এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার ও আমরা

    Arijit Das লেখকের গ্রাহক হোন
    ০১ মার্চ ২০২৫ | ৩৩৩ বার পঠিত
  • ১.

    আমার বাবা মারা যায় গতবছরের ২৩ শে ডিসেম্বর। বাবার এন্ড স্টেজ প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার এটা আমি (আমার মা বা স্ত্রী উপস্থিত ছিল না ঐসময় হাসপাতালে) জানতে পারি ওই বছরই ১৫ ই অক্টোবর। মাঝের এই সময়টায় অনেকবার ভেবেছি আমার অভিজ্ঞতাগুলো লিখি, অন্য কারো জন্য নয়, নিজের জন্যই। আমি তো এই মুহূর্তে জানি না আমার শরীরের কোন্ কোণায় কোন্ জিন আস্তে আস্তে মিউটেট করছে, মোক্ষম সময়ে উবে যাবে স্মৃতি, ঠিক যে বয়সে স্মৃতিটুকুই মানুষের সম্বল।

    শুরুতেই কিছু ব্যক্তিগত কথা বলি। আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। আমার স্ত্রীর সাথে আমার পরিচয় ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় থেকে, আমার বাবা মায়ের সাথেও ওর পরিচয় তখনই। ছোট্ট পরিবার আমাদের। আমার মা কোনোদিনই খুব গোছানো ধরণের না। বাবার রিটায়ারমেন্টের পর সংসারের কাজের সব দায়িত্ব পড়ে বাবার ঘাড়েই। আমি আর আমার স্ত্রী অফিসে বেরিয়ে যাবার পর বাজার করা, সেগুলো গুছিয়ে ফ্রিজে তোলা, রান্নার দিদিকে রান্না কী হবে বলা, মাসের মুদির বাজার, রাতে খাবার গরম করা, ফ্রিজে তোলা... লম্বা ফিরিস্তি কাজের। এত কথা এইজন্যই বলা - আমাদের অনেকটা জুড়ে প্রত্যক্ষভাবে ছিল বাবা। বাবা মানুষটা কিছুটা ইন্ট্রোভার্ট, কিছুটা নার্ভাস, সব ব্যাপারেই রিস্ক অ্যাভার্স। নন এলকহলিক, নন স্মোকার। শেষ দশ বছরে একমাত্র ভালোলাগা বলতে লং ড্রাইভে আমার পাশে বসে - সামনে বাইক কিন্তু, গার্ডরেল কিন্তু এসব বলা। বাবা এই লং ড্রাইভ গুলো সত্যি এনজয় করত।

    ২.

    বাবা নিয়মিত ডাক্তার দেখাতো রিটায়ারমেন্ট এর আগে থেকেই। টাইপ-2 ডায়াবেটিস, copd, হাইপারটেনশন, লিপিডেমিয়া, বিনাইন এনলার্জড প্রস্টেট এই ধরণের সাধারণ কিছু বয়সকালের অসুখ ছাড়া বাবার সেরকম কিছু সমস্যা ছিল না। মোটামুটি ডাক্তারবাবুর বলে দেওয়া টেস্টগুলো করিয়ে নিয়ে ৬ মাস অন্তর রিভিউ করিয়ে আসতো। টুকটাক ওষুধ বদল ও হতো। এরই মাঝে জুলাই এর শেষে হঠাৎ সুগার বেড়ে যায়, সেটা আমরা বুঝতে পারি ওই পিরিয়ডিক টেস্ট থেকেই। এরই মাঝে পিঠে ব্যথা, কখনও সেটা চলে যেতো অসহ্য পর্যায়ে। যাওয়া হলো অর্থোপেডিক ডাক্তার এর কাছে। বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি, এক্সরে, পেন কিলার কিছুতেই কিছু হয় না, একটু কমে, ফের বেড়ে যায়। এভাবে যায় একটা মাস।

