সাত সকাল বেলা মাথাটা বেশ গরম হয়ে গেলো রিনিতার। ঝগড়াটা শুরু হয়েছে লাঞ্চ দেওয়া নিয়ে রঞ্জন এর সাথে। সকাল ৫ টা নাগাদ উঠে পড়া বরাবরের অভ্যেস রিনিতার। আজ দেশে সরস্বতী পূজো আর সঙ্গে ভ্যালেন্টাইন্স ডে ও। যস্মিন দেশে যথাচার - তাই গত weekend ই এই পূজো হয়ে গেছে এখানে। সানফ্রান্সিস্কোর বে এরিয়ার বাসিন্দা সে বেশ কয়েক বছর ধরেই। এখানের সরস্বতী পুজোতে নিজেরাই খাটা খাটুনি করে করতে হয়। তাই আজ বেশ গায়ে ব্যথা হয়েছে। তাও সোমবার সকালে কাজে তো বেরোতে হবে। রিনিতা চায় রঞ্জন কে অফিস এ একটু বাড়ির খাবার দিয়ে দিতে। এতে করে শরীর স্বাস্থ্য ... ...
কাঁপা কাঁপা হাতে দুটো গ্রীনটি ব্যাগ দুটো কাপে রেখে তার ভিতরে দু প্যাকেট সুগার ফ্রি ছিঁড়ে দিলো মিসেস রিনিতা হালদার। সামনের ইলেকট্রিক কেটলিতে জল ফুটছে টগবগ করে। বয়স প্রায় পয়ষট্টি পেরোলো, এই বয়সে সারাক্ষন ক্লান্ত লাগে শরীর, গায়ে হাত পা যন্ত্রনা করে, তবু সারাক্ষণ কাজ না করে উপায় কি? আমেরিকার একটি নাম না জানা শহরে এখন বাস করেন রিনিতা। আমেরিকায় এরকম কত শহর আছে বাইরে থেকে তার নাম জানা যায় না। এই শহরগুলিতে প্রধানতঃ সাদা লোকেদের বাস, এরা চাষবাস করে, বন্দুক ছোঁড়ে, অন্য লোকেদের বিশেষ পছন্দ করে না। কিন্তু মিস্টার হালদারের ব্যাপার আলাদা। ইনি এদেরকে ... ...
চুলে হালকা ব্রাশ চালিয়ে হালকা একটা লিপ কালার এর তুলি বোলালো রিনিতা ঠোঁটে। হাত ঘড়িটা হাতে দিয়ে সময় দেখলো। ঘড়িতে বাজছে প্রায় ২টো। এখনই বেরিয়ে পড়তে না পারলে টিউশন এ পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে। এই সময়টা এই তল্লাটে কেউ বিশেষ ভাবে থাকে না, সবাই খেয়ে দেয়ে একটা ভাত ঘুম দেয়। জায়গাটা উত্তর কলকাতার একটা গলির ভিতর। এখনো আধুনিক কলকাতার পুরোপুরি ছোঁয়া এই অঞ্চলের বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে সে ভাবে গড়ে উঠে নি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে বা দিকে ঘুরে কয়েক পা চললেই একটা মোড় পরে, মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে সারি সারি রিক্সা। কিন্তু সে তো সকালে, এই দুপুর ২টোর সময়ে কেউ থাকে ... ...
অন্তিম পর্ব বাংলাদেশের হৃদয় মন্থন করা স্বামীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত জননেতা সুভাষচন্দ্র বসুর অপূর্ব মূল্যায়ন তুলে ধরি —” স্বাধীনতার অখন্ড রূপের আভাস রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের মধ্যে পাওয়া যায়। Freedom, freedom is the song of the soul - - এ বাণী যখন স্বামীজীর অন্তরের রুদ্ধ দুয়ার ভেদ করিয়া নির্গত হয় তখন সমগ্র দেশবাসীকে মুগ্ধ ও উন্মত্তপ্রায় করিয়া তোলে l “ যুবকদের উদ্দেশ্যে নেতাজি বললেন—------- “ সাম্যবাদ ও স্বাধীনতা মন্ত্র প্রচার করিবার জন্য তোমরা গ্রামে গ্রামে ছড়াইয়া পড়ো, ……..স্বাধীনতার পূর্ব -স্বাদ নিজের অন্তরে পাইলে সকলেই পাগল হইয়া উঠিবে | …. নিজের অন্তরে এই আলোক জ্বালো – সেই দীপ্ত হস্তে লইয়া দেশবাসীর দ্বারবর্তী হও | –চাষার পর্ণকুটিরে, ... ...
