মোজেসের যে কাহিনি আমাদের শোনানো হয় সেখানে তিনি জন্মেছিলেন দরিদ্র ইহুদি লেভাইট সংসারে, তারা শিশুটির কল্যাণের বাসনায় তাকে ভেলায় তুলে দেন, যদি কোন সহৃদয় পরিবার তাঁর দেখাশোনা করে – সেই ভেলা পৌঁছুল মিশরের রাজ পরিবারে, সে পেল ঘর সম্মান আদর যত্ন। রাজ পরিবার জানতেন না সে ইহুদি। ফ্রয়েড বলছেন এই শিশু কোন হিব্রু বংশজাত নয় । প্রচলিত পৌরাণিক গল্পটি মানতে তিনি নারাজ। এখানে তিনি জার্মান ঐতিহাসিক এডুয়ার্ড মায়ারের দ্বারস্থ হয়েছেন – মায়ার লিখেছেন ফারাও একদিন স্বপ্ন দেখেন তাঁর নাতি ( কন্যার সন্তান ) বড় হয়ে ফারাওয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবে , সাম্রাজ্যের পতন ঘটাবে ; তাই সে শিশু জন্মালে তাকে পাপিরাসের ভেলা বেঁধে নীল নদের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। কোন হিব্রু মহিলা তাকে জল থেকে উদ্ধার করেন আরও এক ধাপ এগিয়ে ফ্রয়েড বলেন এ যে নীল নদ তাও মেনে নেওয়া শক্ত। এটা হিব্রু বাইবেলের গ্রহণযোগ্য নয় – তোরা বলে এক ইহুদি মহিলা মোজেসকে জলে ভাসিয়েছিলেন , জল থেকে তুলে আনেন নি। তর্জনী তুলে তাই বলা হয়-খামোশ। ... ...
ঝলমলে সোশ্যাল মিডিয়া আর স্মার্টসিটির বাইরে কবে থেকে যেন হেঁটেই চলেছে আরেকটা ভারত। এতদিনে তাদের অন্তত নামটুকু নথিবদ্ধ থাকার কথা ছিল সরকারের কাছে। কথা ছিল, কিন্তু নেই আসলে, আর সেজন্য আমরা ন্যুনতম লজ্জিতও নই, প্রশ্নও করি না কেন অভিবাসী শ্রমিকদের তালিকা নেই সরকারের কাছে? কেন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও গ্রামীণ মেয়েদের এত হাঁটতে হবে শুধুমাত্র জলের জন্য? বইটা আমাদের জ্বলন্ত এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় ‘সুনাগরিক’এর দায়িত্ব পালন করি নি আমরাও। ... ...
মেঠোবই – বাঙলার জীববৈচিত্র্য পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদ ... ...
চেক জরা আর ফরাসি সন্ধ মিলিয়ে জরাসন্ধ ... ...
বর্ধমানের বাইরে ‘সরুচাকলি’ জিনিসটা কতটা পরিচিত আমার জানা নেই। কিন্তু বড়ই উপাদেয় সেই জিনিস, বিশেষ করে শীতের দিনে। গরম তাওয়ায় তেল বুলিয়ে তাতে বাঁটা চাল আর বাঁটা কলাই একসঙ্গে গুলে তালপাতার টুকরো দিয়ে গোলাকার করে দিতে হয়। তারপর একদিকটা রান্না হয়ে গেলে, খুন্তি করে উলটে দেওয়া। আমরা শীতের দিনে খেজুর গুড়ের সাথে খেতাম এই জিনিস – বিশেষ করে ছোটরা। আর বড়রা দেখেছি সরুচাকলি-র সাথে বাঁধাকপির তরকারির কম্বিনেশন দিয়ে রাতের খাবার বলে চালিয়ে দেয় শীতের সিজনে। ... ...
ফলে মন্নুকে, যার গেঞ্জিতে কাপড়ের চেয়ে ছেঁড়া ছিদ্রের সংখ্যা বেশী, কচি শীর্ণ মুখে বসন্তের ছিট্, সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়, এমনকি নেশাখোর বাপের হাতে নেশার টাকাও তুলে দিতে হয়। খুব চেনা গল্প, এখনো প্রযোজ্য আমাদের সমাজের জন্য, মন্নুর ‘হেই মোড়ে’ সংলাপটা থেকে পাঠক তার পূর্ববঙ্গীয় ভাষার সাথেও একাত্মতা অনুভব করে, গল্পটার এত বছর পরেও। কিন্তু এই চেনা গল্পের মধ্য দিয়েই জ্যোতিরিন্দ্র ঘুরিয়ে আনেন আমাদের অনেক অচেনা শহর, বন্দর, ঘাট। গল্পটির শুরুতেই তার লক্ষণ টের পাওয়া যায়, যখন গল্পের উত্তম পুরুষ মন্নুকে প্রশ্ন করে, “ এত রাতে পালিশ কি রে?”, আর মন্নু উত্তর করে, “আচ্ছা ক’রে করে দেব, একদম আয়না মাফিক”, পাঠক টের পেতে শুরু করে, এক অদেখা আয়নার মুখোমুখি হতে চলেছে সে, সে আয়নায় জীবন ধরা দেবে বহুবিচিত্র রঙে, রূপে, রসে। ... ...
রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী নাটকের একটি জায়গায় আছে, 'নরকেও সুন্দর আছে, কিন্তু সুন্দরকে কেউ সেখানে বুঝতেই পারে না, নরকবাসীর সবচেয়ে বড় সাজা তাই।’ ‘জ্যোস্নায় সূর্যজ্বালা’ উপন্যাসে যে অসাধারণ মানবিক চরিত্র এঁকেছেন লেখিকা রসিদা আর দবিরের মধ্য দিয়ে, মাঝে মাঝে সংশয় জাগে, এমন কি বাস্তবে পাওয়া যায়? কিন্তু লেখিকা তো শুধু এমন এক ছবি নির্মাণ করবেন না, যা শুধুই যা ঘটে চলেছে তার প্রতিচ্ছবি, লেখিকা তো তার স্বপ্নের সৌন্দর্যের জগতকেও আহবান করবেন। রসিদা ও দবিরকে বিবেক চরিত্রে রূপদান করাতে যাওয়া নিশ্চিত চ্যালেঞ্জের, বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্টের শংকা প্রতি পদে পদে। কিন্তু লেখিকা এক নিপুন দক্ষতায় চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন, যে একটুও অস্বাভাবিক ঠেকেনি কোথাও। খুব সচেতন ছিলেন তা বোঝা যায় চরিত্রদুটোর হঠাৎ হঠাৎ বাঁক বদলে, তাদের অনুভূতির সূক্ষ্ম আলোড়নে, যা উচ্চকিত নয়, কিন্তু যার সুতীব্র ঢেউয়ে ভিজেছে পাঠক প্রথম থেকে শেষ অবধি। ... ...
কবিতা পত্রিকার সম্পাদকও কবির রচনাকে বুঝতে পারেন না ... ...
গল্পগুলি আমাদের অন্য এক জগতে নিয়ে যেতে পারে – যে জগৎটা আমরা প্রতিনিয়ত হারিয়ে চলেছি আঙুলের ফাঁক দিয়ে ঝরে পড়া বালুর মতো। ... ...
প্রকৃতিকে ছারখার করে, প্রকৃতিকে নিংড়ে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করাই সভ্যতার সংজ্ঞা। ... ...
পুরুষের দৃষ্টি ... ...
এটুকু পর্যন্ত গল্পটি যা ছিল, তা অসাধারণ অবশ্যই, কিন্তু একজন ডুবুরি পাঠককে ভেঙে তস্নস্ করার মত যথেষ্ট না। তার জন্য তাকে গল্পটি শেষ পর্যন্ত পড়ে যেতে হবে যেখানে সে দেখবে মন্নু গল্পের উত্তম চরিত্রের ভাবনার সাথে সঙ্গত না করে, লাল ঝান্ডার গোলযোগে রক্তে-ধোঁয়া-জেল-জুলুমে নিমজ্জিত না হয়ে, পরেরদিন পার্কে উপবিষ্ট একটি ‘সিন্দুর গোলাপি আভায়’ রঞ্জিত মহিলার সাথে ভ্রমন করতে আসা একটি জমকালো কুকুরের গলার বেল্টটা বাঁ হাতে চেপে ধরে এত জোরে জোরে ঘষতে থাকে যে স্নিগ্ধ সহানুভূতির হাসিতে মহিলাটিকে বলতে হয়, “এক জায়গায় অত মেহনত করলে দোস্রা জায়গায় কাজ করবি কি করে?” ... ...
জীবনানন্দ ... ...
সবাই জানে, বাংলাদেশের মানুষ ভাষার জন্য লড়াই করেছিল। অনেকেই জানে না যে, বাংলাদেশের মানুষ একজন কবির জন্যও লড়াই করেছিল। গেল বছর মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পাড়ি দিচ্ছিল যখন বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী লড়াইগুলোর ইতিহাস আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল সে আন্দোলনও। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন আর রবীন্দ্রনাথ- জাতীয় ইতিহাসের এই পালকগুলোর কোন একটিকে বিচ্ছিন্ন করলে যেন খসে যাবে অন্য পালকগুলোও, কংকালসার এক বাংলাদেশ পড়ে থাকবে চোখের সামনে। কিন্তু কেন তিনি নাড়ি ছেঁড়া ধন আমাদের? কেনই বা তার ‘সোনার বাঙলা’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত? বাংলাদেশের একটি নদীর উপর একটি নৌকোয় চড়ে বসুন আর ক্ষণিক ছিন্নপত্র ও ক্ষণিক চারপাশের জীবন ও প্রকৃতির মাঝে ডুবে থাকুন। আস্তে আস্তে একটি ছবি ভেসে উঠবে আপনার অক্ষিপটে; অবাক বিষ্ময়ে আবিষ্কার করবেন, পুরো বাংলাদেশটাই রাবীন্দ্রিক! ... ...
#বইমেলা_ম্যালা_বই ... ...
সদ্য পড়ে শেষ করলাম প্রতিভা সরকারের ‘মানসাই’। ছোটগল্প রচনায় তাঁর মুন্সিয়ানার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। এটি তাঁর প্রথম উপন্যাস। বইটির মুদ্রণ পারিপাট্য চমৎকার। পড়ে মনে হল একটু লিখে রাখা দরকার। খুব ভেবেচিন্তে গুছিয়ে নয়, এটা একটা তাৎক্ষণিক পাঠ প্রতিক্রিয়া। ... ...
এককের সাম্প্রতিকতম কবিতার বই - "বিনাহ বিতাস" ... ...
এবারে কারা ইঁদুরকলে ঢুকবেন ... ...