    না বাবার মেডিসিনের ডাক্তার, না এই অর্থপেডিক সার্জন - দুজনের কেউই দুই আর দুই চার করতে পারেননি। মেডিসিনের ডাক্তারবাবু অভিজ্ঞ ডাক্তার, অনেকদিন ধরেই বাবাকে দেখেন; উনি কেনো কিছু সন্দেহ করেননি সেটা আমরা জানি না। ইনসুলিন ঘটিত সমস্যায় প্যানক্রিয়াস এর কোনো টেস্ট, বিশেষ করে পিঠের ব্যথা থাকার কথা মাথায় রেখে কেনো করানো হয়নি আমরা জানি না। যদিও বাবার এই সময় প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারের সাধারণ কিছু লক্ষণ যেমন - জ্বর, বমি, ওজন কমা কিছুই ছিল না। আমরা মে মাসের শেষেই দার্জিলিং গেছিলাম, তখন দীর্ঘ পথ হেঁটে উঠতে বা নামতে কখনই কোনো সমস্যা হয়নি।

    যাই হোক বারবার ডাক্তার দেখানো, ডায়াবেটিস ওষুধ এর মাত্রা বাড়ানো সত্বেও শরীর খারাপ হতে থাকে। হঠাৎ বেড়ে যায় বিলিরুবিন, শুরু হয় খাবারে অনীহা - তখনও বাবাকে নিয়ে যাচ্ছি ডাক্তারের কাছে, ভাবছি এই নতুন ওষুধ খেলেই ঠিক হবে। এইরকম অসুস্থ হতে লোকটাকে এর আগে দেখিনি। এরই মাঝে এসে পড়ে আরজি করের ঘটনা। বেসরকারি ডাক্তারদের প্রতীকী পেন ডাউন। ওই সময় বেশ কঠিন ছিল এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া। তারপর এসে পড়ল পুজো, পুজোর পরেই হাসপাতালে রেখে বাবার কিছু টেস্ট হবে এরকম কথা হলো ডাক্তারবাবুর সাথে।

    ৩.
    পুজোর মধ্যেই দশমীর পরেরদিন বাবা ভর্তি হলো হাসপাতালে। হাসপাতালে দ্বিতীয়দিন বাবার PET CT হয়। তৃতীয়দিন অন্য এক ডাক্তারবাবু (আমাদের চেনা মেডিসিনের ডাক্তার নন) আমাকে ওঁর চেম্বারে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেন বাবার 3rd স্টেজ ক্যান্সার, প্যালিয়েটিভ ট্রিটমেন্ট করতে হবে। প্যানক্রিয়াস হেডে এডিনোকার্সিনোমা, যেটা কমন বাইল ডাক্টকে ব্লক করছে। সেজন্যই বিলিরুবিন বেড়ে গ্যাছে। একটা মেটাল স্টেন্ট বসিয়ে ডাক্ট ক্লিয়ার করলেই বিলিরুবিন কমবে। আমি অবশ্য এসব শুনতে পাই নি তখনই। আমার মাথা সম্ভবতঃ ঘুরে যায়, পেছনে কোনো সিস্টার আমাকে ধরে নেন। আমি যখন চোখ খুলি দেখি আমি একটা চেয়ারে। যাই হোক ততক্ষণে আমার পৃথিবী পাল্টে গ্যাছে, এর আগে অবধি ভাবছিলাম বাবা ঠিক হয়ে যাবে হাসপাতালে কিছুদিন থাকলেই। আমার স্ত্রীকে ডেকে নিই হাসপাতালে কারণ একা গাড়ি চালিয়ে যাবার সাহস হচ্ছিল না, বাবার মেডিসিনের ডাক্তারবাবুর বাড়িতে যাই। ওখানে এগুলোই ফের শুনি। মাথা কিছুই কাজ করছিল না, তাই একটা ঘোরে আমার স্বল্প পরিচিত এক গ্যাস্ট্র সার্জনের কাছে চলে যাই রিপোর্ট ইত্যাদির ডুপ্লিকেট নিয়ে। তখনও আমার মনেহচ্ছে একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যে আছি। কেউ একটা বলবেন আর ধুর - তুমি অমুক করো... ইশ বেকার এরকম দুশ্চিন্তা করছ!!

