এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • দ্য রমস্তনকি গেজেটিয়ার - ১৪

    পাগলা গণেশ লেখকের গ্রাহক হোন
    ২০ জুলাই ২০২৪ | ৪৩০ বার পঠিত
  • 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16
    সাতই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪

    "মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যেখানে মনে হয় দুটো অপশন আছে। কিন্তু আসলে সেখানে হ্যাঁ ছাড়া আর কোনো অপশন নেই। না টা ডামি"

    আজকে বুঝতে পারলাম ওদের উদ্দেশ‍্য। কদিন ধরেই ওরা আমার উপর নজর রেখে চলছিল। আমি ভাবছিলাম, ওরা বুঝি আমাকে মারতে চায়। কিন্তু আজকে আমি কাজ সেরে  নার্সিং হোম থেকে বেরোতে যাচ্ছি, একজন অচেনা লোক সামনে এসে দাঁড়াল। আমি ব্যাগ থেকে আমার টুপিটা বের করছিলাম। তাই ওকে হঠাৎ সামনে দেখে চমকে গেলাম। আমি কিছু বলার আগেই বলল, "আপনাকে একটু আমাদের সাথে যেতে হবে। "গলায় বিনয় যেন চুঁইয়ে পড়ছে। লোকটাকে দেখে ভরসা হলো। মনের ভেতর থেকে কেউ একজন যেন বলল, "চিন্তা নেই। এ ক্ষতি করবে না। "আমি জিগ্যেস করলাম কোথায় যেতে হবে, কার কাছে?"
    লোকটা বলল, "থিওসের কাছে। "
    লোকটার পুরোটাই আন্তরিকতায় ভরা। বলা যায় চলমান আন্তরিকতা। সবাই যেন এর কাছ থেকেই আন্তরিকতা ধার নেয়। আমি বললাম, "চলুন। "
    আমার পরীক্ষা সামনেই, ভেবেছিলাম আজ ছটা থেকে পড়তে বসব বারোটার আগে উঠব না। কিন্তু এটা পড়ার থেকেও বেশি জরুরি। আমার মনে একটা পুলক যেন হঠাৎ হঠাৎ এসে ধাক্কা মারছিল। আমি কেঁপে উঠছিলাম আনন্দের উত্তেজনায়। যেন আমার শরীরের প্রতিটা কোষ জেনে গেছে কিছু একটা ভালো হতে চলেছে। বিরাট সুযোগ আসতে চলেছে আমার সামনে। আমি আবার নার্সিং হোমের ছাদে গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে অপেক্ষা করছিল একটা ছোট প্লেন। আমি উঠে বসলাম। এত নরম গদি!আহ, যেন ডুবে গেলাম। একটা সুন্দরী মেয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল, "স্যার কিছু নেবেন?"
    আমি বললাম, "আমাকে একটু জল দিন শুধু। "
    কথা বলে জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখি প্লেন উড়তে আরম্ভ করছে। কখন বাতাসে উঠল টেরই পাইনি। মেয়েটি একটা গ্লাসে জল নিয়ে এসে আমার সামনে টেবিলে রাখল। যদিও আমার খুব তেষ্টা পেয়েছিল, তবু খুব ধীরে ধীরে খেলাম। তারপর বললাম, "আর এক গ্লাস। "মেয়েটি চলে গেল। আবার এক গ্লাস জল নিয়ে এল। আমি খেয়ে করে ফেরত দিলাম।

    ততক্ষণে প্লেন থিওসের বাড়ির আঙিনায় নামছে। আমি উত্তেজনায় ফুটছি তখন। প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে, সারা গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে, শরীরেও যেন কাঁপুনি অনুভব করছি। সে লোকটা(যার নাম এখন আমি জানি, অনির্বাণ। ) আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল। আমি হাবার মতো চারিদিকে তাকিয়ে গিলতে আরম্ভ করলাম। এত সুন্দর জায়গাও টোপানে থাকতে পারে!বিরাট উঁচু আর চারিদিকে কম করে পঞ্চাশ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়ানো একটা প্রাসাদ। প্রাসাদটা অতটা বড়ো নয়। সেটা মোটামুটি লম্বায় দেড় কিলোমিটার হবে আর চওড়ায় এক কিলোমিটারের মতো হবে। বাকি চারিদিকে অগণিত গাছের জঙ্গল। বিরাট বিরাট মহীরুহ। অবশ্য পুরোটাই বৃক্ষে ভর্তি নয়। দরজা থেকে প্রাসাদের মধ্যে যে রাস্তা গেছে তার পাশে এবং অন্যান্য রাস্তাগুলোর পাশে বক্সউড গাছ লাগানো। সুন্দর করে ছাঁটা আছে। দেখলেই বোঝা যায় প্রতিদিন নিয়ম করে ছাঁটে। তারপর  ওয়াকওয়ে থেকে যত দূরে যাওয়া যায় বিভিন্ন ফুলের গাছ। কম করে কয়েকশ প্রজাতির ফুল ফুটে আছে। আমি তাদের খুব জোর হলে কুড়িটা চিনি। লাগানো যে আছে এত সুন্দর পরিকল্পনা করে লাগিয়েছে, দেখতেই মন চায়। আমি তো কয়েক মিনিট দাঁড়িয়েও পড়েছিলাম। অনির্বাণবাবু ডাকতে আবার হাঁটতে আরম্ভ করলাম। আমার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। মুখ নিচু করে হাঁটছি। তা দেখে অনির্বাণবাবু বললেন, "নিতান্ত বেরসিক না হলে প্রায় সবাই দাঁড়িয়ে পড়ে। লজ্জা পাওয়ার দরকার নেই। "আমার আরো লজ্জা লাগল। "আজকে এমনটা কি না হলেই হতো না?"

    মিনিট কুড়ি হাঁটার পর আমরা প্রাসাদের দরজায় গিয়ে উপস্থিত হলাম। অনির্বাণ বললেন, "কিছু মনে করবেন না রমস্তনকি বাবু, আপনাকে কিন্তু এখনই থিওসের সাথে দেখা করতে দেওয়া যাবে না। আপনি বাইরে থেকে আসছেন। যদি কোনো রোগ ডরম্যান্ট অবস্থায় বা ইনকিউবেশন পিরিয়ডে থাকে, তা সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই আপনাকে একুশ দিন আগে কোয়ার‍্যান্টাইনে থাকতে হবে।"
    আমার অপমান বোধ হল। কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার জন্য এটা কোনো ব্যাপারই নয়। আমি এর থেকে আরো বেশি কষ্ট সহ্য করতে রাজি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন