সবার জন্য বিনামূল্যে অত্যাবশ্যক ও জীবনদায়ী ওষুধ চাই : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ১৩৭৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকায় আছে ৩৭৪টা ওষুধ। ভারতের জাতীয় তালিকায় ওষুধের সংখ্যা ৩৪৮। অথচ ভারতের বাজারে ওষুধ ফর্মুলেশনের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে।
এত ফর্মুলেশন তাহলে কেন? একই ওষুধ আলাদা আলাদা কোম্পানী বাজার-জাত করে আলাদা আলাদা নামে। তারপর আছে একাধিক ওষুধের নির্দিষ্ট মাত্রায় মিশ্রণ, যার অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয়। এছাড়া আছে অপ্রয়োজনীয় অনেক ফর্মুলেশন, যেমন—কাফ সিরাপ, হজমী ওষুধ, টনিক...।
প্রচুর ওষুধ, মানুষের জন্য ওষুধ নেই...
ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান নিয়ে কতগুলো ন্যায্য প্রশ্ন : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৯ মার্চ ২০১৩ | ২৬১৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৬
মেডিকাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ২০০২ সালে কোড অফ এথিকস-এ বলেছে ডাক্তারদের যথাসম্ভব জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা উচিত। বিভিন্ন সময় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকারি ডাক্তারদের ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করতে বারণ করেছে।
তাহলে ব্র্যান্ড নামে ওষুধ উৎপাদন হচ্ছে কেন? বাজারজাত হচ্ছে কেন? একদিকে সরকার ব্র্যান্ড নামের ওষুধ, অযৌক্তিক নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্রণ (irrational fixed dose combinations), ক্ষতিকর ওষুধ, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি করতে দেবে আর ডাক্তারদের বলবে এসব লেখা যাবে না — এমনটা হয় নাকি!
সরকারের সদিচ্ছা থাকলে তেমনটা করত যেমন করেছিল আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশের সরকার — অযৌক্তিক নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্রণ (irrational fixed dose combinations), ক্ষতিকর ওষুধ, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ নিষিদ্ধ করে।
ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার বা সবার জন্য স্বাস্থ্য এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপন : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৪ জুলাই ২০১৯ | ২০৮৪ বার পঠিত
পৃথিবীর অনেক দেশে সরকার নাগরিকের স্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব নিলেও আমাদের দেশে তেমনটা নয়। 2010 সালে তৎকালীন যোজনা কমিশন সবার জন্য স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে এক উচ্চস্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করে, এই দলের কাজ ছিল সরকার কিভাবে সমস্ত নাগরিকের স্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্ব নিতে পারে সেই সম্পর্কে সুপারিশ করা।
ডা শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন এই বিশেষজ্ঞ দল হিসেব করে দেখায় সরকার যদি জিডিপির 2.5 শতাংশ 2017 এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে খরচ করে এবং 3 শতাংশ 2022 এর মধ্যে খরচ করে তাহলে সরকারি পরিকাঠামো এমন ভাবে গড়ে তোলা সম্ভব যা দিয়ে নাগরিকের প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যক প্রাথমিক স্তরের পরিষেবা, দ্বিতীয় স্তরের পরিষেবা এবং তৃতীয় স্তরের পরিষেবা দেওয়া যায়। তাদের সুপারিশ ছিল কোন ক্ষেত্রে সরকারি পরিকাঠামো যদি তৈরি না থাকে তাহলে বেসরকারি হাসপাতালের কাছ থেকে পরিষেবা কেনা যেতে পারে, তবে বর্তমানের মত সেই পরিষেবা ব্যক্তি রোগী কিনবেন না, কিনবে সরকার নিয়োজিত এক স্বায়ত্তশাসিত কমিটি।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থাঃ কিছু প্রশ্ন ও বিশ্লেষণ : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ জুলাই ২০১৯ | ১৭৪৮ বার পঠিত
কি রকম বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে পশ্চিমবঙ্গে আজ? ডাক্তার আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে বললেন, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে হবে, কিন্তু হয়তো তিন মাস পরে। অপারেশনে কোন ইমপ্ল্যান্ট লাগবে, সেই ইমপ্ল্যান্ট ডাক্তার বাইরে থেকে কেনাতে পারবেন না, এক মাস বাদে ইমপ্ল্যান্ট সরবরাহ হলে অপারেশন হবে। তবু বিনামূল্যে চিকিৎসা র সুবিধা পাচ্ছেন অনেক গরিব মানুষই।
আমার মূল ক্লিনিক হাওড়া জেলার উলুবেরিয়া মহকুমায়, রোগীরা প্রায় সবাই শ্রমজীবী মানুষ।১৯৯৫ থেকে ২০১৪ অব্দি আমার মাত্র দুজন রোগী হার্টের অপারেশন করাতে পেরেছিলেন, বাকিদের ওষুধ পত্র দিয়ে চালিয়ে যেতে হয়েছে। ২০১৪র পরে যাদের প্রয়োজন তাঁদের মেডিকেল কলেজে পাঠালে এনজিওপ্লাস্টি হয়েছে, জনা দুয়েকের বাইপাস অপারেশন ও।
পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য নিয়ে মমতা ব্যানার্জীর উদ্যোগঃ সবার জন্য স্বাস্থ্য কি এই ভাবে হবে? : ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৫ এপ্রিল ২০১৭ | ১৫১৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
সমস্ত চিকিৎসা বিনামূল্যে হবে শুনে মনে হতে পারে, ‘এই তো! আমাদের সবার জন্যে স্বাস্থ্যের স্বপ্ন সত্যি হল বুঝি।’ কিন্তু আসল ছবিটা কিন্তু সেরকম দাঁড়াচ্ছে না। সব বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ঘোষণা হয়ে গেলেও অনেক কিছুই কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না, সব ওষুধ মিলছে না, অপারেশন, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপির জন্যে রোগীদের লম্বা ডেট দেওয়া হচ্ছে, পেসমেকার, স্টেন্ট, প্রস্থেসিস যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া না যাওয়ার কারণে রোগীদের ঘোরানো হচ্ছে। পরিকাঠামো, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা না বাড়িয়ে সব বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ঘোষণা করে দেওয়ায় চিকিৎসার মান ক্রমশ নেমেই চলেছে, কোথাও বাচ্চা পুড়ে যাচ্ছে ওয়ার্মারে, কোথাও পেশেন্ট পার্টি ডাক্তার-নার্স পেটাচ্ছে। আসলে যেটা নেই-ই সেটা ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে বলে ঘোষণা করে দেওয়ার ফল ভুগছেন রোগী ডাক্তার কর্মচারী সকলেই।
স্মরণে শংকর গুহ নিয়োগী : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ | ১৪৬৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৫
এবার শুরু নতুন ধারার শ্রমিক ইউনিয়ন তৈরীর কাজ। এ যাবৎ ট্রেড ইউনিয়ন বলতে লোকে বুঝত শ্রমিকদের আর্থিক দাবী-দাওয়া আদায়ের সংগঠনকে, যা বেতনবৃদ্ধি-বোনাস-ছুটি-চার্জশিটের জবাব ইত্যাদি নিয়ে আন্দোলন করার সংগঠন। অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক-জীবনের এক-তৃতীয়াংশ, আট ঘন্টার সংগঠন, যে আট ঘন্টা শ্রমিক কলে-কারখানায় কাটান।
নিয়োগী শ্রমিকদের খন্ড-বিখন্ড মানুষ হিসেবে দেখতেন না, দেখতেন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে, যে মানুষ উৎপাদনের কাজ ছাড়াও পরিবারে-সমাজে থাকে—খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের সমস্যা, নিজের অবসর বিনোদন, সন্তানদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার জন্য যাকে ভাবতে হয়, যাকে সম্পর্ক রাখতে হয় সমাজের অন্যান্য মানুষের সঙ্গে। নিয়োগীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নতুন ইউনিয়নের কর্মসূচীতে সামিল হল আর্থিক দাবীর লড়াইয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ-ইতিহাস চেতনা-নারী মুক্তি-সমাজের অন্যান্য শোষিত অংশের মুক্তি, নিপীড়িত জাতিসত্ত্বার মুক্তির মত বিষয়গুলি।
স্বাস্থ্য, অধিকার (প্রথম কিস্তি) : ডা. পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ অক্টোবর ২০১২ | ১৫৯৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
বামপন্থী দলগুলোও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলোকে আন্দোলনের বিষয় হিসেবে নিয়েছেন এমনটা নয়—অথচ বহু ডাক্তার বামপন্থী দলগুলোর সদস্য বা সমর্থক হিসেবে ছিলেন বা আছেন। তাঁদের কাছ থেকে উচ্চ হারে লেভি নেওয়া, তাঁদের দিয়ে সংগঠনের সদস্য-সমর্থকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো, কখনও সখনও তাঁদের দিয়ে আন্দোলনের সময় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চিকিৎসা শিবির চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে দলগুলো। তাঁদের স্বাস্থ্য আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে ব্যবহার করা হয় নি বললেই চলে।
স্বাস্থ্য ভিক্ষা নয়, অধিকার—সেই অধিকার অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে—এই ধারণা থেকে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে ৭০ দশকের মাঝামাঝি, ৮০-র দশকের শুরু থেকে। ভারতের নানা কোণে চলা এই সব আন্দোলনগুলো নিয়ে এই আলোচনা—উদ্দেশ্য আন্দোলনগুলোর ইতিবাচক-নেতিবাচক দিকগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলা।
ব্যথার পাহাড় ডিঙোতে চেয়েছিলেন যিনি : পুণ্যব্রত গুণ
বুলবুলভাজা | স্মৃতিচারণ : স্মৃতিকথা | ১৫ জুলাই ২০২৩ | ১৮১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
ব্যথা যে অন্য রোগের উপসর্গ মাত্র নয়, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাকে রোগ হিসেবে গণ্য করা দরকার এই উপলব্ধি আসে এই চিকিৎসকের মননে। তারপর নিজেকে শিক্ষিত করা, স্বীকৃতি অর্জন করা, সরকারি ব্যবস্থার লাল ফিতে ছিঁড়ে ব্যথা চিকিৎসার এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা ইএসআই হাসপাতালে, ভারতের প্রথম ব্যথা চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-ই এস আই ইনস্টিটিউট অফ পেইন ম্যানেজমেন্ট।
ব্যথা চিকিৎসার এই পুরোধা পুরুষ চলে গেলেন ২০২৩-এর ৫ই জুলাই।