ঘাপটি মেরে থাকবে কোনো মৌলবাদের নাতি? নাকি সকাল, সকালই নূরানী লেবাসের চাপাতিতন্ত্র বাসার সামনে ঝাপিয়েঁ পড়বে আমার ওপর? অথবা তারা আমার শোবার ঘরেই সদলবলে ঢুকে কুপিয়ে জিহাদ কায়েম করে গেল, এমনো তো হতে পারে? তারা আমার গলা কাটার আগে আমি কি তাদের মুখগুলো একনজর দেখার সময় পাবো? আর অনিবার্য প্রশ্ন এই, তখন কি হবে আমার অনুভূতি?
নিরাপত্তা বাহিনীর রোষানলে আদিবাসী ব্লগ : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | খবর : টাটকা খবর | ১৭ মে ২০১১ | ১১২৯ বার পঠিত
আমরা মনে করি, ব্লগ ও ফেইসবুকের ওপর এ হেন খবরদারী মুক্তচিন্তার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপেরই বহি:প্রকাশ, এটি কোনো সভ্য, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। পাশাপাশি আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পাহাড় থেকে সেনা-সেটেলার প্রত্যাহারেরও জোর দাবি জানাই।
আদিবাসী শিশু মাতৃভাষায় পড়বে কবে? : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ | ১০৪৫ বার পঠিত
দীর্ঘদিন পাহাড়ে, বনে-বাদাড়ে, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো ঘুরে জেনেছি, এ দেশে সাধারণভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা হত-দরিদ্র প্রধান প্রধান আদিবাসী গোষ্ঠিগুলোর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, রাখাইন, মনিপুরী, গারো, সাঁওতাল ও খাসিয়া) প্রত্যেকেই নিজেস্ব ভাষা ও নিজ ভাষার বর্ণলিপি অনেক সমৃদ্ধ। আবার কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠির নিজেস্ব বর্ণমালা না থাকলেও তাদের রয়েছে রোমান বর্ণমালায় ভাষা চর্চার ঐতিহ্য। কিন্তু চর্চার অভাবে এ সব বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্ত প্রায়।
এরফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজেস্ব ভাষায় তারা একেবারে প্রায় অজ্ঞ। অথচ মাত্র চার দশক আগেও পরিস্থিতি এতোটা বিপন্ন ছিলো না। তখন নিজ মাতৃভাষা লিখিত চর্চার পাশাপাশি নিজস্ব উদ্যোগে শিশুশিক্ষায় ভাষাটির বর্ণপরচিয়ও চলতো।
চাকমা রাজা ব্যরিস্টার দেবাশীষ রায় আলাপকালে বলেন, অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সারাদেশের শিশু শিক্ষার ক্ষেত্রে আদিবাসী শিশুর ঝরে পড়ার হার অনেক বেশী। এর একটি কারণ- ভাষাগত বাধা। আদিবাসী শিশু বাসায় যে ভাষায় কথা বলছে, স্কুলে সে ভাষায় লেখাপড়া করছে না। বাংলা বুঝতে না পারার কারণে শিশুমনে পাঠ্যবই কোনো দাগ কাটছে না, স্কুলের পাঠ গ্রহণ করাও তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
কল্পনা চাকমা এখন কোথায়? : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ | ১১৭৬ বার পঠিত
সেদিন কল্পনার মা বাঁধুনী চাকমার দেখা মেলেনি। তবে আরো কিছুদিন পরে বৃদ্ধা মা চোখ মুছতে মুছতে বলেছিলেন, তার একমাত্র মেয়ে অপহরণের পর এই অপহরণকে নিয়ে হেলিকপ্টার-রাজনীতির কথা। তিনি বলেছিলেন, ঢাকা থেকে সেনা হেলিকপ্টারে করে কিভাবে কথিত মানবাধিকার সংস্থার নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের অধ্যাপক, জানিপপ নামে একটি এনজিও প্রধান) সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের গ্রামে আসেন। তারা তাকে বার বার চাপ দিচ্ছিলেন, কল্পনা চাকমাকে শান্তিবাহিনী অপহরণ করেছে, কিন্তু এখন শান্তিবাহিনীই এই অপহরণের দায় চাপিয়ে দিচ্ছে সেনা বাহিনীর ওপর - এমন একটি স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য। কিন্তু নিজের মেয়েকে নিয়ে এমন মিথ্যে রাজনৈতিক প্রচারে তিনি কিছুতেই রাজী হননি। এ নিয়ে তাকে নানা হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। ...