    সেরকম কিছুই এই ডাক্তারবাবুর কাছে আশ্বাস পেলাম না।

    শুরু হলো যন্ত্রের মত এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল যাওয়া। এক ডাক্তার থেকে অন্য ডাক্তার। মতামত নেওয়া। টাকার বিনিময়ে অনলাইন রিপোর্ট দেখিয়েও একই মতামত পাওয়া গেলো। বাবার অসুস্থতা বা চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তা ঠেলে বেরোতে চাইতো কষ্ট - বাবা আর কয়েকমাসের জন্যই থাকবে আমাদের মধ্যে। কিন্তু ওই মুহূর্তে সেটা ধামাচাপা দেওয়াই উচিত বলে আমার মনে হয়েছিল। অবশ্য এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কোনো ঔচিত্যবোধই আর ততটা আশ্বস্থ করে না।

    ৪.

    স্টেন্ট বসানোর অপারেশন আর এক হাসপাতালে হয়ে গেলো ঠিকঠাকভাবে। বেশ একটু সুস্থ হয়ে উঠল বাবা। তখনও মনের মধ্যে দোলাচল। বাবা থাকবে না এইটা তখনও মন থেকে বিশ্বাস করতে পারছি না। এর পরেই অজান্তে সম্ভবত একটা ভুল করি আমি। আল্ট্রা সাউন্ড গাইডেড একটা বায়োপসি ওই হাসপাতালেই একজন গ্যাস্ট্রো সার্জন করেন। পরে আমি বুঝতে পারি এটা অঙ্কলজির রেডিওলজিস্টকে দিয়ে করানো উচিত ছিল। রেজাল্ট ইনকনক্লুসিভ আসে প্রায় আড়াই সপ্তাহ পরে। এর মধ্যে আমি বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে মেডিক্যাল অঙ্কলজিস্টকে দেখাই। কিন্তু বায়োপসি রেজাল্ট না এলে সেভাবে কিছু চিকিৎসা শুরু করা যাচ্ছিল না। বাবার শরীর এতটাই খারাপ হয়ে যায় গাড়িতে বসিয়ে হাসপাতালে opd তে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে যায়। লিভার মেটাস্তাসিস একটা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পেটে ফ্লুইড জমা অর্থাৎ এসাইটিস হতে থাকে। এই সময় বাবার অঙ্কোলজিস্ট বলেন যে আপনি হাসপাতালে ভর্তি করে দিন। ওঁর হয়তো আরও মাস ছয়েক হাতে আছে, কিন্তু এরকম খারাপ অবস্থায় থাকার মানে হয় না। কিছুটা স্টেবেল করে দেওয়া যায় কিনা দেখি। তখন খড়কুটো আঁকড়ে ধরার পর্যায় চলছে আমার - শেষ কয়েকমাস ও বাবা যদি বাবার মত থাকে সেও তো একরকম পাওয়া।

    ৫.

    এর পর বাকি প্রায় ৪৫ দিন বাবা এই হাসপাতালেই ছিল। মাঝে তিনদিনের জন্য বাড়ি এসেছিল। প্রথম দিনই ট্যাপিং করে প্রায় 3 লিটার ফ্লুইড বেরোয়। এরপর কখনও একটু সুস্থ কখনও ভীষণ অসুস্থ হতে থাকে বাবা। আমাদের দিনের রুটিন হয়ে যায় সকালে উঠেই হাসপাতাল যাওয়া, বাবার সাথে দেখা করা, ভোর বেলা উঠে মায়ের রান্না করা মাটন স্টু চিকেন স্টু খাওয়ানো (আমাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারবাবু স্পেশাল পারমিশন করিয়ে দিয়েছিলেন)। বাবা কোনোদিন কথা বলতো জড়ানো স্বরে, কোনোদিন বলতো না। লিভার টক্সিন প্রসেস করা বন্ধ করে দেয় একসময়। হঠাৎ বাবা ভীষণ রেস্টলেস হয়ে যায়। আইভি নিডল নিজেই খুলে ফেলে। পরে আমরা ডাক্তার এর কাছে জানি যে একে হেপাটিক এনসেফালোপথি বলে। দেওয়া হয় ঘুমের ইনজেকশন। যেটুকু দু একটা কথা হতো বাবার সাথে, বন্ধ হলো সেটাও। হিমোগ্লোবিন কমে গেলো হুড়হুড় করে। শুরু হলো ব্লাড ট্রান্সফিউশন। শুরু হলো আত্মীয় পরিজন চেনা বৃত্তে ডোনার ধরে আনা। রোজ রাতে এই টেনশন নিয়ে ঘুমানো কাল ডোনার পাওয়া যাবে? এই পর্যায়ে কত চেনা অচেনা মানুষ হেল্প করলেন, আবার কত চেনা মানুষ এড়িয়ে গেলেন।

