"ইচ্ছা করো দেহান্তর পেতে? তুমি কি আসবে রূপ ধরে? তোমাকে শুধিয়ে লিখি তাই, প্রেম আসে প্রেতলোক যেতে?" ...... বিষ্ণু দে [প্রেম মানবজগতের এক বিচিত্র অনুভূতি, এক বিস্ময়। তেমনই প্রেতাত্মা নিয়ে রয়েছে নানামুনির নানামত। অতৃপ্ত প্রেত কি আছে? তাদের অস্তিত্ব কি সত্যি হয়? তবে প্রেম যে যুগে যুগে নির্দিষ্ট কারো জন্যই জেগে থাকে এমনটা তো হামেশাই শোনা যায়। প্রেতাত্মার ধারণা নিয়েও যেমন বিতর্ক আছে তেমনই প্রেম ফিরে ফিরে আসতে পারে কিনা তাও চিন্তার বিষয়। শুদ্ধ হৃদয় কি পারে কোনো ... ...
[ প্রতিদিন রাতে পৃথিবী নিস্তব্ধ হলে জেগে থাকার যন্ত্রণা যাদের আছে, তারা সম্ভবতঃ স্থির চোখের স্ট্রীটলাইটের সঙ্গে নীরব কথোপকথন করে থাকেন? এটিও তেমন একটি নিদর্শন] রাত এখন দুটো দশ...না, দুটো বেজে বারো মিনিট? তুমি এখনো জেগে কেন স্ট্রীটলাইট? আমার তো ঘুম আসেনা ঘুম আমার প্রেমিক নয়। তুমি কেন এতো একা? তুমি এখনো জেগে কেন, স্ট্রীটলাইট? রাত এখন দুটো কুড়ি নাকি একুশ-বাইশ মিনিট? আমার মস্তিষ্ক জর্জরিত।. ঘুম আসছে না তোমারও, স্ট্রীটলাইট? আমার চোখে ক্লান্তজল শুকিয়ে মরা নদী তোমারও অনিদ্রা নিত্যসঙ্গী নয় যদি তোমার চোখও কেন আমার মতোই লাল? ঘুমোবে না? আমাদের নিত্যসঙ্গী এই ... ...
খুব ছোটোবেলায় একবার দিদিমণি প্রশ্ন করেছিলেন ক্লাসে -- "যদি হঠাৎ একটা জাদুশক্তি পেয়ে যাও, তোমরা কে কোন্ পাখি হতে চাইবে?"ভয়ে ভয়ে বলেছিলাম "মিস্, আমি হতে চাই চাতক।"একঘেয়ে ডাক যার 'বৃষ্টি হোক! বৃষ্টি হোক!'তৃষ্ণার্ত প্রতীক্ষায় রাঙা দুটি চোখ আর মেঘের ঘনঘটার দিকে লুব্ধ দৃষ্টি অপলক। সবাই হো হো হেসে বলে, "বোকা, আর পাখি পেলি না? শেষে কিনা চাতক? যুক্তিহীন, অনর্থক!"চাতকপাখি কেমন দেখতে? দেখেছে কতোজন? শুধু বৃষ্টি ওই পাখিটার একান্ত ... ...
