একটি রম্য-ভৌতিক গপ্প অমর বাবু মারা গেলেন। সেই কবেই কবি বলে গিয়েছেন অমর কে কোথা কবে। তা, অমর বাবু কে; সে বিষয়ে সেরকম কিছু বলারই নেই। এক্কেবারে ছাপোষা অম্বলে পেটের সমস্যায় জর্জরিত মধ্যবিত্ত বাঙালি। অবিশ্যি, আদিকাল থেকেই তাঁরা যে মধ্যবিত্ত ছিলেন তেমনটা নয়। অমরবাবুর প্রপিতামহ নাকি ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ....নাহ্, জমিদার নয়, ডাকাত। তিনি কব্জির কারিকুরিতে যা সম্পত্তি করেছিলেন তাতে অমর বাবুর অবস্থার যে বিশেষ কিছু পরিবর্তন হয়েছিল তা বলছিনে। বরং নিজ চেষ্টায় পাওয়া নামকরা প্রাইভেট ফার্মের কেরানীর চাকরিটা নিয়ে ওনার মনে প্রচ্ছন্ন একটা অহংবোধ ছিল।বউ গত হয়েছেন প্রায় এক যুগ হয়ে গেল। ছেলে-পিলে নেই। এ হেন অমর বাবুর জীবনে বলার মতো কিছুই ... ...
জীবনের যা কিছু সমস্যা তা আরও বাড়িয়ে দেয় তুলনা। নিজের অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হলেও, অন্যের সঙ্গে তুলনা করাটা আমাদের অবস্থাকে আরো করুণ করে তোলে। নিজেদের বোনা তুলনার জালে নিজেরাই আরো জড়িয়ে পড়ি।কথায় বলে মানুষ নিজের ভবিষ্যত নিজেই গড়ে। কথাটা কে যদি আর একটু ব্যাখ্যা করি, তাহলে দাঁড়ায়; মানুষ নিজের অভ্যাস কে গড়ে। সেই অভ্যাসই তার ভবিষ্যত কে গড়ে। কিন্তু এই গড়াপেটার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই তুলনা। প্রত্যেকের জীবনের লড়াই তার নিজের। প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের জীবনের লড়াই এর কোনো তুলনা করা যায়না। দাঁড়িপাল্লায় মাপা যায়না এই সদা পরিবর্তিত আপেক্ষিক পরিস্থিতি। একজনের কাছে যেটা খুব গুরত্বপূর্ণ অন্যজনের কাছে সেটা অতটা নাও ... ...
চোখে চোখে ছেলেবেলা থেকেই আমার হেব্বি পাওয়ার। না, সেটা কব্জির নয়, চশমার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার খাতার নম্বর বাড়ুক না বাড়ুক, চশমার পাওয়ার তাল মিলিয়ে বেড়েছে। এই জায়গায় আমি কোনভাবেই বেতাল হইনি। চশমার সঙ্গে যে প্রথম থেকেই আমার প্রেম-প্রীতি-ভালবাসার সম্পর্ক ছিল তা নয় বরং শুরুর দিকে সেটা ছিল আদায় কাঁচকলায়। আস্তে আস্তে আমাদের বোঝাপড়া বাড়লো; মান-অভিমান পেরিয়ে আমরা হয়ে উঠলাম একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখন চশমা ছাড়া আমার এক দন্ডও চলে না, মানে, আমি চলতেই পারি না। আক্ষরিক অর্থেই অন্ধ বলা চলে।তবে, চশমা যে অতি ভীষম বস্তু, সেটা এই বুড়ো বয়সে আবার নতুন করে বুঝলাম। চশমার পাওয়ার যে কত বড় ... ...
একবার হলো কি, এক সমুদ্রের ধারে একটা ছোট্ট গ্রামে এক জেলে থাকতো। তার অন্যান্য জেলে বন্ধুদের মতোই সে অগভীর সমুদ্রে মাছ ধরে জীবন চালাতো। তো, একদিন, সে তার ছোট্ট ডিঙি নিয়ে মাছ ধরছে। জালে বেশ কিছু মাছ ধরা পরেছে। সে ততটুকুতেই খুশি। এবার সে প্রতি দিনের মতোই একটু আরাম করবে। ট্রানজিস্টর-এ তার পছন্দের গান চালিয়ে অল্প কিছু খেতে খেতে সে এই রৌদ্রোজ্জ্বল দিনটা উপভোগ করতে লাগলো। এমন সময়, এক বিত্তবান লোকের দেখা মিলল যে তার কেতাদুরস্ত বোট চেপে হন্তদন্ত হয়ে কোথাও যাচ্ছিল। লোকটি জেলে কে অমন ডিঙি তে বসে বসে আরাম ... ...