    এর পর শুরু হলো ইনফেকশন এর পর্যায়। তখনও বাবাকে কেমো শুরু করার মত ষ্টেবেল করা যায় নি। শুরু হলো এন্টিবায়টিক। একদিন এর ওষুধের খরচ প্রায় ষাট হাজার টাকা। হেল্প করলেন সেই ডাক্তারবাবু ই। ততদিনে আমার অফিসের ইন্সুরেন্স, বাবার নিজের ইন্সুরেন্স সব শেষ। উনি পারমিশন দিলেন যে আমরা বাইরে থেকে ওষুধ আনতে পারি। হাসপাতালে যেটা এমআরপি, সেটাই ডিস্ট্রিবিউটর এর কাছে প্রায় ৩০ শতাংশ ছাড়। তখন সেই টাকাই অনেক টাকা আমাদের কাছে। রোজকার ওষুধ রোজ নিই ডিস্ট্রিবিউটর এর থেকে। তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করি কখন আসবে ডেলিভারি দিতে। স্বভাব চতুর কর্মচারী সবসময় ই এই ১৫ মিনিটে ঢুকছি বলতেন। সেই ওষুধ রিসিভ করানো ছিল আর এক যন্ত্রণা। ফার্মাসিস্ট কে সই করতে হতো। হাসপাতালের আর্থিক লাভ কমছে ভেবে এডমিনিস্ট্রেটিভ কর্মীরা ছুঁড়ে দিতেন অবজ্ঞা। এভাবে দশ দিনের কোর্স, ফের আর একটা ইনফেকশন। ফের একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি। মাঝেমাঝে ইনফেকশন বাড়লে আইসোলেসন ওয়ার্ড। এরপর একটা সময় একটা ছোট ডোজের কেমো দেওয়ার মতো উইন্ডো পাওয়া গেলো। তখনই আমি প্রথম জানতে পারি প্যালিয়েটিভ কেয়ার হিসেবেও কেমো ব্যবহার করা যায়। এর প্রায় সপ্তাহখানেক বাদে অঙ্কোলজিস্ট বলেন আপনারা বাড়ি নিয়ে যান, সেভাবে একটিভ লাইন অফ ট্রিটমেন্ট কিছু নেই। যেদিনই বাবা কথা বলতে পারতো সেদিনই বাড়ি ফেরার জন্য এমন বাচ্চাদের মত বায়না করত, সে জিনিস এখনও স্পষ্ট ঘুমহীন রাতে মনে পড়ে।

    এই পর্যায়ে এসে আর একটি ভুল করি আমি। ওই হাসপাতালেরই একই নামের এক ফ্র্যাঞ্চাইজির থেকে হোমকেয়ার একটি প্যাকেজ নিই। অত্যন্ত দামী, কিন্তু কখন কী লাগে সেই নিয়ে আমরা তখন পুরোপুরি অসহায়। আমার ধারণা সম্ভবতঃ অঙ্কোলোজিস্ট ভদ্রলোক জানেন না কী ধরণের জালিয়াতি ব্যবসা করে এই সংস্থা। একজন হোম নার্স দেওয়া হয়, সে একটানা ডিউটি করবে আমাদের বলা হয়নি। তার থাকা, খাওয়ার শোয়ার ব্যবস্থা আমাদের ছোট্ট ফ্ল্যাটেই করতে হবে সেও বলা হয়নি। সবচে, জরুরি কথা অত্যন্ত incompetent পুরো টিম।

    ৬.