রোজ ভোরে পূর্বে রক্তকমল এসে,বিবর্ণ নদীর জলকে বলে ভালোবেসে'তোমার কথা সারারাত ধরে ভাবি,তোমাকে দিচ্ছি শালুকের নাকছাবি।'নদীটিও হাসে নিত্য সুরকল্লোলেরেঙে ওঠে স্রোত তার হিল্লোলেওদের মধ্যে সেই কথা হতে হতেসকালের রোদ মেশে ভাটিয়ালি স্রোতেলালপেড়ে শাড়িতে নদী তখন প্রেমময়ীআলো বলে, "যদি তৃতীয় পান্ডব হই? তুমি মম আদিমাতা বলে, হে ঊর্বশী সমর্পণকে তোমার যদি ভুল বুঝে বসি?"স্রোতস্বিনীর বিভঙ্গে জাগে রৌদ্রবসনের চিক্কণভাঙা পাড়ের পিঞ্জরেতে ওঠে বেজে নূপুরনিক্কণ।বললে সে, "পাপবোধে যদি কেঁদে বলো চরণে এ মহাপাপে ভীত ; নইলে ভয় করি না মরণে পুরূরবা তব প্রিয়তম, হে লজ্জাহীনা স্বর্গনটিনী!"আরো হেসে বলে চলে প্রগলভা সেই তটিনী "অপ্সরীর চিরন্তন দায়ভার দেবকুলের চিত্তবিনোদনবিস্মৃত হয়ে নিজ-উত্তরপুরুষকে করো আত্মনিবেদন?"আলো বলে, "তাই প্রশ্ন করি , সঙ্গে সেইসব ... ...
ক ... ...
[সকালের ঝলমলে রোদে জানালার পাশের নিমগাছটা যেন নবজীবন পেয়েছে। কাঠবেড়ালির খেলা দেখতে দেখতে আলোর মুখে ফুটে ওঠে এক অপার্থিব সুন্দর হাসি। তমিস্রা একটি পুজোসংখ্যা পড়া অর্ধসমাপ্ত রেখে উঠে দাঁড়ালো।] তমিস্রা : বৃষ্টির যন্ত্রণা বোধহয় কিছুটা কমলো, রোদ উঠেছে। আলো : আপাততঃ। এবার দেখা যাক পুজোয় ভাসাবে কিনা! মনে তো হচ্ছে এই রোদ ক্ষণস্থায়ী, আমাদের ক্ষণিক উৎসাহের মতো। তমিস্রা : সেদিন তুমি কী বলছিলে? স্বাভাবিকতা ও ভারসাম্যহীনতা নিয়ে? আলো : প্রশ্ন করছিলাম তোমাকে, যে স্বাভাবিক বলতে ঠিক কী বোঝায়? তমিস্রা : সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে সাযুজ্য। অর্থাৎ যা দেখে আমরা অভ্যস্ত, তার মতোই। এবার জীবনে আমার উচ্চাশার সঙ্গে যদি আবেগের সংঘাত বাঁধে, তবে আচরণে কিছু অসংগতি প্রকাশ পেতে ... ...
[ আমি সাধারণতঃ এখানে কবিতা খুব একটা লিখেছি বলে মনে পড়ে না। কারণ ছন্দময় কবিতায় যে প্রচন্ড পরিশ্রম ছন্দ,মাত্রা ও structure -এর উপর করতে হয়, তা আমার নেই। যাইহোক, এই কবিতাটিও মনের রূপকেরই বহিঃপ্রকাশ। এই রচনাটি বিগত ২৭.০৯.২০২৪ -এর রচনা।] হাতে তুলে নিলাম শ্বেত পুন্ডরীক। বললাম, 'এখন তো নিস্তব্ধ চারিদিক নেওয়া যায় না আমার অঞ্জলি?'তুমি তীক্ষ্ম - কঠিন পরিহাসচ্ছলে,ফিরিয়ে দিলে আমায় আমারই দেওয়া ফুল।বললে, 'আমি নির্ভুল শ্বেতপদ্ম নীরব শান্তির প্রকাশ।আজ কঠোর সময়ের অগ্নিভ আকাশ তাই অস্বীকার করছে তোমার অর্ঘ্য...' আবার অধরা থেকে গেল আমারস্পর্শমিলনের স্বর্গ। সেদিন ইন্দ্রের কানন থেকে তুলে আনি লাল কোকনদ।হৃদয়ে সুরভিত তারই পদচিহ্নময় কুসুমিত পথ, বললাম, 'গ্রহণ করো আমার একান্ত ভালোবাসা...' বললে সে, 'অনেকের এখনো বুকভরা ... ...
