[২৫.১২.২০২৪ -এর রচনা। আজ এখানে তাকে উপস্থাপিত করলাম]
এখন মেঘেঢাকা পথে ছুটে চলেছে হরিণে টানা শ্লেজগাড়িটা।
উপহারের থলি খুঁজতে খু ঁজতে প্রত্নপ্রাচীন চোখ তুলে বৃদ্ধটি ভাবেন
--"আজকাল আর তেমন শিশুসুলভ উপহারের চাহিদা নেই।
শিশুরা সব পৃথিবী থেকে কোথায় গেল?"
আরো কয়েকটা তারাঢাকা রাস্তা অতিক্রম করলো হরিণগুলো।
অ্যান্ড্রোমেডা নক্ষত্রপুঞ্জকে পার্কস্ট্রীট ভেবে কিছুটা বোকাই বনে গেলেন তিনি!
স্বাধীন কলকাতার উপর দিয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে উড়তে বৃদ্ধটির চোখে বাষ্প ঘনিয়ে আসে।
স্বাধীনতার চিঠি, বিষাদ মুক্তির চিঠি
"দারুণ একটা দিন দিও সান্তা!" লিখতে লিখতে
বড্ড পরিচিত হয়ে উঠেছে এই শহর।..
প্যাগানদের বৃহৎ পাঠাগারের মতো কলেজস্ট্রীট
শীতের কুয়াশায় আড়মোড়া ভাঙছে।
জন্মক্ষণ থেকে আঁধার বয়ে নিয়ে চলা মানুষগুলো
উষ্ণতা খোঁজে ফুটপাতের বালি-ধূলোতে।
হরিণের গতিবেগে কি হঠাৎ জাগতিক পরিবর্তন এসেছে?
অবাক হলেন বৃদ্ধটি।
ক্রিসমাসের তিলোত্তমার বুক জুড়ে এক
কুয়াশামানব ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
হতভম্ব হরিণগুলি, নির্বাক লালটুপির বৃদ্ধ!
গ্ল্যাডিয়েটরের ভঙ্গীতে অভিবাদন জানিয়ে সেই
কুয়াশামানব হাত বাড়িয়ে দেয় সান্টার দিকে।
নিয়নবাতির নিরুত্তাপ চাহনি আজ যেন সমুদ্র না দেখা প্রেমিকার মতো স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।
শিশুস্বপ্নের উপহারবাহক বৃদ্ধের ঠোঁটের কোণে হাসি।
কুয়াশামানবের হাতে তুলে দেন একমুঠো তাজা ফুলসম্ভার।
গ্ল্যাডিয়েটরের দৃঢ় কাঠিন্যভরা রাত ভেদ করে প্রেমাসক্ত হরিণী টেনে নিয়ে চলে শ্লেজগাড়ি।
--"পৃথিবী এখনো শিশুর বাসযোগ্য হয়নি, স্পার্টাকাস!
ওই ফুলগুলি যত্নে রেখো।
মিশিয়ে নিও তোমার প্রিয় জীবনস্পন্দনের সাথে।
Merry Christmas!"
হরিণেরা ততক্ষণে পেরিয়ে চলেছে রঙিন তিলোত্তমার আকাশ।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।