    এর পরে তিনদিনের মাথায় ফের শরীর খারাপ হয়। ইমারজেন্সি তে একই হাসপাতালে ভর্তি করি, ডাক্তারবাবুর সাথে যোগাযোগ করে নেওয়াতে কিছুটা সহজতর হয় এবারের এডমিশন। সেখান থেকে আইসিইউ। জানা যায় সিভিয়ার সেপসিস। চলতে থাকে সেই একই কড়া ডোজের এন্টিবায়টিক। ব্লাড প্রেশার ক্রমাগত কমতে থাকে। ইউরিন আউটপুট প্রায় বন্ধ। দুবার চেষ্টা করেও ডায়ালিসিস করা সম্ভব হয়নি। এতটাই প্রেশার নেমে যাচ্ছিল। ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছিল হাত পা। ভেন্টিলেশনে দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতো আমাকেই। দ্বিতীয়বার ভর্তির ঠিক সাতদিনের মাথায় হাসপাতাল থেকে রাত 3 টেয় ফোন করে জানানো হয় বাবা আর নেই।

    ৭.

    বলাই বাহুল্য, এই দু'মাস আমাদের পরিবারকে ভেঙেচুরে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিল। তাও কিছু কথা লিখবো ভেবেই এই লেখা।

    বাবার মেটাল স্টেন্ট বসানোর পর যখন অঙ্কোলজির হাসপাতাল/ ডাক্তার খুঁজছিলাম, আমরা নিউটাউনের টাটা হাসপালে যাই। সেখানে অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। আমি টাটা সন্স এর সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ আর্ন করা কোম্পানিতে ১৩ বছর চাকরি করেছি। টাটা কোড অফ কন্ডাক্ট আমার এখনও মনে আছে। এঁরা সম্ভবত নন প্রফিট বলে সকলকেই তাচ্ছিল্য করেন। ট্রায়াজ বা কেস অনুযায়ী প্রায়োরিটি তৈরির কোনো ব্যাপার দেখলাম না। আমাকে এঁরা ওনাদের ই ঠিক করা ডাক্তার এর এপয়েন্টমেন্ট দিলেন দু সপ্তাহ পরে। ওই দিনের অভিজ্ঞতার পরে আর ওইমুখো হই নি।

    সরকারি ব্যবস্থা কেমন জানি না, কারণ আমি বাবাকে নিয়ে যাই নি। তবে ইন্সুরেন্স যতই থাক তারপরেও এই চিকিৎসা একটি উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সবটুকু সঞ্চয় শেষ করে দেবেই। এর সমাধান কী জানি না। বিস্তারিত আলোচনা হওয়া প্রয়োজন বলে মনেকরি।

    আইসিএমআর এর তথ্য অনুযায়ী ডায়াগনোসিস এর পরে প্রতি 5 জন ক্যান্সার রোগীর মধ্যে 3 জন মারা যান। প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার এর মৃত্যুহার এর চেয়ে অনেক বেশি। কারণ এর ডায়াগনোসিস হতে হতে অনেকটা এডভান্সড স্টেজে চলে যায়। আগেও লিখেছি, ফের লিখি - জ্বর, বমি বা শুরুতেই ওজন কমা এই ধরণের লক্ষণ আমার বাবার ক্ষেত্রে ছিল না। কিন্তু হঠাৎ সুগার হুহু করে বেড়ে যাওয়া, তলপেট / পিঠে ব্যথা, পায়খানার রং ফ্যাকাশে হওয়া এই তিনটি একসাথে গোলমেলে ব্যাপার। আমি বা অন্য যে কেউ যিনি ট্রেইন্ড ফিজিশিয়ান নন তারপক্ষে কী হতে পারে বোঝা সম্ভব না। কিন্তু অভিজ্ঞ এবং নামকরা ডাক্তার কিভাবে মিস করেন জানি না। আমি পরে আরো কিছু ঘটনার কথা শুনি - মোটামুটি একই রকম। মেডিসিনের ডাক্তারবাবু যাঁদের কাছে মানুষ রেগুলার চেক আপের জন্য যায় এঁরা কি নিজের কাজের দায়িত্ব সম্পর্কে সম্যক অবহিত নন? প্রশ্ন তুলতে হবে। যে পর্যায়ে আমি অঙ্কোলজিষ্ট এর কাছে বাবাকে নিয়ে যাই, ওঁর সত্যি তেমন কিছু করার ছিল না।