চারপাশে কত ধরনের লোকজন দেখতে পাই। কেউ খুব হাসিখুশি, কারুর মুখ সবসময়ই গোমড়া। কেউ হোমড়া-চোমড়া, কেউ ক্যাবলা। কেউ সবসময় কিছু ভাবছে, কারুর মনে কোনো চিন্তাই নেই.. বিন্দাস।আমরা পছন্দ করি সেইসব মানুষকে যারা প্রচুর কথা বলে। যারা সব সময় পরিবেশ মাতিয়ে রাখে। কোনো আড্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে তারাই জ্বলজ্বল করে। আর তাদের আলোতে চাপা পড়ে যায় কিছু মানুষ যারা কম কথা বলে।কিছু মানুষ আছেন যারা সবার সঙ্গে খুব সহজেই বন্ধুত্ব করে ফেলতে পারেন। হাসি ঠাট্টা মজায় মেতে ওঠেন মুহুর্তের মধ্যেই। আর কিছু মানুষ আছেন যারা নিজের মনের কথাটা ঠিক গুছিয়ে বলে উঠতে পারেন না বলে যেকোনো আড্ডাতেই সবার অগোচরেই থেকে যান। সাধারণ ভাবে এই ... ...
যেন কালো অন্ধকার আমাকে গিলে খেতে আসছে। কিসব যান্ত্রিক শব্দ হচ্ছে আমার চারপাশে। কানের কাছে ফিসফিস শব্দ। কেউ কি কিছু বলতে চাইছে? চোখ বন্ধ করে বসে আছি আমি। মাঝে মাঝে শব্দগুলো একদম নিশ্চিহ্ন। এত চুপচাপ চারিদিক যে গা শিরশির করে উঠছে। ও কিসের শব্দ। নাহ্, নিজের হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বেঁচে আছি তাহলে!ওই আবার শুরু হলো অপার্থিব শব্দ। ঠিক আমার পিছনে কাঁচ-এর জানলার ওপারে। নাকি এপারেই? কিছুই বুঝতে পারছিনা। সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে.....নিজেকে একটু গোছাবার চেষ্টা করলাম। প্রথম থেকে মনে করার চেষ্টা করলাম পর পর ঘটনা গুলো।মিনিট চল্লিশ আগে:আজও বেরোতে একটু দেরি হয়ে গেল। সারারাত ধরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। ... ...
পাশের হোঁৎকা লোকটাকে কনুই দিয়ে এক কোঁত্কা মেরে এগুনোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু, বিধি বাম। সামনে একটা ঢ্যাঙা লোক দাঁড়িয়ে। কোনোমতে তার বগলের তলা দিয়ে গলে একেবারে সামনের সারিতে পৌঁছানো গেলো। কিন্তু, সে কোথায় ?ও হরি, এতক্ষন তোমাদের বলাই হয়নি কিসের জন্য এই গুঁতোগুঁতি চলছে! বাঘ দেখা নিয়ে। বনে নয়, চিড়িয়াখানায়। বোঝো দুরাবস্থা খানা।কোনোমতে টাল খাওয়া চশমাটা সামলে নিয়ে দেখি সামনে এক গাছের ছায়ায় বাঘ বাবাজি চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন। দু হাত ভাঁজ করে মাথার নিচে দিয়ে কি যেন আকাশ পাতাল ভাবছেন তিনি। গুরুগম্ভীর চেহারা। আশপাশের অসভ্য মানুষগুলোর অসহনীয় চিৎকার চ্যাংড়ামো কিছুই যেন স্পর্শ করছে না তাকে।হঠাৎ কানের কাছে ভরাট গলায় কে ... ...
হিসাবটা আমি কখনোই ঠিকঠাক করতে পারি নে। অনেক ভেবেচিন্তে যখনই ভাবি এবার হিসাবটা মিলবেই মিলবে; কি ভাবে জানি কিছুই মেলে না। হাতে রয়ে যায় শুধু পেন্সিল। তা, সেই পেন্সিল দিয়েই কিছু আঁকিবুকি, জীবনের নানা কাটাকুটি খেলে যখন ক্লান্ত; চশমাটা খুলে রাখি টেবিলে। দু হাত দিয়ে টনটনে চোখ চাপা দিয়ে ভাবি এবারে হয়তো চোখ খুলে দেখবো চশমার জায়গায় একটা সুকুমার হুলো বেড়াল। খুব সহজ করে আমায় বুঝিয়ে দেবে জীবনের ওঠা পড়ার হিসাব।কিন্তু না, দেখি মিটমিট করে তাকিয়ে আছে আমার সেই পুরোনো ঘষা কাঁচের চশমা। কি আর করবো, চশমাটা নাকের ডগায় তুলে নিয়ে আবার ভাবতে বসি।ছেলেবেলা থেকেই কঠিন অংকের হিসাব দেখলেই আমি ... ...
নিজেকে খুঁজে চলেছি। আপনাদের সহযোগিতা কাম্য। ... ...
নিজেকে খুঁজে চলেছি। আপনাদের সহযোগিতা কাম্য। ... ...