তথ্য-প্রযুক্তি কতদূর এগোলো বাংলা? : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ | ১১৫৪ বার পঠিত
বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রধান উদ্যোক্তা এবং আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড| রাগিব হাসান। এক ইমেইল বার্তায় তিনি এই লেখককে বলছেন, গত চার দশকে বাংলা ভাষার ব্যবহার এগিয়ে গিয়েছে অনেকটা। এ ক্ষেত্রে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। এতদিন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতো, যার কোনোটির সঙ্গে কোনোটির মিল ছিল না। গত পাঁচ বছর ধরে সার্বজনীন ইউনিকোডে বাংলা লেখা হচ্ছে, ফলে ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। বাংলা ব্লগের বিপুল জনপ্রিয়তা ও বাংলা উইকিপিডিয়ার বিস্তার লাভই এর বড় প্রমাণ।
"অভ্র' সফটওয়্যার উদ্ভাবন করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান খান। মেহেদী, রিফাতুন্নবি, তানভিন ইসলাম সিয়াম, রাইয়ান কামাল, শাবাব মুস্তফা, নিপুণ হক -- এই কয়েকজন বন্ধু গত ছয় বছর ধরে অভ্র নিয়ে কাজ করছেন।
মি: মিনিস্টার, আপনাকেই বলছি .... : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ২৬ ডিসেম্বর ২০১০ | ৯৯৮ বার পঠিত
তবে আপনি এইসব মহান উক্তি যখন করছেন, তখন ইউকিলিকস র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান নয়, পড়ুন, রক্ষী বাহিনী এগেইন ব্যাক) নিয়ে আপনাদের গর্বের বেলুনটি লিক করে দিয়েছে। বেয়াড়া ইউকিলিকসকে উদ্ধৃত করে দি। গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, গণতন্ত্রের মহাপ্রভু ব্রিটিশ সরকার স্বয়ং নাকি খুনি এই সরকারি বাহিনীটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে! আর প্রতিষ্ঠার পরে গত ছয় বছরে ড়্যাবের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে নাকি মারা গেছে হাজার খানেক লোক।
ইতিহাস সাক্ষী, পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সিরাজ সিকদারকে বন্দী অবস্থায় গুলি করে হত্যার পর তখনকার প্রধানমন্ত্রী ও আপনাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ('বঙ্গবন্ধু' বলবো কী?) সংসদে দম্ভ করে বলেছিলেন, কোথায় আজ সিরাজ সিকদার? এরও আগে তিনি কমিউনিস্ট ভূতের আতংকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, নকশাল দেখা মাত্র গুলি করা হবে! মাননীয় মন্ত্রী, সে দিনও আপনারা ভুলে গিয়েছিলেন, নকশাল কারো গায়ে লেখা থাকে না।
করোনায় নিরানন্দ ঈদ : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ২৫ মে ২০২০ | ২৭৬৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
করোনার ক্রান্তিতে গত ২৬ মার্চ, স্বাধিনতা দিবস থেকে সারাদেশে গণছুটি ও গণপরিবহণ বন্ধ রেখে দফায় দফায় বাড়ানো হয় লকডাউন। সবশেষ ঈদের কেনাকাটার জন্য ১০ মে থেকে আংশিক লকডাউন শিথিল হলো। দোকান-পাট, মার্কেট ও শপিং মল সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত খোলা রাখার ঘোষণা এলো। সরকারের পক্ষ থেকে সবখানে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেওয়া হলেও বাস্তবে দেখা যায়, করোনাকে মোটেই কেয়ার করছে না বাঙালি। দোকান-মার্কেট-শপিং মলে ঘেঁসাঘেষি আর ঠেসাঠেসি করেই চলছে কেনাকাটা। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও বেরিয়ে এলো প্রচুর ব্যক্তিগত যান, সিএনজি চালিত অটো-রিকশা, অবৈধ ইঞ্জিন রিকশা, রিকশা, ভ্রাম্যমান হকার ও সাধারণ মানুষ। আইন-শৃংখলা বাহিনীও সরিয়ে নিলো তাদের টহল ও নজরদারি।
আমি বাংলার, বাংলা আমার, ওতপ্রোত মেশামেশি… : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৭ অক্টোবর ২০২০ | ৩২৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
এমনই এক নির্মম বাস্তবতায় সবশেষ, ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের বলপাইয়া আদাম এলাকায় পাহাড়ি গ্রামের ভেতরে ঢুকে নয়জন সেটেলার বাঙালি হামলা ও লুঠপাঠ চালায়। এ সময় তারা বাড়ির প্রতিবন্ধী চাকমা মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে। লক্ষ্যণীয়, সেপ্টেম্বরেই খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও মহালছড়িতে দুজন পাহাড়ি স্কুলছাত্রী এবং বান্দরবানে এক ত্রিপুরা নারী ধর্ষিত হয়েছেন, আদিবাসী বলে এ পর্যন্ত কোনো ঘটনারই সুরাহা হয়নি।
ওই ঘটনার পর ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের একজন প্রতিনিধি নির্যাতিতা প্রতিবন্ধী মেয়েটির বাড়িতে যান। তিনি দেখেন, মেয়েটির মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। আর আহাজারি করে বলছেন, “আমরা কি এদেশের নাগরিক নই? তাহলে কেন আমাদের ওপর এমন অত্যাচার?”
সাংবাদিক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কয়েক বছর আগে বাবা ও ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
পাহাড়ের আরো আট-দশটা নির্যাতনের ডামাডোলে প্রতিবন্ধী নারী গণধর্ষনের ঘটনাটিও হয়তো হারিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু এক্ষেত্রে সোচ্চার হয় দেশ। করোনাক্রান্তির ভেতরেই পাহাড়ে তো বটেই, খোদ ঢাকার শাহবাগে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন একের পর এক প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সমাবেশ করে।
কাণ্ডারী হুঁশিয়ার! : বিপ্লব রহমান
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৫ নভেম্বর ২০২১ | ৩৩২৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
বাস্তবে, হিন্দু ধর্মের মন্দির, পূজামণ্ডপ, বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলার জন্য জুমার নামাজের যে মিছিলগুলো বের হয়েছিল, মসজিদে-মাদ্রাসায় মাইকিং করে ধর্মানুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত, জেহাদি জোশে যারা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর!’ ধ্বনিতে বিধর্মী-কাফেরদের ওপর হামলা করেছিলেন, ভাঙচুর, লুঠপাঠ ও অগ্নিসংযোগ করে বদলা নিতে মরিয়া ছিলেন, তাদের কোনো দল ছিল না, ওই জেহাদি মিছিলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত, কমিউনিস্ট পার্টি – সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল, মিছিলকারীদের একটিই পরিচয় তখন যেন প্রধান, ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান!’