    গ্যাস্ট্রো সার্জন যে পদ্ধতিতে বায়োপসি করেন তাতে সফল হওয়ার হার অত্যন্ত কম, এটাও আমি জানতে পারি ওই অঙ্কলজিস্ট এর কাছেই। অংকলজিরই রেডিওলজিষ্ট শেষ পর্যন্ত এটি করেন। একই জিনিস দুবার করতে হয়। কী পারবেন আর কী পারবেন না সেটা না জানলে ডাক্তারবাবুদের অভিজ্ঞতার কী দাম? আর একটি ব্যাপার জানলাম আমাদের দেশে রেডিওলজিকাল ইমেজ এর ভিত্তিতে কেমো দেওয়া যায় না। হিস্টোপ্যাথলজিকাল প্রমাণ লাগে; যা সময় সাপেক্ষ ও ইন্কনক্লুসিভ আসে প্রায়ই। এখনকার রেডিওলজি এত উন্নত যে প্রায় নির্ভুলভাবে ক্যান্সারের কোষ গুলিকে দেখাতে পারে। ডাক্তারবাবুরা নিজেদের দৈনন্দিন কাজের বাইরে আইনপ্রণেতাদের এই ব্যাপারে ওয়াকিবহাল করার ব্যাপারে কতটা সময় এবং শ্রম দেন?

    ক্যান্সার এর হোমকেয়ার একটি বিশাল ব্যবসা এবং বেশিরভাগ সময় ঠকানো হয়। আমাদের দেশে হসপিস বা এন্ড অফ লাইফ কেয়ার বলে কিছু নেই। হয়তো ব্যবসায়ীরা এতে লাভ দেখছেন না তাই নেই। হাসপাতাল আর বাড়ি এই দুয়ের মাঝে কিছু নেই সরকার জানেন না বিশ্বাস হয় না। কিন্তু সরকার আর কবে ভোট ছাড়া মানুষের কথা ভাবে?

    আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব যাঁদের আছে তাঁরা ভাগ্যবান। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই লড়াই পরিবারের একটি বা দুটি লোকের লড়াই হয়ে দাঁড়ায়। তাঁদের দুঃখ বিলাসের সময় থাকে না। মেশিনের মত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঠোক্কর খেয়ে বেড়ান এঁরা। বাবা চলে যাওয়ায় ফাঁকা লাগা প্রথম শুরু হয় বাবা যাওয়ার মাস খানেক পর থেকেই। বেড়ে চলেছে তা। এই লেখা এতটা অগোছালো হলো তার একটা কারণ এটাও। ভেবেছিলাম সময় নিলে সুবিধা হবে। কিন্তু মনেহয় সেও ভুল ভাবনা ছিল।

    এন্ড স্টেজ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিপদে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার চাপানো থাকে রোগীর পরিজনের ওপর। এটা খারাপ না ভালো সেটা তর্কসাপেক্ষ, কিন্তু একসময় এই বার্ডেন অফ ডিসিসন বা সিদ্ধান্তের ভার পাথর হয়ে বসে। এই সূত্রে আর একটি কথা বলি - ডাক্তার বাবুরা সবসময়ই বলবেন রোগীকে জানিয়ে দিতে যে আর বেশিদিন নেই। এটা না বলা একধরনের অধিকার হরণ, ইত্যাদি। কিন্তু আমি বলব রোগী যিনি তিনি আপনার প্রিয়জন। আপনি জানেন উনি কীরকম রিএক্ট করবেন। আমি আমার বাবাকে শেষদিন অবধি বলিনি। বাবা নিজেই কী বুঝেছিল সেটাও জানতে চাইনি। এ একরকম বোঝাপড়া নিজেদের মধ্যে। আমার চির ভীতু বাবা এই কয়েকটা দিনও আর আমাদের সাথে থাকত না আমি প্রথমেই বলে দিলে - এটাই আমি বিশ্বাস করতে চাই।

    এরকম অনেক মানুষ দেখলাম যাঁরা এই বিপদের মধ্যে এক সেকেন্ডের জন্য সঙ্গ দেননি - কিন্তু আকারে ইঙ্গিতে বা সরাসরি বুঝিয়েছেন - নিশ্চয়ই অনেক দিন ফেলে রেখেছিল বা অমুক ডাক্তার দেখলেই সেরে যেতো বা মুম্বাই নিয়ে যায়নি কেনো? প্রথমে ভেবেছিলাম ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। পরে বুঝেছি আসলে ইন্সিকিউরিটি। নিশ্চয়ই কোথাও ভুল করেছে, নিশ্চয়ই কিছু করা যেতো যা ও করেনি। আমি এই ভুলগুলো করব না, তাই আমি নিশ্চিন্ত। মানুষ নিজের ভালনারেবিলিটি বাঁচাতে যেকোনো বালির বাঁধ খাড়া করে।