[ মানুষ লেখে কেন? খুব সহজে এর উত্তর হলো, যা বলতে পারা যায় না তার জন্যই লেখা। অর্থাৎ যা প্রকাশ করার প্রয়োজন, অথচ মাথার মধ্যে ক্রমাগত আবর্তিত হতে থাকা সেই সংলাপগুলি অন্য মাধ্যমে প্রকাশ করা যাচ্ছে না, তার জন্যই লেখা। কয়েকটি পর্বে তেমনই কিছু শব্দের জলছবির আয়োজন। চরিত্রদুটি নেহাতই মানবমনের দুটি দ্বিধাবিভক্ত অংশ। কল্পনার স্বার্থে যারা পুরুষ ও নারী। আলো ও তমিস্রা। আসলে কেউই তারা কোনো বাস্তবচরিত্র নয়। কিছু কথা ও প্রশ্নমালার নিরাবয়ব রূপকমাত্র।] তমিস্রা : আজ সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে, দেখেছো আলো? যেন অবিরত ধারাপতনের সঙ্গে জলতরঙ্গের খেলায় মেতেছে প্রকৃতি! আলো : হ্যাঁ। তমিস্রা : এমন সজলঘন মেঘময় দিনেই ভানুসিংহের পদাবলী যেন ... ...
- "কী দেখিস ওগুলো ইউটিউবে? কোনো মাথামুন্ডু নেই। তাছাড়া ক্যারেক্টারগুলোর ছিরি দ্যাখো ! ড্যাবা ড্যাবা চোখ, ছোট্ট মুখ, প্যাংলা চেহারা, অদ্ভুত সব নানারঙের চুলের কাটিং, ঝলমলে ড্রেস আর ইচিং পিচিং লাফালাফি! অসহ্যকর!" হ্যাঁ, কোনো অ্যানিমের এপিসোড চালিয়ে দেখতে বসলে বাড়ির বড়োদের থেকে এরকম মুখ ঝামটা প্রায় সবাই খেয়ে থাকে। ওয়ান পিস ; নারুটো, লাইট ইয়োগামি বা চেইনশ' ম্যানের সঙ্গে পরিচিত নয় এমন Gen-z সদস্য পাওয়া কঠিন। আর শুধু জাপানি চিত্ররীতির অ্যানিমেটেড রূপ যার পোশাকি নাম 'অ্যানিমে' তার কথাই বা বলি কেন? চিত্ররূপ 'মাংগা' বিক্রির জন্য আজকাল কলকাতা বইমেলায় রীতিমতো 'মাংগা প্যাভিলিয়ন' তৈরী হচ্ছে। কয়েকবছর আগে পর্যন্ত মাংগা এককপি পেতে হাড়ে দুব্বোঘাস গজিয়ে ... ...
|| ৩||[সত্যকাম একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলছে চাপাগলায়। আধো-অন্ধকার রাস্তা। একটি বাড়ির পাশে ওরা দাঁড়িয়ে। বাড়িটি গৌতমবাবুর। মেয়েটি চুমকি। তার পরিচয় তথাকথিত সমাজে 'বাজে মেয়ে'। গৌতমের বাড়ির আলো পড়েছে দুজনের উপর।] সত্যকাম: (চাপা গর্জন) : কেন এসেছিস? কতোবার বলতে হবে তোকে? চুমকি : এবার দাও না দাদা, আর এসবোনি। (কান্না) সত্যকাম : আবার ! কেন যাচ্ছিস না বল্ তো? বলেছি না আমাকে ডাকবি না ওই নামে? চুমকি : বেস্! চলে যাচ্চি। ঠিক বলেছিলো মাইরি সবনম, চুমকি, ভদ্দরলোক বনে গেচে তোর মায়ের পেটের ভাই ---যাসনে ওদের কাছে। আমিই বোকা মাইরি--- [প্রস্থান উদ্যত] সত্যকাম ... ...