পর্ব ৪ :স্বামীজি বন্ধনমুক্ত মানুষের বন্দনা করেছেন – জ্ঞানে-কর্মে ও হৃদয়ধর্মে মহতো মহীয়ান মানুষ | যুক্তিশুদ্ধ কুসংস্কারহীন বৈজ্ঞানিক ভাবে ভাস্বর সমান সাত্ত্বিক ও রাজস্ব উপাদানে গঠিত মজবুত নতুন ভারতীয় সমাজ l এই সর্ব সম্পন্ন বিকশিত সমাজেরই স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ | অসন্বয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গির উদারতা তাঁর মধ্যে ছিল | তাই বৈদ্যান্তিক আধ্যাত্মিকতা ও ইসলামের শক্তির অসঞ্জনকে মূর্ত হতে দেখার জন্য স্বল্পকালস্থায়ী জীবন আকুলিবিকুলি করেছিল | তাঁর সংস্কারহীন মানবিকতাবোধসঞ্জাত উদার দৃষ্টি প্রয়োজনীয় উপকরণ থেকে মানবসমাজকে বিচ্যুত করতে চাননি, একটি চিঠিতে লিখেছিলেন –“ We talk foolishly against the material civilization, may even luxury, is necessary to create work for the pour. Bread! I ... ...
পর্ব ৩ : তাই অন্তরের পরম আকুলতা ও প্রবল আত্মজিজ্ঞাসা নিয়ে পিছন ফিরে ভারতের বীরত্বব্যঞ্জক ও জীবনবৈদ্যুতীপূর্ণ সংস্কৃতিকে আবার নতুন করে বর্তমানে পাদপ্রদীপের সম্মুখে তুলে ধরতে হবে। সেটাই হবে প্রকৃত জাতীয় শিক্ষা। আর তার থেকেই জেগে উঠবে প্রকৃত জাতীয়তাবোধ। এই তীব্র দেশপ্রেমের উদাত্ত আহবানে যে পবিত্র যজ্ঞান্ন বিবেকানন্দ প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন, তাতেই পুত সমিধ নিক্ষেপের জন্য স্বাধীনতাকামী দেশপ্রেমিকের, বিশেষ করে যুবসমাজের অন্তরাত্তা সহস্র শিখায় জ্বলে উঠেছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের “আনন্দমঠ” উপন্যাসে সর্বস্ব-নিবেদিত প্রাণ যে সন্তানেরা দেশের জন্য আত্মবলিদানে উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল। তিনি লিখেছিলেন — “সত্যানন্দ যে আহবান জালিয়া গেলেন তাহা সহজে নিভিল না।” বিবেকানন্দ দেশপ্রেমের সেই আগুনকে নিজের বুকের মধ্যে জ্বালিয়ে রেখে ঘুমিয়ে-পড়া জাতির ... ...
পর্ব ২ কি বোধ, কি আত্মপ্রত্যয়, কি আমর্ম উপলব্ধি নিয়ে দেশমাতৃকার চরণ বন্দনা করতে হবে সেই বিষয়ে তাঁর সুস্পষ্ট ধারণা ও নির্দেশ ছিল। শুধু বায়বীয় উচ্ছ্বাস আবেগে গাল ভরা দেশপ্রেমের রঙিন বেলুনকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আকাশে উড়িয়ে দিয়ে দূর থেকে তাকে নিরীক্ষণ করা নয়, দেশকে জানতে গেলে, তাকে ভালবাসতে গেলে,নিবিষ্ট চিত্তে তার গভীরে পদ্মাসনে বসতে হবে, তার অতীত ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া গৌরবময় অধ্যায় গুলিকে তুলে ধরতে হবে, দেশের ইতিহাসকে বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে আর তা না পারলে জাতীয়তাবোধ ঠিকমতো গড়ে উঠবে না নিজের হারানো ছেলেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত মানুষ যেমন অস্থির ... ...
২০০৫ সাল আমার কাছে অত্যন্ত স্মরণীয় বছর এই কারণেই নয় যে এই বছর আমি প্রথম আমেরিকায় গিয়েছিলাম। স্মরণীয় এই কারণে যে ওই বছরই আমি আমার জীবনের পরম পবিত্র তীর্থস্থান শিকাগোতে আর্ট ইনস্টিটিউট অট্টালিকায় Fullerton Hall এ ১১ই সেপ্টেম্বর ১৮৯৩ সালে স্বামী বিবেকানন্দ যেখানে বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে যুক্তি তর্ক তথ্যের স্বচ্ছন্দ সমাহার ঘটিয়ে আবেগ দিব্য ভাষায় ভারতের চিরন্তন ধর্ম ও মর্মের ব্যাখায় সকলকে স্তম্ভিত মুগ্ধ করে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই হল ঘরে অনেক জোরাজুরি করে ১৫ মিনিটের জন্য প্রবেশ করে মুহূর্তের জন্য হলেও আমার মধ্যে এক অপূর্ব অনুভূতির সঞ্চার ঘটেছিল বলে মনে পড়ছিল। প্রথমে সভাগৃহে অজ্ঞাতনামা স্বামীজীর প্রবেশের অনুমতি ... ...