    শেষ করব দুটো পয়েন্ট বলে - প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার কেনো হয় ? আমার বাবা একটি সিগারেট বা একবিন্দু মদ ও ছুঁয়ে দেখে নি। আসলে এর সাথে প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা জেনেটিক মিউটেশন এর জন্য হয়। মিউটেশন কেনো হলো? বংশগতভাবে ডিফেকটিভ জিন বয়সের সাথে মিউটেট করে নাকি অন্য কারণে? এগুলো আলোচনা হওয়া দরকার সর্বজন বোধগম্য ভাষায়। আর প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা একেবারেই নেই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি।

    বাবা মারা যায় সেপটিক শকে। ক্যান্সার এর রোগীদের ইমিউনিটি বলে কিছু থাকে না, তাই সেপসিস তেমন বিরল ব্যাপার না। কিন্তু পরে আমি পড়াশোনা করে জানতে পারি সেপসিস ভারতে একটি প্রায় মহামারী। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আমাদের দেশে। আইসিইউ তে ঢোকা রোগীর একটা বড় শতাংশ মারা যায় সেপসিসে। সেপসিস কেবলমাত্র ওপেন উন্ড থেকে হয় - এটি ভুল ধারণা। দীর্ঘদিন লাগানো ক্যাথিটার থেকেও হতে পারে, ব্লাডস্ট্রিম থেকেও ইনফেকশন হয়। হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণ আটকানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে ? আইসিইউতে যেভাবে একটার ঘাড়ে আর একটা বেড থাকে সেটা প্রোটোকল সম্মত? সেপসিস নিয়েও আলোচনা ও সচেতনতা দরকার। হাসপাতালগুলো অন্যান্য রোগের ব্যাপারে সচেতনতা ক্যাম্পেইন করে, এব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ চুপ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • নিরমাল্লো | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৪:৪৫541409
  • খুবই দরকারী আলোচনা। মুশকিল হল আমাদের মত লে-ম্যান-দের কাছে খবর আসে কম, আর নিজেদের গায়ে না পড়লে আমরা হাসপাতালের ইনফ্রাস্ট্রাকচার , পলিসি , গাইডলাইন কিচ্ছু নিয়ে মাথা ঘামাই না।  
  • পাপাঙ্গুল | 103.87.***.*** | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৫:০১541410
  • খুবই জরুরি লেখা yes
  • b | 14.139.***.*** | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৮:২১541413
  • "আমাদের দেশে রেডিওলজিকাল ইমেজ এর ভিত্তিতে কেমো দেওয়া যায় না।"
     
    এটা বোধ হয় ঠিক নয়। আমার এক জ্যেঠিমা-র ক্যান্সার ধরা পড়েছিলো হেপাটিক ডাক্টে ওখানে বায়োপ্সি করতে গেলে লিভারের আধখানা উড়ে যাবার সম্ভাবনা, তাই হায়দরাবাদের ডাক্তার , ওখানকারই গ্যাস্ট্রিক ইন্স্টিটুটের করা এম আর আই এর উপরে ভিত্তি করে কেমো দিয়েছিলেন। গ্যাস্ট্রিক ইন্স্টিটুটের ডাক্তারই প্রথম ডায়গনোসিস করেছিলেন। 
     
    এই লেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ । প্রিয়জন হারাবার কোনো সান্ত্বনা হয় না , কাজেই ও রাস্তায় গেলাম না । ভালো থাকবেন । 
  • | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৮:৪৩541414
  • জরুরী  লেখা। 
    বাবার  কথা পড়ে কী আর বলব! 
  • AD | 202.78.***.*** | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৮:৪৬541415
  • বি: হ্যাঁ, দেওয়া একেবারেই যায় না সেটা নয় । আপনি বলাতে আরো ভালো করে মনে পড়ল।  যেটা হয় যিনি কেমো প্রেসক্রাইব করছেন তাঁকে কিছু একটা পেপার ওয়ার্ক করতে হয় - যে ঠিক কী কারণে এটা করতে হলো। এটা অনেকেই ভবিষ্যতের মেডিকো লিগ্যাল কারণে এড়িয়ে যান। আমার বক্তব্য এই ব্যাপারটা না থাকলেই ভালো।  অবশ্য আমি বিশেষজ্ঞ নই, তাই এই লেখার মূল সুর আলোচনা অন্তত হোক।  
  • সৃষ্টিছাড়া | 103.85.***.*** | ০১ মার্চ ২০২৫ ১৯:৩১541416
  • আমি নিজে এই রোগ নিয়ে আজও মরে বেঁচে আছি,পরিবারকে কপর্দকশূন্য করে অসহায় অব্যক্ত বেদনা নিয়ে গত ২০ বছর দুঃস্থ প্রায় অভুক্ত 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০২ মার্চ ২০২৫ ০০:১৪541421
  • খুব জরুরি আলোচনা। এগুলো নিয়ে সত্যি ভীষণ কম জানি আমরা। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এর ব্যাপারটা জানি, সত্যিই হাসপাতাল গুলো খুবই বাজে সার্ভিস দেয় কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিয়ে। বেশির ভাগ ডাক্তারকেও আজকাল আর ভরসা করা যায় না। 
  • sangeeta das | ০২ মার্চ ২০২৫ ০০:৩৯541424
  • একটা কথা খুব সত্যি যে, প্রিয়জন অসুস্থ হলে, পাশে থাকার লোক তলানিতে এসে ঠেকে। নিজের পরিবারের মানুষটি ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে, এটা দেখা কতখানি ভয়াবহ তা আজ আবার মনে পড়ল। আমি আমার বাবার অসুখটুকু অবধি ঠিক করে জানতে পারি নি দশদিনের হাসপাতাল জীবনে। হার্ট অ্যাটাক নয়, স্ট্রোক নয়, বাবার নাকি সমস্ত বুকে ইনফেকশন হয়ে গিয়েছিছিল যা উনি খুব দক্ষতার সাথে বহুদিন লুকিয়েছিলেন। সরকারী হাসপাতালের কথা বলছি। চিকাৎসা বুঝতে পারিনি, কী হয়েছে কেউ জানায়নি, মৃত্যুকালে একটি ডাক্তার‌ও পাশে ছিলেন না। সঙ্গের লাগোয়া  রুমে ডাক্তার ছিলেন কিছু। মারা যাওয়ার আগের দিন রাতে তিনটের সময় যখন বাঁ দিকটা চেতনাহীন হল, কেউ আসেনি কারণ ওই পেশেন্ট ওনাদের আন্ডারে ছিল না। যার ছিল,তিনি তখন অনুপস্থিত ছিলেন। 
     
    সেপসিস একটি ভয়ঙ্কর বিষয়। তবে তা নিয়ে এখন‌ও রাজ্যের সরকারী হাসপাতালের কোনো মাথাব্যথা নেই। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, একদম সদ্য ঘটনার স্বাক্ষীও বটে। প্রাইভেট হাসপাতালের শত চেষ্টার পরেও এর ভয় অবশ্য‌ই থাকে। 
    আর চেষ্টার কথা বললেন বলে আর একটা কথা বলতে চাইছি। ইদানিং মেডিকেল ট্যুরিজম কোর্সের চাহিদা বাড়ছে। কারণ, বাইরে থেকে কম খরচে চিকিৎসা করতে আসা পেশেন্টের প্যাকেজটা আমাদের ভারতীয় অর্থে নেহাত কম হয় না। রেভিনিউ আর ঝকঝকে বিজ্ঞপন নিয়ে যখন চিকিৎসা কেন্দ্রের মতো জায়গাগুলো অধিক ভাবতে থাকে, তখন অনয অনেকদিকে ফোকাস কমে আসে বটে। আর গাইডলাইনের থেকে এ দেশে এখন‌ও ইগোলাইনের প্রাধান্য বেশি।  
    ভালো থাকার কথা বলব না। প্রিয়জনকে চোখের সামনে থেকে এরকম অসহায়ভাবে যেতে দেখে, কোনোদিন ভালো থাকা যায় না বলেই আমার বিশ্বাস। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন